মুহিব খান
জাগ্রত কবি মুহিব্বুর রহমান খান | |
---|---|
![]() ২০২১ সালে মুহিব খান | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | অক্টোবর ১৯৭৯ কিশোরগঞ্জ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
রাজনৈতিক দল | ন্যাশনাল মুভমেন্ট বাংলাদেশ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
পিতামাতা |
|
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
আন্দোলন | দেওবন্দি |
প্রধান আগ্রহ | |
উল্লেখযোগ্য কাজ | ইনকিলাবের নিবন্ধ সমূহ |
অন্য নাম | মুহিব খান |
দেওবন্দি আন্দোলন |
---|
সিরিজের অংশ |
![]() |
![]() |
মুহিব্বুর রহমান খান বা মুহিব খান (জন্ম: অক্টোবর ১৯৭৯) একজন বাংলাদেশি ইসলামি পণ্ডিত, কবি ও সংগীতশিল্পী। কবি হিসেবে তিনি বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম কুরআনের পূর্ণাঙ্গ কাব্যনুবাদ করেছেন।[১][২] তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা। ২০১৬ সালে তিনি বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল মুভমেন্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তার রচিত ইঞ্চি ইঞ্চি মাটি, কেন কেন সহ একাধিক সংগীত জনপ্রিয়তা পেয়েছে।[১]
জীবনী[সম্পাদনা]
মুহিব খান ১৯৭৯ সালের অক্টোবরে কিশোরগঞ্জ শহরের নূর মনযিলে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আতাউর রহমান খান সাংসদ ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব ছিলেন। কওমি মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস শেষ করে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক করেন। তিনি ‘সাপ্তাহিক লিখনী’র সাবেক নির্বাহী সম্পাদক। ২০০১ সালে তিনি লাল সাগরের ঢেউ নামে প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন। এছাড়াও প্রাণের আওয়াজ, অচিনকাব্য, বারোটি সুন্দর গল্প প্রভৃতি তার রচনা। ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাজধানীতে তিনি ন্যাশনাল মুভমেন্ট বাংলাদেশ গঠন করেন।[৩][৪]
কুরআনের কাব্যনুবাদ[সম্পাদনা]
২০০৪ সালের ১৯ মার্চ তিনি কুরআনের কাব্যনুবাদ শুরু করেন। বিক্ষিপ্তভাবে ১০০ দিন কাজ করে তিনি প্রথম ১০ পারা সমাপ্ত করেন যা ২০০৬ সালের জুলাই মাসে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। ২০০৬ এর পর থেকে ২০২০ পর্যন্ত ১৪ বছরে তিনি মাত্র পৌনে তিন পারার কাজ শেষ করেন। ২০২০ সালের করোনা মহামারীর সময়ে তিনি পুনরায় কুরআনের কাব্যনুবাদ শুরু করেন। ২০২০ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি বাকি ১৭ পারার কাজ শেষ করেন। কাব্যানুবাদে তিনি যেসব বিষয়ের প্রতি লক্ষ রেখেছেন তা হলো সুরা ও আয়াতের ধারাবাহিকতা রক্ষা, আবেগ বর্জন করে মূলের সর্বোচ্চ কাছাকাছি থাকা, যথাসম্ভব কুরআনের ছান্দসিক বাক্যরীতি অক্ষুণ্ন রাখা, ভাষা ও ছন্দের গুণগত মান রক্ষা করা।[১]
মুহিব খানের আগে কাজী নজরুল ইসলাম আমপারার কাব্যনুবাদ এবং কেউ কেউ কুরআনের নির্বাচিত সুরার নির্বাচিত আয়াতগুলোর কাব্যানুবাদ করলেও কুরআনের পরিপূর্ণ ও ধারাবাহিক কাব্যানুবাদের কৃতিত্ব মুহিব খানেরই প্রথম।[১]
সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]
তার সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে:
- লাল সাগরের ঢেউ
- মেঘে ঢাকা সুন্নাত
- তৃষ্ণা মেটে না মোর
- মুরাকাবা (আত্নদর্শনের তত্বরহস্য)
- অচিন কাব্য
- প্রাণের আওয়াজ
- প্রেম বিরহের মাঝে
- নতুন ঝড়
- পৃথিবীর পথে
- আমার গান
সমালোচনা[সম্পাদনা]
পোস্টার[সম্পাদনা]
২০১৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি অনুষ্ঠানকে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়, যেখানে মুহিব খানকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মুহিব খানের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী গান পরিবেশন ও পারিবারিকভাবে বিএনপি সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনলে অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়।[৫]
গণকমিশন রিপোর্ট[সম্পাদনা]
মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন কর্তৃক ২০২২ সালের একটি রিপোর্টে তার সম্পর্কে সমালোচনা করে বলা হয়, "হেফাজত নেতা মুহিব খান জিহাদী সংগীত, লেখালেখি, কবিতা ও অডিও-ভিডিওর মাধ্যমে যুব সমাজকে উগ্র জঙ্গিবাদের দিকে সর্বদা আহ্বান জানান। ইসলামি সঙ্গীত চর্চা ও ওয়াজের নামে যুব সমাজকে উগ্রতার দিকে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গানে গানে তৈরি করেছেন অগণিত উগ্রবাদী ভক্ত। বর্তমানে তিনি ‘জাগ্রত কবি মুহিব খান’ নামে অধিক পরিচিত।[৩]
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ ঘ খসরু, আতাউর রহমান (৪ অক্টোবর ২০২০)। "বাংলা ভাষায় পূর্ণাঙ্গ কোরআনের কাব্যানুবাদ"। দৈনিক কালের কণ্ঠ।
- ↑ "কাজী নজরুল ইসলাম ও তাঁর ইসলামি গজল"।
- ↑ ক খ শ্বেতপত্র: বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন। মহাখালী, ঢাকা-১২১২: মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন। ফেব্রুয়ারি ২০২২। পৃষ্ঠা ১০৭–১০৯।
- ↑ রুসাফী, মারুফ (২৮ মে ২০১৯)। "কবি মুহিব খান এবং আমার ভাবনা"। একুশে জার্নাল।
- ↑ "ছাত্রলীগের আলোচিত পোস্টারে বিতর্কিত অতিথি, অতঃপর..."। দৈনিক যুগান্তর। ২১ আগস্ট ২০১৯।