মোহাম্মদ হারিছ আলী
ডা. মোহাম্মদ হারিছ আলী | |
---|---|
![]() মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, রাজনীতিবিদ ও চিকিৎসক | |
জন্ম | ৩১ মে ১৯৪১ দেবেরগাঁও, ছাতক, সুনামগঞ্জ। |
মৃত্যু | ২০ আগস্ট ২০১৩ ঢাকা |
পেশা | চিকিৎসা |
পরিচিতির কারণ | মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত |
আন্দোলন | বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন |
দাম্পত্য সঙ্গী | মিনারা বেগম, সেলিনা বেগম |
পিতা-মাতা | বাবা: ইউসুফ আলী, মা: গোলাপজান বিবি। |
পুরস্কার | স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৪) |
মোহাম্মদ হারিছ আলী (৩১ মে ১৯৪১–২০ আগস্ট ২০১৩) একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, কবি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক ছিলেন।
শিক্ষা
[সম্পাদনা]প্রথমে ভর্তি হন শাখাইতি প্রাইমারি স্কুলে। ১৯৫৩ সালে হারিছকে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলি হাইস্কুলে ভর্তি করা হয়। ১৯৫৭ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করেন। ম্যাট্রিক পাসের পর ভর্তি হন মুরারিচাঁদ কলেজে।
১৯৫৯ সালে ভর্তি হন সিলেট মেডিক্যাল স্কুলে। ১৯৬২ সালে হারিছ আলী এলএমএফ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৭২ সালে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পরীক্ষা পাস করেন। এরপর ১৯৭৬ সালে ইংল্যান্ডের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিটিএম অ্যান্ড এইচ ডিগ্রি অর্জন করেন।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/9/96/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80%2C_%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AD%E0%A7%AC.jpg/220px-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80%2C_%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AD%E0%A7%AC.jpg)
পরিবার
[সম্পাদনা]তৎকালীন সুনামগঞ্জ মহকুমার ছাতক থানার দেবেরগাঁওয়ে তার জন্ম ৩১ মে ১৯৪১। ইউসুফ আলী ও গোলাপজান বিবি দম্পতির সন্তান হারিছ আলী। তারা ছিলেন পাঁচভাই, পাঁচবোন।
মিনারা বেগম এবং হারিছ আলীর পাঁচ সন্তান : হুমায়ূন কবির অপু, নোমান কবির দিপু, ফেরদৌস কবির টিপু, হোসনে আরা বেগম অনু ও নাদিরা বেগম চিনু। দ্বিতীয় স্ত্রী সেলিনা বেগমের দুই সন্তান : ফারজানা আক্তার টিনা ও তানজিনা আক্তার ইলা।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]১৯৬৬ সালে চিকিৎসক হিসেবে প্রথমে নিয়োগ পান মাদারিপুর মহকুমার সদর হাসপাতালে। ১৯৬৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে হারিছ আলী হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে বদলি হয়ে আসেন।
মুক্তিযুদ্ধে তিনি ৫ নং সেক্টরে যুগপৎ রাজনৈতিক সংগঠক এবং রেজিমেন্টাল মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। চেলা এবং ভোলাগন্জ সাব সেক্টরে তিনি আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবার নিমিত্তে হাসপাতাল গড়ে তুলেন। ১৯৭৮ সালে সালে তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী যুবলীগের শাখা গড়ে তোলেন।
রাজনীতি
[সম্পাদনা]১৯৫২ সালে সুনামগঞ্জ এইচএমপি (হাজি মকবুল পুরকায়স্থ) স্কুলে অধ্যয়ণকালে ভাষা আন্দোলনের মিছিল-মিটিংয়ে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে পা রাখেন হারিছ আলী। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে তিনি প্রচারণায়, মিছিল-মিটিং-এ অংশগ্রহণ করেন। তার সহপাঠীদের অন্যতম ছিলেন ছাতক-দোয়ারা আসনে তিন বারের সাংসদ আবুল হাসনাত আবদুল হাই। জুবিলী স্কুলে অধ্যয়নকালে তাঁরা দুজনেই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। [১]
অতঃপর হারিছ আলী সুনামগঞ্জের পাঠ চুকিয়ে সিলেট শহরে আসেন। ভর্তি হন ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজে। ১৯৫৯ সালে এলএমএফ কোর্সে ভর্তি হোন সিলেট মেডিক্যাল স্কুলে। সিলেটে আসার পর শুরু থেকেই হারিছ আলী রাজনীতিতে পুরোদস্ত্তর সক্রিয় *হয়ে উঠেন। তত দিনে একনায়ক ফিল্ড মার্শাল আইয়ূব শাহীর রাজত্ব শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে তার স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে বাঙালিদের আন্দোলন জোরদার হতে থাকে। হারিছ আলী সিলেট শহরে সামনের কাতারে থেকে সেই আন্দোলনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। আইয়ুব খানের সিলেট সফরকালীন যেদিন সার্কিট হাউসের সামনে তার উপর জুতা নিক্ষেপ করা হয়, ছাত্রদের সেই বিক্ষোভ-মিছিলে হারিছ আলীও ছিলেন।[২]
সিলেটে আসার অল্পদিনের মধ্যে হারিছ আলী ছাত্র-আন্দোলনের অন্যতম নেতা হয়ে উঠেন।
১৯৬১-৬২ সালে সিলেট মেডিক্যাল স্কুল ছাত্র-সংসদের নির্বাচনে হারিছ আলী জিএস নির্বাচিত হোন।
১৯৬১-৬৩: সিলেটে বিশ্ববিদালয় স্থাপনের দাবিতে হারিছ আলী নেতৃ্স্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৩ সালে এ উদ্দেশ্যে সিলেটে একটি কমিটি গঠিত হয়। সেটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন হারিছ আলী। তাছাড়া ছয় দফা, '৬২র শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৬-র ৬-দফা, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যূত্থানসহ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সিলেট শহরে হারিছ আলী অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
জীবনাবসান
[সম্পাদনা]২০১৩ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ
[সম্পাদনা]- 'ছন্দ সুরের বন্দনা'(২০০৮)। উৎস প্রকাশন। আইএসবিএন : 984-70059-0082-6
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০১৪ সালে দেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার”[৩] হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[৪]
আলোকচিত্র
[সম্পাদনা]![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/50/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80_%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%A8_%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95_%E0%A6%B9%E0%A6%B2-%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AE%E0%A7%A6.jpg/220px-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80_%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%A8_%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95_%E0%A6%B9%E0%A6%B2-%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AE%E0%A7%A6.jpg)
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/43/%E0%A7%A8._%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80_%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%A8_%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95_%E0%A6%B9%E0%A6%B2-%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AE%E0%A7%A6.jpg/220px-%E0%A7%A8._%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80_%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%A8_%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95_%E0%A6%B9%E0%A6%B2-%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AE%E0%A7%A6.jpg)
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/5f/%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%A8_%E0%A6%9F%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A6%BF_%E0%A6%B9%E0%A6%B2-%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AE%E0%A7%A6.jpg/220px-%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%A8_%E0%A6%9F%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A6%BF_%E0%A6%B9%E0%A6%B2-%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AE%E0%A7%A6.jpg)
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/7/74/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80_%E0%A6%93_%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B2_%E0%A6%97%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%B0_%E0%A6%9A%E0%A7%8C%E0%A6%A7%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%80.jpg/220px-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80_%E0%A6%93_%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B2_%E0%A6%97%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%B0_%E0%A6%9A%E0%A7%8C%E0%A6%A7%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%80.jpg)
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/5f/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80_%E0%A6%93_%E0%A6%8F%E0%A6%AE%E0%A6%8F%E0%A6%9C%E0%A6%BF_%E0%A6%93%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80.jpg/220px-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80_%E0%A6%93_%E0%A6%8F%E0%A6%AE%E0%A6%8F%E0%A6%9C%E0%A6%BF_%E0%A6%93%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80.jpg)
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/4a/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80_%E0%A6%93_%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A7%A8%E0%A7%A6%E0%A7%A7%E0%A7%A9.jpg/220px-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9B_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%80_%E0%A6%93_%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A7%A8%E0%A7%A6%E0%A7%A7%E0%A7%A9.jpg)
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ আবিদ, ফায়সাল। স্বাপ্নিক এবং সংগ্রামী : ডা. হারিছ আলী।
- ↑ সিলেট ভয়েজ (২০ আগস্ট ২০২২)। "মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. হারিছ আলীর প্রয়াণদিবস আজ"।
- ↑ "এবার স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৬ ব্যক্তি ও সংস্থা"। এনটিভি অনলাইন। ২৪ মার্চ ২০১৬। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭।