বাংলার স্থাপত্য
|
|
|
বাংলাদেশ ও ভারত এর পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গরাজ্যটি নিয়ে গঠিত বাংলা অঞ্চলটি হাজার বছরের বহুপ্রকার স্থাপত্যশৈলীযুক্ত পুরাকীর্তি ও স্থাপনায় সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল।
পাল সাম্রাজ্য
[সম্পাদনা]অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা অঞ্চলটি বৌদ্ধ রাজত্ব পাল সাম্রাজ্যর অধীনে ছিল। পালগণ 'পাল স্থাপত্যশিল্প' নামে বৌদ্ধস্থাপত্যের একটি স্বতন্ত্র ধারা প্রবর্তন করেছিলেন। পালদের উল্লেখযোগ্য কীর্তির মধ্যে সুবিস্তীর্ণ বিক্রমশীল বিহার, অদান্তপুরী বিহার ও জগদ্দল বিহার প্রধান। ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজীর বাহিনী এই প্রকাণ্ড স্থাপত্যগুলো ধ্বংস করে। ধর্মপাল কর্তৃক নির্মিত সোমপুর মহাবিহারটি ভারতীয় উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধবিহার এবং এই দর্শনীয় স্থানটিকে 'নয়নের আনন্দ' বলে বর্ণনা করা হয়। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, চীন, জাপান, তিব্বত প্রভৃতি স্থানে পাল স্থাপত্যরীতি অনুসৃত হয়। যথার্থভাবেই বাংলা ‘পূর্বের রানী’ নামে প্রসিদ্ধ হয়। ড. স্টেলা ক্র্যামরিসক বলেন "বিহার ও বাংলা অঞ্চলের শিল্পকলা; নেপাল, ব্রহ্মদেশ, শিলন ও যবদ্বীপ এ সুদূরপ্রসারী প্রভাব রেখেছে।[১]" ধীমান ও ভিত্তপাল দুজন প্রখ্যাত পাল স্থপতি। জে. সি. ফ্রেঞ্চ সোমপুর মহাবিহার নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন:[২]
আমরা মিশরের পিরামিড নিয়ে গবেষণায় প্রতি বছর মিলিয়ন ডলার ব্যয় করি। কিন্তু এর এক শতাংশ অর্থও সোমপুর মহাবিহার খননের কাজে ব্যয় করি না, কে জানে কী অসাধারণ আবিষ্কার হয়তো রয়েছে এর মাঝে।
বাংলার সমাধি স্থাপত্যরীতি
[সম্পাদনা]সমাধিসৌধ বলতে কবরের উপরের স্থাপনাকে বোঝায়। বর্তমানে বিদ্যমান সমাধিসৌধের সংখ্যা কম হলেও তাতে প্রচুর বৈচিত্র্য দেখা যায় এবং এতে ইসলাম ধর্মীয় রীতির প্রাসঙ্গিক সংযোজনও লক্ষিত হয়। হাদিস অনুযায়ী বিভিন্ন মুসলিম দেশে তাশিয়াৎ আল কুবুর চর্চা করা হয় অর্থাৎ কবরের মাটি চারপাশের মাটির সঙ্গে সমান করে দেওয়া হয়। তবুও বাংলায় কবরের ঊর্ধ্বস্থ স্থাপনা, ইষ্টক বা প্রস্তরনির্মিত কবরবিহীন স্মৃতিস্তম্ভ কিংবা স্থাপত্যশৈলীসমৃদ্ধ স্মৃতিসৌধ প্রভৃতি পরিলক্ষিত হয়। মুঘলপূর্ববর্তী ও মুঘল আমলের অবশেষগুলোর মধ্যে তিন শ্রেণির মানুষের সমাধি দেখতে পাওয়া যায়, এঁরা হলেন বিজয়ী বা মহৎ ব্যক্তি, সাধু-দরবেশ ও গাজী অর্থাৎ ধর্মযুদ্ধের বিজেতা। মাটিতে সমাহিত করাকে আরবি শব্দ কবর, কবরের উপর নির্মিত স্থাপনাকে বাংলা সমাধি এবং খুব সম্মানিত ব্যক্তির সমাধিকে ফারসি মাজার শব্দ দ্বারা অভিহিত করা হয়। সাধু-দরবেশ ও গাজীদের সমাধি কোন দরগার সন্নিহিত হলে সেটি একটি বিস্তৃত অর্থজ্ঞাপক দরগাহ নামে চিহ্নিত হয়। পবিত্র সমাধি অর্থে ফারসি ‘আস্তানা’ শব্দটি বাংলায় অপ্রচলিত। সমাধিস্থ শিলালিপিতে মকবর, তুর্বা, কবর, গুনবাদ, রওজা প্রভৃতি শব্দ পাওয়া যায়।
বাংলার সমাধিসমূহকে দুটি ধারাবাহিক ক্রমে বিন্যস্ত করা যায়- সুলতান বা প্রাক মুঘল পর্যায় এবং মুঘল পর্যায়।
সুলতান ও প্রাক মুঘল সমাধি
[সম্পাদনা]বাংলার অন্যান্য মুসলিম স্থাপনার ন্যায় প্রাক-মুঘল পর্যায়েও সমাধিনির্মাণে স্থানীয় বাংলা রীতি ও কৌশল এর চর্চা বেশি দেখা যায়[৩][৪]যদিও মুঘল সমাধিসমূহে মুঘল রীতির প্রভাব অধিক ছিল। ঐতিহাসিক ধারা বা সময়ক্রম অক্ষুণ্ন রেখে সমাধিগুলো সম্পর্কে জানা বেশ কঠিন, কেননা বর্তমানে টিকে থাকা অধিকাংশ সমাধিতে কোন শিলালিপি নেই যা থেকে মৃত্যুর তারিখ বা সমাধি নির্মাণের সময় জানা সম্ভব। স্থানীয়ভাবে যতটুকু জানা যায়, তা দিয়েই সমাধিক্ষেত্রগুলোর পরিচয় নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়, যদিও নির্মাণকৌশল আর স্থাপত্যরীতিও এবিষয়ে বেশ সহায়ক ভূমিকা রাখে।
বাংলার সমাধিক্ষেত্রগুলো আচ্ছাদনবিহীন মাটির কবর থেকে শুরু করে সুগঠিত সমাধিসৌধ পর্যন্ত দেখা যায়। বাংলায় কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাধকের সমাধি রয়েছে। সিলেটে শাহ জালাল (র) এবং পাকন্দুয়ায় আলাউল হক (র), নূর কুতুব আলাম (র) ও ছোট দরগাহ সমাধিসমূহ উন্মুক্ত স্থানে অবস্থিত এবং বিশ্বাস করা হয় যে ‘কেবল মৃতব্যক্তির সৎকর্মই তাকে সুরক্ষা ও ছায়া দিতে পারে’। মুন্সিগঞ্জের রামপালের বাবা আদম শহীদ (র) কে বাংলার প্রাচীনতম মুসলিম সাধক বলে মনে করা হয় যার সমাধিটিও কোন স্থাপনার আচ্ছাদনে নেই। প্রথমদিকের গাজীদের সমাধির মধ্যে ত্রিবেণীর জাফর খান এর সমাধিও উন্মুক্ত বা খোলা আকাশের নিচে। দুটি শিলালিপি ৬৯৮ হিজরি (১২৯৮ খ্রিষ্টাব্দ) ও ৭১৩ হিজরি(১৩১৩ খ্রিষ্টাব্দ) হতে সমাধিটি জাফর খানের বলে মনে হয়। এই সমাধিক্ষেত্রে পাথরের মেঝের উপর ছাদবিহীন দুটি বর্গাকার কক্ষ রয়েছে। এটি কেবল বাংলার প্রাচীনতম মুসলিম স্থাপনাই নয়, এটি পূর্বভারতের প্রাচীনতম টিকে থাকা স্থাপনা। সোনারগাঁর মোগরাপাড়ার পাঁচ পীরের মাজারের নিকট চমৎকার কারুকাজকৃত কালো ব্যাসল্ট পাথরের প্রস্তরসমাধিটি গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ (মৃত্যু:১৪১১ খ্রিষ্টাব্দ) এর সমাধি বলে জানা যায়। প্রস্তরসমাধির দুই পাশের কারুকাজ করা প্রদীপের কুলুঙ্গিগুলো গিয়াসউদ্দিনের পিতা সিকান্দার শাহ নির্মিত আদিনা মসজিদ(৭৭৬ হিজরি, ১৩৭৫-৭৬ খ্রিষ্টাব্দ) এর নির্মিতি মনে করিয়ে দেয়। এর সমাধিস্তম্ভের প্রতীকসমূহ ইরান এর মধ্যযুগীয় সমাধির ন্যায়। সিকান্দার (মৃত্যু ১৩৮৯ খ্রিষ্টাব্দ) কে নয়গম্বুজ বিশিষ্ট(বর্তমানে ভেঙে পড়েছে) বর্গাকার প্রকোষ্ঠে আদিনা মসজিদের পশ্চিম বহিঃপার্শ্বে সমাহিত করা হয়েছিল।
পোড়ামাটির মন্দির স্থাপত্যশৈলী
[সম্পাদনা]যদিও প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে বাংলায় জনবসতি স্থাপনের প্রচুর প্রমাণ রয়েছে[৫], তবুও দুঃখজনকভাবে স্থাপনাগত নিদর্শনের সংখ্যা খুবই কম। এর প্রধান কারণ মূলত বাংলার ভূমির গঠন।[৫] এখানের জনবসতি গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি প্রশস্তা নদীর বন্যাপ্রবণ পাললিক সমভূমি অঞ্চলে বিস্তার লাভ করেছে, যা অস্থিতিশীল ভৌগোলিক গঠন এবং যেখানে স্থাপনাসমূহ অবিকৃত থাকা খুবই কঠিন। বাংলার অসমতল এলাকা বলতে পূর্ব ও উত্তরে হিমালয়ের সেতুবন্ধে ছোটনাগপুর মালভূমি। বাংলার মন্দির নির্মাণকারীগণ, মন্দির নির্মাণের উপাদান নির্বাচনে বাংলার ভূপ্রকৃতির সাহায্য নিয়েছেন। অধিকাংশ মন্দির পোড়ামাটির তৈরী, যাতে বহির্দিকে পোড়ামাটির বিভিন্ন রকম অলঙ্করণ রয়েছে এবং নাগরী লিপিতে কিছু কথা লিপিবদ্ধ হয়েছে। গঙ্গা-বিধৌত বদ্বীপ অঞ্চল ও তরাই অঞ্চলের ভারি বৃষ্টিপাত বিবেচনা করে ছাদ বিশেষভাবে বাঁকা কাঠামোয় নির্মাণ করা হয়েছে যেন বৃষ্টির জল দ্রুত সরে যায় এবং ভবনের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পায়। গুপ্ত সাম্রাজ্য এর সময় থেকে শুরু করে কিছু স্থাপনাগত নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। চন্দ্রকেতুগড় ও মহাস্থানগড় এলাকায় সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত পোড়ামাটির ফলক, শুঙ্গ ও গুপ্ত আমলের স্থাপত্যরীতিতে নতুন সংযোজন। বাংলার স্থাপত্যকলায় পলবী ও ফমসন প্রভাব ছাড়াও ওড়িশা রাজ্যের ময়ুরভঞ্জ জেলার ভঞ্জ স্থাপত্যরীতির বেশ প্রভাব রয়েছে। তবে দক্ষিণবঙ্গের মন্দিরগুলোর ছাদ বা চূড়া সম্পূর্ণ পৃথক, যেগুলো গ্রামবাংলার গোলাঘরের ছাদের মত নির্মিত।[৬] পশ্চিমবঙ্গ এর বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে এমন বৈশিষ্ট্যের মল্ল রাজত্বে নির্মিত বেশ কয়েকটি মন্দির দেখা যায়। অধিকাংশ মন্দিরের বাইরের দিক সুদৃশ্য পোড়ামাটির ফলকে সজ্জিত যেখানে বিভিন্ন ধর্মনিরপেক্ষ বিষয়াবলি সেই সময়ের সমাজব্যবস্থার ছবি প্রতিফলিত করে।
মন্দির কাঠামো ‘চালা’ নামে পরিচিত ত্রিকোণাকার ছাদ দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে। আট পাশে কোণ করা পিরামিড আকৃতির ছাদ ‘আটচালা’ নামে পরিচিত, যা মূলত চালার আটটি দিক বোঝায়। সাধারণত মন্দিরসমূহে একের অধিক চূড়া দেখা যায়। দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়া অনুযায়ী ল্যাটেরাইট মাটি ও ইট দিয়ে এসব মন্দির নির্মাণ করা হয়। দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি ভঞ্জ রীতিতে নির্মিত মন্দিরের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ, তবে নদীতীরবর্তী অন্যান্য শিবমন্দিরগুলো ছোট আকারে দক্ষিণ বাংলার রীতিতে নির্মিত হয়েছে।
-
দক্ষিণ দিক থেকে কান্তজীউ মন্দির দিনাজপুর, বাংলাদেশ
-
আঁটপুর রাধাগোবিন্দজীউ মন্দির
-
চণ্ডীমণ্ডপ
-
মন্দিরে পোড়ামাটির শিল্পকর্ম, আঁটপুর
-
পুঠিয়া মন্দির চত্বর, রাজশাহী, বাংলাদেশ
-
পুরাতন মদনগোপাল জীউ মন্দির, সমতা
-
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের শিবমন্দির, চৌচালা ছাদ
সাধারণ বাংলো স্থাপত্যরীতি
[সম্পাদনা]ঐতিহাসিক বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি বা অবিভক্ত বাংলা অঞ্চলে ‘বাংলো’ স্থাপত্যের উদ্ভব ঘটে। [৭] বাংলো শব্দের মানে বাংলা; যদিও তা প্রায়োগিক অর্থে ‘বাংলা রীতিতে বানানো ঘর’ বোঝায়।[৮] ঐতিহ্যগতভাবে একতলা এসব বাড়ির আকৃতি ছোট ও পরস্পর বিচ্ছিন্ন এবং এতে প্রশস্ত বারান্দা থাকতো। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকগণ গ্রীষ্মকালীন অবকাশে হিমালয় ও ভারতীয় শহরের বাইরের এলাকায় থাকার জন্য বাংলো ব্যবহার করতেন।[৯] গ্রামবাংলায় ‘বাংলো’ রীতির ঘর আজও জনপ্রিয়। গ্রামাঞ্চলে এটি ‘বাংলা ঘর’ নামে পরিচিত। অধুনা বাংলো তৈরিতে ঢেউখেলানো স্টিল এর পাত ব্যবহৃত হয়। আগে এসব বাংলো মূলত কাঠ, বাঁশ ও খড় দ্বারা নির্মাণ করা হত। বাংলোর ছাদে খড় ব্যবহৃত হত, যা গরমের সময় ঘর ঠান্ডা রাখত। এছাড়া লাল কাদামাটির টালিও বাংলো ঘরের ছাউনিতে ব্যবহার করা হত।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- গজভিদালা
- ঢাকেশ্বরী মন্দির
- দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি
- কান্তনগর মন্দির
- হাজী শাহাবাজের মাজার ও মসজিদ
- ছোট সোনা মসজিদ
- বাঘা মসজিদ
- নয়াবাদ মসজিদ
- খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ
- ষাট গম্বুজ মসজিদ
- সাত গম্বুজ মসজিদ
- ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল
- ইসলামি স্থাপত্য
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Bernier, Ronald M. (১৯৯৭)। Himalayan architecture। Madison: Fairleigh Dickinson University Press। আইএসবিএন 0-8386-3602-0। ওসিএলসি 32893990।
- ↑ Sahai, Bhagwant; French, J. C. (১৯৮৩)। The art of the Pal Empire of Bengal (ইংরেজি ভাষায়)। Ramanand Vidya Bhawan। পৃষ্ঠা ৪।
- ↑ Harle, J. C. (James C.) (১৯৯৪)। The art and architecture of the Indian subcontinent (2nd ed সংস্করণ)। New Haven: Yale University Press। আইএসবিএন 0-300-06217-6। ওসিএলসি 31525046।
- ↑ Hasan, Perween; Grabar, Oleg (২০০৭-০৬-২৯)। Sultans and Mosques: The Early Muslim Architecture of Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। Bloomsbury Academic। আইএসবিএন 978-1-84511-381-0।
- ↑ ক খ "Temple Architecture of Eastern India"। Vedams Books। ২০০৭-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৭-২২।
- ↑ "Kamat's Potpourri: Temples of West Bengal"। www.kamat.com। ২০১৬-০৯-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৩।
- ↑ bungalow > common native dwelling in the Indian province of Bengal
- ↑ Oxford English Dictionary, "bungalow"; Online Etymology Dictionary
- ↑ Bartleby.com
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Alexander Cunningham, Archaeological Survey of India Report, Vol xv, Calcutta, 1882
- Abid Ali Khan, Memoirs of Gaur and Pandua, (Edited and revised by HE Stapleton), Calcutta, 1931
- Hakim Habibur Rahman, Asudgan-i-Dhaka (Urdu), Dhaka, 1946
- AH Dani, Muslim Architecture in Bengal, Dacca, 1961
- ZA Desai, Islamic Culture, 1972
- AH Dani, List of Ancient Monuments on Bengal, Calcutta, 1986
- Asma Serajuddin, 'Mughal Tombs in Dhaka', Dhaka: Past Present Future, (Ed by Sharif Uddin Ahmed), Dhaka, 1991.