ভান্ডারিয়া উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২২°২৯′১৭″ উত্তর ৯০°৪′১০″ পূর্ব / ২২.৪৮৮০৬° উত্তর ৯০.০৬৯৪৪° পূর্ব / 22.48806; 90.06944
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ভান্ডারিয়া
উপজেলা
মানচিত্রে ভান্ডারিয়া উপজেলা
মানচিত্রে ভান্ডারিয়া উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২২°২৯′১৭″ উত্তর ৯০°৪′১০″ পূর্ব / ২২.৪৮৮০৬° উত্তর ৯০.০৬৯৪৪° পূর্ব / 22.48806; 90.06944 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগবরিশাল বিভাগ
জেলাপিরোজপুর জেলা
প্রতিষ্ঠা১৫ এপ্রিল, ১৯৮৩
আসনপিরোজপুর-২
আয়তন
 • মোট১৬৩.৫৭ বর্গকিমি (৬৩.১৫ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট১,৬৪,৬১৮
 • জনঘনত্ব১,০০০/বর্গকিমি (২,৬০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হারপুরুষঃ ৬৭.৬%, মহিলাঃ ৬৭.৯%
 • মোট৬৭.৭%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৮৫৫০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
১০ ৭৯ ১৪
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

ভান্ডারিয়া উপজেলা বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। ভান্ডারিয়া থানা গঠিত হয়েছিল ১৯১২ সালে এবং এটিকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালের ১৫ এপ্রিল।

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

ভান্ডারিয়া উপজেলার আয়তন ১৬৩.৫৭ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলাকাউখালী উপজেলা, দক্ষিণে মঠবাড়িয়া উপজেলা, পূর্বে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলাকাঁঠালিয়া উপজেলা, পশ্চিমে পিরোজপুর সদর উপজেলা

নদ-নদী[সম্পাদনা]

কচা, বলেশ্বর, পোনা, নল্বুনিয়া ও চেচড়ি-রামপুর বিল (পদ্মা বাওর) ইত্যাদি।

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ[সম্পাদনা]

ভান্ডারিয়া উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম ভান্ডারিয়া থানার আওতাধীন।

পৌরসভা:
ইউনিয়নসমূহ:

ইতিহাস[সম্পাদনা]

এই উপজেলার সিংখালীতে ১৮৫৪ সালে কৃষক বিদ্রোহ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কৃষক নেতারা গগন ও মোহন মিয়া ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এবং স্থানীয় জমিদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন, যেখানে ১৭ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছিল। একাত্তরের আগস্টে সুবেদার আজিজ শিকদারের অধীনে মুক্তিযোদ্ধারা ভান্ডারিয়া থানায় হামলা চালায় এবং বেশ কয়েকজন রাজাকার মারা গিয়েছিল। ২৯ নভেম্বর ভান্ডারিয়া বন্দর পদচ্যুত করার পরে পাক সেনারা ভান্ডারিয়া উপজেলা থেকে পিছু হটে যায়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ[সম্পাদনা]

উপকূলীয় অঞ্চল হিসাবে এই উপজেলা জলোচ্ছ্বাস এবং ঘূর্ণিঝড়ে বহুবার আক্রান্ত ছিল। এ ছাড়া ১৯৪১, ১৯৬১, ১৯৭০, ১৯৭৭, ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯৯, ২০০৭ ও ২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার জনবসতি, ফসল, যাতায়াত ব্যবস্থা, পশুপাখি ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ভান্ডারিয়া উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১,৪৮,১৫৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭২,৩০৮ জন এবং মহিলা ৭৫,৮৫১ জন। মোট পরিবার ৩৪,৩৩৮টি।[২]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ভান্ডারিয়া উপজেলার সাক্ষরতার হার ৬৭.৭%। পুরুষঃ ৬৭.৬% এবং মহিলা ৬৭.৯%। [২]

  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:

কলেজ ৫ টি, কারিগরী কলেজ ১ টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪১ টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৪ টি, মাদ্রাসা ৮১ টি ও এতিমখানা ৩ টি।

  • উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান:

ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজ (১৯৭০), মজিদা বেগম মহিলা কলেজ (১৯৮৯), ভান্ডারিয়া বিহারী লাল মিত্র পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১১), বড় কানুয়া এ মাজিদ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), ভিটাবাড়ীয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪৪), আমানউল্লাহ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ভান্ডারিয়া থানা উচ্চ বিদ্যালয়, ইকরি উচ্চ বিদ্যালয়।

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

কৃষি ৪৯.৮২%, অকৃষি শ্রমিক ৫.৩০%, শিল্প ০.০৮%, বাণিজ্য ১৬.৪৪%, পরিবহন ও যোগাযোগ ২.৯৯%, সেবা ১১.২০%, নির্মাণ ১.৯৭%, ধর্মীয় সেবা ০.০৫%, ভাড়া ও রেমিট্যান্স ১.৪৬% এবং অন্যান্য ৯.৯৩%।

কৃষিজমির মালিকানা

ভূমিমালিক ৭০.০৫%, ভূমিহীন ২৯.৯৫%; কৃষি জমির মালিক: নগর ৬১.৩০% এবং গ্রামীণ ৭১.৪৯%।

প্রধান কৃষি ফসল

ধান, পান, মরিচ, আখ

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি

তিল, তিসি, আরহর, চীনা।

প্রধান ফলমূল

আম, নারকেল, সুপারি, পেয়ারা, কলা, চালতা, আমড়া

প্রধান রফতানি[সম্পাদনা]

পেয়ারা, কলা, আমড়া, সুপারি, নারকেল, শীতল পাটি।

শিল্প ও কলকারখানা

রাইস মিল, সিল মিল, আইস ফ্যাক্টরি, প্রিন্টিং প্রেস, ইটভাটা ও ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প

লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, শীতল পাটি, কাঠের কাজ, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার

মৎস্য ১৮৫০ টি, গবাদিপশু ১৯০ টি ও হাঁস-মুরগি ১২০ টি।

যোগাযোগ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

পাকা রাস্তা ৪৬ কিমি, আধা-পাকা রাস্তা ৩৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৫০ কিমি; জলপথ ৩৯ নটিক্যাল মাইল।

যানবাহন ও পরিবহন[সম্পাদনা]

বাস, লঞ্চ, জাহাজ, নৌকা, ট্রলার, রিক্সা, অটোরিক্সা ও টেম্পু (লোকাল নাম)।

  • কোন রেল সংযোগ নেই।
  • বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

সুযোগ সুবিধা সমূহ[সম্পাদনা]

বিদ্যুতের সুবিধা[সম্পাদনা]

উপজেলার সকল ইউনিয়ন গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন নেট-ওয়ার্কের আওতায় রয়েছে। তবে ২৬.৫৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয় জলের উৎস[সম্পাদনা]

নলকূপ ৬৭.৭৮%, পুকুর ২৭.৮৬%, ট্যাপ ০.৩৭% এবং অন্যান্য ৪.০০%।

  • এই উপজেলার অগভীর নলকূপের জলে আর্সেনিকের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে।

স্যানিটেশন[সম্পাদনা]

৩৯.৭৭% (পল্লী ৩৪.৭৩% এবং শহরে ৭০.২৩%) পরিবারের স্যানিটারি ল্যাট্রিন এবং ৫৭.১৬% (পল্লী ৬১.১৭% এবং শহরে ২৬.৮৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে।

  • ৩.০৭% পরিবারের কোনও ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র[সম্পাদনা]

হাসপাতাল ১টি , উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৭ টি ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮ টি। '

উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা[সম্পাদনা]

  • হরিনপালা রিভারভিউ ইকো পার্ক।
  • ভান্ডারিয়া শিশু পার্ক।
  • কৃষক বিদ্রোহের শহীদদের কবরস্থান (সিংখালী)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

মসজিদ ৬৬০ টি এবং মন্দির ১৭২ টি।

উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান

ভান্ডারিয়া জামে মসজিদ, ভেলাই চৌকিদারের যমজ মসজিদ (শিয়া মসজিদ নামে পরিচিত), বাইতুল ফালাহ্ জামে মসজিদ (ভিটাবাড়িয়া), ইকরি জামে মসজিদ ও ঠাকুর মদন মোহন মন্দির।

বিবিধ[সম্পাদনা]

হাটবাজার ও মেলা[সম্পাদনা]

হাটবাজার ১৮ টি, মেলা ৪ টি, এর মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ভান্ডারিয়া, ইকরি বাজার, কাপালিরহাট বাজার এবং দশেরা, বৈশাখী ও পটলখালী মেলা।

সংবাদপত্র ও সাপ্তাহিক সাময়িকী[সম্পাদনা]

ভান্ডারিয়া বার্তা (১৯৯৮), মুখর বাংলা (২০০১)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

ক্লাব ৩২ টি, পাঠাগার ৮ টি, সাহিত্য সংগঠন ১ টি ও শিল্পকলা একাডেমি ১ টি।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে ভান্ডারিয়া উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৫ 
  2. "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)web.archive.org। Wayback Machine। Archived from the original on ৮ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]