প্রদ্যোতকুমার ভট্টাচার্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিপ্লবী

প্রদ্যোতকুমার ভট্টাচার্য
জন্ম৩ নভেম্বর, ১৯১৩
মৃত্যু১২ জানুয়ারি, ১৯৩৩
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন

প্রদ্যোতকুমার ভট্টাচার্য (৩ নভেম্বর, ১৯১৩ - ১২ জানুয়ারি, ১৯৩৩) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব। তিনি ছাত্রাবস্থায় বিপ্লবী দলের সভ্য হন। মেদিনীপুরের ম্যাজিস্ট্রেট রবার্ট ডগলাসকে হত্যার জন্য যে দুজন যুবক আক্রমণ চালান, প্রদ্যোত তাদের একজন। এই আক্রমণের ফলে ডগলাসের মৃত্যু ঘটে। ঘটনাস্থলের কাছে প্রদ্যোত রিভলভারসহ ধরা পড়েন। অনুসন্ধান করে দেখা যায়, প্রদ্যোতের গুলিতে ডগলাস নিহত হননি। বহু অত্যাচার সত্ত্বেও প্রদ্যোৎ সঙ্গীর নাম প্রকাশ করেননি। বিচারে তার ফাঁসি হয়। প্রকৃত হত্যাকারী ছিলেন প্রভাংশুশেখর পাল[১]

শৈশব ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

প্রদ্যোত ভট্টাচার্যের জন্ম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার রাজনগরের গোকুলনগরে। তার পিতার নাম ভবতারণ ভট্টাচার্য।[১] মেদিনীপুর হিজলি বন্দি শিবিরে নিরস্ত্র বন্দিদের উপর গুলি চালানোর প্রতিবাদে তার মন ব্রিটিশ নিধনে ইন্ধন যোগায়।[২]

ডগলাস হত্যা[সম্পাদনা]

১৯৩২ সালের ৩০ এপ্রিল মেদিনীপুরের দ্বিতীয় শ্বেতাঙ্গ ম্যাজিস্ট্রেট ডগলাস নিহত হন। তিনি তখন জেলা বোর্ডের এক মিটিংংয়ে সভাপতিত্ব করছিলেন। পুলিশ প্রহরী মোতায়েন ছিলো। এমন সময় প্রদ্যোত ভট্টাচার্য এবং প্রভাংশুশেখর পাল ডগলাসকে আক্রমণ করে হত্যা করেন। প্রদ্যোৎ তার সঙ্গীর পলায়নের সহায়তার জন্য পিস্তলসহ রুখে দাঁড়ায় এবং ধৃত হয়। প্রদ্যোতের বয়স তখন ২০ বছর এবং তিনি তখন মেদিনীপুর কলেজে পড়তেন। প্রদ্যোতের সাথীর নাম বের করার জন্য তার উপর অত্যাচার চলতে থাকে। কিন্তু তিনি কোনো প্রকার দুর্বলতা দেখাননি। ১৯৩৩ সনের ১২ জানুয়ারি প্রদ্যোতের ফাঁসি হয়।[৩]

ডগলাস হত্যার দায়ে অভিযুক্ত, ফাঁসির অপেক্ষায় থাকা প্রদ্যোত ভট্টাচার্যের চিঠি তার মায়ের উদ্দেশ্যে, "তােমাকে যদি কেউ আমার চোখের সামনে অত্যাচার করে, কেটে টুকরাে টুকরাে করতে চায় এবং আমি যদি পাগলের মতাে না লাফিয়ে বিচার করতে বসি - যে এতে আদৌ সুরাহা হবে কিনা, আইন এর মান্যতা দেয় কিনা, এ নিয়ে খবরের কাগজে তীব্র প্রবন্ধ লেখা যায় কিনা, তাহলে ধীর মস্তিষ্ক ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবাে ঠিকই, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তােমার মাতৃহৃদয়টা কি ছি ছি করে জ্বলে উঠবে না, যে ছোটোবেলায় বুকের দুধের সাথে বিষ মিশিয়ে কেনো এই ক্লেদের পিণ্ডটাকে মেরে ফেলিনি ! "[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৪০৭, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. http://www.midnapore.in (2015)। "Legacy of Midnapore"। সংগ্রহের তারিখ 9-21-2015  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  3. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গন, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ১৮১।