ব্রজেন দাস
ব্রজেন দাস | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১ জুন ১৯৯৮ | (বয়স ৭০)
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারতীয় (১৯২৭-১৯৪৭) পাকিস্তানি (১৯৪৭-১৯৭১) বাংলাদেশী (১৯৭১-১৯৯৮) |
শিক্ষা | বিএ[১] |
মাতৃশিক্ষায়তন | কেএল জুবিলি হাই স্কুল বিদ্যাসাগর কলেজ[১] |
পেশা | ক্রীড়াবিদ |
পুরস্কার | স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৯৯) |
ব্রজেন দাস (৯ ডিসেম্বর ১৯২৭ - ১ জুন ১৯৯৮) ছিলেন একজন বাঙালি সাঁতারু। তিনিই প্রথম দক্ষিণ এশীয় ব্যক্তি, যিনি সাঁতার কেটে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন। ১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট তিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করেন।
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]ব্রজেন দাসের জন্ম মুন্সীগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক বিক্রমপুর এলাকার সিরাজদিখান থানার কুচিয়ামোড়া গ্রামে। সেখানকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে ব্রজেন ঢাকার কে এল জুবিলি হাই স্কুল থেকে ১৯৪৬ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট ও বিএ পাস করেন। ছেলেবেলা থেকেই সাঁতারে তার দারুণ উৎসাহ ছিল। সাঁতারে হাতে খড়ি হয় ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে সাঁতার কেটে।
ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম
[সম্পাদনা]১৯৫৮ সালে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের সাঁতার প্রতিযোগিতায় মোট ২৩ টি দেশ অংশ নেয়। সেখানে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন ব্রজেন দাস। ১৯৫৮ সালের ১৮ই আগস্ট প্রায় মধ্যরাতে ফ্রান্সের তীর থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রচন্ড প্রতিকূল পরিবেশে সাঁতার কেটে পরদিন বিকেলবেলায় প্রথম সাঁতারু হিসেবে ইংল্যান্ড তীরে এসে পৌঁছান ব্রজেন দাস।
ব্রজেন দাস সর্বমোট ছ'বার ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন: ১৯৫৮, ১৯৫৯, ১৯৬০, ১৯৬১ সালে। ১৯৬১ সালে ১০ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে তিনি বিশ্বরেকর্ড গড়েন।
কৃতিত্ব
[সম্পাদনা]জাতীয় প্রতিযোগিতা
[সম্পাদনা]ব্রজেন দাস ১৯৫২ সালে পশ্চিমবঙ্গে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় ১০০, ২০০, ৪০০, ও ১৫০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারে তিনি ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল অবধি পর পর ৪ বছর চ্যাম্পিয়ন হন। এছাড়া তিনি ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান জাতীয় প্রতিযোগিতায় ১০০ ও ৪০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারের শিরোপা জেতেন। ১৯৫৬ সালে তিনি অলিম্পিক গেমসে পাকিস্তান সাঁতার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।
আন্তর্জাতিক
[সম্পাদনা]ব্রজেন দাস ১৯৫৮ সালের জুলাই মাসে ইতালির কাপ্রি দ্বীপ হতে নাপোলি পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার দূর পাল্লার সাঁতারে ৩য় স্থান অর্জন করেন। একই বছর আগস্ট মাসে তিনি ইংল্যান্ডে বিলি বাটলিনের চ্যানেল ক্রসিং প্রতিযোগিতায় ২৩টি দেশের ৩৯ জন সাঁতারুকে হারিয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন। পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৫৮ সালের আগস্ট মাসে ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ড পর্যন্ত ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন। সেপ্টেম্বরে তিনি ইংলিশ চ্যানেলকে ইংল্যান্ড হতে ফ্রান্সে সাঁতার কেটে পার হন। ১৯৬০ ও ১৯৬১ সালের আগস্টে তিনি ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ড সাঁতার কাটেন। ১৯৬১ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ডের মধ্যে ইংলিশ চ্যানেল সবচেয়ে কম সময়ে, মাত্র ১০ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে পার হয়ে তখনকার দিনের বিশ্বরেকর্ড স্থাপন করেন।
পুরস্কার
[সম্পাদনা]- ১৯৯৯: স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, বাংলাদেশ (মরণোত্তর)
- ১৯৭৬: জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার, বাংলাদেশ
- ১৯৬০: প্রাইড অফ পারফরম্যান্স, পাকিস্তান সরকার[২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ S M Mahfuzur Rahman। "Das, Brojen"। Banglapedia: The National Encyclopedia of Bangladesh, Asiatic Society of Bangladesh। ২০০৮-১০-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১১-২৬।
- ↑ "Pakistan Sports Board Awards: Swimming Retrieved 05 July 2010"। ৩ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৩।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- বাঙালি সাঁতারু
- ১৯২৭-এ জন্ম
- ১৯৯৮-এ মৃত্যু
- ক্রীড়ায় স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
- প্রাইড অব পারফরম্যান্স প্রাপক
- মুন্সীগঞ্জ জেলার ব্যক্তি
- বাংলাদেশী হিন্দু
- বাংলাদেশী পুরুষ সাঁতারু
- বিক্রমপুরের ব্যক্তি
- বিদ্যাসাগর কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ভারতে ক্যান্সারে মৃত্যু
- পাকিস্তানি পুরুষ সাঁতারু
- স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী