সমর দাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সমর দাস
সমর দাসের ছবি
জন্ম১০ ডিসেম্বর ১৯২৯
লক্ষ্মীবাজার, পুরান ঢাকা
মৃত্যু২৫ সেপ্টেম্বর ২০০১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণসঙ্গীতশিল্পী
উল্লেখযোগ্য কর্ম
মুখ ও মুখোশ
জিঘাংসা
পুরস্কারস্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৭৯)

সমর দাস (১০ ডিসেম্বর ১৯২৯ - ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০১) একজন বিখ্যাত বাংলাদেশী সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক।

জীবন[সম্পাদনা]

১৯২৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে নবদ্বীপ বসাক লেনে এক সঙ্গীতশিল্পী পরিবারে সমর দাসের জন্ম। পরিবারের গণ্ডিতেই তার সঙ্গীত শিক্ষা শুরু হয়েছিল। ১৯৪৫ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে তদানীন্তন অল ইন্ডিয়া রেডিও’র ঢাকা কেন্দ্রে বাঁশি বাজানোর মধ্য দিয়ে সমর দাসের সঙ্গীত জীবনের সূচনা।। তরুণ বয়সেই গিটারপিয়ানো বাজানোর জন্য তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। পরে তিনি একজন খ্যাতিমান গিটারবাদক হিসেবে পরিচিতি পান। এরপর ১৯৫০-এর দশকে কলকাতায় হিজ মাস্টার্স ভয়েস কোম্পানিতে কাজ করেন এবং সুখ্যাতি অর্জ্জন করেন। ১৯৬১ সালে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। এখানে তিনি স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। তিনি বহু বাঙলা গানের সুরকার। রেডিও-টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রের জন্য অসংখ্য গানের তিনি সঙ্গীত পরিচালক।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মুজিবনগর থেকে পরিচালিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক ও প্রধান পরিচালক ছিলেন। এ সময় বহু গানে তিনি সুর দেন। তার সুর করা গান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনী ও দেশবাসীকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করে। মুক্তিযুদ্ধে তার সুর করা ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, ‘নোঙ্গর তোলো তোলো’ প্রভৃতি গান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা জুগিয়েছে। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে সুরবিন্যাস করে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত আমার সোনার বাংলা মূল গানটি বিবিসি লন্ডন থেকে সামরিক ব্রাশব্রান্ডে রেকর্ড করার দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

সঙ্গীত পরিচালনা[সম্পাদনা]

বাংলা ছায়াছবির সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে সমর দাস খ্যাতি লাভ করেছেন। ১৯৫০ সালে কলকাতার বাংলা ছবি লটারি’র অন্যতম সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন তিনি। এ ছাড়া মুখ ও মুখোশ, জিঘাংসা প্রভৃতি ছায়াছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেন। তিনি বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের দুই হাজারেরও বেশি গানের সুরকার। ১৯৮৫ ও ১৯৯৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ গেমস সূচনা সঙ্গীতের তিনিই সুরারোপ করেছিলেন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

২০০১ খ্রিস্টাব্দের ২৫শে সেপ্টেম্বর তিনি পরলোক গমন করেন। ঢাকার ওয়ারীস্থ খ্রিষ্টান গোরস্থানে তার সমাধি রয়েছে।

পুরস্কার ও সম্মননা[সম্পাদনা]

শিল্পচর্চায় অসাধারণ অবদানের জন্য ১৯৭৯ সালে দেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার”[১][২][৩] হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[৪] বাংলাদেশে 'সঙ্গীত পরিষদ’-এর প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই সমর দাস এর সদস্য ছিলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবেরও তিনি সদস্য ছিলেন। তিনি একুশে পদক সহ আরও অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সানজিদা খান (জানুয়ারি ২০০৩)। "জাতীয় পুরস্কার: স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার"। সিরাজুল ইসলাম[[বাংলাপিডিয়া]]ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশআইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৭স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।  ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
  2. "স্বাধীনতা পদকের অর্থমূল্য বাড়ছে"কালেরকন্ঠ অনলাইন। ২ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  3. "এবার স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৬ ব্যক্তি ও সংস্থা"এনটিভি অনলাইন। ২৪ মার্চ ২০১৬। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  4. "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]