সতীশ চক্রবর্তী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সতীশ চক্রবর্তী
বিপ্লবী সতীশচন্দ্র চক্রবর্তী
জন্ম১৮৯১
মৃত্যু১৯৬৮
জাতীয়তাবাঙালি
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত
পরিচিতির কারণভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন
রাজনৈতিক দলযুগান্তর দল
পিতা-মাতাছত্রনাথ চক্রবর্তী(পিতা))

সতীশ চক্রবর্তী (১৮৯১-১৯৬৮) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী। তিনি ছিলেন একজন মহান বিপ্লবী সংগঠক, যার গ্রেপ্তারের জন্য ব্রিটিশ পুলিশ মোটা অঙ্কের পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।

জন্ম ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

সতীশের জন্ম খুলনা জেলার রাড়ুলী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তাঁর শৈশব অবস্থায় পিতা ছত্রনাথ মারা যান এবং তিনি তাঁর বড় ভাই বিপিনবিহারীর কাছে লালিত-পালিত হন। গ্রামের স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯১০) পাস করার পর তিনি দৌলতপুর কলেজ থেকে আই এ (১৯১২), পরে বহরমপুর কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি (১৯১৪) লাভ করেন। এরপর তিনি কলকাতায় চলে আসেন মাস্টার্স ও আইন পড়ার জন্য।

বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা[সম্পাদনা]

বহরমপুরে তিনি যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের (বাঘা যতীন) দলে যোগ দেন এবং তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার পরিচয় দেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বাঁকুড়া ও মেদিনীপুর জেলায় কর্মরত ছিলেন। ১৯১৪ সালে, তিনি কোমাগাতামারু শিখ যাত্রীদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন যা বজবজে পৌঁছেছিল; এবং হাওড়ার দেওয়ান সিংয়ের সহযোগিতায় গুরুদ্বার তাদের পাঞ্জাবে নিরাপদে যাওয়ার পথ নিশ্চিত করে।

বাঘা যতীনের মৃত্যুর পর (১৯১৫) তিনি আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে সংগঠনের দেখাশোনা করেন। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে তিনি পটাশিয়াম সায়ানাইড সেবন করেন; তিনি মারা যাননি কিন্তু এর প্রভাবে তার স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে।[১]

গ্রেফতার হওয়ার পর[সম্পাদনা]

১৮১৮ সালের বেঙ্গল রেগুলেশন-৩ এর আওতায় ১৯২৪ সালে গ্রেফতার হয়ে ১৯২৮ সাল পর্যন্ত মায়ানমারের বিভিন্ন জেলে আটক ছিলেন। তাকে সুভাষ চন্দ্র বসুর সাথে মান্দালয় কারাগারে রাখা হয়েছিল। আইন অমান্য আন্দোলন চলাকালীন, তিনি যোগাযোগের একটি স্বাধীন লাইন তৈরি করেছিলেন যা কংগ্রেসকে অবৈধ ঘোষণা করার পরে নেতাদের একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে সহায়তা করেছিল। ১৯৪৬ সালে তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি পশ্চিমবঙ্গে চলে যান এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মানুষের স্বার্থে কাজ করে যান।[২][৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. চিন্মোহন সেহানবীশ গণেশ ঘোষ ও অন্যান্য, মুক্তির সংগ্রামে ভারত, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, কলকাতা দ্বিতীয় সংস্করণ ডিসেম্বর ২০১০ পৃষ্ঠা ৫৬
  2. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৭৭৬, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  3. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গন, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ১৯৭।