জুলফিকার আলি দেওবন্দি
দেওবন্দি আন্দোলন |
---|
সিরিজের অংশ |
জুলফিকার আলি দেওবন্দি (উর্দু : ذوالفقار علی دیوبندی) হলেন দারুল উলুম দেওবন্দের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা । প্রখ্যাত আলেম ও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রনায়ক মাহমুদ হাসান দেওবন্দি তার ছেলে।[১][২]
যুলফিকার আলী দেওবন্দি | |
---|---|
ذوالفقار علی دیوبندی | |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৮১৯ |
মৃত্যু | ১৯০৪ | (বয়স ৮৪–৮৫)
ধর্ম | ইসলাম |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারত |
উল্লেখযোগ্য কাজ | দারুল উলুম দেওবন্দ |
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]তিনি মামলুক আলী নানুতুবীর সাথে দিল্লী কলেজে পড়াশোনা করেন।[৩] স্নাতক শেষে তিনি দিল্লী কলেজের অধ্যাপক হন। এর কয়েক বছর পরে তিনি শিক্ষা বিভাগে উপ-পরিদর্শক হয়েছিলেন। অবসর পাওয়ার পর তিনি দেওবন্দে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট হন।[৪]
একজন ফরাসি লেখকের সাক্ষ্য
[সম্পাদনা]যুলফিকার আলী দেওবন্দী সম্পর্কে বিখ্যাত ফরাসী লেখক গারসান দুতাসী লিখেছেন,
তিনি দিল্লী কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং কয়েক বছরের জন্য তিনি বেরেলি কলেজের অধ্যাপক নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৮৫৭ সালে তিনি মীরাটের মাদ্রাসাগুলোর উপ-পরিদর্শক ছিলেন। মিস্টার টেলর তার সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তিনি তাহসিল আল-হিসাব নামে উর্দুতে একটি বইও লিখেছেন, যা ১৮৫২ সালে বেরেলি থেকে প্রকাশিত হয়েছিল।
— গারসান দুতাসী, [৫]
তেহরিক-এ-কিয়াম দারুল উলূম
[সম্পাদনা]১৮৫৭ সালে সিপাহি বিপ্লব সমগ্র ভারতকে, বিশেষত দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল, যেখান থেকে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল এবং শেষ হয়েছিল। বিপ্লব ব্যর্থ হলে সবাই নিজ দেশে ফিরে যেতে শুরু করে। দেওবন্দে মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবির শ্বশুর ছিলেন, তাই তিনি এখানে প্রায়শই আসতেন এবং থাকতেন। দেওবন্দের সৈয়দ মুহাম্মদ আবিদ (হাজী আবিদ হুসেন), ফজলুর রহমান উসমানী ও যুলফিকার আলী দেওবন্দীর সাথে নানুতুবির গভীর ও স্নেহময় সম্পর্ক ছিল। এই কয়েকজন মনীষী সেই সময় ইসলামি জ্ঞান পুনরুদ্ধার ও উম্মাহর দূরাবস্থার সমাধান খুঁজতে সচেষ্ট হন। তারা দিল্লির পরিবর্তে দেওবন্দে ইসলামি শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং তার সংস্কার করেন। পূর্বের রীতি ছিল আলেমদের রাজকোষ থেকে অর্থ সরবরাহ করা হত এবং তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হত। কিন্তু ব্রিটিশ যুগে এটি সম্ভব ছিল না, তারা ভারত ও মুসলমানদের মধ্যে শত্রুতার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। প্রয়োজনগুলি পূরণ করার জন্য কিন্তু সেই সময়ে রাষ্ট্রীয় সাহায্য নেওয়ার পক্ষে কোন যুুুক্তি ছিল না, কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠার দাবিটিও প্রবল ছিল। তাই এখন পূর্ববর্তী রীতিতে নির্ভর করার পরিবর্তে অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করার প্রয়োজন রয়েছে, দারুল উলুম দেওবন্দের মূলনীতি অর্থাৎ অষ্টক মূলনীতি থেকে এটি স্পষ্ট যে এই গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দৃষ্টিতে, পদ্ধতিটি ছিল জনসাধারণের অনুদান, যাতে সরকার বা সামন্ত প্রভুর কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যাতে এই শিক্ষাটি সরকারী প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়।[৬]
রচনা
[সম্পাদনা]অলঙ্কার শাস্ত্র ও আরবী সাহিত্যে তার পূর্ণ দক্ষতা ছিল। এ জন্য তার সম্পর্কে মাওলানা হাকীম আব্দুল হাই লিখেন, তিনি আরবী ভাষার কবি ছিলেন। তিনি আরবী সাহিত্যের সাথে সাথে ফারসী ও উর্দূ ভাষায়ও পূর্ণ দক্ষতা ছিল। তিনি এত ব্যস্ত থাকা সত্তেও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্বরণীয় কিতাব লিখেছেন।[৭]
- আল হাদিয়াতুস সানিয়্যাহ
- আর ইরশাদ
- তাযকিরাতুল বালাগ তাসহীলুদ দিরাসাহ
- আত তা’লীকাত
- তাসহীলুল বায়ান।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ History of Darul Uloom Deoband।
- ↑ http://www.darululoom-deoband.com/urdu/
- ↑ বিলাল আহমদ ওয়ানী। Contribution of Darul-‘Ulum Deoband to the Development of Tafsir (পিডিএফ)। কাশ্মির বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ১৪। ২৮ জুন ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০২০।
- ↑ উইলিয়াম ক্যাসলার জ্যাকসন। A Subcontinent's Sunni Schism: The Deobandi-Barelvi Rivalry and the Creation of Modern South Asia the Creation of Modern South Asia। surface.syr.edu। সিরাকিউজ বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ১৪৭। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০২০।
- ↑ تاریخ دار العلوم دیوبند جلد 1 صفحہ 124
- ↑ খন্ড ১। তারিখ এ দারুল উলুম দেওবন্দ। পৃষ্ঠা ১৫৭।
- ↑ ড. নওয়াজ দেওবন্দি। আকাবিরে দেওবন্দ : জীবন ও কর্ম। আনোয়ার লাইব্রেরি।