আবুল ফজল (সাহিত্যিক)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৬:১৮, ৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

আবুল ফজল
জন্ম
আবুল ফজল

১ জুলাই ১৯০৩[১]
মৃত্যু৪ মে ১৯৮৩
পেশাঅধ্যাপনা
পরিচিতির কারণশিক্ষক, প্রবন্ধকার, সাহিত্যিক
পুরস্কারস্বাধীনতা পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার

আবুল ফজল (১ জুলাই ১৯০৩ - ৪ মে ১৯৮৩) বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং রাষ্ট্রপতির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি মূলত একজন চিন্তাশীল ও সমাজমনস্ক প্রবন্ধকার। তার প্রবন্ধে সমাজ, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাষ্ট্র সম্পর্কে গভীর ও স্বচ্ছ দৃষ্টিসম্পন্ন মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

আবুল ফজল ১৯০৩ সালের ১ জুলাই চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মৌলবি ফজলুর রহমান এবং মা গুলশান আরার একমাত্র পুত্রসন্তান। প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু হয় গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে। প্রকৃতির প্রত্যক্ষ সান্নিধ্যে তার শৈশবের দিনগুলি অতীবাহিত হয়েছে। তার নিজের ভাষায়-

আমার ছেলেবেলা বেশকিছুটা বেপরোয়া ভাবেই কেটেছে। বিশেষতঃ যতদিন গ্রামে ছিলাম জীবনটা ছিল রীতিমতো উদ্দাম।... একটু বড় হয়ে দূর দূর গ্রামেও চলে যেতাম যাত্রা কি কবির গান শুনতে... চাঁদনী রাতে ছেলেরা "বদর" দিয়ে উঠলে কিছুতেই ঘরে স্থির থাকতে পারতাম না।

(দ্র. ফজল, ১৯৬৬ পৃ: ২৬)

এখানে অল্প কিছুদিন পড়ার পর বাবার সাথে চট্টগ্রাম শহরে চলে আসেন। পরবর্তীতে নন্দন কাননে এক হাইস্কুল সংলগ্ন প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হন। মাদরাসা সেশন শুরু হতে দেরি ছিল বলে সাময়িকভাবে তাকে ঐ স্কুলে ভর্তি করা হয়। পরে ১৯১৩/১৪ সালে চট্টগ্রাম সরকারি মাদরাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯২৩ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯২৫ সালে ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৮ সালে বি.এ. পাস করেন। এছাড়া ১৯৪০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. পাশ করেন।

কর্মজীবন

বাবা মৌলবি ফজলুর রহমান এবং পিতামহ মৌলবি হায়দর আলীর পদাংক অনুসরণ করে আবুল ফজল আলেম হোক এমনটিই চেয়েছিলেন বাবা মৌলবি ফজলুর রহমান। কিন্তু আবুল ফজলকে সাহিত্যই বেশি আকর্ষণ করেছিল। পরবর্তীতে শিক্ষক হওয়ার সংকল্প করেন আবুল ফজল। আর এ জন্য ১৯২৯ সালে বি.টি. পড়ার জন্য ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভর্তি হন। বি. টি. পাস করার পর ১৯৩১ সালে চট্টগ্রাম ফিরে আসেন। চট্টগ্রাম আসার পর সেখানকার কলেজিয়েট স্কুলে দ্বিতীয় মৌলবি হিসেবে কিছুদিন চাকরি করেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম সরকারি মাদরাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে দুই মাস চাকরি করেন। এরপর চট্টগ্রাম কাজেম আলী বেসরকারি হাইস্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে অস্থায়ীভাবে যোগ দেন। ১৯৩৩ সালে তিনি খুলনা জেলা স্কুলে দ্বিতীয় পণ্ডিতের পদে স্থায়ীভাবে যোগ দেন। ১৯৩৭ সালে খুলনা ছেড়ে এসে তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে সহকারী ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৪১ সালে কৃষ্ণনগর কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৪৩ সালে যোগ দেন চট্টগ্রাম কলেজ। এই কলেজের কলেজ গভর্নিং বডির নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হন এবং জয়ী হন। ১৯৫৯ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে এবং বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

প্রকাশিত গ্রন্থ

  • জীবনপথের যাত্রী
  • রাঙ্গা প্রভাত(১৩৬৪)
  • চৌচির(১৯৩৪)
  • মাটির পৃথিবী(১৩৪৭)
  • আয়েশা
  • আবুল ফজলের শ্রেষ্ঠ গল্প
  • সাহিত্য সংস্কৃতি ও জীবন
  • সমাজ সাহিত্য রাষ্ট্র
  • শুভবুদ্ধি(১৯৭৪)
  • সমকালীন চিন্তা
  • রেখাচিত্র
  • সফরনামা
  • দুর্দিনের দিনলিপি
  • প্রদীপ ও পতঙ্গ

পুরস্কার ও সম্মাননা

সাহিত্য চর্চায় অসাধারণ অবদানের জন্য ২০১২ সালে বাংলাদেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার”[২][৩][৪] হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[৫] এছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬২), প্রেসিডেন্ট সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৩), আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬০),[৬] নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৮০), মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১), আব্দুল হাই সাহিত্য পদক (১৯৮২), রাষ্ট্রীয় সাহিত্য পুরস্কার এবং সমকাল পুরস্কার লাভ করেছেন।

মৃত্যু

আবুল ফজল চট্রগ্রামে ১৯৮৩ সালের ৪ মে মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশের ছোটগল্প (ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭)। আবুল ফজলের জন্ম। এ্যাডর্ন পাবলিকেশন। পৃষ্ঠা ৩৬।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  2. সানজিদা খান (জানুয়ারি ২০০৩)। "জাতীয় পুরস্কার: স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার"। সিরাজুল ইসলাম[[বাংলাপিডিয়া]]ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশআইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।  ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
  3. "স্বাধীনতা পদকের অর্থমূল্য বাড়ছে"কালেরকন্ঠ অনলাইন। ২ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  4. "এবার স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৬ ব্যক্তি ও সংস্থা"এনটিভি অনলাইন। ২৪ মার্চ ২০১৬। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  5. "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20171201042150/http://www.cabinet.gov.bd/site/view/all_independence_awardees |আর্কাইভের-তারিখ=১ ডিসেম্বর ২০১৭ |সংগ্রহের-তারিখ=১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ |গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার  |প্রকাশক= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  6. চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ