ধামাইল গান ও ধামাইল নাচ বাংলাদেশের ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলে প্রচলিত একজাতীয় কাহিনী সংবলিত বাংলালোকগান এবং নৃত্য যা এই অঞ্চলের লোকসাহিত্যের একটি অংশ। যে কোন মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানেই এই গীত-নৃত্য পরিবেশনা স্বাভাবিক বিষয় হলেও বর্তমানে সাধারণতঃ সনাতন ধর্মীদের বিয়ের অনুষ্ঠানেই এর অধিক প্রচলন দেখা যায়।[১]রাধারমণ দত্ত কর্তৃক এই গান সর্বাধিক প্রচারিত ও প্রচলিত হওয়ায় তাঁকেই এর স্রষ্টা বলে গণ্য করা হয়। তবে প্রতাপরঞ্জন তালুকদারের প্রণীত ধামাইল গানও হাওরাঞ্চলে প্রচুর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাঁর রচিত ধামাইল গান ‘প্রতাপ-বান্ধা’ হিসেবে সমধিক পরিচিত। ধামাইল গানের উদ্ভব ও বিকাশ নিয়ে বাংলা একাডেমি থেকে বেরিয়েছে লোকসংস্কৃতি গবেষক সুমনকুমার দাশের সম্পাদনায় ‘বাংলাদেশের ধামাইল গান’ বইটি। এতে প্রায় ১০০০ ধামাইল গানের পাশাপাশি ধামাইল গানের জন্ম, বিকাশ, বিস্তৃতি ও গীতিকারদের পরিচিতি এবং বেশ কিছু আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে।[২]
"ধামা" শব্দটি থেকে "ধামাইল" শব্দটির উৎপত্তি; এর অর্থ আবেশ / ভাব। আবার, আঞ্চলিক / কথ্য হিসেবে এর অর্থ উঠোন। ধারণা করা হয়, রাধারমণ দত্ত ভাবুক প্রকৃতির হওয়ায় এই জাতীয় নামের উৎপত্তি হয়েছে। আবার অনেকের মতে, বাড়ীর উঠোনে এই গান - নাচের আয়োজন করা হয় বলে একে "ধামাইল গান / নাচ" বলে।[৩]