কুল্লাপাথর শহীদ স্মৃতিসৌধ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কুল্লাপাথর শহীদ স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি

কুল্লাপাথর শহীদ স্মৃতিসৌধ বা শুধু কুল্লাপাথর বা কোল্লাপাথর বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সমাধিস্থল। একটি ছোট টিলার উপরে এই সমাধিস্থল অবস্থিত। কসবা বাংলাদেশের একটি সীমান্তবর্তী উপজেলা যা মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ নম্বর সেক্টরের আওতায় ছিল এবং এর পাশের ভারতের আগরতলা, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল। প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থাকার কারণে এ অঞ্চলটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অন্যতম লক্ষে পরিণত হয়েছিল ফলে অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এ এলাকায় বেশি যুদ্ধ সংগঠিত হয় এবং বিপুল সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাতবরণ করেন। এখানে দুজন বীরবিক্রম, একজন বীরউত্তম, দুজন বীরপ্রতীক সহ মোট ৪৮ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধি রয়েছে। এখানকার প্রতিটি কবরের উপরেই লেখা রয়েছে মুক্তিযোদ্ধার নাম এবং ঠিকানা। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম এবং তার আত্নীয়রা মিলে তার পৈতৃক ভিটায় মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ সংগ্রহ করে দাফন করেন।[১] ১৯৭২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা প্রশাসক ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতায় এ স্থানটি সংরক্ষণ করা হয়। এছাড়াও রেস্ট হাউস, তোরণ এবং পুকুরের পাঁকা ঘাট নির্মাণ করা হয়।

শহীদদের নাম[সম্পাদনা]

কুল্লাপাথরে সমাহিত শহীদদের নাম—সিলেটের হাবিলদার তৈয়ব আলী

, ঠাকুরগাঁওয়ের সৈনিক দর্শন আলী,

আর কে মিশন রোড ঢাকার মো. জাকির হোসেন ( বীর প্রতীক),

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. আবদুল জব্বার (মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখনো স্বীকৃতি পাননি),

বগুড়ার ল্যান্স নায়েক আবদুস সাত্তার (বীর বিক্রম),

কুমিল্লার সিপাহী আক্কাছ আলী

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. ফকরুল আলম,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. ফারুক আহম্মদ,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোজাহিদ নুরু মিয়া,

ময়মনসিংহের নায়েক মোজাম্মেল হক,

নোয়াখালীর নায়েক সুবেদার মো. আবদুল সালাম (বীর বিক্রম),

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. নোয়াব আলী,

ফরিদপুরের সিপাহী মুসলীম মৃধা,

শরিয়তপুরের প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. আবদুল অদুদ,

কুমিল্লার সিপাহী জসিম উদ্দীন,

কুমিল্লার মো. আবদুল কাসেম (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী),

কুমিল্লার মো. মোশারফ হোসেন,

কুমিল্লার নায়েক সুবেদার মইনুল হোসেন (বীর উত্তম) (তার নামে ঢাকা সেনানিবাস এলাকার শহীদ মইনুল সড়কের নামকরণ করা হয়) ,

চাঁদপুরের সিপাহী মো. নুরুল হক,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. আবদুল কাইয়ুম, কুমিল্লার সিপাহী হুমায়ুন কবির,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ল্যান্স নায়েক মো. আ. খালেক,

কুমিল্লার ল্যান্স নায়েক আজিজুর রহমান,

কুমিল্লার মো. তারু মিয়া,

চট্টগ্রামের নায়েক সুবেদার বেলায়েত হোসেন (বীর উত্তম),

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. রফিকুল ইসলাম,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. মোরসেদ মিয়া,

কিশোরগঞ্জের শ্রী আশু রঞ্জন দে,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. তাজুল ইসলাম,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. শওকত,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. আবদুস সালাম সরকার,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. আমির হোসেন,

চাঁদপুরের মো. জাহাঙ্গীর আলম,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শ্রী পরেশ চন্দ্র মল্লিক,

কুমিল্লার মো. জামাল উদ্দিন,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. আবদুল আউয়াল,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. জাবেদ আহাম্মদ,

কুমিল্লার মো. সিরাজুল ইসলাম,

কুমিল্লার মো. ফরিদ মিয়া,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. মতিউর রহমান,

কুমিল্লার মো. সাকিল মিয়া,

চাঁদপুরের আনসার ইলাহী বক্স পাটোয়ারী (বীর প্রতীক),

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. আবদুর রশিদ,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিপাহী শহিদুল হক,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিপাহী আনোয়ার হোসেন,

কুমিল্লার সিপাহী মো. আবদুল বারী খন্দকার

এবং অজ্ঞাত তিনজন।[২]

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

"১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে কোল্লাপাথর সমাধিস্থলে বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা"
বামে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাের সমাধি, ডানে শহীদদের নামের তালিকা ফলক। ছবিতে পর্যটকদের দেখা যাচ্ছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. দৈনিক যুগান্তর, ৭১-এর শহীদদের স্মৃতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কুল্লাপাথর, মমিনুল ইসলাম মোল্লা, পৃষ্ঠা ২৩, ২৩ এপ্রিল, ২০১০।
  2. বাংলানিউজটুয়েন্টিফোরডটকম, ২৫ মার্চ ২০১৫