বিষয়বস্তুতে চলুন

জিমি কার্টার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Jimmy Carter থেকে পুনর্নির্দেশিত)
জিমি কার্টার
Jimmy Carter
প্রতিকৃতি জিমি কার্টার
৩৯তম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
২০ জানুয়ারী, ১৯৭৭  ২০ জানুয়ারী, ১৯৮১
উপরাষ্ট্রপতিওয়াল্টার মন্ডলে
পূর্বসূরীজেরাল্ড ফোর্ড
উত্তরসূরীরনাল্ড রেগান
৭৬তম জর্জিয়ার গভর্নর
কাজের মেয়াদ
১২ জানুয়ারি, ১৯৭১  ১৪ জানুয়ারি, ১৯৭৫
লেফটেন্যান্টলেস্টার ম্যাডক্স
পূর্বসূরীলেস্টার ম্যাডক্স
উত্তরসূরীজর্জ বুসবি
১৪তম জেলা জর্জিয়া রাজ্য সিনেটের সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৪ জানুয়ারি, ১৯৬৩  ১০ জানুয়ারি, ১৯৬৭
পূর্বসূরীজেলা প্রতিষ্ঠিত
উত্তরসূরীহিউ কার্টার
নির্বাচনী এলাকাসামার কাউন্টি
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মজেমস আর্ল কার্টার জুনিয়র
(১৯২৪-১০-০১)১ অক্টোবর ১৯২৪
প্লেইনস, জর্জিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যু২৯ ডিসেম্বর ২০২৪(2024-12-29) (বয়স ১০০)
প্লেইনস, জর্জিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
রাজনৈতিক দলডেমোক্রেটিক
দাম্পত্য সঙ্গীরোজ্যালেন স্মিথ (বি. ১৯৪৬)
সন্তান
আত্মীয়স্বজনজেমস আর্ল কার্টার সিনিয়র (পিতা)
বেসি গর্ডি (মা)
শিক্ষাজর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেভাল একাডেমি (বিএস)
বেসামরিক পুরস্কারনোবেল শান্তি পুরস্কার (২০০২)
আরও দেখুন
স্বাক্ষরকালিতে ক্রসইভ স্বাক্ষর
সামরিক পরিষেবা
আনুগত্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
শাখা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনী
কাজের মেয়াদ১৯৫৩–১৯৫৩ (সক্রিয়)
১৯৫৩–১৯৬১ (সংচিতি)
পদ লে
সামরিক পুরস্কার আমেরিকান ক্যাম্পেইন পদক
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিজয়ী পদক
চীন পরিষেবা পদক
জাতীয় প্রতিরক্ষা পরিষেবা পদক

জেমস আর্ল কার্টার জুনিয়র (১ অক্টোবর, ১৯২৪ – ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪) একজন মার্কিন রাজনীতিবিদ ও মানবহিতৈষী ছিলেন, যিনি ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ডেমোক্র্যাটিক দলের সদস্য কার্টার ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জর্জিয়ার ৭৬তম গভর্নর এবং ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত জর্জিয়া স্টেট সিনেটের সদস্য ছিলেন। তিনি মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং শতবর্ষ পূরণকারী প্রথম প্রেসিডেন্ট।

জর্জিয়ার প্লেইন্স শহরে জন্ম নেওয়া কার্টার ১৯৪৬ সালে নেভাল একাডেমি থেকে পাশ করে সাবমেরিনে চাকরি শুরু করেন। পরে বাবার চিনাবাদামের খামারে ফিরে আসেন। তিনি নাগরিক অধিকার আন্দোলনেও জড়িত ছিলেন। এরপর ধাপে ধাপে রাজ্য সিনেটর, গভর্নর হয়ে ১৯৭৬ সালে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য দৌড়ান। নিজ রাজ্য জর্জিয়ার বাইরে তখন তাকে তেমন কেউ চিনত না, তাই 'ডার্ক হর্স' বা অপ্রত্যাশিত প্রার্থী হিসাবেই ডেমোক্র্যাটিক দলের মনোনয়ন পান। আর সেবারের নির্বাচনে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে খুব কম ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট হন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্টার ভিয়েতনাম যুদ্ধে ড্রাফট এড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত সবাইকে ক্ষমা করেন এবং ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি, পানামা খাল চুক্তি, স্ট্র্যাটেজিক আর্মস লিমিটেশন টকসের (স্যাল্ট-২) দ্বিতীয় দফা আলোচনার মতো বড় বড় বৈদেশিক নীতি চুক্তি সম্পন্ন করেন। এছাড়াও চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি জ্বালানি সাশ্রয়, মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও নতুন প্রযুক্তিসহ একটি জাতীয় জ্বালানি নীতি প্রণয়ন করেন। শক্তিমন্ত্রণালয় ও শিক্ষামন্ত্রণালয় গঠনের আইনে তিনি স্বাক্ষর করেন। তার শাসনামলের শেষ দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের আফগানিস্তান আক্রমণ (যার ফলে ডিটেন্ট নীতির সমাপ্তি ও ১৯৮০ সালের অলিম্পিক বয়কট ঘটে) এবং ইরানি বিপ্লবের প্রভাব (ইরান দূর্গন্ধমোচন সঙ্কট ও ১৯৭৯ সালের তেল সঙ্কটসহ) সহ বেশ কয়েকটি বৈদেশিক নীতি সংকট দেখা দেয়। কার্টার ১৯৮০ সালে পুনর্নির্বাচনে লড়েন, সিনেটর টেড কেনেডির প্রাইমারি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেন, কিন্তু রিপাবলিকান প্রার্থী রোনাল্ড রেগানের কাছে হেরে যান।

ইতিহাসবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের জরিপে কার্টারের প্রেসিডেন্সিকে গড়ের নিচে স্থান দেওয়া হয়। তবে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের সময়কাল— যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম—কে অনেক বেশি ইতিবাচকভাবে দেখা হয়। প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষে কার্টার মানবাধিকার উন্নয়নের লক্ষ্যে কার্টার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন, যা তাকে ২০০২ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার এনে দেয়। শান্তি আলোচনা পরিচালনা, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ এবং উপেক্ষিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ নির্মূলে তিনি ব্যাপক ভ্রমণ করেন। গিনি কৃমি নির্মূলে তিনি প্রধান অবদানকারী হয়ে ওঠেন। অলাভজনক আবাসন সংস্থা হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটিতে কার্টার ছিলেন এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি রাজনৈতিক স্মৃতিকথা ও অন্যান্য বই, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব নিয়ে মন্তব্য এবং কবিতাও লিখেছেন।

ইতিহাসবিদ বা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা সাধারণত তার প্রেসিডেন্ট থাকার সময়টাকে 'গড়পড়তা' বা তার চেয়ে একটু নিচেই রাখেন। তবে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের সময়কাল— যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম—কে অনেক বেশি ইতিবাচকভাবে দেখা হয়। প্রেসিডেন্সি ছাড়ার পর তিনি 'কার্টার সেন্টার' প্রতিষ্ঠা করেন মানবাধিকার আর শান্তির কাজে। এই অসামান্য কাজের জন্য ২০০২ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। শান্তি আলোচনা থেকে শুরু করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ, আর বিশেষ করে গিনি কৃমির মতো উপেক্ষিত রোগ নির্মূলে তিনি সারা বিশ্বে ছুটে বেরিয়েছেন। গরিবদের বাড়ি বানানোর সংস্থা 'হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটি' তে তিনি নিজে হাতুড়ি-বাটাল হাতে কাজ করতেন, হয়ে উঠেছিলেন এরই এক প্রাণপুরুষ। এর পাশাপাশি তিনি রাজনৈতিক স্মৃতিকথা, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন নিয়ে লেখালেখি আর কবিতাও লিখেছেন।

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

প্রারম্ভিক জীবনে জিমি কার্টার ছিলেন একজন চীনাবাদাম বিক্রেতা। তিনি তার বাড়িতে চীনাবাদামের চাষ করতেন। পরবর্তী জীবনে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম রাষ্ট্রপতি হন।

জর্জিয়ার সমভূমিতে কার্টার পরিবারের দোকান (কার্টারের বয়হুড ফার্মের অংশ)

রাষ্ট্রপতিকাল

[সম্পাদনা]

তার রাষ্ট্রপতিকালে ইরান জিম্মি সংকট তৈরী হয়। সেসময় এটি শিরোনামে চলে আসে। ফলে ১৯৮০ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী রোনাল্ড রেগন-এর কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিন ইতিহাসে প্রথমবার কোনো ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতির নির্বাচনী পরাজয় ঘটে।

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

কার্টার ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর, জর্জিয়ার প্লেইনসে নিজ বাড়িতে ১০০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তার পুত্র, তৃতীয় জেমস ই. কার্টার দুপুরে তার মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ করেন।[]

পুরস্কার ও সম্মাননা

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Jimmy Carter, 39th president and Nobel Peace Prize winner, dies at 100, his son says"Washington Post (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]