অনিল বাগচীর একদিন (চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অনিল বাগচীর একদিন
অনিল বাগচীর একদিন চলচ্চিত্রের পোষ্টার
পরিচালকমোরশেদুল ইসলাম
প্রযোজকআবুল খায়ের লিটু
রচয়িতাহুমায়ূন আহমেদ (সংলাপ)
চিত্রনাট্যকারমোরশেদুল ইসলাম
উৎসহুমায়ূন আহমেদ কর্তৃক 
অনিল বাগচীর একদিন
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারসানী জুবায়ের
চিত্রগ্রাহকএল অপু রোজারিও
সম্পাদকরতন পাল
প্রযোজনা
কোম্পানি
পরিবেশকবেঙ্গল ক্রিয়েশনস
মুক্তি
  • ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ (2015-12-11) (বাংলাদেশ)
স্থিতিকাল১২০ মিনিট
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
নির্মাণব্যয়৳১.২০ কোটি

অনিল বাগচীর একদিন ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। হুমায়ূন আহমেদ রচিত একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মোরশেদুল ইসলাম। চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছে বেঙ্গল ক্রিয়েশনস। এ ছবিতে অনিল বাগচীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন নবাগত অভিনেতা আরেফ সৈয়দ। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন গাজী রাকায়েত, তৌফিক ইমন, জ্যোতিকা জ্যোতি, ফারহানা মিঠু, এবং মিশা সওদাগর[১]

মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর অনিশ্চয়তা, মানবিকতা, স্বপ্ন, সম্প্রীতি প্রভৃতি অণুষঙ্গকে সার্থকভাবে ফুটিয়ে তোলা এই শক্তিশালী উপন্যাস অবলম্বনে মোরশেদুল ইসলাম নির্মাণ করেছেন 'অনিল বাগচীর একদিন'। এর আগে তিনি খেলাঘর (২০০৬) এবং আমার বন্ধু রাশেদ (২০১১) নামে দুটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

অনিল বাগচীর একদিন চলচ্চিত্রটি উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয় ২০১৫ সালের অক্টোবরে শ্রীলঙ্কার কলম্বো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এবং পরে ২০১৫ সালের ১১ ডিসেম্বর মুক্তি পায়।[২] ছবিটি ২০১৫ সালে ২৩ ডিসেম্বর কলকাতায় উপ হাইকমিশনে এবং ২০১৬ সালের ২৮ মে কানাডায় মন্টিয়লে প্রদর্শিত হয়। ছবিটি ৪০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও শ্রেষ্ঠ পরিচালক পুরস্কারসহ ছয়টি বিভাগে পুরস্কৃত হয়[৩] এবং ১৮তম মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে তিনটি মনোনয়নের মধ্যে দুটি বিভাগে পুরস্কৃত হয়।[৪]

অভিনয়ে[সম্পাদনা]

সঙ্গীত[সম্পাদনা]

'অনিল বাগচীর একদিন' চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সানি জুবায়ের। ছবিতে তিনটি গান রয়েছে। দুটি গানের কথা লিখেছেন পান্থ প্রসাদ। এছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে" গানটি ব্যবহার করা হয়েছে। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন প্রিয়াংকা গোপ এবং জ্যোতিকা জ্যোতি[৫]

মুক্তি ও প্রদর্শনী[সম্পাদনা]

অনিল বাগচীর একদিন চলচ্চিত্রটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয় ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে শ্রীলঙ্কার কলম্বো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। ১৩ নভেম্বর গল্পটির লেখক হুমায়ূন আহমেদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশে স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রিমিয়ার হয়। পরে ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ১১টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।[৬] ছবিটি ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর কলকাতার বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন একটি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করে।[৭] ২০১৬ সালের ২৮ মে কানাডায় মন্টিয়লে কোটদেনেইজের একটি হলে বাঙালি সংস্কৃতি পরিষদের আয়োজনে প্রদর্শিত হয়।[৮]

মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

সমালোচকদের প্রতিক্রিয়া[সম্পাদনা]

বাংলা ট্রিবিউন-এর শেরিফ আল সায়ার ছবিটির প্রশংসা করে বলেন, "উপন্যাস থেকে তুলে রূপালি পর্দায় ‘অনিল’ চরিত্রটিকে পুনরায় প্রাণ দিতে শতভাগ সফল হয়েছেন মোরশেদুল ইসলাম।" তিনি অনিল বাগচীর ভূমিকায় আরেফ সৈয়দের অভিনয় সম্পর্কে বলেন, "হুমায়ূন আহমেদ তার কলমে যে অনিলের গল্প বলেছিলেন, হুবহু তাকেই যেন পর্দায় তুলে এনেছেন মোরশেদুল ইসলাম।" তবে তিনি অনিলের বাবার ভূমিকায় সুরেশ বাগচীর এবং কর্নেল এলাহীর ভূমিকায় মিশা সওদাগরের চরিত্র দুটি অত্যন্ত দুর্বল ছিল বলে উল্লেখ করেন।[৯] বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর মোহাম্মদ নূরউল্লাহ বলেন হুমায়ূন আহমেদের গল্প যেভাবে শেষ হয়েছে ছবিটি সেরকমই শেষ হয়েছে, তবে ধীর গতি সম্পন্ন ছবিটি চূড়ান্ত রূপে পৌঁছাতে পারে নি। তিনি আরেফ সৈয়দের অনিল চরিত্রের সাথে মানিয়ে নেওয়া এবং গাজী রাকায়েতের আইয়ুব আলী চরিত্রে অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। তবে সুরেশ বাগচী চরিত্রে তৌফিক ইমনের কাজকে তিনি আরোপিত বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া তার কাছে দিনের দৃশ্যের চিত্রগ্রহণ ভাল লাগলেও রাতের দৃশ্যসমূহকে দুর্বল লেগেছে।[১০]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "সেন্সর ছাড় পেল 'অনিল বাগচীর একদিন'"। প্রথমআলো। সংগ্রহের তারিখ ০৫ মার্চ ২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. "আজ 'অনিল বাগচীর একদিন'"দৈনিক ইত্তেফাক। ১১ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ০৫ মার্চ ২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "Anil Bagchir Ekdin, Bapjaner Bioscope win big" (ইংরেজি ভাষায়)। নিউ এজ। ১৯ মে ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৭ 
  4. "মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেলেন যাঁরা"দৈনিক প্রথম আলো। ২৯ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৭ 
  5. "'Anil Bagchir Ek Din': A film with Bangladesh liberation war as backdrop" (ইংরেজি ভাষায়)। ডেইলি নিউজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস। ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৭ 
  6. Dey, Saurav (৯ ডিসেম্বর ২০১৭)। "Anil Bagchir Ekdin, Bapjaner Bioscope win big" (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৭ 
  7. "অনিল বাগচীর একদিন দেখে উচ্ছ্বসিত কলকাতা"। কলকাতা, ভারত: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৭ 
  8. সুজন, সদেরা (৩১ মে ২০১৬)। "মন্ট্রিয়েলে অনিল বাগচীর একদিন"। মন্ট্রিয়ল, কানাডা: দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৭ 
  9. সায়ার, শেরিফ আল (১৪ ডিসেম্বর ২০১৫)। "অনিল বাগচীর একদিন: ক খ গ ঘ ঙ..."বাংলা ট্রিবিউন। ৫ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৭ 
  10. নূরউল্লাহ, মোহাম্মদ (১৪ ডিসেম্বর ২০১৫)। "অনিল বাগচীর একদিন: ক খ গ ঘ ঙ..."বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৫ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]