উমামা বিনতে আবিল আস
উমামা বিনতে আবিল আস | |
---|---|
أُمَامَة بِنْت أَبِي ٱلْعَاص | |
জন্ম | উমামা বিনতে আবিল আস |
মৃত্যু | ৬৭০ সিই (এএইচ ৫০) |
পরিচিতির কারণ | ইসলামের নবি ও রাসুল মুহাম্মদের নাতনি এবং ইমাম / খলিফা আলীর স্ত্রী হওয়া। |
দাম্পত্য সঙ্গী | আলী ইবনে ʾআবী ত়ালিব (বি. ৬৩২; মৃত্যু ৬৬১) আল-মুঘিরাহ ইবনে নওফল |
সন্তান | হিলাল ইবনে আলী 'আউন ইবনে আলী ইয়াহিয়া ইবনে মুঘিরাহ |
পিতা-মাতা |
|
আত্মীয় | আলী ইবনে আবি আল-আস (ভাই) খাদিজা (মাতামহ) রুকাইয়াহ (খালা) উম্মে কুলসুম (খালা) ফাতিমা (খালা) কাসিম (মামা) আব্দুল্লাহ(মামা) ইব্রাহিম (মামা) হাসান (সৎ ছেলে এবং খালাতো ভাই) হোসাইন (সৎ ছেলে এবং খালাতো ভাই) মুহসিন (সৎ ছেলে এবং খালাতো ভাই) উম্মে কুলসুম (সৎ মেয়ে এবং খালাতো বোন) জয়নব (সৎ মেয়ে এবং খালাতো বোন) আব্দুল্লাহ (খালাতো ভাই) |
পরিবার | বনু আবদ শামস (পিতৃ) নবী মুহম্মদের পরিবার (মাতৃ) |
উমামা বিনতে আবিল আস মুহাম্মাদ (স:)এর নাতনী ও সাহাবা ছিলেন। মুহাম্মাদ(স:) এর কন্যা জয়নব বিনতে মুহাম্মাদ এর কন্যা ছিলেন উমামা। পরবর্তী জীবনে আলীর স্ত্রী ছিলেন।
বংশ পরিচয়
[সম্পাদনা]উমামা বিনতে আবিল আস মুহাম্মাদ দৌহিত্রী ছিলেন। তার পিতার নাম আবুল আস ইবন রাবি এবং মাতা জয়নব বিনতে মুহাম্মাদ। এজন্য তাকে উমামা বিনতে জয়নব নামেও ডাকা হয় উমামা তার নানার জীবদ্দশায় মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তার নানী উম্মুল মুমিনীন খাদিজাতুল বিনতে খুওয়াইলিদ এবং দাদি খাদিজার ছোট বোন হালা বিনতে খুওয়ায়লিদ।
বাল্যকাল
[সম্পাদনা]নানা মুহাম্মাদ শিশু উমামাকে অত্যধিক স্নেহ করতেন। সব সময় তাকে সঙ্গে সঙ্গে রাখতেন। এমনকি নামাযের সময়ও সঙ্গে রাখতেন।
সাহাবা আবু কাতাদাহ আল আনসারী বলেন, একদিন বেলাল আযান দেওয়ার পর আমরা যোহর মতান্তরে আসরের নামাযের জন্য অপেক্ষায় আছি, এমন সময় মুহাম্মাদ উমামাকে কাঁধে বসিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থিত হলেন। মুহাম্মাদ নামাযে দাঁড়ালেন এবং আমরাও তাঁর পিছনে নামাযে দাঁড়িয়ে গেলাম। উমামা তখনও তার নানার কাঁধে একইভাবে বসা। মুহাম্মাদ রুকুতে যাবার সময় তাকে কাঁধ থেকে নামিয়ে মাটিতে রাখেন। রুকু-সিজদা শেষ করে যখন উঠে দাঁড়ালেন তখন আবার তাঁকে ধরে কাঁধের উপর উঠিয়ে নেন। প্রত্যেক রাকাআতে এমনটি করে তিনি নামায শেষ করেন। [১][২][৩][৪]
৮ম হিজরিতে উমামার মা এবং ১২ হিজরিতে পিতা ইন্তাকাল করেন।[৫]
মুহাম্মাদ এর ভালোবাসা
[সম্পাদনা]মুহাম্মাদ উমামাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। হাবশার সম্রাট কিছু স্বর্ণের অলঙ্কার উপহার হিসেবে পাঠান, যার মধ্যে একটি স্বর্ণের আংটিও ছিলো। মুহাম্মাদ সেটি উমামাকে দেন।[৬] এবং বলেন এটি এমন একজনকে দিয়েছি যে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয়।[৭][৮][৯][১০]
জীবনী
[সম্পাদনা]উমামার পিতা আবুল আস ইবন রাবি হিজরী ১২ সনে ইন্তাকাল করেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি তার মামাতো ভাই যুবাইর ইবনে আওয়ামের সাথে উমামার বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছার কথা বলে যান। এদিকে উমামার খালা, আলীর স্ত্রী ফাতিমা বিনতে মুহাম্মাদও ইন্তাকাল করেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি স্বামী আলীকে বলে যান,তার মৃত্যুর পরে তিনি যেন উমামাকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে সবারই ইচ্ছায় আলী ও উমামার বিয়ে সম্পন্ন হলো,তখন আলী ইবনে আবি তালিবের খিলাফতকাল চলমান। আলীর এই ঘরে কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করেনি।
হিজরী ৪০ সনে আলী আততায়ীর হাতে মারত্মক ভাবে আহত হন। এই আঘাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি স্ত্রী উমামাকে বলেন, আমার মৃত্যুর পরে তুমি মুগীরা ইবনে নাওফালকে বিয়ে করতে পার। এবং মুগীরাকেও উমামাকে বিয়ে করতে বলে যান।
আলী এও আশঙ্কা করেন যে, তার মৃত্যুর পর মুয়াবিয়া তার স্ত্রীকে বিবাহের প্রস্তাব পাঠাবে, এবং আলীর মৃত্যুর পর উমামার ইদ্দত পূরণ হওয়ার সাথে সাথেই বিবাহের প্রস্তাব পাঠান। তাই উমামা অতি সত্বর মুগীরা ইবনে নাওফালের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যান। এই বিয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন হাসান ইবনে আলী।[১১]
আল মুগীরা ইবনে নাওফাল ঘরে উমামা এক ছেলের মা হন এবং তার নাম রাখেন ইয়াহইয়া। এ জন্য আল মুগীরার ইবনে নাওফালের ডাকনাম হয় আবু ইয়াহইয়া।[৭][১২] তবে অনেকে বলেছেন, আল মুগীরার ঘরেও তিনি কোন সন্তানের মা হননি। তারা বলেন, মুহাম্মাদ কন্যাদের মধ্যে একমাত্র ফাতিমা ছাড়া আর কারো বংশধারা অব্যাহত নেই। তারা ধারণা করে আল মুগীরা ইবনে নাওফালঔরসে ইয়াহইয়া নামের এক সন্তানের জন্ম দেন, কিন্তু শিশু কালেই তার মৃত্যু হয়।[১৩][১৪]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]উমামা বিনতে আবিল আস আল মুগীরার স্ত্রী থাকা অবস্থায় মুয়াবিয়ার খিলাফতকালে তিনি ইন্তাকাল করেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ [সুনানু নাসাঈ-২/৪৫,৩/১০]।
- ↑ [তাবাকাত-৮/২৩২]।
- ↑ [আল ইসাবা-৪/২৩৬]।
- ↑ [হায়াতুস সাহাবা-২/৪৮২]।
- ↑ [তারাজিমু সায়্যিদাত বায়াতিন নুবুওয়াহ-৫৩৬-৫৩৭]।
- ↑ [নিসা‘মিন আসর আন-নুবুওয়াহ-২৮৯]।
- ↑ ক খ [আ‘লাম আন-নিসা-১/৭৭]।
- ↑ [দুররুস সাহাবা ফী মানাকিব আল-কারাবাহ ওয়াস সাহাবা-৫৩৫]।
- ↑ [আস-সীরাহ আল-হালাবিয়্যাহ-২/৪৫২]।
- ↑ [আল-ইসতী‘আব-৪/২৩৮; উসুদুল গাবা-৫/৪০০]।
- ↑ [আল-ইসাবা-৪/২৩৭]।
- ↑ [প্রাগুক্ত; উসুদুল গাবা-৫/৪০০]।
- ↑ [তারাজিমু সায়্যিদাতি বাতিন নুবুওয়াহ-৫৩৮]।
- ↑ [নিসা মিন আসর আন-নুবুওয়াহ-২৮০]।