সুজাউদ্দৌলা
শুজা-উদ-দৌলা | |
---|---|
![]() | |
৩য় উধের সুবেদার নবাব | |
শাসনকাল | ১৭৫৪ – ২৬ জানুয়ারি ১৭৭৫ |
{{{পূর্বসূরি}}} | সাফদার জং |
{{{উত্তরসুরি}}} | আসাফ-উদ-দৌলা |
জীবনসঙ্গী | বেগম আমানতুয যাহ্রা বানু "বাহু বেগম" |
Full name
জালালুদ্দিন হায়দার আবুল মানসুর খান সুজা-উদ-দৌলা | |
স্থানীয় নাম | شجاع الدولہ |
জন্ম | ১৯ জানুয়ারি ১৭৩২ দারা শিকোর অট্টালিকা, দিল্লী, মুঘল সাম্রাজ্য |
মৃত্যু | ২৬ জানুয়ারী ১৭৭৫ (বয়স ৪৩) ফাইজাবাদ, আওধ (বর্তমান উত্তর প্রদেশ, ভারত) |
কবরস্থান | গোলাব বাড়ী, ফায়জাবাদ |
পিতামাতা |
|
সুজা-উদ-দৌলা (হিন্দি: शुजा उद दौला, উর্দু: شجاع الدولہ) (জন্ম ১৯ জানুয়ারি ১৭৩২ – মৃত্যু জানুয়ারি ২৬, ১৭৭৫ ) ছিলেন আওধের সুবেদার নবাব। ১৭৫৪ সালের ৫ অক্টোবর থেকে ১৭৭৫ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি নবাব হিসেবে আসীন ছিলেন।[১]
সুজা-উদ-দৌলা ভারতের ইতিহাসে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে ভূমিকা রাখার কারণে অধিক পরিচিত। এগুলো হল পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ এবং বক্সারের যুদ্ধ। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে বিজয়ের ফলে মারাঠা শক্তির আধিপত্য খর্ব হয়। তিনি বক্সারের যুদ্ধে বাংলার নবাব মীর কাশিমের মিত্রপক্ষ ছিলেন তবে এই যুদ্ধে তারা পরাজিত হন।[২]
প্রথম জীবন[সম্পাদনা]
সুজা-উদ-দৌলা ছিলেন মুঘল প্রধান উজির সফদর জঙের সন্তান। বাল্যকাল থেকে তিনি অধিনস্তদের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সক্ষম ছিলেন যা তাকে সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের প্রধান উজির হতে সহায়তা করে। রঘুজি ভোসলে ও তার মারাঠারা বাংলায় হানা দিলে সুজা-উদ-দৌলা আলীবর্দী খানকে বিভিন্ন সময় সহায়তা করেছেন।
আওধের নবাব[সম্পাদনা]
সফদর জঙের মৃত্যুর পর সুজা-উদ-দৌলা মুঘল সম্রাট আহমেদ শাহ বাহাদুর কর্তৃক আওধের নবাব হিসেবে স্বীকৃত হন।
সুজা-উদ-দৌলার সাথে ইমাদ উল মুলকের রেষারেষি ছিল। সিকান্দারাবাদের যুদ্ধের পরে ইমাদ উল মুলকের প্রভাব শুরু হয়। তিনি সম্রাট আহমেদ শাহ বাহাদুরকে অন্ধ করে তার স্থলে দ্বিতীয় আলমগীরকে সিংহাসনে বসান। আহমেদ শাহ দুররানির সাথে শান্তিপূর্ণ সন্ধি ত্যাগ করতে অস্বীকার করায় দ্বিতীয় আলমগীর ও তার ছেলে আলি গওহর উভয়ে ইমাদ উল মুলকের হাতে নিগৃহিত হন। এছাড়াও তারা ইমাদ উল মুলককে মারাঠাদের সাথে তার সম্পর্কের কারণে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন।
মুঘল সাম্রাজ্যের প্রধান উজির[সম্পাদনা]
ষড়যন্ত্র টের পাওয়ার পর যুবরাজ আলি গওহর দিল্লি থেকে পালিয়ে যান। ষড়যন্ত্রের ফলে সম্রাট দ্বিতীয় আলমগীর নিহত হয়েছিলেন। সুজা-উদ-দৌলা এসময় আলি গওহরকে স্বাগত জানান ও সুরক্ষা দেন। আলি গওহর নিজেকে দ্বিতীয় শাহ আলম ঘোষণা দেন এবং সুজা-উদ-দৌলাকে সাম্রাজ্যের প্রধান উজির হিসেবে স্বীকৃতি দেন। তারা উভয়ে সদাশিবরাও ভাও কর্তৃক সিংহাসন লাভকারী তৃতীয় শাহজাহানের বিরুদ্ধে দাঁড়ান।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও মীর জাফরের কাছ থেকে মুঘল সাম্রজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় বাংলা দখল করে নেয়া জন্য দ্বিতীয় শাহ আলমকে পরামর্শ প্রদান করা হয়। সুজা-উদ-দৌলা, নাজিব-উদ-দৌলা ও মির্জা জওয়ান বখত আহমেদ শাহ দুররানির সাথে মিত্রতা গড়ে তোলেন। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে তারা আহমেদ শাহ দুররানিকে সহায়তা করেছিলেন।
পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ[সম্পাদনা]

মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আলমগীরের হত্যার কারণে দিল্লি থেকে পলায়নের পর আলি গওহরকে সুজা-উদ-দৌলা স্বাগত জানান। সুজা-উদ-দৌলা তাকে নিশ্চিত করেন যে তিনি ও নাজিব-উদ-দৌলা মারাঠাদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হবেন যদি আলি গওহর মুঘল সেনাবাহিনীকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে পরিচালিত করেন।[৩]
পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে সুজা-উদ-দৌলার পক্ষ নির্বাচন যুদ্ধের ফলাফলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি এই যুদ্ধে আহমেদ শাহ দুররানির পক্ষে যোগ দেন। মুঘল সাম্রাজ্যের প্রধান উজির হিসেবে তিনি বড় আকারের সেনাদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বক্সারের যুদ্ধ[সম্পাদনা]
সুজা-উদ-দৌলা বক্সারের যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। এই যুদ্ধে সুজা-উদ-দৌলা, দ্বিতীয় শাহ আলম ও মীর কাশিমের জোট বাহিনী ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাজিত হয়। ভারতের ইতিহাসে এই যুদ্ধ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।
এলাহাবাদের চুক্তি[সম্পাদনা]
সুজা-উদ-দৌলা পরে মারাঠাদের সহায়তায় ব্রিটিশদের সাথে লড়াই করেন। এতে তিনি পরাজিত হন। ১৭৬৫ সালের ১৬ আগস্ট তিনি এলাহাবাদের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন যাতে বলা হয় কোরা ও এলাহাবাদ জেলা দুটি কোম্পানির হাতে চলে যাবে এবং কোম্পানি আওধ থেকে ৫০ লক্ষ রুপি পাবে।[৪] ব্রিটিশরা আওধে মুক্ত বাণিজ্যের অধিকার পাবে এবং যুদ্ধের সময় পরস্পরকে সহায়তা করবে।
ব্রিটিশ নিরাপত্তার মূল্য এবং যুদ্ধের সহায়তা হিসেবে আওধ চুনার দুর্গ এবং এরপর বেনারস, গাজিপুর ও শেষপর্যন্ত এলাহাবাদের অধিকার ত্যাগ করে[২]।
দ্বিতীয় শাহ আলমের পুনরাবির্ভাব[সম্পাদনা]

আসাদপুরের যুদ্ধের পর সুজা-উদ-দৌলা এবং হাফিজ রহমত খান ১৭৭২ সালে মারাঠাদের দিল্লি থেকে বিতাড়িত করেন।
মৃত্যু ও দাফন[সম্পাদনা]
সুজা-উদ-দৌলা ১৭৭৫ সালের ২৬ জানুয়ারি আওধের রাজধানী ফৈজাবাদে মারা যান। এখানে তাকে দাফন করা হয়। তার মাজার গুলাব বাড়ি বলে পরিচিত।
পূর্বসূরী আবুল মনসুর মুহাম্মদ মুকিম খান |
আওধের সুবেদার নবাব ৫ অক্টোবর ১৭৫৪ – ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৭৬২ |
উত্তরসূরী পদ বিলুপ্ত |
পূর্বসূরী নতুন অফিস |
আওধের নবাব উজির আল মামালিক ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৭৬২ – ২৬ জানুয়ারি ১৭৭৫ |
উত্তরসূরী আসাফউদ্দৌলা |
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ Princely States of India
- ↑ ক খ "Shuja-ud-daula (1754-1775)"। ২৮ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১৫।
- ↑ http://books.google.com.pk/books?id=AQa2AAAAIAAJ&q=Shah+Alam+ii+an+shuja-ud-daula&dq=Shah+Alam+ii+an+shuja-ud-daula&hl=en&sa=X&ei=IR_3TtTeKc7o-gbZw4mbAQ&ved=0CDYQ6AEwAg
- ↑ Wikisource: Text of Allahabad Treaty