আলী আকবর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আলী আকবর
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

আলী আকবর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [১][২]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

আলী আকবরের জন্ম কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ফালগুনকরা গ্রামে। তার বাবার নাম সৈয়দ আলী ও মায়ের নাম আমেনা বেগম। তার স্ত্রীর নাম রোকেয়া বেগম।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই প্রায় ৩০ জন মুজাহিদ স্থানীয় আবদুল কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে সংগঠিত হন। এ দলে ছিলেন আলী আকবরও। ২৫ মার্চের পর তারা চৌদ্দগ্রাম বাজার, বাতিসা, ফালগুনকরাসহ একাধিক স্থানে বড় বড় গাছ কেটে রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন। পরে তারা স্থানীয় থানা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। থানা থেকে অস্ত্র সংগ্রহে আলী আকবর সাহসী ভূমিকা পালন করেন। মে মাসের মাঝামাঝি তারা চৌদ্দগ্রামে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সম্মুখযুদ্ধ করেন। এরপর আরও কয়েক দফা সেখানে যুদ্ধ হয়। বেশির ভাগ যুদ্ধই ছিল রক্তক্ষয়ী। কয়েক দিনের যুদ্ধে তাঁদের হাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩০-৩৫ জন নিহত ও অনেকে আহত হয়। মুক্তিবাহিনীর সাত-আটজন শহীদ হন। ৩০ মের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বিপুল শক্তি নিয়ে তাঁদের ওপর আক্রমণ শুরু করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যেতে বাধ্য হন। তাঁদের প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। এরপর আলী আকবর ভারতে গিয়ে পুনঃসংগঠিত হন। পরে ২ নম্বর সেক্টরের অধীন রাজনগর সাবসেক্টরে যুদ্ধ করেন। বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নেন। এর মধ্যে লাকসামের বাগমারা রেলসেতু ধ্বংসের অপারেশন অন্যতম। এই অপারেশনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে আলী আকবরের বেশ কয়েকজন সহযোদ্ধা শহীদ ও আহত হন। তিনি অল্পের জন্য বেঁচে যান। অক্টোবর মাসের শেষে অথবা নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে কুমিল্লার মিয়াবাজার এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়াবহ এক যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে অংশ নেন আলী আকবর। তুমুল যুদ্ধে দুই পক্ষেই বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তীব্র আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এ সময় বাধ্য হয়ে তারা পিছু হটেন। পিছু হটে ভারতে যাওয়ার সময় তারা নোয়াবাজারে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অ্যামবুশে পড়েন। তখন তাঁদের কাছে তেমন গুলি-গোলা ছিল না। এই অবস্থায় তিনি ও আরেকজন সহযোদ্ধাদের বলেন নিরাপদ স্থানে চলে যেতে। তারা দুজন পাকিস্তানি আক্রমণ মোকাবিলা করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁদের গুলি শেষ হয়ে যায়। তখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গুলিতে তারা শহীদ হন। পরে সহযোদ্ধারা তার মরদেহ উদ্ধার করে গ্রামের বাড়িতে পাঠান।

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ৩১-০৩-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449 

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]