বিষয়বস্তুতে চলুন

রাজনীতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

রাজনীতি বা রাষ্ট্রনীতি[] বা রাজগতি[] বা রাজবুদ্ধি[] হলো দলীয় বা নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ক্ষমতার সম্পর্কের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিষয়ক কর্মকাণ্ডের সমষ্টি, উদাহরণস্বরুপ সম্পদের বণ্টন হল এমন একটি কর্মকাণ্ড। রাজনীতি এ্যাকাডেমিক অধ্যয়নকে রাজনীতিবিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কাজ হলো রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করা।

রাজনীতি একটি বহুমুখী শব্দ। এটি আপোসের ও অহিংস রাজনৈতিক সমাধান প্রসঙ্গে ইতিবাচক অর্থে,[] অথবা সরকার বিষয়ক বিজ্ঞান বা কলা হিসেবে বিশদভাবে ব্যবহৃত হতে পারে, কিন্তু পাশাপাশি এটি প্রায়শই একটি নেতিবাচক অর্থও বহন করে।[] উদাহরণস্বরুপ, উচ্ছেদবাদী উইনডেল ফিলিপস ঘোষণা দেন "আমরা রাজনৈতিক চাল চালি না, দাসপ্রথার বিরোধিতা নিয়ে হাসি তামাশা করা আমাদের স্বভাবে নেই।"[] রাজনীতিকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, এবং বিভিন্ন পরিসরে মৌলিকভাবে এবিষয় নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা রয়েছে, যেমন এটি কীভাবে ব্যবহার করা উচিত, বিস্তৃতভাবে নাকি সীমিতভাবে, রাজকীয়ভাবে নাকি সাধারণভাবে, এবং কোনটি এক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবীঃ সংঘাত নাকি সমবায়।

রাজনীতিতে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়, যার মধ্যে আছে কারও নিজস্ব রাজনৈতিক অভিমত মানুষের মাঝে প্রচার করা, অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময়, আইন প্রনয়ন, এবং বলপ্রয়োগের চর্চা করা, যার মধ্যে আছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা লড়াই।[][][][][১০] সামাজিক বিভিন্ন স্তরে বিস্তৃত পরিসরে রাজনীতির চর্চা করা হয়, ঐতিহ্যবাহী সমাজব্যবস্থাসমূহের গোত্র ও গোষ্ঠী থেকে শুরু করে আধুনিক স্থানীয় সরকার, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সার্বভৌম রাষ্ট্র, এবং আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত। আধুনিক জাতি রাষ্ট্রগুলোতে, মানুষ প্রায়ই নিজস্ব মতবাদ তুলে ধরতে রাজনৈতিক দল গঠন করে। কোন দলের সদস্যগণ প্রায়শই বিভিন্ন বিষয়ে সহাবস্থানের ব্যাপারে ঐক্যমত্য পোষণ করে এবং আইনের একই পরিবর্তন ও একই নেতার প্রতি সমর্থনে সহমত হয়। এক্ষেত্রে নির্বাচন হল সাধারণত বিভিন্ন দলের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা।

রাজনৈতিক ব্যবস্থা হল কোন কাঠামো যা কোন সমাজের মধ্যকার গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক পদ্ধতিসমূহকে সংজ্ঞায়িত করে। রাজনৈতিক চিন্তার ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় প্রাথমিক প্রাচীন যুগে, যেখানে প্লেটোর রিপাবলিক, এরিস্টটলের রাজনীতি, চাণক্যর অর্থশাস্ত্র ও চাণক্য নীতি (খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দী), এবং কনফুসিয়াসের লেখার ন্যায় দিগন্ত উন্মোচনকারী কাজগুলো পাওয়া যায়।[১১]

শব্দতত্ত্ব

[সম্পাদনা]

এর দ্বারা সাধারণত নাগরিক সরকারের অনুরূপ কর্মকাণ্ডকে বোঝানো হয়, তবে অন্যান্য অনেক সামাজিক প্রতিষ্ঠান, যেমন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেখান মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান, সেখানেও রাজনীতি চর্চা করা হয়। রাজনীতি কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার ভিত্তিতে গঠিত সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে গঠিত।[১২] উইলিয়াম কেরি তার বাংলা অভিধানে রাজনীতি শব্দের অর্থ করেছেন রাজন্য (the king) + নীতি (justice), অর্থাৎ রাজার ন্যায়বিচার।[]

ইংরেজি পলিটিক্স শব্দটি এসেছে এরিস্টটল-এর ধ্রুপদী রচনা, পলিটিকা থেকে, যা politiká (প্রাচীন গ্রিক: Πολιτικά). নামক গ্রিক পরিভাষাটিকে ইংরেজিতে প্রবর্তন করে। ১৫ শতকের মাঝামাঝি, অ্যারিস্টটলের রচনাটি প্রাথমিক আধুনিক ইংরেজি ভাষায় পোলেটিকস (Polettiques [সিক]) হিসাবে ডাকা করা হতো,[][১৩] যা আধুনিক ইংরেজিপলিটিক্স এ পরিণত হয়।

একবচনে পলিটিক্স শব্দটি প্রথম ১৪৩০ সালে ইংরেজিতে প্রযুক্ত হয়, যা মধ্য ফরাসি ফরাসি: পলিটিক—এর সমতুল্য যা নেওয়া হয়েছে ল্যাটিন লাতিন: পলিটিকাস থেকে,[১৪] যা গ্রিক প্রাচীন গ্রিক: πολιτικός (politikos) এর একটি লাতিনিকৃত রূপ, যা প্রাচীন গ্রিক: πολίτης (প্রাচীন গ্রিক: polites) ও প্রাচীন গ্রিক: πόλις (প্রাচীন গ্রিক: polis) থেকে এসেছে।[১৫]

আরবি ভাষায় নীতি ও রাজনীতি উভয়কে বোঝাতেই সিয়াসাত বা সিয়াসাহ (سياسة) শব্দটি ব্যবহৃত হয়, ব্যকরণবিদদের মতে, এটি আরবি ধাতু সাসা (ساس) থেকে এসেছে যার অর্থ পরিচালনা করা, ব্যবস্থাপনা করা, শাসন করা। শব্দটির ফিল মুদারী বা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ক্রিয়ারূপ হল ইয়াসুস (يسوس)।[১৬]

সংজ্ঞা

[সম্পাদনা]

হ্যারোল্ড ল্যাজওয়েলের মতে, রাজনীতি হল "যে যা, যখন, যেভাবে পায় সেটাই"।[১৭]

ডেভিড ইস্টনের মতে, "এটি হল কোন সমাজের জন্য মূল্যবান বিষয়গুলোর কর্তৃত্বপূর্ণ সুষম বণ্টন"।[১৮]

ভ্লাদিমির লেনিনের কাছে, "রাজনীতি হল অর্থনীতির সবচেয়ে ঘণীভূত বহিঃপ্রকাশ"।[১৯]

বার্নার্ড ক্রিক দাবি করেন যে, "রাজনৈতিক হল নীতিমালার একটি স্বতন্ত্র রূপ, যার দ্বারা মানুষ নিজেদের পার্থক্য মিটিয়ে ফেলার জন্য, বৈচিত্রময় আগ্রহ ও মূল্যবোধ উপভোগ করার জন্য এবং সাধারণ প্রয়োজনের বিষয় পরিচালনায় সরকারি নীতি তৈরির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মিলেমিশে কাজ করে"।[২০]

আড্রিয়ান লেফ্টউইচ সংজ্ঞা দেন যে, "রাজনীতি সমাজে ও সমাজসমূহের মধ্যে সমবায়, মতবিনিময় ও দ্বন্দ্বের সকল কাজের জন্ম দেয়, যার দ্বারা মানুষ তাদের জৈবিক ও সামাজিক জীবনের উৎপাদন ও প্রজননের নিমিত্তে মানবীয়, প্রাকৃতিক ও অন্যান্য সম্পদ ব্যবহার, উৎপাদন ও বণ্টনের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করে"।[২১]

ইবনে সিদার মতে, বিষয়াবলির ব্যবস্থাপনা করাই হল সিয়াসাত বা নীতি বা রাজনীতি।[২২]

সাহিব ইবনে আব্বাদও একই মত পোষণ করে বলেন, সিয়াসাত বা রাজনীতি হল রাজনীতিবিদ বা শাসকের কাজ, প্রশাসক তার প্রজাদের শাসন করে, আর তার নিম্নস্তরের শাসকেরা তাদের নিম্নস্তরের প্রজাদের শাসন করে, আর এটাই তাদের রাজনৈতিক বা শাসনের নীতি।[২৩]

ফায়রুজ আব্বাদী বলেন, রাজনীতিবিদ বা শাসকরাই রাজনীতি বা শাসনতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করেন, তারাই এটি প্রতিষ্ঠা করেন, আবার তারাই এটি ধ্বংস করেন।[২৪]

রাজনীতির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি

[সম্পাদনা]

বিস্তৃত ও সীমিত দৃষ্টিভঙ্গি

[সম্পাদনা]

নৈতিকতাবাদ ও বাস্তবতাবাদ

[সম্পাদনা]

রাজনীতির কিছু দৃষ্টিকোণ এটিকে অভিজ্ঞতাকে ক্ষমতার অনুশীলন হিসাবে দেখেন, আবার অন্যরা এটিকে আদর্শিক ভিত্তিতে সামাজিক ক্রিয়া হিসাবে দেখেন।[২৫] এই পার্থক্যকে বলা হয় রাজনৈতিক নৈতিকতাবাদ এবং রাজনৈতিক বাস্তববাদ এর মধ্যে পার্থক্য।[২৬] নৈতিকতাবাদীদের কাছে, রাজনীতি হল নীতিশাস্ত্রের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত বিষয় এবং অতি আদর্শ চিন্তার ক্ষেত্রে এর অবস্থান সর্বোচ্চ পর্যায়ের।[২৬] উদাহরণস্বরূপ, হান্নাহ এ্যারেন্ড্টের মতে, এরিস্টোটলের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে "রাজনৈতিক হওয়ার অর্থ হল সবকিছুই কথা ও যুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে, সহিংসতার মাধ্যমে নয়।"[২৭], যেখানে বার্নার্ড ক্রিকের মতে "রাজনীতি হল উন্মুক্ত সমাজ পরিচালনার পন্থা। রাজনীতি হল রাজনীতি আর অন্য প্রকারের নীতিনিয়মগুলো হল অন্যকিছু।"।[২৮] অপরদিকে, নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি, থমাস হবস, এবং হ্যারল্ড ল্যাজওয়েলের ন্যায় বাস্তববাদীদের কাছে, রাজনীতির ভিত্তি হল ফলাফল বিবেচনা ছাড়াই ক্ষমতার ব্যবহার করা।[২৬][২৯]

সংঘাত ও সমবায়

[সম্পাদনা]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

রাজনীতির ইতিহাসে এর উৎপত্তি, বিকাশ, এবং সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্থনীতি বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়।

রাজনীতির উদ্ভব মানবসভ্যতার বিকাশ এর সাথে সাথে রাজার রাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার মধ্যে দিয়ে ঘটেছে ও পরিপূর্ণতা লাভ করেছে, রাজতান্ত্রিক চিন্তাধারা এবং রাজনৈতিক কলা কৌশল ও পরবর্তীকালের আধুনিক রাজনীতির শ্রেণী বিভাজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানমূলক চিন্তাধারার উত্থান ঘটিয়েছে। মেকিয়াভেলী রচিত "The Prince" গ্রন্থটি রাজতন্ত্রের চরিত্র ও স্থায়ীত্ব নিয়ে বলিষ্ঠ বিশ্লেষণ করেছে । রাজনীতি হলো এককথায় এক বিশেষ রাজত্ব কেন্দ্রিক নীতি বা রাজার নীতি এটি একটা বিশেষ চেতনা বা আদর্শ।

প্রাগৈতিহাসিক

[সম্পাদনা]

রাষ্ট্র গঠন

[সম্পাদনা]

প্রারম্ভিক রাষ্ট্র গঠনের বিষয়ে একাধিক বিভিন্ন তত্ত্ব এবং অনুমান রয়েছে, যা শুধু কিছু জায়গায় রাষ্ট্র কেন বিকশিত হয়েছিল, অন্যান্য যায়গায় নয়, তা ব্যাখ্যা করার জন্য সরলীকরণের চেষ্টা করে। অন্যান্য পণ্ডিতরা বিশ্বাস করেন যে সরলীকরণগুলি কোন কাজে আসে না এবং প্রাথমিক রাষ্ট্র গঠনের প্রতিটি উদাহরণকেই আলাদাভাবে বিচার করা উচিত।

আদি রাষ্ট্র

[সম্পাদনা]

প্রাচীন ইতিহাসে সভ্যতার আজকের মতো নির্দিষ্ট সীমানা ছিল না এবং তাদের সীমানাকে রাষ্ট্রীয় সীমান্ত হিসাবে আরও সঠিকভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। প্রারম্ভিক রাজবংশীয় সুমের এবং আদি রাজবংশীয় মিশর ছিল তাদের সীমান্ত নির্ধারণ করার জন্য প্রথম সভ্যতা। তদুপরি, বিংশ শতাব্দী অবধি, বহু লোক রাজ্যহীন সমাজে বাস করত। এগুলি তুলনামূলক সমতাবাদী গোত্র এবং উপজাতি থেকে শুরু করে জটিল এবং উচ্চ স্তরীভূত স্তরের ন্যায় দলীয় নেতৃত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

আধুনিক রাষ্ট্র

[সম্পাদনা]
নারী ভোটারের বিস্তৃতি (১৯৩৫)

পিস অব ওয়েস্টফালিয়াকে (১৬৪৮) রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার সূচনা বলে মনে করেন,[৩০][৩১][৩২] যাতে একটি দেশের আভ্যন্তরীন বিষয়ে বহিরাগত শক্তির হস্তক্ষেপ বর্জনীয় বলে বিবেচিত হয়।[৩৩] অন্যদেশের আভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতিটি ১৮-শতকের মাঝামাঝি সুইস আইনবিদ এমার ডি ভেটেল কর্তৃক প্রবর্তিত হয়।[৩৪] রাষ্ট্রগুলো একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক-ব্যবস্থায় প্রাথমিক প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিনিধিতে পরিনত হয়। বলা হয়, পিস অব ওয়েস্টফালিয়া ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোতে অতিরাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব বাস্তবায়নের প্রচেষ্টায় ইতি টানে। স্বাধীন প্রতিনিধি হিসেবে রাষ্ট্রের ওয়েস্টফালীয় মতাদর্শ ১৯ শতকের জাতীয়তাবাদী চিন্তা দ্বারা মদদপুষ্ট হয়, যার অধীনে বৈধ রাষ্ট্রগুলো ভাষা ও সংষ্কৃতিভিত্তিক বহুদেশীয় সমবায় সংঘগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে শুরু করে।

ইউরোপে, ১৮ শতকে ধ্রুপদী অ-জাতীয় রাজ্যগুলি ছিল বহুজাতিক সাম্রাজ্য, এরা হলঃ অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্য, ফ্রান্স রাজ্য, হাঙ্গেরি রাজ্য, রুশ সাম্রাজ্য, স্পেনীয় সাম্রাজ্য, উসমানীয় সাম্রাজ্য, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যএশিয়া, আফ্রিকা এবং আমেরিকাতেও এ জাতীয় সাম্রাজ্য বিদ্যমান ছিল। মুসলিম বিশ্বে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মদের মৃত্যুর পরপরই খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা বহু-জাতিগত রুপান্তরিত-জাতীয় সাম্রাজ্যে পরিণত হয়েছিল। বহুজাতিক সাম্রাজ্য ছিল এক রাজা, সম্রাট বা সুলতান দ্বারা শাসিত নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র। জনগণ ছিল বহু নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত, এবং তারা অনেক ভাষায় কথা বলতো। সাম্রাজ্যের একটি জাতিগত গোষ্ঠী দ্বারা আধিপত্য ছিল, এবং তাদের ভাষা সাধারণত জনপ্রশাসনের ভাষা ছিল। ক্ষমতাসীন রাজবংশ সাধারণত এই গোষ্ঠীর থেকেই ছিল, তবে সবসময় নয়। কিছু ছোট ইউরোপীয় রাজ্য জাতিগতভাবে বৈচিত্র্যময় ছিল না, তবে রাজপরিবার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত রাজবংশীয় রাষ্ট্রও ছিল। কয়েকটি ছোট রাষ্ট্র বেঁচে গিয়েছিল, যেমন লিচটেনস্টাইন, আন্ডোরা, মোনাকো এবং সান মেরিনো প্রজাতন্ত্রের স্বতন্ত্র রাজত্ব।

বিশ্বায়ন

[সম্পাদনা]

আন্তঃসরকারী সংস্থা এবং বহুরাষ্ট্রীয় সংঘবদ্ধতার মাধ্যমে বিশ শতকে রাজনৈতিক বিশ্বায়নের সূচনা হয়েছিল। লীগ অব নেশনস প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এটি জাতিসংঘ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। এর মাধ্যমে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আঞ্চলিক সংহতকরণের উদ্দেশ্যে তৈরি হয় আফ্রিকান ইউনিয়ন, আসিয়ান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মারকোসু। আন্তর্জাতিক স্তরের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা

রাজনৈতিক বিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান

[সম্পাদনা]

সমাজবিজ্ঞানের যে শাখায় রাজনীতি রাষ্ট্র এবং সরকার সম্পর্কীয় বিষয়াবলী নিয়ে আলোকপাত করা হয় তাকে রাজনীতিবিজ্ঞান (পলিটিকাল সায়েন্স) বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলে। এরিস্টটল উক্ত বিজ্ঞানকে রাষ্ট্র সম্পর্কীয় বিজ্ঞান নামে উল্লেখ করেছেন।[৩৫] এতে তুলনামূলক রাজনীতি, রাজনৈতিক অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, রাজনৈতিক দর্শন, জনপ্রশাসন, জননীতি এবং রাজনৈতিক পদ্ধতি সহ অসংখ্য উপক্ষেত্র রয়েছে। তদুপরি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান অর্থনীতি, আইন, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল, মনোবিজ্ঞান বা মনোচিকিৎসা, নৃবিজ্ঞান, এবং স্নায়ুবিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত এবং নির্ভরশীল।

রাজনীতির বৈশিষ্ট্যসমূহ

[সম্পাদনা]

রাষ্ট্রব্যবস্থা

[সম্পাদনা]
রাষ্ট্রব্যবস্থার দৃষ্টিকোণ

রাজনৈতিক ব্যবস্থা বা রাষ্ট্রব্যবস্থার দ্বারা সরকারের দাপ্তরিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে সংজ্ঞায়িত করা হয়। একে সাধারণত আইন ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে। ডেভিড ইস্টনের মতে, "রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে কোন সমাজের জন্য মূল্যবোধসমূহকে কর্তৃত্বপূর্ণ পন্থায় বরাদ্দকারী মিথষ্ক্রিয়ারূপে গণ্য করা যেতে পারে।"[৩৬] প্রতিটি রাজনৈতিক ব্যবস্থাই কোন একটি সমাজের অংশ যার নিজস্ব রাজনৈতিক সংষ্কৃতি আছে, এবং ফলশ্রুতিতে তারা সরকারি নীতিমালার মাধ্যমে সমাজ বিনির্মাণ করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থা বা রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যস্থ মিথষ্ক্রিয়া হল বৈশ্বিক রাজনীতির ভিত্তি।

সরকারের প্রকারভেদ

[সম্পাদনা]
আইনসভা হল একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। চিত্রে ফিনল্যান্ডের সংসদ

সরকার হলো কোনো দেশের সর্বোচ্চ সংস্থা ও কর্তৃপক্ষ যার মাধ্যমে দেশটির শাসন কার্য পরিচালিত হয়। সরকারের মৌলিক দায়িত্ব জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী দেশের নিরাপত্তা বিধান করা, সমাজের শান্তি বজায় রাখা, মানুষের জান-মাল রক্ষা করা এবং বিবাদের ক্ষেত্রে বিচারকার্য পরিচালনা করা। সরকার তার ওপর আরোপিত দায়িত্বসমূহ পালনের স্বার্থে রাজস্ব আহরণ করে এবং শাসনকার্য পরিচালনা ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তা ব্যয় করে থাকে।[৩৭]

ক্ষমতার উৎস
[সম্পাদনা]
  সরকার নেই

ক্ষমতার উৎসের ভিত্তিতে সরকারে প্রকারভেদ নিম্নে বর্নিত হলঃ

  • নৈরাজ্যবাদ – এটি এমন একটি রাজনৈতিক দর্শন যা রাষ্ট্রকে অপ্রয়োজনীয়, ক্ষতিকর ও অবাঞ্ছনীয় মনে করে এবং রাষ্ট্রহীন সমাজের সপক্ষে মতপ্রকাশ করে।
  • কর্তৃত্ববাদী সরকার – কর্তৃত্ববাদী সরকার কোনো প্রজাতন্ত্র বা যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তৃত্বের সপক্ষে মতপ্রকাশ করে। এটি অনির্বাচিত শাসকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি ব্যবস্থা, যাঁরা কিছুটা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা দিয়ে থাকেন।
  • সাংবিধানিক রাজতন্ত্র – এই জাতীয় সরকারে একটি রাজতন্ত্র বিদ্যমান; কিন্তু উক্ত রাজতন্ত্রের ক্ষমতা আইন বা ঘোষিত সংবিধানের দ্বারা সীমাবদ্ধ। উদাহরণ: যুক্তরাজ্য[৩৮][৩৯]
  • সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র – এই জাতীয় সরকারের ক্ষমতা আইন বা আনুষ্ঠানিক সংবিধান দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং এই সরকার সংশ্লিষ্ট দেশের জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ দ্বারা নির্বাচিত। উল্লেখ্য, প্রাচীন স্পার্টা ঘোষিতভাবে ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র; কিন্তু সেদেশের অধিকাংশ মানুষই ভোটদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকতেন। আবার প্রথম যুগের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ছিল গণতান্ত্রিক দেশ; কিন্তু ক্রীতদাসদের সেযুগে ভোটদানের অধিকার ছিল না।
  • গণতন্ত্র – গণতন্ত্র হল এমন একটি সরকার যা দেশের জনসংখ্যার বৃহত্তম অংশ দ্বারা নির্বাচিত। এই সরকার সাংবিধানিক রাজতন্ত্র বা সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র দুইই হতে পারে। গণতন্ত্রের ব্যক্তির ভোটদানের অধিকার তার সামাজিক মর্যাদা বা সম্পদের উপর নির্ভরশীল নয়।
  • একনায়কতন্ত্র – একক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় শাসিত দেশের সরকার। স্বৈরাচারী শাসক সাধারণত বলপূর্বক ক্ষমতা দখল করেন।[৪০] (আরও দেখুন স্বৈরতন্ত্ররাষ্ট্রতন্ত্র)
  • রাজতন্ত্র – এমন ব্যক্তির শাসন যিনি শাসনক্ষমতা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হন।[৪০]
  • সংকীর্ণ গোষ্ঠীতন্ত্র – একই স্বার্থবিশিষ্ট ছোটো ছোটো গোষ্ঠী বা পরিবারের শাসন।[৪১]
  • ধনিকতন্ত্র – ধনবান শ্রেণির শাসন।
  • দিব্যতন্ত্র – ধর্মীয় নেতাদের শাসনতন্ত্র।[৪২]
  • সর্বনিয়ন্ত্রণবাদী সরকার – এই জাতীয় সরকার সরকার ও ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজ কর্তৃত্ব আরোপ করে।
  • আইনানুগমনবাদী সরকার – এই জাতীয় সরকার আইনের শাসনকে চূড়ান্ত মনে করে; আইনমান্যকারীদের পুরস্কৃত করে ও আইনভঙ্গকারীদের কঠিন শাস্তি দেয়।

রাষ্ট্র

[সম্পাদনা]

রাষ্ট্র বলতে এমন এক রাজনৈতিক সংগঠনকে বোঝায় যা কোন একটি ভৌগোলিক এলাকা ও তৎসংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার সার্বভৌম ক্ষমতা রাখে। রাষ্ট্র সাধারণত একগুচ্ছ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ভৌগোলিক সীমার ভেতর বসবাসকারী সমাজের সদস্যদের শাসনের জন্য নিয়ম-কানুন তৈরি করে। যদিও একথা ঠিক যে রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পাওয়া না পাওয়া বহুলাংশে নির্ভর করে, রাষ্ট্র হিসেবে তার উপর প্রভাব রাখা ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির উপর।

সংবিধান

[সম্পাদনা]
এরিস্টোটল কর্তৃক সংবিধানের শ্রেণিবিভাজন

সংবিধান কোন শাসনব্যবস্থার মূল গ্রন্থ যাতে স্বায়ত্তশাসিত কোন রাজনৈতিক সত্তার কর্তব্য নির্ধারণের মৌলিক নিয়ম ও সূত্রসমূহ লিপিবদ্ধ থাকে।[৪৩] কোন দেশের ক্ষেত্রে এই শব্দ সেই দেশের জাতীয় সংবিধানকে বোঝায় যা রাজনৈতিক মৌলিক নিয়ম ও সরকারের পরিকাঠামো, পদ্ধতি, ক্ষমতা ও কর্তব্যকে প্রতিস্তাপিত করে। সংবিধান দুই ধরনের হতে পারে এক,লিখিত দুই, অলিখিত ৷

রাজনৈতিক সংস্কৃতি

[সম্পাদনা]
বিভিন্ন দেশের ইঙ্গলহার্ট-ওয়েলজেল সাংস্কৃতিক মানচিত্র

সংস্কৃতি কীভাবে রাজনীতিতে প্রভাব ফেলে, তার বিবরণ দেয় রাজনৈতিক সংষ্কৃতি। প্রতিটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সংষ্কৃতির অন্তর্গত বিষয়।[৪৪] লুসিয়ান পাইয়ের সংজ্ঞা হল "রাজনৈতিক সংস্কৃতি হল মনোভাব, বিশ্বাস এবং অনুভূতিগুলির সমষ্টি, যা একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়াটিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে এবং অর্থ দেয় এবং যা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে এমন অন্তর্নিহিত ধারণা এবং নীতি সরবরাহ করে।"[৪৪]

আস্থা হল রাজনৈতিক সংষ্কৃতিতে একটি মুখ্য উপাদান, কারণ এর মাত্রাই রাষ্ট্রের কার্যক্ষমতা নির্ধারণ করে।[৪৫] উত্তর-বস্তুবাদ হল এমন একটি পর্যায়, যেখানে একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমন বিষয়গুলির সাথে সম্পর্কিত যা মানবাধিকার এবং পরিবেশবাদের মত তাৎক্ষণিক শারীরিক বা বৈষয়িক উদ্বেগের বিষয় নয়।[৪৪] রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ধর্মেরও প্রভাব রয়েছে।[৪৫]

রাজনৈতিক ত্রুটিবিচ্যুতি

[সম্পাদনা]

রাজনৈতিক দুর্নীতি

[সম্পাদনা]

রাজনৈতিক নেতারা রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় জেতার জন্য প্রায়শই বিভিন্ন অনৈতিক ও অমানবিক পথ অবলম্বন করে এবং এতে তাদের আপত্তি বা সংকোচ হয় না। মানুষ হত্যা,নারীদের যৌন নির্যাতন এবং কোন সমস্যা তৈরি করতে তারা সক্রিয় হয় এবং এর জন্য সমাজের অনেক ক্ষতি হয়।

রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত

[সম্পাদনা]

রাজনৈতিক স্তরবিন্যাস

[সম্পাদনা]

বৃহৎ রাজনীতি

[সম্পাদনা]

বিশ্ব রাজনীতি বলতে বিশ্বের রাজনৈতিক ঘটনাবলির একটি বিশ্বব্যাপী সামগ্রিক চিত্রকে বোঝায় যেখানে কেবলমাত্র বিশ্ব পর্যায় নয়, বরং বৈশ্বিক, জাতীয়, আঞ্চলিক, ইত্যাদি সমস্ত স্তরের রাজনৈতিক ঘটনাবলি ও তাদের মধ্যকার আন্তঃসম্পর্কের বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত। বিশ্ব রাজনীতির গবেষণা তাই আন্তর্জাতিক রাজনীতির গবেষণা অপেক্ষা ভিন্ন একটি ক্ষেত্র, এবং এগুলি একে অপরের পরিপূরক ভূমিকা পালন করে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিগত দশকগুলিতে ধীরে ধীরে বৈশ্বিক রাজনীতিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। সনাতনি রাষ্ট্র ও জাতীয় সরকারগুলির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন নতুন অংশগ্রহণকারীর আবির্ভাব ঘটেছে।[৪৬]

বিশ্ব রাজনীতিতে আন্তঃসংযুক্ততা ও আন্তঃনির্ভরশীলতার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে সর্বত্র সমভাবে নয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নৈরাজ্যমূলক পরিস্থিতিকে প্রতিস্থাপন করে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সুশাসনের একটি পরিকাঠামোর উদ্ভব হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য পর্যায়ে যে জটিল আন্তঃসংযুক্ততার জালিকাব্যবস্থার উদ্ভব ঘটেছে, সেই ব্যাপারটিকে বিশ্বায়ন নাম দেওয়া হয়েছে। বিশ্বায়নের ফলে বিশ্বের যেকোনও স্থানের মানুষের দৈনন্দিন জীবন বহুদূরে অবস্থিত ঘটনাবলি বা গৃহীত সিদ্ধান্ত দ্বারা উত্তরোত্তর প্রভাবিত হচ্ছে। বিশ্বায়নকে মূলত অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন, সাংস্কৃতিক বিশ্বায়ন ও রাজনৈতিক বিশ্বায়ন - এই তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করে আলোচনা করা হয়। তবে বিশ্বায়ন বলে আদৌ কিছু আছে কি না, থাকলেও কোনও তাৎপর্যপূর্ণ কিছু কি না এবং বিশ্ব রাজনীতির রূপান্তরে এর ভূমিকা কতটুকু - এসব ব্যাপারে প্রচুর বিতর্ক বিদ্যমান।[৪৬]

বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে দুইটি মূলধারার দৃষ্টিভঙ্গি বিদ্যমান-- বাস্তববাদ ও উদারপন্থীবাদ। দুইটিতেই বিশ্বায়নকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয় এবং রাষ্ট্রসমূহের সম্পর্কের মধ্যে সংঘাত ও সহযোগিতার ভারসাম্য নিয়ে আলোচনা করা হয়, যদিও উক্ত ভারসাম্যের প্রকৃতি সম্পর্কে এই দুই দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য আছে। মূলধারার বিপরীতে বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি বা তত্ত্বসম্ভারও বিদ্যমান। এগুলিতে বর্তমানে বিশ্ব রাজনীতিতে বিরাজমান স্থিতাবস্থার (status quo)-র নেতিবাচক সমালোচনা করা হয় এবং এই ব্যবস্থাতে প্রান্তিক বা নিপীড়িত দলগুলির উপর বেশি জোর দেওয়া হয়।[৪৬]

মধ্যবর্তী রাজনীতি

[সম্পাদনা]

মধ্যবর্তী রাজনীতিতে রাজনৈতিক ব্যবস্থার অভ্যন্তরের মাধ্যমিক অবকাঠামোসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়, যেমন জাতীয় রাজনৈতিক দল বা আন্দোলনসমূহ।[৪৭]

একটি রাজনৈতিক দল হল একটি রাজনৈতিক সংগঠন যা সাধারণত রাজনৈতিক প্রচারণা, শিক্ষা বিস্তার কার্যক্রম অথবা আন্দোলনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকারি রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন ও নিয়ন্ত্রণ হাসিল করতে চায়। দলগুলো প্রায়ই নির্দিষ্ট লক্ষ্য সংবলিত কোন লিখিত কর্মপন্থা দ্বারা সমর্থিত কোন প্রকাশ্য মতাদর্শ বা দর্শনের পক্ষাবলম্বন করে।[৪৮]

কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যস্থ রাজনৈতিক দলগুলো একত্রে দলীয় ব্যবস্থা তৈরি করে। এটি হতে পারে কোন বহুদলীয় ব্যবস্থা, একটি দুই দলীয় ব্যবস্থা, একটি কেন্দ্রীয় দল ব্যবস্থা অথবা একটি একদলীয় ব্যবস্থা, যা দলের সংখ্যার মাত্রার উপর নির্ভর করে। এটি এর নির্বাচনী ব্যবস্থা সহ সকল রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য দ্বারা প্রভাবিত হয়। ডুবার্গারের নীতি অনুযায়ী, ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট ব্যবস্থা সাধারণত দুই দলীয় ব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হয়, অপরদিকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থায় বহুদলীয় ব্যবস্থা তৈরীর সম্ভাবনা বেশি থাকে।

ক্ষুদ্র রাজনীতি

[সম্পাদনা]

ক্ষুদ্র রাজনীতি বা মাইক্রোপলিটিক্স দ্বারা রাজনৈতিক ব্যবস্থার মাঝে স্বতন্ত্র কর্মীদের কাজকর্মকে বোঝানো হয়। একে প্রায়শই রাজনীতিতে অংশগ্রহণ হিসাবে বর্ণনা করা হয়।[৪৯] উক্ত রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বিভিন্ন রকমের পারে, যেমন:

  • আন্দোলন
  • বয়কট
  • আইন অমান্য করা
  • সংহতি প্রদর্শন
  • পিটিশন
  • পিকেটিং
  • ধর্মঘট
  • কর প্রতিরোধ
  • ভোটদান (বা এর বিপরীতে, ভোটদানে বিরত থাকা)

রাজনৈতিক মূল্যবোধসমূহ

[সম্পাদনা]

গণতন্ত্র

[সম্পাদনা]

গণতন্ত্র বলতে কোনও জাতিরাষ্ট্রের (অথবা কোনও সংগঠনের) এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায় যেখানে নীতিনির্ধারণ বা সরকারি প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিক বা সদস্যের সমান ভোটাধিকার থাকে। গণতন্ত্রে আইন প্রস্তাবনা, প্রণয়ন ও তৈরীর ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের অংশগ্রহণের সমান সু্যোগ রয়েছে, যা সরাসরি বা নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে হয়ে থাকে। "গণতন্ত্র" পরিভাষাটি সাধারণভাবে একটি রাজনৈতিক রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হলেও অন্যান্য সংস্থা বা সংগঠনের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হতে পারে, যেমন বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রমিক ইউনিয়ন, রাষ্ট্র-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।

রাজনৈতিক তত্ববিদদের মতে বর্তমানে তিনটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক মতবাদ আছে। এগুলো হলঃ সামষ্টিক গণতন্ত্র, সুচিন্তিত গণতন্ত্র ও মৌলবাদী গণতন্ত্র।

সামষ্টিক

[সম্পাদনা]

সুচিন্তিত

[সম্পাদনা]

মৌলবাদী

[সম্পাদনা]
অনুভূমিক আর্থ-সামাজিক অক্ষ ও উল্লম্ব আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক অক্ষ সমেত আদর্শিক প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক বর্ণ সমেত একটি দ্বি-অক্ষ রাজনৈতিক কম্পাস চার্ট, এটি হল বহুল ব্যবহৃত রাজনৈতিক বর্ণালীসমূহের মডেলের একটি উদাহরণ[৫০][৫১][৫২][৫৩][৫৪][৫৫][৫৬][৫৭]
মধ্যপন্থী এবং মৌলবাদী উভয় সংস্করণ এবং তাদের নীতিমালার লক্ষ্য সমেত রাজনৈতিক মতাদর্শসমূহের একটি ত্রি-অক্ষীয় মডেল।

বাম-ডান বর্ণালী

[সম্পাদনা]

বামপন্থী রাজনীতি হচ্ছে সেই রাজনৈতিক অবস্থান বা কর্মকাণ্ড যা সামাজিক অসাম্যসামাজিক ক্রমাধিকারতন্ত্রের বিরুদ্ধে সামাজিক সাম্যকে গ্রহণ বা সমর্থন করে।[৫৮][৫৯][৬০][৬১] এই রাজনীতি বিশেষভাবে জড়িত থাকে সমাজে যারা অন্যের তুলনায় কম পায় বা সুযোগহীন থাকে তাদের ব্যাপারে এবং পূর্বধারনা করে যে অসাম্যের অবিচার কমানো বা বিলুপ্ত করা উচিত।[৬০]

রাজনীতিতে ডানপন্থা বা ডানপন্থী বিশেষণগুলো ব্যবহৃত হয় এমন মতাদর্শের ক্ষেত্রে, যা মানুষের অর্থনৈতিক বা ঐতিহ্যগত বা সামাজিক শ্রেণীগত বিভেদ বা ধাপবিন্যাসকে সমর্থন করে। ভিন্ন ভিন্ন ডানপন্থী রাজনৈতিক দল বিভিন্ন মাত্রায় বামপন্থী রাজনীতি সমর্থিত সাম্যবাদের বিরোধিতা করে থাকে, এবং সার্বিক সাম্য চাপিয়ে দেওয়াকে সমাজের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করে থাকে।

স্বাধীনতা

[সম্পাদনা]

রক্ষণশীল-উদারপন্থী

[সম্পাদনা]

রক্ষণশীলতাবাদ হল দ্রুত পরিবর্তনের বিরোধিতা, এবং এটি সমাজে ঐতিহ্যকে ধরে রাখার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করে।[৬২] গ্র্যাজুয়ালিজম বা পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনবাদ এর একটি প্রকরণ।

উদারপন্থী মতবাদ সাম্যমুক্তির উপর নির্ভর করে সৃষ্ট একধরনের বৈশ্বিক রাজনৈতিক দর্শন[৬৩][৬৪] এ দুইটি নীতির উপর ভিত্তি করে উদারতাবাদকে অনেক বিস্তৃত আকার দেওয়া হয়েছে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন, জনগণের অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, মুক্তবাণিজ্য, ব্যক্তিগত মালিকানা প্রভৃতি ধারণার উদ্ভব ঘটেছে এ দর্শনের উপর ভিত্তি করে।[৬৫][৬৬][৬৭][৬৮][৬৯]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]
  • রাজনীতি প্রবেশদ্বার

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "politics - Bengali Meaning - politics Meaning in Bengali at english-bangla.com | politics শব্দের বাংলা অর্থ"www.english-bangla.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০২০
  2. 1 2 3 Carey, William (১৮২৮)। A dictionary of the Bengalee language ...: English and Bengalee। Mission Press। পৃ. ২৯৯।
  3. Leftwich, Aian. (২০১৫)। What is politics? : the activity and its study। Polity Press। পৃ. ৬৮। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৪৫৬-৯৮৫২-৬ওসিএলসি 911200604
  4. Hague, Rod; Harrop, Martin (২০১৩)। Comparative Government and Politics: An Introduction। Macmillan International Higher Education। পৃ. ১। আইএসবিএন ৯৭৮-১-১৩৭-৩১৭৮৬-৫। ৭ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
  5. Johnston, Alexander; Woodburn, James Albert (১৯০৩) [1903]। American Orations: V. The Anti-Slavery Struggle। G. P. Putnam and Sons.। পৃ. ২৩৩ Internet Archive এর মাধ্যমে।
  6. Hammarlund, Bo (১৯৮৫)। Politik utan partier: studier i Sveriges politiska liv 1726-1727। Almqvist & Wiksell International। পৃ. ৮। ৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
  7. P. Brady, Linda (২০১৭)। The Politics of Negotiation: America's Dealings with Allies, Adversaries, and FriendsUniversity of North Carolina Press। পৃ. ৪৭। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪৬৯৬-৩৯৬০-৪। ২ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
  8. Hawkesworth, Mary; Kogan, Maurice (২০১৩)। Encyclopedia of Government and Politics: 2-volume Set। London: Routledge। পৃ. ২৯৯। আইএসবিএন ৯৭৮-১-১৩৬-৯১৩৩২-৭। ২ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
  9. Taylor, Steven L. (২০১২)। 30-Second Politics: The 50 most thought-provoking ideas in politics, each explained in half a minute। Icon Books Limited। পৃ. ১৩০। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৮৪৮৩১-৪২৭-৬। ৬ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
  10. L. Blanton, Shannon; Kegley, Charles W. (২০১৬)। World Politics: Trend and Transformation, 2016–2017। Cengage Learning। পৃ. ১৯৯। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৩০৫-৫০৪৮৭-৫। ২ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
  11. Political System and Change: A World Politics Reader। Princeton Univeeeersity Press। ১৯৮৬। জেস্টোর j.ctt7ztn7s
  12. Painter, Joe; Jeffrey, Alex. "Political Geography". York University Library.
  13. Buhler, C. F., ed. 1961 [1941]. The Dictes and Sayings of the Philosophers. London: Early English Text Society, Original Series No. 211 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে.
  14. Lewis ও Short 1879, online.
  15. Liddell, Henry George; Scott, Robert। "A Greek-English Lexicon"Perseus Digital Library। Tufts Library। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
  16. الأفعال، للسرقسطي، تحقيق محمد محمد شرف، ومراجعة محمد مهدي علام، القاهرة: الهيئة العامة للكتاب، 1979، ص 3/498
  17. Lasswell, Harold D. (Harold Dwight), 1902-1978. (১৯৬৩) [1958]। Politics: who gets what, when how. : With postscript (1958).। World। ওসিএলসি 61585455{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক) উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: সাংখ্যিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক)
  18. Easton, David, 1917- (১৯৮১)। The political system : an inquiry into the state of political science। University of Chicago Press। আইএসবিএন ০-২২৬-১৮০১৭-৪ওসিএলসি 781301164{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক) উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: সাংখ্যিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক)
  19. Lenin, V. I. (১৯৬৫)। Collected works. September 1903-December 1904ওসিএলসি 929381958
  20. Crick, Bernard, 1929-2008. (১৯৭২)। In defence of politics। University of Chicago Press। আইএসবিএন ০-২২৬-১২০৬৪-৩ওসিএলসি 575753{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক) উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: সাংখ্যিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক)
  21. Leftwich, Adrian. (২০০৪)। What is politics? : the activity and its study। Polity। আইএসবিএন ০-৭৪৫৬-৩০৫৫-৩ওসিএলসি 1044115261
  22. المحكم والمحيط الأعظم في اللغة، لابن سيده، تحقيق مجموعة من المحققين، القاهرة: معهد المخطوطات العربية، ص 8/354
  23. المحيط في اللغة، للصاحب بن عبَّاد، تحقيق محمد حسن آل ياسين، بيروت عالم الكتب، 1994 م، ص 8/416.
  24. القاموس المحيط، الفيروز آبادي، مجموعة من المحققين، بيروت: مؤسسة الرسالة، 1987 م، ص 710
  25. Morlino, Leonardo. (২০১৭)। Political science.। Sage Publications Inc। পৃ. ২। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪১২৯-৬২১৩-১ওসিএলসি 951226897
  26. 1 2 3 Atkinson, Sam. (২০১৩)। The politics book। DK। পৃ. ১–৫। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪০৯৩-৬৪৪৫-০ওসিএলসি 868135821
  27. Leftwich, Adrian. (২০০৪)। What is politics? : the activity and its study। Polity। পৃ. ৭৩। আইএসবিএন ০-৭৪৫৬-৩০৫৫-৩ওসিএলসি 1044115261
  28. Leftwich, Adrian. (২০০৪)। What is politics? : the activity and its study। Polity। পৃ. ১৬। আইএসবিএন ০-৭৪৫৬-৩০৫৫-৩ওসিএলসি 1044115261
  29. Morlino, Leonardo. (২০১৭)। Political science.। Sage Publications Inc। পৃ. ৩। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪১২৯-৬২১৩-১ওসিএলসি 951226897
  30. Osiander, Andreas (২০০১), "Sovereignty, International Relations, and the Westphalian Myth", International Organization, ৫৫ (2): ২৫১–২৮৭, ডিওআই:10.1162/00208180151140577. Here: p. 251.
  31. Gross, Leo (জানুয়ারি ১৯৪৮), "The Peace of Westphalia" (পিডিএফ), The American Journal of International Law, ৪২ (1): ২০–৪১, ডিওআই:10.2307/2193560, জেস্টোর 2193560.
  32. Jackson, R.H.; P. Owens (2005) "The Evolution of World Society" in: John Baylis; Steve Smith (eds.). The Globalization of World Politics: An Introduction to International Relations. Oxford: Oxford University Press, p. 53. আইএসবিএন ১-৫৬৫৮৪-৭২৭-X.
  33. Kissinger, Henry (২০১৪)। World Orderআইএসবিএন ৯৭৮-০-৬৯৮-১৬৫৭২-৪
  34. Krasner, Stephen D. (২০১০)। "The durability of organized hypocrisy"। Kalmo, Hent; Skinner, Quentin (সম্পাদকগণ)। Sovereignty in Fragments: The Past, Present and Future of a Contested Concept। Cambridge University Press।
  35. Oxford Dictionary of Politics: political science
  36. Easton, David. (১৯৭১)। The political system : an inquiry into the state of political science। Knopf। ওসিএলসি 470276419
  37. "government" -- Dictionary.com: cites 3 separate dictionaries
  38. Fotopoulos, Takis, The Multidimensional Crisis and Inclusive Democracy. (Athens: Gordios, 2005).(English translation[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] of the book with the same title published in Greek).
  39. "Victorian Electronic Democracy : Glossary"। ২৮ জুলাই ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০০৭
  40. 1 2 American 503
  41. American 1225
  42. American 1793
  43. দ্যা নিউ অক্সফোর্ড আমেরিকান ডিকশনারি, দ্বিতীয় সংস্করণ, Erin McKean (লেখক), ২০৫১ পৃষ্ঠা , মে ২০০৫ , অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস , আইএসবিএন ০-১৯-৫১৭০৭৭-৬.
  44. 1 2 3 Morlino, Leonardo (২০১৭)। Political science : a global perspective। Berg-Schlosser, Dirk., Badie, Bertrand.। London, England। পৃ. ৬৪–৭৪। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৫২৬৪-১৩০৩-১ওসিএলসি 1124515503{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অবস্থানে প্রকাশক অনুপস্থিত (লিঙ্ক)
  45. 1 2 Hague, Rod. (১৪ অক্টোবর ২০১৭)। Political science : a comparative introduction। পৃ. ২০০–২১৪। আইএসবিএন ৯৭৮-১-১৩৭-৬০১২৩-০ওসিএলসি 970345358
  46. 1 2 3 Andrew Heywood (২০১১), Global Politics, Palgrave Macmillan
  47. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; :0 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  48. Pettitt, Robin T. (২০১৪)। Contemporary Party Politics। London: Macmillan International Higher Education। পৃ. ৬০। আইএসবিএন ৯৭৮-১-১৩৭-৪১২৬৪-৫। ৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ Google Books এর মাধ্যমে।
  49. Morlino, Leonardo, 1947–। Political science : a global perspective। Berg-Schlosser, Dirk., Badie, Bertrand.। London, England। পৃ. ১৬১। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৫২৬৪-১৩০৩-১ওসিএলসি 1124515503{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক) উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: সাংখ্যিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক)
  50. Heywood, Andrew (২০১৭)। Political Ideologies: An Introduction (6th সংস্করণ)। Basingstoke: Macmillan International Higher Education। পৃ. ১৪–১৭। আইএসবিএন ৯৭৮১১৩৭৬০৬০৪৪ওসিএলসি 988218349
  51. Love, Nancy Sue (২০০৬)। Understanding Dogmas and Dreams (Second সংস্করণ)। Washington, District of Columbia: CQ Press। পৃ. ১৬। আইএসবিএন ৯৭৮১৪৮৩৩৭১১১৫ওসিএলসি 893684473
  52. Petrik, Andreas (৩ ডিসেম্বর ২০১০)। "Core Concept 'Political Compass'. How Kitschelt's Model of Liberal, Socialist, Libertarian and Conservative Orientations Can Fill the Ideology Gap in Civic Education"JSSE – Journal of Social Science Education (ইংরেজি ভাষায়): ৪–২০১০: Social Science Literacy I: In Search for Basic Competences and Basic Concepts for Testing and Diagnosing। ডিওআই:10.4119/jsse-541। ২২ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত।
  53. Sznajd-Weron, Katarzyna; Sznajd, Józef (জুন ২০০৫)। "Who is left, who is right?"। Physica A: Statistical Mechanics and Its Applications (ইংরেজি ভাষায়)। ৩৫১ (2–4): ৫৯৩–৬০৪। বিবকোড:2005PhyA..351..593Sডিওআই:10.1016/j.physa.2004.12.038
  54. Forman, F. N.; Baldwin, N. D. J. (১৯৯৯)। Mastering British Politics (ইংরেজি ভাষায়)। London: Macmillan Education UK। পৃ.  f। ডিওআই:10.1007/978-1-349-15045-8আইএসবিএন ৯৭৮০৩৩৩৭৬৫৪৮৭
  55. Fenna, Alan; Robbins, Jane; Summers, John (২০১৩)। Government Politics in Australia। Robbins, Jane., Summers, John. (10th সংস্করণ)। Melbourne: Pearson Higher Education AU। পৃ. ১২৬ f। আইএসবিএন ৯৭৮১৪৮৬০০১৩৮৫ওসিএলসি 1021804010
  56. Jones, Bill; Kavanagh, Dennis (২০০৩)। British Politics Today। Kavanagh, Dennis. (7th সংস্করণ)। Manchester: Manchester University Press। পৃ. ২৫৯। আইএসবিএন ৯৭৮০৭১৯০৬৫০৯৫ওসিএলসি 52876930
  57. Körösényi, András (১৯৯৯)। Government and Politics in Hungary। Budapest, Hungary: Central European University Press। পৃ. ৫৪। আইএসবিএন ৯৬৩৯১১৬৭৬৯ওসিএলসি 51478878
  58. Smith, T. Alexander; Tatalovich, Raymond (২০০৩)। Cultures at War: Moral Conflicts in Western Democracies। Toronto, Canada: Broadview Press। পৃ. ৩০
  59. Bobbio, Norberto; Cameron, Allan (১৯৯৭)। Left and Right: The Significance of a Political Distinction। University of Chicago Press। পৃ. ৩৭
  60. 1 2 Lukes, Steven. 'Epilogue: The Grand Dichotomy of the Twentieth Century': concluding chapter to T. Ball and R. Bellamy (eds.), The Cambridge History of Twentieth-Century Political Thought.
  61. Thompson, Willie (১৯৯৭)। The left in history: revolution and reform in twentieth-century politics। Pluto Press।
  62. "Conservatism (political philosophy)"। Britannica.com। Retrieved on 1 November 2009.
  63. Russell 2000, পৃ. 577–8; Young 2002, পৃ. 39.
  64. সাতোশি কানাজাওয়া উদারতাবাদকে রক্ষণশীলতার বিপরীত হিসেবে দেখিয়েছেন। তার মতে, পরস্পর অসম্পৃক্ত সত্ত্বা একে অপরের ভাল করতে চায় এবং তার ফলেই উদারতাবাদের সৃষ্টি হয়। Kanazawa 2010, পৃ. 38 দেখুন.
  65. Kathleen G. Donohue। Freedom from Want: American Liberalism and the Idea of the Consumer (New Studies in American Intellectual and Cultural History)। Johns Hopkins University Press। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭Three of them - freedom from fear, freedom of speech, and freedom of religion - have long been fundamental to liberalism.
  66. The Economist, Volume 341, Issues 7995-7997। The Economist। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭For all three share a belief in the liberal society as defined above: a society that provides constitutional government (rule by laws, not by men) and freedom of religion, thought, expression and economic interaction; a society in which ...
  67. Sehldon S. Wolin। Politics and Vision: Continuity and Innovation in Western Political Thought। Princeton University Press। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭While liberalism practically disappeared as a publicly professed ideology, it retained a virtual monopoly in the ... The most frequently cited rights included freedom of speech, press, assembly, religion, property, and procedural rights
  68. Edwin Brown Firmage, Bernard G. Weiss, John Woodland Welch। id=mQJgnEITPRIC&pg=PA366&dq=liberalism+freedom+of+religion&hl=en&ei=DDVHTYi7IoH78AaGrdXoAQ&sa=X&oi=book_result&ct=result&resnum=7&ved=0CEoQ6AEwBg#v=onepage&q=liberalism%20freedom%20of%20religion&f=false Religion and Law: Biblical-Judaic and Islamic Perspectives। Eisenbrauns। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭There is no need to expound here the foundations and principles of modern liberalism, which emphasizes the values of freedom of conscience and freedom of religion {{বই উদ্ধৃতি}}: |ইউআরএল= মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য); |ইউআরএল=-এ পাইপ অনুপস্থিত (সাহায্য)উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক)
  69. John Joseph Lalor। Cyclopædia of Political Science, Political Economy, and of the Political History of the United States। Nabu Press। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭Democracy attaches itself to a form of government: liberalism, to liberty and guarantees of liberty. The two may agree; they are not contradictory, but they are neither identical, nor necessarily connected. In the moral order, liberalism is the liberty to think, recognized and practiced. This is primordial liberalism, as the liberty to think is itself the first and noblest of liberties. Man would not be free in any degree or in any sphere of action, if he were not a thinking being endowed with consciousness. The freedom of worship, the freedom of education, and the freedom of the press are derived the most directly from the freedom to think.

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]
  • Connolly, William (1981). Appearance and Reality in Politics. Cambridge: Cambridge University Press.
  • James, Paul; Soguk, Nevzat (2014). Globalization and Politics, Vol. 1: Global Political and Legal Governance. London: Sage Publications.
  • Ryan, Alan: On Politics: A History of Political Thought from Herodotus to the Present. London: Allen Lane, 2012. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭১৩-৯৯৩৬৪-৬
রাজনীতি বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। ইচ্ছা করলে আপনি এই নিবন্ধটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সমৃদ্ধ করতে পারেন।
  1. "The book of Etiques and of Polettiques [সিক]" (Bhuler 1961/1941:154).
উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি