একুশের মাওলানারা
লেখক | শাকের হোসাইন শিবলি |
---|---|
কাজের শিরোনাম | একুশের মাওলানারা: ভাষা আন্দোলনে ওলামায়ে কেরামের ভূমিকা, ইতিহাস ও দলিলপত্র |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
বিষয় | ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস |
ধরন | প্রামাণ্য গ্রন্থ |
পটভূমি | বাংলা ভাষা আন্দোলন |
প্রকাশিত | ২০২১ |
প্রকাশক | মাহফিল প্রকাশন |
মিডিয়া ধরন | মুদ্রিত গ্রন্থ (শক্তমলাট) |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ৭৭৬ |
আইএসবিএন | ৯৭৮-৯৮৪-৯০০৯৫-৪-২ |
পূর্ববর্তী বই | আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে |
একুশের মাওলানারা বাংলা ভাষা আন্দোলনে আলেমদের অবদান নিয়ে লিখিত শাকের হোসাইন শিবলির একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ। এটি ২০২১ সালে মোট দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়। এ গ্রন্থটির প্রথম খণ্ডে লেখক কয়েকজন আলেমের মাতৃভাষা বাংলার প্রতি অঙ্গীকার ও সাহিত্যচর্চা এবং সে হিসেবে মাতৃভাষাকে সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত করার আকাঙ্ক্ষা ও প্রয়াস তুলে ধরেছেন। দ্বিতীয় খণ্ডে এ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ও দুর্লভ দলিল দস্তাবেজ সংযোজন করেছেন। সাত শতাধিক পৃষ্ঠার এই গ্রন্থে ১৬৭টি উৎস গ্রন্থের বরাত দেওয়া হয়েছে।[১][২][৩]
বর্ণনা
[সম্পাদনা]এ গ্রন্থটির প্রথম খণ্ডে লেখক কয়েকজন আলেমের মাতৃভাষা বাংলার প্রতি অঙ্গীকার ও সাহিত্যচর্চা এবং সে হিসেবে মাতৃভাষাকে সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত করার আকাঙ্ক্ষা ও প্রয়াস তুলে ধরেছেন। এসব আলেমদের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ আকরম খাঁ, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, মওলানা ভাসানী, আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ, শামছুল হুদা পাঁচবাগী, অলিউর রহমান, শামছুল হক ফরিদপুরী, আতহার আলী, ছিদ্দিক আহমদ, সৈয়দ মুছলেহ উদ্দিন, ফরিদ আহমদ, মুহিউদ্দিন খান, মাওলানা আমীমী, ফজলুল হক নূরনগরী, আব্দুস সোবহান, আব্দুল মালিক, ইসহাক আল গাজী, আহমেদুর রহমান আজমীসহ ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা পালনকারী আরো ক'জন আলেম। এ খণ্ডে তিনি পরিশিষ্ট হিসেবে সংযোজন করেছেন সৈয়দ মুজতবা আলী, আবুল হাসান আলি নদভি, মাওলানা আখতার ফারূক, মুনীর চৌধুরী, মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নির্বাচিত রচনা ও বক্তৃতা এবং বাংলাদেশে বাংলাভাষা পরিস্থিতি নিয়ে দৈনিক প্রথম আলো কর্তৃক অনুষ্ঠিত গোল টেবিল বৈঠকের বিবরণ। মূল গ্রন্থের আগে শিবলি ‘মোদের গরব মোদের আশা আ মরি বাংলা ভাষা’ শিরোনামে জ্ঞানোদ্দীপক ও মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টিকারী একটি প্রবন্ধ লিখেছেন।[৪]
দ্বিতীয় খণ্ডে তিনি অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ও দুর্লভ দলিল দস্তাবেজ সংযোজন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ভাষা আন্দোলন: পটভূমি ও ঘটনাপ্রবাহ, পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্থপতি মোহাম্মদ আলি জিন্নাহর জাতীয় সংহতি সম্পর্কে বক্তব্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উদ্দেশ্যে জিন্নাহর ভাষণ, রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক জিন্নাহর কাছে প্রদত্ত স্মারকলিপি ও পূর্বপাকিস্তান থেকে জিন্নাহর বিদায়-পূর্বক ভাষণ। এ খণ্ডে আরো সংযোজিত হয়েছে জাতীয় পরিষদে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মিছিলে গুলিবর্ষণের ঘটনার উপর জাস্টিস এলিসের রিপোর্ট, উর্দু ও বাংলাকে সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির উল্লেখ, পাকিস্তান গণপরিষদের ভাষাসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মওলানা ভাসানীর বিবৃতি, বাংলা একাডেমির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকারের ভাষণ, রাষ্ট্রভাষা বাংলার সমর্থনে ও একুশে ফেব্রুয়ারির হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দুটি লিফলেট। এ খণ্ডে তিনি আরো যোগ করেছেন পশ্চিম পাকিস্তানি সাংবাদিকের ঢাকা সফরের অভিজ্ঞতার বিবরণ, ১৯৪৭ সালের ১০ ই মার্চ অনুষ্ঠিত বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সভায় সদস্য অমূল্য চন্দ্র অধিকারীর স্পিকারের কাছে আবেদন- “স্পীকার মহোদয়, আমি বাংলা বলতে চাই”, তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরিতে ভাষা আন্দোলন সংক্রান্ত বিভিন্ন উল্লেখ, একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদে তর্ক-বিতর্ক, ঊনপঞ্চাশ সালের ভাষা কমিটির প্রতিবেদন, মাহবুব উল আলম চৌধুরী ও আবদুল গাফফার চৌধুরীর কবিতা, পূর্ববাংলার ভাষা আন্দোলনের দলিলপত্র (১৯৪৮-১৯৫২) ইত্যাদি। গ্রন্থটি শেষ হয়েছে একটি সমৃদ্ধ সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি দিয়ে। গ্রন্থের শুরুতে তিনি ষোড়শ শতকের কবি সৈয়দ সুলতান ও সপ্তদশ শতকের কবি আবদুল হাকিম এবং আবুল মনসুর আহমদ ও গ্রন্থের শেষে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ও বশীর আল হেলাল থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন।[৪]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ খসরু, আতাউর রহমান (৪ ডিসেম্বর ২০২১)। "একুশের মাওলানারা: ভাষা আন্দোলনের নতুন বয়ান"। দৈনিক কালের কণ্ঠ।
- ↑ আল আজহারী, আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২)। "গ্রন্থ জগৎ: ভাষা আন্দোলনে ওলামায়েকেরাম"। দৈনিক যুগান্তর।
- ↑ মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ, মুনশি (১১ মার্চ ২০২২)। "একুশের মাওলানারা: ভাষা আন্দোলনের প্রামাণ্য ইতিহাস"। দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ।
- ↑ ক খ শিবলি, শাকের হোসাইন (২০২১)। একুশের মাওলানারা। বাংলাবাজার, ঢাকা-১০০০: মাহফিল প্রকাশন। পৃষ্ঠা ৯–১০। আইএসবিএন 978-984-90095-4-2।