বিষয়বস্তুতে চলুন

মুহম্মাদের বক্ষ বিদারণ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বক্ষ বিদারণ বা শাক্কে সদর ইসলামী নবী মুহাম্মদের বক্ষ বিদীর্ণ করে হৃৎপিণ্ড (কলব) পরিষ্করণের ঘটনা, যা তার জীবনে দুইবার ঘটেছিল।

বিবরণ

[সম্পাদনা]

মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিতা আব্দুল্লাহ তাঁর জন্মের প্রায় ছয় মাস পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। তৎকালীন আরবের রীতি ছিল, তারা মরুভূমির মুক্ত আবহাওয়ায় বেড়ে উঠার মাধ্যমে সন্তানদের সুস্থ দেহ, সুঠাম গঠন এবং বিশুদ্ধ আরবিভাষী হওয়ার জন্য জন্মের পরপরই দুধ পান করানোর কাজে নিয়োজিত বেদুইন মহিলাদের কাছে দিয়ে দিতেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফেরত নিতেন। এই রীতি অনুসারে মুহাম্মাদকে ও হালিমা আস-সাদিয়া'র হাতে দিয়ে দেওয়া হয়। হালিমা ছিলেন বনি সা'দ গোত্রের। আর তৎকালীন আরব বনি সা'দ গোত্র ছিল সর্বাপেক্ষা বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জল আরবিভাষী। শিশুকে ঘরে আনার পর হালিমার সচ্ছলতা ফিরে আসে এবং তারা শিশুপুত্রকে সঠিকভাবে লালন-পালন করতে সমর্থ হন। তখনকার একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য: শিশু মুহাম্মাদ কেবল হালিমার একটি স্তন থেকেই দুধ পান করতেন এবং অপরটি তার অপর দুধভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। দুই বছর লালন-পালনের পর হালিমা শিশু মুহাম্মাদকে মা আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু এর পরপরই মক্কায় মহামারী দেখা দেয় এবং শিশু মুহাম্মাদকে পুনরায় হালিমার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। হালিমাও চাচ্ছিলেন শিশুটিকে ফিরে পেতে। এতে তার আশা পূর্ণ হল। ইসলামি বিশ্বাস মতে, এর কয়েকদিন পরই একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে -- একদিন শিশু নবির বুক চিরে কলিজার একটি অংশ বের করে তা জমজম কূপের পানিতে ধুয়ে আবার যথাস্থানে স্থাপন করে দেন ফেরেশতা জিবরাইল ও ফেরেশতা মিকাইল। এই ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে বক্ষ বিদারণের ঘটনা হিসেবে খ্যাত। এই ঘটনার পরই হালিমা মুহাম্মাদকে আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন।

কিছু বর্ণনা মেরাজে স্বর্গীয় আরোহণের পূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলিও লিপিবদ্ধ করে। কিছু পণ্ডিত বিশ্বাস করেন যে মুহাম্মদের বক্ষ খোলা ছিল একটি পরিষ্কার করার আচার যা মুহাম্মদকে স্বর্গে আরোহণের আগে শুদ্ধ করেছিল। জিবরাইল ও মিকাঈল কর্তৃক মুহাম্মদের বক্ষ উন্মুক্ত করা হয় এবং জমজমের পানি তার হৃদয়ে ঢেলে দেওয়া হয় যা তাকে জ্ঞান, বিশ্বাস এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য দিয়ে তাকে তার আরোহণে সহায়তা করে। পানীয়ের বিচারেও এই শুদ্ধিকরণ দেখা যায়। এটি কখন সংঘটিত হয়েছিল — আরোহণের আগে বা পরে — তবে যেভাবেই হোক তা মুহাম্মদের আধ্যাত্মিক ধার্মিকতা নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷