বিষয়বস্তুতে চলুন

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়

পরীক্ষিত
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(২০২৪ বুয়েট রাজনীতিবিরোধী আন্দোলন থেকে পুনর্নির্দেশিত)
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
অন্যান্য নাম
বুয়েট
প্রাক্তন নাম
ঢাকা সার্ভে স্কুল (১৮৭৬-১৯০৮)
আহসানুল্লাহ স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং (১৯০৮-১৯৪৭)
আহসানুল্লাহ কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৪৭-১৯৬২)
পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬২-১৯৭১)
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭১-২০০১)
ধরনসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
স্থাপিত১৮৭৬ (বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর: ১৯৬২)
অধিভুক্তিবাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
ইআইআইএন১৩৬৬১৮ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
আচার্যরাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন
উপাচার্যআবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান []
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ
আনু. ৬০০
শিক্ষার্থীআনু. ১০,০০০
স্নাতকআনু. ৫০০০
অবস্থান, ,
শিক্ষাঙ্গনশহরের কেন্দ্রস্থলে, ৮৩.৯ একর (৩৩.৯৫ হেক্টর)
সংক্ষিপ্ত নামবুয়েট
ওয়েবসাইটwww.buet.ac.bd
মানচিত্র
বিশ্ববিদ্যালয় ক্রম
বৈশ্বিক – সামগ্রিকভাবে
কিউএস বিশ্ব[]৮০০-৮৫০ (২০২৪)
টিএইচএ বিশ্ব[]১০০১-১২০০ (২০২৪)
আঞ্চলিক – সামগ্রিকভাবে
কিউএস এশিয়া[]১৯৯ (২০২৩)
টিএইচএ এশিয়া[]৪০১-৫০০ (২০২৪)

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে: বুয়েট) হচ্ছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কারিগরি-সম্পর্কিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি ঢাকা শহরের লালবাগ থানার পলাশী এলাকায় অবস্থিত।[] কারিগরি শিক্ষা প্রসারের জন্য ১৮৭৬ সালে ঢাকা সার্ভে স্কুল নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি পরবর্তীতে আহসানউল্লাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এ পরিণত করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে এর নাম হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।[]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

প্রাথমিক পর্যায়

[সম্পাদনা]
১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত বুয়েটের প্রশাসনিক ভবন

বুয়েট উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে জরিপকারদের জন্য একটি জরিপ শিক্ষালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৭৬ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ রাজ ঢাকা সার্ভে স্কুল নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করে।[][] এর উদ্দেশ্য ছিল সেই সময়কার ব্রিটিশ ভারতের সরকারি কাজে অংশগ্রহণকারী কর্মচারীদের কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা। ঢাকার তৎকালীন নওয়াব খাজা আহসানউল্লাহ এ বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহী হন এবং মুসলমানদের শিক্ষাদীক্ষায় অগ্রগতির জন্য তিনি ঢাকার সার্ভে স্কুলটিকে ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) উন্নীত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের স্বার্থে এক লক্ষ ১২ হাজার টাকা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার জীবদ্দশায় তা সম্ভব হয়নি। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র নওয়াব সলিমুল্লাহ ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন। তার অনুদানে এটি পরবর্তীতে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষালয় হিসেবে প্রসার লাভ করে এবং তার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯০৮ সালে বিদ্যায়তনটির নামকরণ করা হয় আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল[]আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স দিতে শুরু করে পুরকৌশল, তড়িৎকৌশল এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগে। শুরুতে একটি ভাড়া করা ভবনে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলত। ১৯০৬ সালে সরকারি উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের কাছে এর নিজস্ব ভবন নির্মিত হয়। এ স্থানের একটি উঁঁচু চিমনি কিছুদিন আগেও এই স্মৃতি বহন করত। ১৯১২ সালে এটি বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তরিত হয়।

শুরুতে বিদ্যালয়টি ঢাকা কলেজের সাথে সংযুক্ত ছিল। পরবর্তীতে এটি জনশিক্ষা পরিচালকের অধীনে পরিচালিত হতে থাকে। মি. এন্ডারসন এর প্রথম অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। এরপর ১৯৩২ সালে শ্রী বি. সি. গুপ্ত ও ১৯৩৮ সালে জনাব হাকিম আলী অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন।[১০][১১][১২]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর

[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাংলার শিল্পায়নের জন্য তৎকালীন সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তখন এতদঞ্চলে দক্ষ জনশক্তির অভাব দেখা দেয়। তৎকালীন সরকার নিযুক্ত একটি কমিটি যন্ত্র, তড়িৎ, কেমি ও কৃষি প্রকৌশলে ৪ বছর মেয়াদী ডিগ্রি কোর্সে ১২০ জন ছাত্রের জন্য ঢাকায় একটি প্রকৌশল কলেজ স্থাপন এবং স্কুলটিকে তৎকালীন পলাশী ব্যারাকে স্থানান্তর করে পুর, যন্ত্র, ও তড়িৎ কৌশলে ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্সে ৪৮০ জন ছাত্র ভর্তির সুপারিশ করেন। ১৯৪৭ সালের মে মাসে সরকার ঢাকায় একটি প্রকৌশল কলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন ও ছাত্র ভর্তির জন্য বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের শিবপুরস্থ বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও ঢাকায় আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে পরীক্ষা নেয়া হয়।[১০]

দেশবিভাগের পর

[সম্পাদনা]

১৯৪৭ এর দেশবিভাগের ফলে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের মুষ্টিমেয় কয়েকজন শিক্ষক ছাড়া বাকি শিক্ষকদের সবাই ভারতে চলে যান ও ভারত থেকে ৫ জন শিক্ষক এ স্কুলে যোগদান করেন। ১৯৪৭ এর আগস্ট মাসে এটিকে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রূপে উন্নীত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ হিসেবে।[] জনাব হাকিম আলী এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন।

১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান সরকার এই কলেজটিকে অনুমোদন দেন এবং এটি তখন পুরকৌশল, তড়িৎ প্রকৌশল, যন্ত্র প্রকৌশল, কেমিকৌশল, কৃষি প্রকৌশল ও টেক্সটাইল প্রকৌশল বিভাগে চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং পুরকৌশল, তড়িৎ প্রকৌশল ও যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগে তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা প্রদান করতে শুরু করে। তবে শেষ পর্যন্ত কৃষি ও টেক্সটাইলের পরিবর্তে ধাতব প্রকৌশল অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৫৬ সালে কলেজে সেমিস্টার প্রথা চালু হয় ও নতুন পাঠ্যক্রম অনুমোদিত হয়। ১৯৫৭ সালে ডিগ্রি কোর্সে আসন সংখ্যা ১২০ থেকে বাড়িয়ে ২৪০ করা হয়। ১৯৫৮ সালে কলেজ থেকে ডিপ্লোমা কোর্স বন্ধ করে দেয়া হয়।

এর মধ্যে ১৯৫১ সালে টি. এইচ. ম্যাথুম্যান এবং ১৯৫৪ সালে ড. এম. এ. রশিদ কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন। এসময়ে এগ্রিকালচারাল এন্ড মেকানিক্যাল কলেজ অব টেক্সাস (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) ও আহসানউল্লাহ কলেজের সাথে যৌথ ব্যবস্থাপনার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, ফলে ওখান থেকে অধ্যাপকগণ এদেশে এসে শিক্ষকতার মান, ল্যাবরেটরি ও পাঠ্যক্রম উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষকদের মানোন্নয়নের জন্য কিছু শিক্ষককে স্নাতকোত্তর পড়াশোনার জন্য টেক্সাস এ. এন্ড এম. কলেজে পাঠানো হয়। এসময় এশিয়া ফাউন্ডেশন লাইব্রেরিকে কিছু প্রয়োজনীয় বইপত্র দান করে এবং রেন্টাল লাইব্রেরি প্রথা চালু করা হয়। কলেজ থাকা অবস্থায় ছাত্রদের জন্য কেবল দুটি ছাত্রাবাস ছিলঃ মেইন হোস্টেল (বর্তমান ড. এম. এ. রশীদ ভবন) ও সাউথ হোস্টেল (বর্তমান নজরুল ইসলাম হল)

প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে

[সম্পাদনা]
ড. এম. এ. রশীদ ভবন

পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালের ১ জুন তারিখে এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করে নাম দেয়া হয় পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয় (East Pakistan University of Engineering and Technology, or EPUET)। তৎকালীন কারিগরি শিক্ষা পরিচালক ড. এম. এ. রশিদ প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত হন। অধ্যাপক এ. এম. আহমেদ প্রকৌশল অনুষদের প্রথম ডীন নিযুক্ত হন। খ্যাতনামা গণিতজ্ঞ এম. এ. জব্বার প্রথম রেজিস্ট্রার ও মমতাজউদ্দিন আহমেদ প্রথম কম্পট্রোলার নিযুক্ত হন। ড. এম. এ. রশিদের যোগ্য নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়টি দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়রূপে প্রতিষ্ঠিত হবার পরে ছাত্রদের জন্য তিনটি নতুন আবাসিক হল তৈরি করা হয়। অধ্যাপক কবিরউদ্দিন আহমেদ প্রথম ছাত্রকল্যাণ পরিচালক পদে নিযুক্ত হন। ১৯৬২ সালেই প্রথম স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদে স্থাপত্য বিভাগ গঠন করা হয়, এই বিভাগের জন্য টেক্সাস এ. এন্ড এম. কলেজের কয়েকজন শিক্ষক যোগদান করেন। এভাবে প্রকৌশল ও স্থাপত্য এই দুটি অনুষদে পুর, যন্ত্র, তড়িৎ, কেমি ও ধাতব প্রকৌশল এবং স্থাপত্য বিভাগ নিয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য ১৯৬৪ সালে আসন সংখ্যা ২৪০ থেকে ৩৬০ জনে বৃদ্ধি করা হয়। একই বছরে বর্তমান ৭ তলা পুরকৌশল ভবন নির্মাণ শুরু হয়। ১৯৬৯-৭০ সালে আসন সংখ্যা ৪২০ জনে উন্নীত হয়। এসময় স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদে ফিজিক্যাল প্ল্যানিং নামে একটি নতুন বিভাগ চালু হয়। এটিই পরবর্তীকালে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে পরিণত হয়েছে।

স্বাধীনতার পর

[সম্পাদনা]

১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরে এর নাম পরিবর্তন করে বর্তমানের নাম, অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় রাখা হয়।[] পরবর্তীতে ২০০৩ সালে এর নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

২০০০ পরবর্তী সময়

[সম্পাদনা]

আবরার ফাহাদ হত্যা ও রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ

[সম্পাদনা]

২০১৯ সালে, আবরার ফাহাদ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে বুয়েট ছাত্রলীগ কর্তৃক পিটিয়ে হত্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাইফুল ইসলাম ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি এবং রাজনৈতিক সংগঠন ও তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ক্যাম্পাসে শিক্ষক রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[১৩]

২০২৪ বুয়েট রাজনীতিবিরোধী আন্দোলন

[সম্পাদনা]

২০২৪ বুয়েট ছাত্রজনীতিবিরোধী প্রতিবাদ হলো বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি অনুপ্রবেশের চেষ্টার বিপক্ষে হওয়া প্রতিবাদ।[১৪][১৫][১৬]

২৮শে মার্চ
[সম্পাদনা]

২৮ তারিখ রাত ৩টার দিকে ছাত্রলীগের এর শখানেক কর্মী বুয়েটে প্রবেশ করে স্লোগান দিতে থাকে ও শোডাউন করে। তৎকালীন সময় গার্ডরা শিক্ষার্থীদের জানায় ছাত্র কল্যাণ অধিদপ্তরের প্রধানের অনুমতি নিয়েই তারা এসেছে। কর্মীরা হুমকি-ধামকি করে ও পরে চলে যায়।

২৮শে মার্চ রাতের দিকে ২০-ব্যাচ পরবর্তী দিনের পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয়। এর কিছুক্ষণ পরে ১৮-ব্যাচ ও অন্যান্য ব্যাচও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয়।

২৯শে মার্চ
[সম্পাদনা]

শুক্রবারে জুমার নামাজের পর আন্দোলন ডাকা হয়। আন্দোলন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮:৩০ পর্যন্ত চলে। আন্দোলন শুরুতে শহিদ মিনারের সামনে পরবর্তীতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে যায়। এসময় ছাত্ররাজনীতি বিরোধী স্লোগান দেওয়া হয় ও প্রশাসনের নীরব ভূমিকার বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা।

সন্ধ্যার দিকে ডিএসডাব্লিউ আসলেও শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দেখে ইফতারের পরে কথা বলার আশ্বাস দিয়ে চলে যায়। রাত ৮টার দিকে ভাইস-চ্যান্সেলর সত্য প্রসাদ মজুমদার, ছাত্র কল্যাণ অধিদপ্তরের(ডিএসডাব্লিউ) প্রধান মিজানুর রহমান ও অন্যান্য প্রশাসনিক ব্যক্তিরা আসে। ভাইস-চ্যান্সেলর প্রাপ্ত আবেদনপত্রে কারোর স্বাক্ষর নেই বলে অভিযোগ করে এবং রাজনীতি সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী বহিষ্কারের জন্য সময় চায়, শিক্ষার্থীরা এতে নাখোস হলে শিক্ষার্থীদের দায়িত্বে থাকা ডিএসডাব্লিউকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য তিনি সামনে ডাকেন। ভাইস-চ্যান্সেলর এর বক্তব্যের পরে যখন ছাত্র কল্যাণ অধিদপ্তরের প্রধান মিজানুর রহমান বক্তব্য দিতে দিতে বলে, "ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমার না", তখন শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠে। এতে তিনি ভঁড়কে যান ও বক্তব্য দ্রুত শেষ করে প্রশাসনিক ব্যক্তিদের নিয়ে চলে যান। পরবর্তী দিনের প্রতিবাদ সমাবেশ নিয়ে আলোচনা করে শিক্ষার্থীরা উক্ত দিনের আন্দোলন শেষ করে।

৩০শে মার্চ
[সম্পাদনা]

আগের দিনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এইদিন ২২-ব্যাচের পরীক্ষা সম্পূর্ণ বর্জন করা হয়। সকাল ৭টা থেকে বুয়েট শহিদ মিনারের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা।[১৭] এতে বুয়েট বাস ঢুকতে অপারগ হয়। শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে জমা হতে থাকে ও আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে

১০টার দিকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কেউ পরীক্ষা দিতে যায়নি। পরে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন।[১৮]

৩১শে মার্চ
[সম্পাদনা]

আগের রাতে ছাত্রলীগের হুমকির মুখে সংঘর্ষের আশঙ্কায় আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করা হয়।[১৯][২০] আগেরদিনের ঘোষণা অনুযায়ী ছাত্রলীগ শহিদ মিনার এলাকায় সমাবেশ করে। সভাপতি, সদ্য হল থেকে বহিষ্কৃত ইমতিয়াজ রাব্বিকে নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে জোড়পূর্বক ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনার ঘোষণা ও হুমকি দেয়।[২১][২২][২৩] এইদিন ২০ ব্যাচের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ১৪০০+ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুইজন(নিয়মিত শিক্ষার্থী একজন) শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে এসেছিল, যার মধ্যে একজন আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল।[২৪]

১টার দিকে বুয়েটে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট শতাধিক মানুষ ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে এসে প্রধান ফটকের সামনের শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দেয়, অতঃপর উক্ত এলাকা ত্যাগ করে।[২৫][২৬]

বিকাল ৫:১৫ এর দিকে পরিস্থিতি শান্ত হলে বুয়েট শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি প্রেস কনফারেন্স করা হয়। শিক্ষার্থীরা আবারো ক্যাম্পাসে সকল প্রকার রাজনৈতিক কার্যক্রমের বিরোধিতা নিয়ে বক্তব্য দেয়। অজানা নম্বর থেকে কল দিয়ে হুমকি, সামাজিক মাধ্যমে ক্যাম্পাসে এসে আক্রমণের হুমকির কথা তারা উল্লেখ করে।[২৭]

উপাচার্য

[সম্পাদনা]
  1. এম এ রশীদ (১ জুন ১৯৬২ - ১৬ মার্চ ১৯৭০)
  2. মোহাম্মদ আবু নাসের (১৬ মার্চ ১৯৭০ - ২৫ এপ্রিল ১৯৭৫)
  3. ওয়াহিদউদ্দিন আহমেদ (২৫ এপ্রিল ১৯৭৫ - ২৪ এপ্রিল ১৯৮৩)
  4. আব্দুল মতিন পাটোয়ারি (২৪ এপ্রিল ১৯৮৩ - ২৫ এপ্রিল ১৯৮৭)
  5. মুশারফ হোসেন খান (২৫ এপ্রিল ১৯৮৭ - ২৪ এপ্রিল ১৯৯১)
  6. মুহাম্মদ শাহজাহান (২৪ এপ্রিল ১৯৯১ - ২৭ নভেম্বর ১৯৯৬)
  7. ইকবাল মাহমুদ (২৭ নভেম্বর ১৯৯৬ - ১৪ অক্টোবর ১৯৯৮)
  8. নূরউদ্দিন আহমেদ (১৪ অক্টোবর ১৯৯৮ - ৩০ আগস্ট ২০০২)
  9. মোহাম্মদ আলী মুর্তুজা (৩০ আগস্ট ২০০২ - ২৯ আগস্ট ২০০৬)
  10. এ এম এম সফিউল্লাহ (৩০ আগস্ট ২০০৬ - ২৯ আগস্ট ২০১০)
  11. এস এম নজরুল ইসলাম (৩০ আগস্ট ২০১০ - ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪)
  12. খালেদা একরাম (১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ - ২৪ মে ২০১৬)
  13. সাইফুল ইসলাম (২২ জুন ২০১৬ - ২৩ জুন ২০২০)
  14. সত্য প্রসাদ মজুমদার[২৮] (২৫ জুন ২০২০ - ১৮ আগস্ট ২০২৪ )
  15. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান (১২ সেপ্টেম্বর - বর্তমান)

ক্যাম্পাস

[সম্পাদনা]
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ তোরণ

বুয়েট ক্যাম্পাস ঢাকার পলাশী এলাকায় অবস্থিত। বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ঢাকা মেডিকেল কলেজে একই নওয়াবের প্রদানকৃত জমির উপরে গড়ে উঠেছে বিধায় পাশাপাশি অবস্থিত। ক্যাম্পাসের পশ্চিম দিকে ইইই, সিএসই এবং বিএমই বিভাগের জন্য ১২ তলা ইসিই ভবন নির্মিত হয়েছে। তবে ক্যাম্পাসের মূল অংশে যন্ত্রকৌশল, পুরাকৌশল, আর্কিটেকচার, ইউআরপি ভবনসহ ড. রশিদ একাডেমিক ভবন উপস্থিত। শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলগুলো একাডেমিক ভবন থেকে হাঁটার দূরত্বে অবস্থিত। বর্তমানে ক্যাম্পাসের আয়তন হল ৭৬.৮৫ একর (৩১১,০০০ ব.মি.)।

অনুষদ এবং বিভাগ সমূহ

[সম্পাদনা]
বুয়েটের ইএমই ভবন
পুরকৌশল ভবন

বুয়েটে বর্তমানে ৬টি অনুষদের অধীনে ১৮টি বিভাগ রয়েছে।

বুয়েট ইসিই ভবন
বুয়েট আর্কিটেকচার ভবন
অনুষদের নাম বিভাগসমূহ সংক্ষিপ্ত নাম
কেমিক্যাল এন্ড ম্যাটেরিয়ালস কৌশল অনুষদ কেমিকৌশল বিভাগ Ch.E
বস্তু ও ধাতব কৌশল বিভাগ MME
ন্যানোম্যাটেরিয়ালস এন্ড সিরামিক কৌশল বিভাগ NCE
পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ কৌশল বিভাগ PMRE
বিজ্ঞান অনুষদ রসায়ন বিভাগ Chem
গণিত বিভাগ Math
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ Phys
পুরকৌশল অনুষদ পুরকৌশল বিভাগ CE
পানিসম্পদ কৌশল বিভাগ WRE
যন্ত্রকৌশল অনুষদ যন্ত্রকৌশল বিভাগ ME
নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগ NAME
ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন প্রকৌশল বিভাগ IPE
তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল অনুষদ তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ EEE
কম্পিউটার সায়েন্স ও প্রকৌশল বিভাগ CSE
বায়োম্যাডিকেল প্রকৌশল বিভাগ BME
স্থাপত্য এবং পরিকল্পনা অনুষদ স্থাপত্য বিভাগ Arch.
মানবিক বিভাগ Hum
নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ URP
মোট অনুষদ: ৬ টি মোট বিভাগ: ১৮ টি

ইনস্টিটিউটসমূহ

[সম্পাদনা]

জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্প্রসারণ এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বুয়েটে ৪টি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। এগুলো হলঃ

  • তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট (আইআইসিটি)
  • পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট (আইডব্লিউএফএম)
  • এপ্রোপ্রিয়েট টেকনোলজি ইনস্টিটিউট (আইএটি)
  • দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই)

অধিদপ্তর, কেন্দ্র এবং অন্যান্য

[সম্পাদনা]
  • উপদেষ্টা, সম্প্রসারণ ও গবেষণা সেবা অধিদপ্তর
  • ছাত্র কল্যাণ অধিদপ্তর
  • পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অধিদপ্তর
  • অব্যাহত শিক্ষা অধিদপ্তর
  • শক্তি অধ্যয়ন কেন্দ্র
  • পরিবেশ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র
  • বায়োমেডিকেল প্রকৌশল কেন্দ্র
  • গবেষণা, পরীক্ষা ও পরামর্শ ব্যুরো
  • আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ নেটওয়ার্ক কেন্দ্র
  • শহুরে নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক অফিস

আলোকবর্তিকা

[সম্পাদনা]

আলোকবর্তিকা ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের '১৪ ব্যাচের কতিপয় শিক্ষার্থী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি উন্মুক্ত গ্রন্থাগার। কোনো নিবন্ধন ছাড়াই যে কেউ এখান থেকে যেকোন বই নিতে পারবেন। তবে একটি বই নিলে তাকে গ্রন্থাগারে একটি বই দিতে হবে।[২৯] ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে মূল ক্যাম্পাসে আলোকবর্তিকার অপর একটি শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩০]

সংগঠনসমূহ

[সম্পাদনা]

ছাত্র সংগঠন

[সম্পাদনা]

অধ্যাদেশ ১৯৬২ অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে । আবরার ফাহাদ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে বুয়েট ছাত্রলীগ কর্তৃক পিটিয়ে হত্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাইফুল ইসলাম ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি এবং রাজনৈতিক সংগঠন ও তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ক্যাম্পাসে শিক্ষক রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[১৩]

বিজ্ঞান সংগঠন

[সম্পাদনা]
  • সত্যেন বোস বিজ্ঞান ক্লাব
  • বুয়েট নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ক্লাব
  • বুয়েট অটোমোবাইল ক্লাব
  • বুয়েট এনার্জি ক্লাব
  • বুয়েট রোবোটিক্স সোসাইটি
  • বুয়েট সাইবার সিকিউরিটি ক্লাব
  • টিম ইন্টারপ্ল্যানেটার
  • বুয়েট ইনোভেশন এন্ড ডিজাইনিং ক্লাব

শিল্প ও সাংস্কৃতিক সংগঠন

[সম্পাদনা]
  • বুয়েট ড্রামা সোসাইটি
  • বুয়েট ফিল্ম সোসাইটি
  • মূর্ছনা
  • ওরেগ্যামি ক্লাব
  • আলোকবর্তিকা-বুয়েট
  • বুয়েট সাহিত্য সংসদ
  • চারকোল- আরটিস্টা সোসাইটি
  • কণ্ঠ্যঃ বুয়েট
  • বুয়েট ফটোগ্রাফিক সোসাইটি

পরিবেশ সংঠন

[সম্পাদনা]
  • ইনভাইরনমেন্ট ওয়াচ

খেলাধুলা বিষয়ক সংঠন

[সম্পাদনা]
  • বুয়েট চেস ক্লাব

মানবহিতৈষী সংগঠন

[সম্পাদনা]
  • বাঁধন-বুয়েট জোন
  • বুয়েট রোভার স্কাউট

ক্যারিয়ার ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক সংগঠন

[সম্পাদনা]
  • বুয়েট ক্যারিয়ার ক্লাব
  • বুয়েট ডিবেটিং ক্লাব
  • বুয়েট এন্টারপ্রিনিউরশিপ ডেভেলপমেন্ট ক্লাব

অন্যান্য সংগঠন

[সম্পাদনা]
  • বুয়েট ব্রেনিয়াক্স
  • বুয়েট সাংবাদিক সমিতি
  • বুয়েট সেলফ ডিফেন্স ক্লাব
  • হাউজ অব ভলান্টিয়ারস- বুয়েট

স্থাপত্যসমূহ

[সম্পাদনা]
  • বুয়েট শহীদ মিনার
ভাষা শহিদদের স্মরণে বুয়েটের শহিদ মিনার
  • নিহত সাবেকুন্নাহার সনি স্মরণে ভাস্কর্য
  • নিহত আরিফ রায়হান দীপ স্মরণে স্মৃতিফলক

উল্লেখযোগ্য ছাত্র-ছাত্রী

[সম্পাদনা]

উল্লেখযোগ্য শিক্ষক

[সম্পাদনা]

সুযোগ-সুবিধাসমূহ

[সম্পাদনা]

মিলনায়তন

[সম্পাদনা]

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১০৩৬ আসনের একটি কেন্দ্রীয় মিলনায়তন কমপ্লেক্স রয়েছে। এতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রকসহ আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। এ কমপ্লেক্সে মিলনায়তন ছাড়াও ১৮৬ আসনের সেমিনার কক্ষ ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ক্যাফেটেরিয়া রয়েছে। এছাড়া পুরকৌশল ভবনের দোতলায় ২০০ আসনবিশিষ্ট আরেকটি সেমিনার কক্ষ আছে। শিক্ষা ও বিনোদনের জন্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য এতে ৩৫ ও ১৬ মি. মি. ফিল্ম প্রোজেক্টর রয়েছে।

লাইব্রেরি

[সম্পাদনা]

প্রায় ২০,০০০ বর্গফুট জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির চারতলা ভবনটি ক্যাম্পাসের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। লাইব্রেরিতে আধুনিক সকল সুবিধা রয়েছে। এখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে একসাথে প্রায় ২০০ জন ছাত্রের একসাথে পড়ার ব্যবস্থা আছে। বুয়েট লাইব্রেরিতে রেফারেন্স ও জার্নালের একটি বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। রিপোগ্রাফিক বিভাগ নামে একটি বিভাগ রয়েছে যাতে রেফারেন্স বই ফটোকপি করার ব্যবস্থা রয়েছে।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র

[সম্পাদনা]

বুয়েটে স্বাস্থ্য রক্ষার মৌলিক সুবিধাদি সংবলিত একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ( বুয়েট হেলথ কমপ্লেক্স) রয়েছে। রোগ নির্ণয়ে সহায়ক অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম, ই.সি.জি. মেশিন এবং আধুনিক স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাব আছে।

ব্যায়ামাগার

[সম্পাদনা]

বুয়েটের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ইনডোর গেম্‌স খেলার সুবিধার্থে বাস্কেটবল কোর্ট সংবলিত একটি সমৃদ্ধ ব্যায়ামাগার রয়েছে। এটি শেরে বাংলা হলের দক্ষিণে পাশে বিশাল জায়গা জুড়ে অবস্থিত।

ভার্চুয়াল ক্লাসরুম

[সম্পাদনা]

ই.সি.ই (ECE) ভবন এ ৭০৫ নম্বর রুমটি ভার্চুয়াল ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আই.আই.সি.টি এর তত্ত্বাবধানে এই ভার্চুয়াল ক্লাসরুমটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র এবং শিক্ষকগণ বিভিন্ন দূরবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিগনের সাথে ক্লাস শেয়ার এবং মেধার আদান প্রদান করতে পারেন। ভার্চুয়াল ক্লাসরুমটিতে আধুনিক সকল সুবিধা রয়েছে। এখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে একসাথে প্রায় ১০০ জন যে কোন ভার্চুয়াল সমাবেশ করতে পারবেন।

আবাসিক হল সমূহ

[সম্পাদনা]
তিতুমীর হলের আঙ্গিনা

বুয়েটে নয়টি ছাত্রাবাস রয়েছে। এর মধ্য থেকে আহসান উল্লাহ হল (উত্তর) শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য বরাদ্দ। শহীদ স্মৃতি হল তরুণ শিক্ষক এবং স্নাতকোত্তর ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত যাদের কোন প্রাতিষ্ঠানিক আবাসস্থল নেই। এছাড়াও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ১২ তলা ছাত্রী হল নির্মাণ প্রায় শেষের দিকে।

হলগুলো বিভিন্ন সময়ে তৈরি করা হয়েছে। একারণে বিভিন্ন হল বিভিন্ন স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন বহন করে। প্রতিটি হলের তত্ত্বাবধানে থাকেন প্রভোস্ট। সাধারণত সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্য থেকে প্রভোস্ট নির্বাচন করা হয়। প্রতিটি হলে তিনজন সহকারী প্রভোস্ট নিযুক্ত আছেন।

হলগুলোর বেশিরভাগই জাতীয় বীর ও নেতাদের স্মরণে নামকরণ করা হয়েছে। হলগুলো হল:[৩১]

হলের নাম বর্তমান প্রভোস্ট আসনসংখ্যা
আহসান উল্লাহ হল অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শাহজাহান মন্ডল ৩৬৪ (পশ্চিম)
২৩৭ (উত্তর)
তিতুমীর হল অধ্যাপক ড. জীবন পোদ্দার ৪৩৯
কাজী নজরুল ইসলাম হল অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম ৩২১
সাবেকুন নাহার সনি হল অধ্যাপক ড. উম্মে কুলসুম নাভেরা ৪৭৮
শের-এ-বাংলা হল অধ্যাপক ড. এ.কে.এম মঞ্জুর মোর্শেদ ৪২০
সোহরাওয়ার্দী হল অধ্যাপক ড. শেখ আনোয়ারুল ফাত্তাহ ৪৩৬
ড. এম. এ. রশীদ হল অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াছ ৪৬৮
শহীদ স্মৃতি হল অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম ২০৬
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল - -

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "বুয়েটের নতুন উপাচার্য" 
  2. "Bangladesh University of Engineering and Technology"www.topuniversities.com 
  3. "Bangladesh University of Engineering and Technology - World University Rankings - THE"www.timeshighereducation.com 
  4. "QS World University Rankings by Region 2023: Asia"www.topuniversities.com 
  5. "বুয়েটের ইতিহাস"। ২ এপ্রিল ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০০৭ 
  6. "বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)"কালের কণ্ঠ। ১০ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  7. Chowdhury, Harun; Alam, Firoz (২০১২-০৫-০১)। "Engineering education in Bangladesh – an indicator of economic development"European Journal of Engineering Education37 (2): 217–228। আইএসএসএন 0304-3797ডিওআই:10.1080/03043797.2012.666515 
  8. Hafiz, Roxana; Hoque, Md. Mazharul, সম্পাদকগণ (৩১ ডিসেম্বর ২০০৭)। "Celebrating 60 years of engineering education in Bangladesh (1947-2007)"বুয়েট প্রকাশনা। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২১ 
  9. Farzana, Mir; Fahmida, Nusrat (মে ২০১৯)। "HISTORICAL EDIFICES OF RAMNA: A PROSPECTIVE HERITAGE ROUTE IN URBAN DHAKA"Proceedings of the International Conference on Urban Form and Social Context: from Traditions to Newest Demands (ইংরেজি ভাষায়)। Siberian Federal University। আইএসবিএন 978-5-7638-4127-5। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২১ 
  10. মামুন, মুনতাসীর (ডিসেম্বর ১৯৯৬)। ঢাকা সমগ্র ২। সাহিত্যলোক, ৩২/৭ বিডন স্ট্রীট, কলিকাতা, ৭০০০০৬: নেপালচন্দ্র ঘোষ। পৃষ্ঠা সার্ভে স্কুল থেকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, পৃষ্ঠা– ২১৮ থেকে ২১৪। 
  11. Government of India, Dacca Survey School, Proceedings, Home Ed. - 144-146A, May-1904.
  12. "ঢাকা সমগ্র ২ - মুনতাসীর মামুন"Scribd (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-১০ 
  13. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৭ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০২০ 
  14. Report, Star Digital (২০২৪-০৩-৩০)। "Buet protest: What are the six demands of protesters?"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  15. "Buet protest: Ultimatum issued for expulsion of BCL leader, 5 others"The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০৩-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  16. "BUET students continue to protest for the second day"The Financial Express (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  17. "BUET situation heating up"New Age | The Most Popular Outspoken English Daily in Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  18. "বিক্ষোভে উত্তাল বুয়েট, শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম | BUET"প্রথম আলো 
  19. "Buet students continue protest for day 2 against BCL activities on campus"The Financial Express (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  20. Report, Star Digital (২০২৪-০৩-৩০)। "Buet protest: BCL announces counter-rally"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-১৬ 
  21. Correspondent, Dhaka University। "BUET students 'temporarily suspend' protest over Chhatra League gathering"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  22. "ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের 'প্রবেশ' নিয়ে উত্তপ্ত বুয়েট – DW – 31.03.2024"dw.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  23. "ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে থমথমে বুয়েট"বিবিসি বাংলা। ২০২৪-০৩-৩১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  24. Correspondent (২০২৪-০৩-৩১)। "BUET students have not started demonstration, but boycotting exam today"দৈনিক প্রথম আলো (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  25. "বুয়েটে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রবেশ | Buet Latest Update | Buet | Bangladesh Chatroleague"ইউটিউবপ্রথম আলো 
  26. "BCL stage another showdown on BUET campus amid student movement"New Age | The Most Popular Outspoken English Daily in Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  27. Correspondent (২০২৪-০৩-৩১)। "We're against Hizbut Tahrir, expel anyone with Shibir connection, say demonstrating BUET students"দৈনিক প্রথম আলো (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩১ 
  28. "বুয়েটের নতুন ভিসি সত্য প্রসাদ মজুমদার"বাংলানিউজ২৪। ২৫ জুন ২০২০। ২৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০২০ 
  29. "আলোকবর্তিকা: বুয়েটের একটি মুক্ত গ্রন্থাগার"ফিনটেক। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  30. "আলোকবর্তিকার আলোকযাত্রা"। দৈনিক প্রথম আলো। ২৫ নভেম্বর ২০১৮। 
  31. "ছাত্রপরিচালক দপ্তর"। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৩০, ২০০৭ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]