হেনরি কিসিঞ্জার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হেনরি কিসিঞ্জার
৫৬তম মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩ – ২০ জানুয়ারি, ১৯৭৭
রাষ্ট্রপতিরিচার্ড নিক্সন
জেরাল্ড ফোর্ড
ডেপুটিকেনেথ রাস
রবার্ট এস. ইঙ্গারসোল
চার্লস ডব্লিউ. রবিনসন
পূর্বসূরীউইলিয়াম পি. রজার্স
উত্তরসূরীসাইরাস ভ্যান্স
৮ম মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক
কাজের মেয়াদ
২০ জানুয়ারি, ১৯৬৯ – ৩ নভেম্বর, ১৯৭৫
রাষ্ট্রপতিরিচার্ড নিক্সন
জেরাল্ড ফোর্ড
পূর্বসূরীওয়াল্ট রোসটো
উত্তরসূরীব্রেন্ট স্কোক্রফট
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মহেইঞ্জ আলফ্রেড কিসিঞ্জার
(1923-05-27) মে ২৭, ১৯২৩ (বয়স ১০০)
ফ্যুর্থ, বাভারিয়া, জার্মানি[১]
মৃত্যু২৯ নভেম্বর ২০২৩(2023-11-29) (বয়স ১০০)
কেন্ট, কানেকটিকাট
রাজনৈতিক দলরিপাবলিকান
দাম্পত্য সঙ্গীঅ্যান ফ্লেইশার (১৯৪৯-৬৪)
ন্যান্সি ম্যাগিনেস (১৯৭৪ থেকে বর্তমান)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীসিটি কলেজ অব নিউইয়র্ক
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়
জীবিকাকূটনীতিবিদ, রাজনৈতিক বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী
স্বাক্ষর
সামরিক পরিষেবা
শাখামার্কিন সামরিক বাহিনী
পদসার্জেন্ট
ইউনিট৯৭০তম কাউন্টার ইন্টিলিজ্যান্স কোর

হেনরি কিসিঞ্জার KCMG (ইংরেজি: Henry Kissinger; /ˈkɪsɪnər/; জার্মান: Heinz Alfred Kissinger; জন্মঃ ২৭ মে, ১৯২৩ - মৃত্যুঃ ২৯ নভেম্বর, ২০২৩) ছিলেন জার্মান-বংশোদ্ভূত আমেরিকান যুদ্ধাপরাধী, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক বিজ্ঞানী, কূটনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী।[২] তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এবং প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড সরকারদ্বয়ের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মেয়াদ শেষ হলেও অনেক প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে তার মতবাদ সম্পর্কে বক্তব্য প্রদান করতে দেখা গিয়েছিল।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

কিসিঞ্জার (হেইঞ্জ আলফ্রেড কিসিঞ্জার) ১৯২৩ সালের ২৭ মে জার্মানির বাভারিয়ার ফার্থে (Fürth, Bavaria, Germany) জন্মগ্রহণ করেছিলেন । তিনি গৃহকর্মী পাওলা (১৯০১-১৯৯৮), এবং স্কুল শিক্ষক লুই কিসিঞ্জার (১৮৮৭-১৯৮২) এর একমাত্র সন্তান। তার একমাত্র ছোট ভাই, ওয়াল্টার (১৯২৪-২০২১) একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। কিসিঞ্জারের পরিবার ছিল জার্মান-ইহুদি। তার প্রপিতামহ, মেয়ের লোব (Meyer Löb) ১৮১৭ সালে "কিসিঞ্জার"কে তার উপাধি হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন, এটি ব্যাভারিয়ান স্পা শহরের 'ব্যাড কিসিঞ্জেন' থেকে নিয়েছিলেন। শৈশবে কিসিঞ্জার ফুটবল খেলতেন । তিনি SpVgg Fürth এর যুব দলের হয়ে খেলেন, যেটি সেই সময়ে দেশের অন্যতম সেরা ক্লাব ছিল।

২০২২ সালের একটি সাক্ষাৎকারে কিসিঞ্জার বলেন, তার খুবই স্পষ্টভাবে মনে আছে যখন ১৯৩৩ সালে এডলফ হিটলার জার্মানির চ্যান্সেলর হিসাবে নির্বাচিত হয়। এই সময়টি কিসিঞ্জার পরিবারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে প্রমাণিত হয়। নাৎসি শাসনের সময় কিসিঞ্জার এবং তার বন্ধুরা নিয়মিতভাবে হিটলার ইয়ুথ গ্যাং দ্বারা হয়রানি হতেন কিসিঞ্জার। কখনও কখনও নাৎসি জাতিগত আইনের দ্বারা আরোপিত বিচ্ছিন্নতাকে অমান্য করে ম্যাচ দেখার জন্য ফুটবল স্টেডিয়ামে লুকিয়ে পড়তেন, প্রায়শই নিরাপত্তারক্ষীদের মারধরের শিকার হতেন। নাৎসিদের ইহুদি-বিরোধী আইনের ফলস্বরূপ, কিসিঞ্জার জিমনেসিয়ামে ভর্তি হতে অক্ষম হন এবং তার বাবাকে তার শিক্ষকতার চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

১৯৩৮ সালের ২০ আগস্ট কিসিঞ্জার যখন ১৫ বছর বয়সী ছিলেন, তখন তার পরিবার নাৎসি জার্মানি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই বছরের পঞ্চম সেপ্টেম্বরে সপরিবারে নিউইয়র্ক সিটিতে নিরাপদে পৌঁছান। কিসিঞ্জার তার উচ্চ বিদ্যালয়ের বছরগুলি উচ্চ ম্যানহাটনের 'ওয়াশিংটন হাইটস' বিভাগে কাটিয়েছেন জার্মান-ইহুদি অভিবাসী সম্প্রদায়ের অংশ হিসাবে। যদিও কিসিঞ্জার আমেরিকান সংস্কৃতিতে দ্রুত আত্তীকরণ করেছিলেন, তবে তিনি কখনোই তার উচ্চারিত জার্মান উচ্চারণ হারাননি, শৈশবের লজ্জার কারণে যা তাকে কথা বলতে দ্বিধাগ্রস্ত করেছিল। জর্জ ওয়াশিংটন হাই স্কুলে তিনি রাতে স্কুলে পড়াশুনা করতেন এবং দিনের বেলা শেভিং ব্রাশ কারখানায় কাজ করেন।

হাই স্কুলের পর, কিসিঞ্জার নিউইয়র্কের সিটি কলেজে অ্যাকাউন্টিং অধ্যয়নে ভর্তি হন। তিনি পার্ট-টাইম ছাত্র হিসাবে একাডেমিকভাবে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। ১৯৪৩ সালের শুরুর দিকে তিনি পড়াশোনা সাময়িকভাবে বন্ধ করে মার্কিন সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিসিঞ্জার, ১৯৫০ সাল

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

রিপাবলিকান দলে যোগদান[সম্পাদনা]

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী[সম্পাদনা]

বৈদেশিক নীতি[সম্পাদনা]

হোয়াইট হাউসে অবস্থানকালীন রিচার্ড নিক্সন, হেনরি কিসিঞ্জারের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রিয়েলপলিটিকের মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেন।[৩] ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যে কিসিঞ্জার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ সময় তিনি ডিটেন্টে নীতির মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়ন, গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সাথে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমেরিকার সম্পর্ক বজায় রাখেন। প্যারিস শান্তি সম্মেলনেরও প্রধান আলোচক ছিলেন তিনি। ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার সম্পৃক্ততারও ইতি ঘটান হেনরি কিসিঞ্জার। অনেক ধরনের আমেরিকান নীতি এ সময়ে সৃষ্ট হয়। তন্মধ্যে কম্বোডিয়ায় বোমাবর্ষণের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা এখনো বিতর্কের পরিবেশ সৃষ্টি করে। কিসিঞ্জার এখনো বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে বহাল তবিয়তে অবস্থান করছেন।[৪]

১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে কিসিঞ্জার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা হিসেবে ইসরায়েলকে সিনাই উপত্যকা থেকে সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য করান। এরফলে তার রাজনৈতিক দূরদর্শীতার পরিচয় পাওয়া যায় যা তৈল সঙ্কট উপশমে সহায়তা করেছিল।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭১[সম্পাদনা]

হেনরি কিসিঞ্জারের দিক নির্দেশনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ১৯৭১ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে সমর্থন করে। কিসিঞ্জার পূর্বেই দক্ষিণ এশিয়ায় সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব বিস্তার এবং ভারত-সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যেকার মৈত্রী সম্পর্ক সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানের সাথে চীনের মৈত্রী সম্পর্ক এবং চীনের সাথে ভারত ও সোভিয়েত রাশিয়ার বৈরী, শত্রুভাবাপন্ন মনোভাবের কারণে চীনের সাথে মার্কিনীদের সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ গ্রহণ করেন।[৫]

সাম্প্রতিক বছরে কিসিঞ্জার নিক্সনের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতার কথকতা ফাঁসের প্রেক্ষাপটে পুনরায় সংবাদ মাধ্যমে আলোচিত হন। সেখানে তিনি বাংলাদেশ-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে তদানীন্তন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী সম্বন্ধে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। এছাড়াও তিনি যুদ্ধের অব্যবহিত পরেই ভারতীয়দের সম্পর্কেও শিষ্টাচার বহির্ভূত শব্দ প্রয়োগ করেন।[৬] অবশ্য, পরবর্তীকালে কিসিঞ্জার তার এ ধরনের বিরূপ মন্তব্য ও শিষ্টাচার বহির্ভূত শব্দ ব্যবহারের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।[৭]

ক্ষমা প্রার্থনা পর ২০০৭ সালের অক্টোবরের প্রথমদিকে ভারতের প্রধান বিরোধী দলনেতা লাল কৃষ্ণ আদভানী'র সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তিনি ভারত-মার্কিন পারমাণবিক চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আদভানী'র ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করেন।

এপ্রিল, ২০০৮ সালে কিসিঞ্জার বলেন যে, ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গীর সাথে সমান্তরালভাবে চলছে। এরফলে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্রদেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।[৮]

বই ও চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]

দ্য ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার[সম্পাদনা]

ক্রিস্টোফার হিচেন্স নামীয় একজন ব্রিটিশ-আমেরিকান সাংবাদিকলেখক কিসিঞ্জারের রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে প্রধান সমালোচনাকারী হিসেবে পরিচিতি পান। ২০০১ সালে রচিত দ্য ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার শিরোনামের বইয়ে কিসিঞ্জারকে একজন যুদ্ধাপরাধীরূপে আখ্যায়িত করেন। বইটিতে ইন্দোচীন, বাংলাদেশ, চিলি, সাইপ্রাস এবং পূর্ব তিমুরের মুক্তিকামী জনতা, বিপ্লবীদেরকে হত্যা করতে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধকরণ, অপহরণ এবং নির্যাতনের মতো বিষয়গুলো তার বিরুদ্ধে উপস্থাপন করা হয়।[৯][১০][১১][১২] উক্ত বইটিকে উপজীব্য করে একই শিরোনামে ২০০২ সালে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করা হয়।

চলচ্চিত্রায়ণ[সম্পাদনা]

হেনরী কিসিঞ্জার সংবাদপ্রচার মাধ্যমকে এড়িয়ে চলতেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ১৯৭৯ সালের মিশর-ইসরায়েলের মধ্যকার শান্তি চুক্তির বিষয়ে একটি দুষ্প্রাপ্য সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। তথ্যচিত্রের নামকরণ করা হয়েছিলঃ ব্যাক ডোর চ্যানেলসঃ দ্য প্রাইস অব পীস[১৩] ইউম কিপ্পুর যুদ্ধে মিশর এবং সিরিয়া কর্তৃক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১৯৭৩ সালে সংঘটিত যুদ্ধের বিষয়টি চলচ্চিত্রে তুলে ধরা হয়েছিল। সেখানে তিনি পারমাণবিক যুদ্ধের ঘনঘটা ভীষণভাবে উপলব্ধি করেছিলেন।

১৯৯০ সালে তিনি দি ইকোনোমিস্ট পত্রিকায় দর্শনীর বিনিময়ে সাক্ষাৎকার প্রদান করেন।

ব্রিটিশ ইতিহাসবেত্তা নাইয়ল ফার্গুসন কর্তৃক কিসিঞ্জার শিরোনামে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মিত হয়। কাইমেরিকা মিডিয়া'র পরিবেশনায় এটি ২০১১ সালে মুক্তি পায়।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

হেনরি কিসিঞ্জার প্রথম বিয়ে করেন অ্যান ফ্লেশার নামীয় এক মহিলাকে। এ সংসারে দুই সন্তান - এলিজাবেথ এবং ডেভিড রয়েছে। ১৯৬৪ সালে তাদের মধ্যেকার বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে। দশ বছর পর ন্যান্সী ম্যাগিনেস-কে বিবাহ করেন।[১৪] তারা এখন কানেক্টিকাটের কেন্টে এবং নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাস করছেন।

ডেভিড কোনান ও'ব্রায়ানের নিয়ন্ত্রাধীন কোনাকো টেলিভিশন প্রোডাকশনের প্রধান ছিলেন। এরপর এনবিসি ইউনিভার্সেলে নির্বাহী হিসেবে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন।[১৫] ডিপ্লোমেসি গেমসকে কিসিঞ্জারের সবচেয়ে প্রিয় খেলা হিসেবে একটি খেলাধুলা সাময়িকীর সাথে সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন।[১৬]

শৈশবকাল থেকেই কিসিঞ্জার তার নিজ শহরের এসপিভিজিজি গ্রিউথার ফার্থ ফুটবল ক্লাবের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছেন।

সম্মাননা[সম্পাদনা]

নোবেল পুরস্কার লাভ[সম্পাদনা]

১৯৭৩ সালে হেনরি কিসিঞ্জার ও লে ডাক থো যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। জানুয়ারি, ১৯৭৩ সালে উত্তর ভিয়েতনাম ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার যুদ্ধ বিরতি এবং সেখান থেকে আমেরিকান সেনা প্রত্যাহারের প্রেক্ষাপটে তাকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। কিন্তু লে ডাক থো পুরস্কার গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান কেননা তখনো যুদ্ধ চলছিল।[১৭] কিন্তু তাদেরকে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদানের ফলে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়। এরফলে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির দুইজন সদস্য পদত্যাগ করেন। কিন্তু যখন এ পুরস্কারের বিষয়টি ঘোষিত হয়, তখনও উভয় পক্ষের মধ্যে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত ছিল।[১৮] অনেক সমালোচকদের অভিমত, কিসিঞ্জার শান্তি প্রণেতা ছিলেন না; বরঞ্চ যুদ্ধের ব্যাপক প্রসারে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রেখেছিলেন।[১৯]

অন্যান্য সম্মাননা[সম্পাদনা]

১৯৮০ সালে স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থঃ দ্য হোয়াইট হাউজ ইয়ার্স-এর ১ম খণ্ডের জন্য তিনি ইতিহাস বিভাগে ন্যাশনাল বুক এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।[২০]

১৯৯৫ সালে তিনি সম্মানজনক নাইট কমান্ডার পদবীতে ভূষিত হন।[২১]

১৯৯৮ সালে নিজ শহর জার্মানির ফার্থে বিশেষ নাগরিকের মর্যাদা লাভ করেন। আজীবন সমর্থক হিসেবে এসপিভিজিজি গ্রিউথার ফার্থ ফুটবল ক্লাবের সম্মানিত সদস্য মনোনীত হন এবং আজীবন মৌসুম টিকিটধারীরও মর্যাদা পান।[২২] ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০০১ থেকে ২০০৫-এর গ্রীষ্ম পর্যন্ত কলেজ অব উইলিয়াম এন্ড ম্যারি'র আচার্য্য হিসেবে আসীন ছিলেন।

আন্তর্জাতিক কনসাল্টিং ফার্ম হিসেবে কিসিঞ্জার এসোসিয়েটসের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতির দায়িত্বে আছেন তিনি।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

কিসিঞ্জার ১০০ বছর বয়সে ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখে কানেকটিকাটের কেন্টে তার বাড়িতে মারা যান।[২৩] তিনি তার স্ত্রী ন্যান্সি ম্যাগিনেস কিসিঞ্জারকে রেখে গেছেন; দুই সন্তান, ডেভিড এবং এলিজাবেথ; এবং পাঁচ নাতি। তার মৃত্যু কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটস, তার পরামর্শক সংস্থা দ্বারা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটস ঘোষণা করেন যে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ব্যক্তিগত হবে, এবং নিউ ইয়র্ক সিটিতে একটি স্মারক পরিষেবা দ্বারা অনুসরণ করা হবে।[২৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Isaacson, pp 20.
  2. "Kissinger - Definition from the Merriam-Webster Online Dictionary"। Merriam-Webster। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-২৩ 
  3. Byrnes, Sholto। "Time to rethink realpolitik"। New Statesman। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১১ 
  4. A press release issued by the 45th Munich Conference on Security Policy on February 8, 2009 declared "[H]is voice continues to bear weight and authority throughout the globe." see [১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জুন ২০০৯ তারিখে Munich Security Conference - February 6, 2009 Press Release
  5. "The Tilt: The U.S. and the South Asian Crisis of 1971"। National Security Archive। ডিসেম্বর ১৬, ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-৩০ 
  6. "150. Conversation Among President Nixon, the President's Assistant for National Security Affairs (Kissinger), and the President's Chief of Staff (Haldeman), Washington, November 5, 1971, 8:15–9:00 a.m."Foreign Relations, 1969–1976। U.S. Department of State। E–7 (19)। ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ৩০, ২০০৬  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  7. "Kissinger regrets India comments"। BBC। জুলাই ১, ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-১৫ 
  8. Kissinger on War & More ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে. Uncommon Knowledge. Filmed on April 3, 2008. Retrieved August 10, 2009.
  9. The latest Kissinger outrage. - Slate Magazine. Slate.com. Retrieved on 2011-11-25.
  10. The Case Against Henry Kissinger Part One by Christopher Hitchens. Thirdworldtraveler.com. Retrieved on 2011-11-25.
  11. Show us the papers, Hitchens. Henry Kissinger has finally met his match in Christopher Hitchens. But do they deserve each other? Frances Stonor Saunders goes into battle with two mighty egos ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ মার্চ ২০১২ তারিখে. New Statesman. Retrieved on 2011-11-25.
  12. Christopher Hitchens: Latest Nixon tape buries Kissinger’s reputation | Full Comment | National Post[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]. Fullcomment.nationalpost.com. Retrieved on 2011-11-25.
  13. "TV Festival 2009 : Opening Film"। Tvfestival.net। ২০০৯-১০-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৩-১০ 
  14. "Somebody to Come Home To"Time Magazine। এপ্রিল ৮, ১৯৭৪। এপ্রিল ২৩, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১২, ২০১২ 
  15. "NBC Universal Television Studio Co-President David Kissinger Joins Conaco Productions as New President" (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)। NBC Universal Television Studio। ২০০৫-০৫-২৫। 
  16. Games & Puzzles magazine, May 1973.
  17. de Sousa, Ana Naomi (9 October 2009). "Top ten Nobel Prize rows". The Times (London: Times Newspapers Limited). Retrieved 25 May 2010.
  18. Abrams, Irwin (2001). p. 219.
  19. Abrams, Irwin (2001). p. 315.
  20. "National Book Awards – 1980". National Book Foundation. Retrieved 2012-03-16.
  21. Kissinger, Henry Alfred[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] in Who's Who in the Twentieth Century, Oxford University Press, 1999
  22. [২][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  23. "Former US Secretary of State Henry Kissinger dies aged 100"বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  24. "Henry Kissinger: 10 conflicts, countries that define a blood-stained legacy"আল জাজিরা। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০২৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

আইন দফতর
পূর্বসূরী
ওয়াল্ট রসটো
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক
১৯৬৯-১৯৭৪
উত্তরসূরী
ব্রেন্ট স্কোক্রফট