গ্রির গারসন
গ্রির গারসন | |
---|---|
Greer Garson | |
১৯৪০-এর দশকে গারসন | |
জন্ম | এইলিন ইভলিন গ্রির গারসন ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯০৪ |
মৃত্যু | ৬ এপ্রিল ১৯৯৬ | (বয়স ৯১)
সমাধি | স্পার্কম্যান হিলক্রেস্ট মেমোরিয়াল পার্ক সেমেটারি |
মাতৃশিক্ষায়তন | কিংস কলেজ লন্ডন |
পেশা | অভিনেত্রী, গায়িকা |
কর্মজীবন | ১৯৩২-১৯৮৬ |
এইলিন ইভলিন গ্রির গারসন, সিবিই (ইংরেজি: Eileen Evelyn Greer Garson; জন্ম: ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯০৪ - ৬ এপ্রিল ১৯৯৬) ছিলেন একজন ব্রিটিশ মার্কিন অভিনেত্রী। ১৯৪০-এর দশকে মেট্রো-গোল্ডউইন-মেয়ারের অন্যতম এই তারকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এবং মোশন পিকচার হেরাল্ড তাকে ১৯৪২ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেরা দশ বক্স অফিস আকর্ষণ বলে তালিকাভুক্ত করে।[১]
গারসন সাতবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, যা এই বিভাগে চতুর্থ সর্বাধিক মনোনয়ন।[২] তিনি বেটি ডেভিসের সাথে যৌথভাবে রেকর্ড সংখ্যক টানা পাঁচবার (১৯৪১-১৯৪৫) শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং মিসেস মিনিভার (১৯৪২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে একটি পুরস্কার লাভ করেন।[৩]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]গ্রির গারসন ১৯০৪ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর এসেক্সের ইস্ট হ্যামের ম্যানর পার্কে (বর্তমান লন্ডনের অংশ) জন্মগ্রহণ করেন।[৪] তার পিতা জর্জ গারসন (১৮৬৫-১৯০৬) লন্ডনের একটি আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানে কেরানি হিসেবে কাজ করতেন[৪] এবং তার মাতা নিনা (ন্যান্সি সোফিয়া গ্রির, ১৮৮০-১৯৫৮)। তার পিতা লন্ডনে এক স্কটিশ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, এবং তার মাতা আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি ক্যাভানের বেল্টারবেটের নিকটস্ত ড্রুমালোরে জন্মগ্রহণ করেন।[৫] তার নামের অংশ "গ্রির" এসেছে অপর একটি পারিবারিক নাম "মাকগ্রেগর" থেকে।[৬]
গারসন লন্ডনের কিংস কলেজের পড়াশোনা করেন। তিনি গ্রেনবল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফরাসি ভাষা ও অষ্টাদশ শতাব্দীর সাহিত্য বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। অভিনয়ের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তিনি একটি একটি বিজ্ঞাপন এজেন্সিতে কোম্পানির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন, সেখানে তার সহকর্মী ছিলেন জর্জ স্যান্ডার্স। স্যান্ডার্স তার আত্মজীবনীতে লিখেন গারসনই তাকে অভিনয় জীবন শুরু করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।[৭]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]গারসন ১৯৩৮ সালে তার প্রথম চলচ্চিত্র গুডবাই, মিস্টার চিপস-এ অভিনয় করে তার প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৮] পরের বছর তিনি প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস (১৯৪০) চলচ্চিত্রে এলিজাবেথ বেনেট চরিত্রে অভিনয় করে সমাদৃত হন।[৯]
গারসন ১৯৪১ সালে জোন ক্রফোর্ডের সাথে হোয়েন লেডিজ মিট চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, এটি কোড-পূর্ববর্তী অ্যান হার্ডিং অভিনীত একই নামের চলচ্চিত্রের পুনর্নির্মাণ। একই বছর টেকনিকালার নাট্যধর্মী ব্লসমস ইন দ্য ডাস্ট চলচ্চিত্রে ওয়াল্টার পিজেয়নের বিপরীতে অভিনয় করে শীর্ষ বক্স অফিস তারকা হয়ে ওঠেন। এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে তার টানা পাঁচবার (১৯৪১-১৯৪৫) একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়নের প্রথম মনোনয়নটি লাভ করেন,[১০] যা অভিনয়ের জন্য টানা মনোনয়নের রেকর্ডের দিক থেকে বেটি ডেভিসের সাথে যৌথভাবে রেকর্ড সমান সংখ্যক এবং এই রেকর্ডটি এখনো বিদ্যমান।[৩]
তিনি ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মধ্যবর্তী সময়ের পটভূমিতে নির্মিত মিসেস মিনিভার (১৯৪২) চলচ্চিত্রে একজন ব্রিটিশ স্ত্রী ও মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে অস্কার লাভ করেন। গিনেজ বুক বিশ্ব রেকর্ড তার পুরস্কার অর্জনের বক্তব্যকে দীর্ঘতম অস্কার গ্রহণের বক্তব্য হিসেবে ঘোষণা দেয়, যার দৈর্ঘ্য ছিল পাঁচ মিনিট ত্রিশ সেকেন্ড,[১১] এরপর থেকে একাডেমি পুরস্কার পুরস্কার গ্রহণের বক্তব্যের একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়।
১৯৪২ সালের তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত র্যান্ডম হারভেস্ট চলচ্চিত্রে রোনাল্ড কলম্যানের চরিত্রের প্রেমিকার ভূমিকায় অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ সাতটি বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করে।
তিনি বাকি তিনটি অস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন মাদাম ক্যুরি (১৯৪৩), মিসেস পার্কিংটন (১৯৪৪) ও দ্য ভ্যালি অব ডিসিশন (১৯৪৫) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে। ১৯৪৫ সালে ক্লার্ক গেবল যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর গারসন তার বিপরীতে অ্যাডভেঞ্চার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রটির প্রচারণায় বলা হয় "গেবল ফিরে এসেছেন, এবং গারসন তাকে খুঁজে পেয়েছেন!"।[১২]
সম্মাননা ও পুরস্কার
[সম্পাদনা]গারসন ১৯৯১ সালে ডালাসের সাউদার্ন মেথডিস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অব আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন।[১৩]
১৯৯৩ সালে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ারের কমান্ডার (সিবিই) খেতাবে ভূষিত করেন।[১৪]
গারসন সাতবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং একবার এই পুরস্কার লাভ করেন।[৩]
বছর | বিভাগ | মনোনীত কর্ম | ফলাফল |
---|---|---|---|
১৯৩৯ | শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী | গুডবাই, মিস্টার চিপস | মনোনীত |
১৯৪১ | ব্লসমস ইন দ্য ডাস্ট | মনোনীত | |
১৯৪২ | মিসেস মিনিভার | বিজয়ী | |
১৯৪৩ | মাদাম ক্যুরি | মনোনীত | |
১৯৪৪ | মিসেস পার্কিংটন | মনোনীত | |
১৯৪৫ | দ্য ভ্যালি অব ডিসিশন | মনোনীত | |
১৯৬০ | সানরাইজ অ্যাট ক্যাম্পোবেলো | মনোনীত |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Quigley's Annual List of Box-Office Champions, 1932-1970"। রিল ক্লাসিক। ২৮ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Quigley's Annual List of Box-Office Champions, 1932–1970"। রিল ক্লাসিকস। ২৩ অক্টোবর ২০০৩। ২৮ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০২৫।
- ↑ ক খ গ "Persons With Acting Nominations in 3 or More Consecutive Years" (পিডিএফ)। অস্কার। একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ ট্রোয়ান, পৃ. ৮।
- ↑ ট্রোয়ান, পৃ. ১০।
- ↑ ট্রোয়ান, পৃ. ৯।
- ↑ স্যান্ডার্স, জর্জ (১৯৬০)। Memoirs of a Professional Cad। হ্যামিশ হ্যামিলটন। পৃষ্ঠা ৫৪। আইএসবিএন 9780810825796।
- ↑ "The 12th Academy Awards (1940) Nominees and Winners"। অস্কারস। একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০২৫।
- ↑ ক্রাউদার, বজলি (৯ আগস্ট ১৯৪০)। "The Screen in Review; 'Pride and Prejudice,' a Delightful Comedy of Manners, Seen at the Music Hall-- 'South to Karanga' Given at the Rialto and 'Pier 13' at the Palace At the Rialto"। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০২৫।
- ↑ "Blossoms in the Dust"। Movies & TV Dept.। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। ২০১২। ২০১২-১০-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০২৫।
- ↑ "The Longest Acceptance Speech"। ইনফোপ্লিজ। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ গারনেট, টে (১৯৭৩)। Light Your Torches, and Pull up your Tights। নিউ রোশেল, নিউ ইয়র্ক: আর্লিংটন হাউজ। আইএসবিএন ০-৮৭০০০-২০৪-X
- ↑ "SMU Honorary Degrees"। এসএমইউ.এডু। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Garson, Greer (1904–1996)"। এনসাইক্লোপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- ট্রোয়ান, মাইকেল (১৯৯৯)। A Rose for Mrs. Miniver: The Life of Greer Garson। লেক্সিনটন: কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। আইএসবিএন 978-0813120942।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
- ইন্টারনেট ব্রডওয়ে ডেটাবেজে গ্রির গারসন (ইংরেজি)
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে গ্রির গারসন (ইংরেজি)
- টার্নার ক্লাসিক মুভিজ ডেটাবেজে গ্রির গারসন (ইংরেজি)
- ফাইন্ড এ গ্রেইভে গ্রির গারসন (ইংরেজি)
পুরস্কার ও স্বীকৃতি | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী চার্লস এডওয়ার্ড উইলসন |
টাইম পত্রিকার প্রচ্ছদ ২০ ডিসেম্বর ১৯৪৩ |
উত্তরসূরী পাত্রিয়ার্ক সের্জিউস |
- ১৯০৪-এ জন্ম
- ১৯৯৬-এ মৃত্যু
- ২০শ শতাব্দীর ইংরেজ অভিনেত্রী
- ইংরেজ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী
- ইংরেজ টেলিভিশন অভিনেত্রী
- ইংরেজ মঞ্চ অভিনেত্রী
- এসেক্সের অভিনেত্রী
- আইরিশ বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি
- স্কটিশ বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি
- কিংস কলেজ লন্ডনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইংরেজ প্রবাসী
- কমান্ডার অব দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার
- শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী
- গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার (সেরা অভিনেত্রী - নাট্য চলচ্চিত্র) বিজয়ী
- মেট্রো-গোল্ডউইন-মেয়ারের চুক্তিবদ্ধ শিল্পী
- মার্কিন নাগরিকত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি
- ব্রিটিশ মঞ্চ অভিনেত্রী
- ব্রিটিশ টেলিভিশন অভিনেত্রী
- লন্ডনের অভিনেত্রী
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্রিটিশ অভিবাসী
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকীকৃত নাগরিক