সিলিয়া জনসন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সিলিয়া জনসন

Celia Johnson
জন্ম
সিলিয়া এলিজাবেথ জনসন

(১৯০৮-১২-১৮)১৮ ডিসেম্বর ১৯০৮
রিচমন্ড, সারি, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৬ এপ্রিল ১৯৮২(1982-04-26) (বয়স ৭৩)
নেটলবেড, অক্সফোর্ডশায়ার, ইংল্যান্ড
শিক্ষাসেন্ট পল্‌স গার্লস স্কুল
কর্মজীবন১৯২৮-১৯৮২
দাম্পত্য সঙ্গীপিটার ফ্লেমিং
(বি. ১৯৩৫; মৃ. ১৯৭১)
সন্তান

ডেম সিলিয়া এলিজাবেথ জনসন, ডিবিই (১৮ ডিসেম্বর ১৯০৮ - ২৬ এপ্রিল ১৯৮২) ছিলেন একজন ইংরেজ অভিনেত্রী। তিনি মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে তার কাজের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছেন।[১] তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল ইন হুইচ উই সার্ভ (১৯৪২), দিস হ্যাপি ব্রিড (১৯৪৪), ব্রিফ এনকাউন্টার (১৯৪৫) ও দ্য ক্যাপ্টেন্‌স প্যারাডাইজ (১৯৫৩)। তিনি ব্রিফ এনকাউন্টার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এছাড়া তিনি ছয়বার বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং দ্য প্রাইম অব মিস জিন ব্রডি (১৯৬৯) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য একবার শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কার অর্জন করেন।

জনসন ১৯২৮ সালে মঞ্চে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং অচিরেই ওয়েস্ট এন্ড ও ব্রডওয়ে মঞ্চে সফলতা অর্জন করেন। তিনি তার বাকি জীবন মঞ্চে অভিনয় চালিয়ে যান এবং তার পরবর্তী অধিকাংশ কাজই ছিল টেলিভিশনে। তিনি বিবিসির প্লে ফর টুডে-তে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা টিভি পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ৭৩ বছর বয়সে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

জনসন ১৯০৮ সালের ১৮ই ডিসেম্বর সারির রিচমন্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল "বেটি"। জনসনের পিতা জন রবার্ট জনসন এবং মাতা ইথেল (বিবাহপূর্ব গ্রিফিথস) জনসন। তিনি প্রথম জনসম্মুখে পরিবেশনা ছিল ১৯১৬ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে ফিরে সৈন্যদের জন্য তহবিল সংগ্রহের জন্য কিং কোফেটুয়া অ্যান্ড দ্য বেগার মেইড-এ দাতব্য পরিবেশনা।

তিনি ১৯১৯ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত লন্ডনে সেন্ট পল্‌স গার্লস স্কুলে পড়াশোনা করেন। তিনি গুস্টাভ হোলস্টের অধীনে বিদ্যালয়ের ঐকতান বাদকদলে পরিবেশনা করতেন। তিনি বিদ্যালয়ের মঞ্চনাটকে অভিনয়ও করতেন, তবে ১৯২৬ সালে রয়্যাল একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টে (রাডা) ভর্তির সময় তার অন্য কোন অভিনয়ের অভিজ্ঞতা ছিল না। রাডায় তার সহপাঠি ছিলেন মার্গারেটা স্কট।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

জনসন লন্ডনে কয়েকটি ছোট মঞ্চনাটকে কাজ করেন এবং এরপর দ্য উইন্ড অ্যান্ড দ্য রেইন (১৯৩৩-১৯৩৫) নাটকে দুই বছর অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নিজেকে শীর্ষ মঞ্চ অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।[২] তিনি ১৯৩৫ সালে সাংবাদিক পিটার ফ্লেমিংয়ের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৩৯ সালের তাদের প্রথম পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করে।[২]

তিনি নোয়েল কাওয়ার্ড রচিত এবং ডেভিড লিন পরিচালিত ইন হুইচ উই সার্ভ (১৯৪২) ও দিস হ্যাপি ব্রিড (১৯৪৪) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। রেডিও টাইমস দিস হ্যাপি ব্রিড চলচ্চিত্রটিকে পাঁচে পাঁচ তারকা দেয় এবং জনসনের ইথেল গিবন্স চরিত্রে অভিনয় সম্পর্কে লিখে "সিলিয়া জনসন অসাধারণ ছিলেন... তার প্রতিবেশী রবার্ট নিউটন ও স্ট্যানলি হলওয়ের সাথে তার দৃশ্যগুলো সবচেয়ে সেরা।"[৩] এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ন্যাশনাল বোর্ড অব রিভিউ পুরস্কার অর্জন করেন।

লিন ও কাওয়ার্ড তাদের পরবর্তী চলচ্চিত্র ব্রিফ এনকাউন্টার-এর জন্যও তাকে বাছাই করেন। তিনি তার পারিবারিক দায়িত্ব পালনের স্বার্থে এই চরিত্রটি গ্রহণ করেন, কিন্তু এই ভূমিকাতে আগ্রহীও ছিলেন। তিনি তার স্বামীকে লিখেন, "এটি খুব ভালো একটি চরিত্র এবং আমি এতে অভিনয় করতে পছন্দ করবো। আমি ইতোমধ্যে কীভাবে অভিনয় করবো ও কীভাবে আমার সংলাপ বলবো তার পরিকল্পনা করে ফেলেছি।"[৪] একজন মধ্যবিত্ত গৃহিণী রেলওয়ে স্টেশনের আরাম করার কক্ষে একজন বিবাহিত ডাক্তারের সাথে পরিচিত হন এবং তার প্রেমে পড়েন এই গল্পে আবর্তিত প্রণয়মূলক নাট্যধর্মী চলচ্চিত্রটি সমাদৃত হয় এবং বর্তমান সময়ে একে ধ্রুপদী চলচ্চিত্র হিসেবে গণ্য করা হয়। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে নিউ ইয়র্ক চলচ্চিত্র সমালোচক সমিতি পুরস্কার অর্জন করেন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জনসন তার পরিবারিক জীবনে মনযোগী হন। ১৯৪৬ ও ১৯৪৭ সালে তার দুই কন্যা জন্মগ্রহণ করে। পরের দশকে তিনি মাঝে মাঝে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতেন।[২] পরের দশকে তিনি আই বিলিভ ইন ইউ (১৯৫১) এবং দ্য ক্যাপ্টেন্‌স প্যারাডাইজ (১৯৫৩) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ প্রধান চরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

তিনি দ্য প্রাইম অব মিস জিন ব্রডি (১৯৬৯) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি ছয়বার বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "অবিচুয়ারি", ভ্যারাইটি, ২৮ এপ্রিল ১৯৮২।
  2. "Blue plaque for actress Celia Johnson"ইংলিশ হেরিটেজ। ১৮ ডিসেম্বর ২০০৮। ৭ মে ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২০ 
  3. "TV listings guide"রেডিও টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২০ 
  4. গ্রিমন্ড, কেট (১৮ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Growing up with a movie icon Celia Johnson as mum"দ্য টাইমস। লন্ডন। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০২০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]