ইসমাঈল নূরপুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইসমাঈল নূরপুরী
আমীর, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২০১৯
পূর্বসূরীহাবিবুর রহমান
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1959-02-12) ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ (বয়স ৬৫)
নূরপুর, রায়পুরা, নরসিংদী
জাতীয়তাবাংলাদেশি
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
প্রাক্তন শিক্ষার্থীজামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ
ব্যক্তিগত তথ্য
পিতামাতা
  • মুন্সি জাফর আলী (পিতা)
আখ্যাসুন্নি
ব্যবহারশাস্ত্রহানাফি
আন্দোলনদেওবন্দি
প্রধান আগ্রহ

ইসমাঈল নূরপুরী (জন্ম: ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯) একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত ও রাজনীতিবিদ। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির।[১][২] এছাড়াও তিনি নরসিংদী শহরস্থ বৌয়াকুড় জামেয়া কুরআনিয়ার প্রিন্সিপাল ও শায়খুল হাদিস।

জীবনী[সম্পাদনা]

তিনি ১৯৫৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার অন্তর্গত নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুন্সি জাফর আলী। তিনি নূরপুর গ্রামের ফুরকানিয়া মক্তবে প্রাথমিক পড়ালেখার সূচনা করেন। নুরপুর সরকারি প্রাইমারি স্কুলে প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা শুরু করে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন তিনি। সাহেবনগর মাদ্রাসায় তিন বছর পড়ালেখা করেন। সাহেবনগর মাদ্রাসায় সফফে আউয়াল থেকে মিজান জামাত সমাপ্ত করেন। এরপর উচ্চতর ইসলামী শিক্ষার উদ্দেশ্যে ভর্তি হন ঢাকার জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগে। মুফতি আব্দুল মুঈজের কাছে বুখারী শরীফ ২য় খণ্ড, তিরমিজী ২য় খণ্ড ও হেদায়া ৪র্থ খণ্ড, ইমামুন্নাহু নামে খ্যাত সালাহুদ্দীনের কাছে মুসলিম শরীফ ১ম খণ্ড, আব্দুল আউয়াল ঢাকুবী এর কাছে আবু দাউদ, মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জীর কাছে নাসায়ী শরীফ, তাহাবী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, মুয়াত্তাহ ইমাম মালেক ও হেদায়তুল্লাহর কাছে মেশকাত শরীফ পড়েন। দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম সালেমের কাছে মিযান পড়েন। ১৯৭৬ সালে লালবাগ জামেয়া থেকে ‘তাকমীল ফিল হাদিস’ শেষ করার পর বালুয়াকান্দি শামসুল উলুম মাদ্রাসায় শিক্ষকতায় যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৮০ সালে নরসিংদী জামেয়া কুরআনিয়া মেরাজুল উলুম বৌয়াকুড়ে চলে আসেন। ১৯৯১ সালে জামেয়ার পরিচালনার দায়িত্ব তার পান তিনি। তখন থেকে অদ্যাবধি উক্ত মাদ্রাসার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ২০০৪ সাল থেকে তিনি জামেয়ার প্রধান শায়খুল হাদিসের পদে রয়েছেন। এটি ছাড়াও বালুয়াকান্দি শামসুল উলুম মাদ্রাসা, রায়পুরা সিরাজনগর, আবাবিল মহিলা মাদ্রাসা, বড় মির্জাপুর মনোহরদী ও রিয়াজুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসায় বর্তমানে বোখারী শরীফের নিয়মিত ক্লাস করান।[৩]

তিনি ছাত্রজীবনেই খেলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯২-৯৩ এর বাবরী মসজিদ আন্দোলন ও অযোধ্যা অভিমুখে লংমার্চে তিনি আজিজুল হকের সাথে ছিলেন। ২০০০ সালে ফতোয়া বিরোধী রায় বাতিলের দাবিতে দেশব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনেও নরসিংদীতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০১৩ সালে হেফাজতের আন্দোলনে নরসিংদী জেলার নেতৃত্বের মূল দায়িত্বে ছিলেন তিনি।[৩]

নেজামে ইসলাম পার্টির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সমাজের একজন কর্মী হিসাবে মিছিল মিটিং-এ অংশগ্রহণ করে রাজনৈতিক জীবন শুরু। পরবর্তীকালে খেলাফত আন্দোলন নরসিংদী জেলার সেক্রেটারীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সালের ৮ ডিসেম্বর আজিজুল হক বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস গঠন করলে শুরু থেকেই এর সাথে সম্পৃক্ত হন তিনি এবং নরসিংদী জেলার দায়িত্ব পালন করেন। পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রীয় দায়িত্বও পালন করেন। সাবেক আমিরে মজলিস হাবিবুর রহমানের মৃত্যুর পর ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় শূরায় তাকে সংগঠনের আমিরের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়। অদ্যাবধি এ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তিনি।[৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "খেলাফত মজলিসের আমীর ইসমাঈল নূরপুরী, মহাসচিব মাহফুজুল হক"বাংলা ট্রিবিউন। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "খেলাফত মজলিসের আমির নূরপুরী, মহাসচিব মামুনুল"বাংলাদেশ প্রতিদিন। ১০ জানুয়ারি ২০২১। 
  3. শ্বেতপত্র: বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন। মহাখালী, ঢাকা-১২১২: মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন। ফেব্রুয়ারি ২০২২। পৃষ্ঠা ১৫৬–১৫৮।