বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ইসলাম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত পাকিস্তানে বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের আন্দোলন শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পর্যবসিত হয়, যা বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দেয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা উত্তর বামপন্থী ঘরনার বুদ্ধিজীবীরা তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ইসলাম ধর্মকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতিপক্ষ শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করে।[১] বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঐতিহাসিক দলিল সমূহ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এই যুদ্ধ ইসলামের বিপক্ষে ছিল না বরং ইসলামের মধ্যে এই যুদ্ধের ন্যায্যতা খোঁজা হয়েছে। এই যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কর্মকাণ্ডে একটি প্রধান অনুষঙ্গ ছিল ইসলাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরোক্ষ ঘোষণা শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ভাষণে তিনি ইসলামি অভিব্যক্তি প্রকাশক শব্দ ইনশাআল্লাহ বলে স্বাধীনতার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।[২] যুদ্ধ শেষে বিজয়লাভের পর বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি তার আনুষ্ঠানিক বেতার ভাষণে জনসাধারণকে আল্লাহর প্রতি শোকরিয়া জ্ঞাপন এবং আল্লাহর সাহায্য ও নির্দেশ কামনা করার উদাত্ত আহ্বান জানান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাধীনতার লক্ষ্য হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা নির্ধারণ করা হলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর যে সংবিধান রচিত হয়েছে তাতে এই তিন লক্ষ্যকে উপেক্ষা করে ধর্মনিরপেক্ষতা সহ চারটি মূলনীতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বাংলাদেশের তৎকালীন রাজনীতি সচেতন আলেমদের মধ্যে ১২%–১৪% স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন এবং ১৬%–১৮% স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করেন। ইসলামি দলগুলোর মধ্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেয়। বাকি দুইটা দল জামায়াতে ইসলামীনেজামে ইসলাম পার্টি স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করে। তবে পরবর্তীতে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতার দায় সব ধরনের ইসলামপন্থীদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, ইসলামকে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতিপক্ষ শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হয় এবং জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে স্বাধীনতা বিরোধী হিসেবে ইসলামি প্রতীক ব্যবহার করা হয়।[৩]

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করেছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকায় আওয়ামী লীগের আত্মপ্রকাশ ঘটে।[৪] আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সম্মেলনের মূল দাবিতে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব আল্লাহর প্রতিভূ হিসেবে জনগণের উপর ন্যস্ত রেখে তার গঠনতন্ত্রকে নীতিতে ইসলামি, গণতান্ত্রিক এবং আকারে প্রজাতান্ত্রিক ঠিক করা হয়।[৫] তাদের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের ১নং ধারায় বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্বের বন্ধন শক্তিশালী করার ধ্বনি উচ্চারিত হয়েছে। ১০নং ধারায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে জনগণের মধ্যে ইসলামের প্রকৃত জ্ঞান, তার উচ্চ নৈতিক শিক্ষা ও ধর্মীয় নীতিমালার বিস্তার করা।[৬] ১৯৫৪ সালের পূর্ববঙ্গ আইনসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত যুক্তফ্রন্টের ২১দফা কর্মসূচিতে কুরআন সুন্নাহর মৌলিক নীতির খেলাফ আইন প্রণয়ন করা হবে না এবং ইসলামি সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে নাগরিকদের জীবনধারণের ব্যবস্থা করাকে মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়।[৭] ১৯৫৫ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর পক্ষ থেকে সাংগঠনিক প্রচারপত্রের ১৭ ও ১৮ নং দাবিতে শরিয়তসম্মত কাজের প্রচারের জন্য প্রচার বিভাগ খোলা ও হারাম কাজ আইন করে বন্ধ করার দাবি উত্থাপন করা হয়।[৮] ১৯৬৯ সালে পাকিস্তানের সংবিধান সংশোধনী বিলে ইসলামি আদর্শকে বহাল রাখার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সম্মতি জ্ঞাপন করে।[৯] ১৯৭০ সালের ৬ জুন আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে যাতে কোনো আইন পাস হতে না পারে সেজন্য শাসনতান্ত্রিক বিধান রেখে দলীয় কর্মসূচি ঘোষিত হয়।[১০] ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাস না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।[১১] ১৯৭০ সালের নভেম্বরে বেতার ও টেলিভিশনের বক্তৃতায় শেখ মুজিবুর রহমান তার ইসলামের প্রতি বিশ্বাসের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।[১২] নির্বাচনে বিজয়ের পর ৩ জানুয়ারি রমনায় একটি সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমান সভা শেষে নিজেই নারায়ে তাকবির স্লোগান তোলেন।[১৩] নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের পর আওয়ামী লীগের সংবিধান কমিটির প্রণীত খসড়া সংবিধানের মূলনীতিতে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী আইন পাস না করা এবং কুরআন ও ইসলামিয়াত শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১৪] আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কর্মকাণ্ডে ইসলাম একটি প্রধান অনুষঙ্গ ছিল।[১৫] এর মধ্যে ৬ দফা দাবি, ১১ দফা কর্মসূচি সহ কোথাও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের কোনো ধরনের প্রস্তাব উত্থাপিত হয় নি, এর সপক্ষে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় নি।[১৬] স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ইসলামকে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের ভূমিকা পালনকারী হিসেবে উত্থাপন করেছে।[১৫]

যুদ্ধকালীন বক্তৃতা ও কার্যক্রম[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্ত করার শপথ নেওয়ার সময় তিনি ইসলামি অভিব্যক্তি প্রকাশক শব্দ ইনশাআল্লাহ উচ্চারণ করেন।[১৭] বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অস্থায়ী বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত ১৩টি অধিবেশন সম্প্রচারিত হয়। ২৬ মার্চ এই বেতার কেন্দ্রের প্রথম অধিবেশনে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়। একই দিন সন্ধ্যায় আব্দুস সালামের কন্ঠে কুরআন পাঠের মাধ্যমে দ্বিতীয় অধিবেশনের মূল কার্যক্রম শুরু হয়।[১৮] নাহমাদুহু ওয়ানুসাল্লীয়ালা রাসুলিহীল কারিম ও আসসালামু আলাইকুম বলে আব্দুস সালাম তার ভাষণ শুরু করেন। এটি ছিল ২৬ মার্চ যুদ্ধ ঘোষণার পর বেতারের প্রথম বেসামরিক ঘোষণা।[১৯] এই ঘোষণায় তিনি স্বাধীনতাহীন জীবনকে ইসলাম ধিক্কার দিয়েছে ও কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহতদের অমর উল্লেখ করে স্বাধীনতার পক্ষে ও পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলার সর্বস্তরের জনগণকে যার হাতে যা আছে তাই নিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। "নাছরুম মিনাল্লাহে ওয়া ফাতহুন কারিম। আল্লাহর সাহায্য ও জয় নিকটবর্তী।" বলে এই ভাষণ সমাপ্ত হয়।[২০] একই তারিখে কলকাতা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বক্তব্যে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য আল্লাহর রহমত ও সাহায্য প্রার্থনা করেন।[২১] বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন গঠিত অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার ১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে প্রথম নির্দেশনামা প্রদান করে, যা “স্বাধীন বাংলার সংগ্রামী জনগণের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনাবলি” শিরোনামে আল্লাহু আকবর দিয়ে শুরু হয় এবং শেষ হয় কুরআনের সূরা দুহার ৪ ও সূরা সাফের ১৩ আয়াতদ্বয় দিয়ে। এই নির্দেশনামায় সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখার কথা রয়েছে, আল্লাহর সৃষ্ট পৃথিবীতে আল্লাহর নির্দেশমতো সম্মানের সঙ্গে শান্তিতে সুখে বসবাস করার আকাঙ্খা রয়েছে।[২২] বাংলাদেশের জনসাধারণের চিন্তা, তাদের যাপিত জীবন, মনোভাব ও ধ্যান ধারণাকে বিবেচনা করে প্রদত্ত এই নির্দেশনামা বিশ্লেষণ করে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন,

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ৮নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার এম এ মঞ্জুর গেরিলা বাহিনীর নির্দেশাবলিতে খোদার উপর বিশ্বাস রেখে মরণপণ সংগ্রাম করার শপথ নেন।[২৪] ৬নং সেক্টরের কর্মতৎপরতায় যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের জন্য গায়েবানা জানাজা, কুরআন পাঠ, প্রার্থনা এবং অস্থায়ী মসজিদ নির্মাণ করে ইমাম নিয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়। যুদ্ধাদের মনোবল বাড়াতে এসব নির্দেশনার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।[২৫] বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনী শত্রুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে আল্লাহু আকবর রণধ্বনিও উচ্চারণ করত।[২৬] যুদ্ধ শেষে বিজয়লাভের পর বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি তার আনুষ্ঠানিক বেতার ভাষণে জনসাধারণকে আল্লাহর প্রতি শোকরিয়া জ্ঞাপন এবং আল্লাহর সাহায্য ও নির্দেশ কামনা করার উদাত্ত আহ্বান জানান।[২৭]

ইসলামপন্থীদের ভূমিকা[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনটি ইসলামপন্থী দলের মধ্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। জামায়াতে ইসলামী এবং নেজামে ইসলাম পার্টি স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও নেজামে ইসলাম পার্টি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল ছিল।[২৮] ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভের পর শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে বাংলাদেশের সকল আলেম একমত ছিলেন। এসব আলেমদের ৯০% ছিলেন রাজনীতি বিমুখ। যুদ্ধ শুরু হলে বাকি ১০% রাজনীতি সচেতন আলেমদের মধ্যে ৭০% নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। ১২%–১৪% স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন এবং ১৬%–১৮% স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করেন।[২৯] কওমি মাদ্রাসার তৎকালীন অরাজনৈতিক অংশটি রাজনীতি বিমুখ হলেও তাদের সহানুভূতির পাল্লা ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে।[৩০] শীর্ষ আলেমদের মধ্যে মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে রাজনৈতিক ও নৈতিক অবস্থান নেন। তিনি একে জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই বলে অভিহিত করেন।[৩১] যুদ্ধের প্রস্তুতিপর্বে আরেক শীর্ষ আলেম আজিজুল হকের সাথে বৈঠকের পর শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রশংসা করে একটি বিবৃতি দেন।[৩২] ২৫ মার্চ গণহত্যার পর যাত্রাবাড়ীলালবাগ সহ বড়ো মাদ্রাসাগুলো বন্ধ ঘোষণা করে ছাত্রদের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিতে উদ্ভুদ্ধ করা হয়েছিল।[৩২]

জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের নিখিল পাকিস্তান সভাপতি মুফতি মাহমুদের বক্তব্য সর্বদাই বাঙালি মুসলমানের পক্ষে ছিল।[৩২] ভারতের জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে।[৩৩] এটিকে তারা শোষকের বিরুদ্ধে শোষিতের প্রতিবাদ হিসেবে অভিহিত করে।[৩৪] জমিয়তের পক্ষ থেকে দিল্লিতে অবস্থিত পশ্চিম পাকিস্তানের সমর্থক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ঘেরাও করা হয়।[৩৫] জমিয়তের পক্ষ থেকে শরনার্থী শিবির ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়।[৩৬] যুদ্ধের পর সকল ধর্মভিত্তিক দল নিষিদ্ধ হলেও স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে অবদান রাখায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করা হয় নি।[৩৬] বাংলাদেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে ইন্দিরা গান্ধীর বিশেষ দূত হিসেবে বাংলাদেশে আসেন জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের সভাপতি আসআদ মাদানি। তিনি কাজী মুতাসিম বিল্লাহ সহ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় আলেমদের সাথে রাষ্ট্রপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ফলে ক্রমান্বয়ে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন বিধিনিষেধ উঠে যায়। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করেন।[৩৭] পাকিস্তানি আলেম তাকি উসমানি তার জাহানে দিদাহ গ্রন্থে পাকিস্তানি বাহিনীর সমালোচনা করে বলেছেন, তারা বাংলাদেশের মাটিতে কেয়ামত নামিয়েছিল।[৩৮]

জনপ্রিয় সংস্কৃতি[সম্পাদনা]

ইসলামপন্থীদের কিছু অংশ স্বাধীনতাযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে আর কেউ বিরোধিতা করে। পরবর্তীতে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতার দায় সব ধরনের ইসলামপন্থীদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়।[৩৯] অমুসলিম চাকমা রাজা ত্রিদিব রায়, বিশুদ্ধানন্দ মহাথেরা প্রমুখ স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করলেও কিছু ইসলামি দলের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতাকে খোদ ইসলাম ধর্মের বিরোধিতা হিসেবে প্রতিপন্ন করা হয়।[৩৯] সিনেমা, চিত্র, কার্টুনে ইসলামি প্রতীক দাঁড়ি টুপি পরা মানুষকে রাজাকার ও হত্যাকারীহিসেবে উপস্থাপন করা হয়। সিনেমা, নাটক, কবিতা, পোস্টার সর্বত্র মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী মানেই ইসলামি নানান চিহ্ন, প্রতীক আর পোশাকে একটি চরিত্র চিত্রণ সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়।[৪০] যদিও স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে যেসব রাজাকার ধৃত হয়েছিল তাদের বেশিরভাগের পরনে কোনো ইসলামি চিহ্ন ছিল না।[৪০]

ধর্মনিরপেক্ষতার উৎস[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করা হয়, যা ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়। এই ঘোষণাপত্রে স্বাধীনতার লক্ষ্য হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা নির্ধারণ করা হয়।[৪১][৪২] এই ঘোষণাপত্রের কোথাও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয় নি।[৪২] বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার উল্লেখ না থাকলেও বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর ৭২ সালে যে সংবিধান রচিত হয়েছে, তাতে ঘোষণাপত্রের তিন নীতিকে উপেক্ষা করে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্রবাঙালি জাতীয়তাবাদ নামে চার মূলনীতি গ্রহণ করা হয়।[৪১][৪২]

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা, সরকার গঠন ইত্যাদি উল্লেখ করে ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি চেয়ে ভারত সরকারকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। এই চিঠিতে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা গ্রহণের কোনো উল্লেখ ছিল না। ভারত সরকার এই চিঠিতে সাড়া না দেওয়ায় ১৫ অক্টোবর আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়। দ্বিতীয় চিঠিতে ভারত সাড়া না দেওয়ায় ২৩ নভেম্বর তৃতীয় চিঠি প্রেরণ করা হয়। তৃতীয় চিঠিতে প্রথমবারের মত ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এই চিঠিতে বলা হয়, "আমরা রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছি এবং তা হচ্ছে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও সমানাধিকারের সমাজ প্রতিষ্ঠা।"[৪৩]

এই চিঠির আগে কোথাও ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যবহার রাষ্ট্রীয় নথিপত্রে পাওয়া যায় না।[৪৪] রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা কে ঘোষণা দিয়েছে, তার কোনো সূত্র পাওয়া যায় না।[৪৫] ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৪ মূলনীতির উৎস সন্ধান করতে গিয়ে গবেষক পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, "স্বীকৃতি লাভের উদ্দেশ্যে ভারত সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কথা বলার ফল হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদের রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে গৃহীত হয়েছে।"[৪৫]

বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্র সচিব আবুল ফতেহ মনে করেন বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা একটি বাধ্যতামূলক নীতি হিসেবে ভারতীয় প্রভাব থেকে এসেছে।[৪৬]

সংশ্লিষ্ট গবেষণাকর্ম[সম্পাদনা]

আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে[সম্পাদনা]

আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে
প্রচ্ছদ
লেখকশাকের হোসাইন শিবলি
কাজের শিরোনামএকাত্তরের চেপে রাখা ইতিহাস: আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
ধরনগবেষণাগ্রন্থ
পটভূমিবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
প্রকাশিত২০০৮
প্রকাশকআল-এছহাক প্রকাশনী
মিডিয়া ধরনশক্তমলাট
পৃষ্ঠাসংখ্যা৯৫০
আইএসবিএন৯৮৪-৭০০৯৪-০০০৫-৬ {{ISBNT}} এ প্যারামিটার ত্রুটি: অবৈধ উপসর্গ
পরবর্তী বইএকুশের মাওলানারা 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আলেমদের অবদান নিয়ে লিখিত শাকের হোসাইন শিবলির এই বইটি ২০০৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। লেখক এই গ্রন্থে দেখিয়েছেন ইসলামি দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীনেজামে ইসলাম পার্টি স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করলেও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ছিল স্বাধীনতার পক্ষে এবং প্রচুর আলেম মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অবদান রেখেছেন।[৪৭]

মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে ইসলাম[সম্পাদনা]

মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে ইসলাম
প্রচ্ছদ
লেখকপিনাকী ভট্টাচার্য
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
ধরনগবেষণাগ্রন্থ
পটভূমিবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
প্রকাশকগার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স
প্রকাশনার তারিখ
১২ অক্টোবর ২০১৭
মিডিয়া ধরনশক্তমলাট
পৃষ্ঠাসংখ্যা১৪৪
আইএসবিএন৯৭৮-৯৮৪-৯২৯৫৯-৭-৬
ওয়েবসাইটpinakibhattacharya.com

বাংলাদেশি গবেষক পিনাকী ভট্টাচার্য এই বইটি রচনা করেন, যা ২০১৭ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। লেখক এই গ্রন্থে তথ্য-উপাত্ত এবং প্রামাণ্য দলিলের মাধ্যমে দেখিয়েছেন, ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয় নি বরং দেশভাগ থেকে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত প্রতিটি কাজের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ ছিল ইসলাম। তিনি চ্যালেঞ্জ করেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগ পর্যন্ত কোথাও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয় নি, যা স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সংবিধানে মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।[৪৮][৪৯]

মুক্তিযুদ্ধ ও জমিয়ত: জ্যোতির্ময় অধ্যায়[সম্পাদনা]

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনটি ইসলামপন্থী দলের মধ্যে একমাত্র জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এই যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। যুদ্ধে এই দলের ভূমিকা নিয়ে ২০২০ সালে মুক্তিযুদ্ধ ও জমিয়ত: জ্যোতির্ময় অধ্যায় রচনা করেন কবি মূসা আল হাফিজ।[৫০]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সেকেন্দার, মো. আবুসালেহ (২০ ডিসেম্বর ২০২০)। "ইসলাম প্রতিষ্ঠায় মুক্তিযুদ্ধ!"বাংলা ট্রিবিউন। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  2. খসরু, আতাউর রহমান (১৯ ডিসেম্বর ২০১৯)। "মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলাম"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  3. খালিদ হোসেন, আ ফ ম (২৮ ডিসেম্বর ২০২০)। "মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইসলামী মূল্যবোধ"দৈনিক নয়া দিগন্ত। ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  4. ইসলাম, সায়েদুল (২৩ জুন ২০১৯)। "আওয়ামী লীগের ৭১ বছর: যেভাবে জন্ম হয়েছিল দলটির"বিবিসি বাংলা। ২৭ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  5. উমর, বদরুদ্দীন (১৯৭০)। পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি১ম। কলিকাতা: আনন্দধারা প্রকাশন। পৃষ্ঠা ২৬২। ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  6. কবির, মফিজুল্লাহ; হাফিজুর রহমান, হাসান (২০১০)। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র১ম। বাংলাদেশ: হাক্কানী পাবলিশার্স। পৃষ্ঠা ১২১। 
  7. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ৩৭০, ১ম খণ্ড।
  8. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ৪১৮–৪২০, ১ম খণ্ড।
  9. আহমেদ, মওদুদ (২০১৬)। বাংলাদেশ : শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকাল। আলম, জগলুল কর্তৃক অনূদিত। বাংলাদেশ: দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড(ইউ পি এল)। পৃষ্ঠা ১২০, ১৬৫। আইএসবিএন 9789848815625 
  10. লেনিন, নূহ-উল-আলম, সম্পাদক (২০১৫)। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও নির্বাচিত দলিল। বাংলাদেশ: সময় প্রকাশন। পৃষ্ঠা ২৫৫–২৫৬। আইএসবিএন 9789849138839 
  11. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ৭৯৩, ২য় খণ্ড।
  12. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ১৬।
  13. ভট্টাচার্য, পিনাকী (২০২১)। মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে ইসলাম। বাংলাবাজার, ঢাকা: গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ১৭। আইএসবিএন 978-984-92959-7-6 
  14. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ৭৯৪, ২য় খণ্ড।
  15. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ২২।
  16. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ২০–২১।
  17. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ২৩।
  18. মাহবুবুল হক, মোহাম্মদ (২৮ আগস্ট ২০২১)। "কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা"দৈনিক প্রথম আলো। ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  19. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ২৭।
  20. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ১১, ৫ম খণ্ড।
  21. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ২৩২, ৪র্থ খণ্ড।
  22. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ১৬–১৮, ৩য় খণ্ড।
  23. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ৩০।
  24. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ৪৮৩, ১১শ খণ্ড।
  25. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ৬১৯, ১১শ খণ্ড।
  26. জামিল, শাফায়াত (২০১৬)। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য আগষ্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর। ঢাকা: সাহিত্য প্রকাশ। পৃষ্ঠা ৮৪–৮৬। আইএসবিএন 9844651441 
  27. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ৩১৪, ৩য় খণ্ড।
  28. শিবলি, শাকের হোসাইন (২০০৮)। (সাহসের সমাচার)আলেম মুক্তিযোদ্ধার খুঁজে। বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০: আল এছহাক প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ২৮। আইএসবিএন 984-70094-005-6। ২৮ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০২১ 
  29. তওফীকুর রহমান, তারেক মুহাম্মদ (২০০৭)। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলিম সমাজ : ভূমিকা ও প্রভাব (১৯৭২—২০০১)। ঢাকা: একাডেমিক প্রেস এন্ড পাবলিশার্স লাইব্রেরি। পৃষ্ঠা ২৩। আইএসবিএন 984080216X 
  30. তওফীকুর রহমান ২০০৭, পৃ. ৫১।
  31. আসলাম, আসিফ (১৬ মার্চ ২০১৮)। "বেশিরভাগ আলেম মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ছিলেন"যুগান্তর। ২৯ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০২১ 
  32. মবনু, সৈয়দ (২০১৮)। দ্রাবিড় বাংলার রাজনীতি (২য় সংস্করণ)। ঢাকা: নগর। পৃষ্ঠা ৯২–৯৪। আইএসবিএন 9847014200054 
  33. শিবলি, শাকের হোসাইন (২০১৩)। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের ভূমিকা। ঢাকা: আলেম মুক্তিযুদ্ধা প্রজন্ম। পৃষ্ঠা ১০। ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  34. শিবলি ২০১৩, পৃ. ৯।
  35. শিবলি ২০১৩, পৃ. ২২।
  36. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ৬১।
  37. আমির, তানজিল (২৩ মার্চ ২০১৮)। "মুক্তিযুদ্ধের এক বিদেশি বন্ধুর কথা"দৈনিক যুগান্তর। ৪ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  38. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ৬৮।
  39. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ৩৪।
  40. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ৩৬।
  41. ফরায়জী, শহীদুল্লাহ (১০ এপ্রিল ২০১৬)। "সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার"বাংলাদেশ প্রতিদিন। ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  42. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ৪৬।
  43. কবির ও হাফিজুর রহমান ২০১০, পৃ. ৮৬০, ৩য় খণ্ড।
  44. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ৪৯।
  45. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ৫০।
  46. ভট্টাচার্য ২০২১, পৃ. ৫৩।
  47. শাকিল, সালমান তারেক (১৫ ডিসেম্বর ২০১৬)। "যেমন আছেন আলেম মুক্তিযোদ্ধারা"বাংলা ট্রিবিউন। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  48. নজরুল, আসিফ (১৩ জুন ২০২১)। "পিনাকীর বইয়ে সমস্যা কোথায়?"আমাদের সময়.কম 
  49. হাসান, রাকিবুল (১৬ ডিসেম্বর ২০২০)। "মুক্তিযুদ্ধে ইসলামপ্রশ্ন, পিনাকী ভট্টাচার্যের অনুসন্ধান"ফাতেহ২৪.কম 
  50. "মুক্তিযুদ্ধে জমিয়তের ভূমিকাকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই"দৈনিক ইনকিলাব। ১৩ অক্টোবর ২০২০। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২