মাহবুব উল আলম চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মাহবুব উল আলম চৌধুরী
জন্মমাহবুব উল আলম চৌধুরী
৭ই নভেম্বর, ১৯২৭
গহিরা গ্রাম ,রাউজান উপজেলা,চট্টগ্রাম
মৃত্যু২৩ ডিসেম্বর ,২০০৭ সাল
ইউনাইটেড হাসপাতাল, গুলশান
পেশাকবি
ওয়েবসাইট
http://mahbubulalamchowdhury.info/
একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন মাহবুব উল আলম

মাহবুব উল আলম চৌধুরী (৭ নভেম্বর, ১৯২৭ - ২৩ ডিসেম্বর, ২০০৭) একজন কবি, সাংবাদিক এবং ভাষা সৈনিক। তিনি একুশের প্রথম কবিতার কবি।[১][২][৩]

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

মাহবুব উল আলম চৌধুরী চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা আসাদ চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আহমদুর রহমান চৌধুরী এবং মাতা রওশন আরা বেগম। তিনি ১৯৪৭ সালে গহিরা হাইস্কুল হতে বৃত্তিসহ প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর কলেজ পরিদর্শনে এসে ছাত্রদের উদ্দেশে বক্তৃতা প্রদানকালে আরবি হরফে বাংলা প্রচলনের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করলে মাহবুব উল আলম চৌধুরী প্রতিবাদে সোচ্চার হন এবং শেষ পর্যন্ত লেখাপড়া অসমাপ্ত রেখেই কলেজ ছাড়তে বাধ্য হন।[২]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন[সম্পাদনা]

১৯৪৭ সালে মাহবুব উল আলম চৌধুরী চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং এ সংগঠনের কর্মী হিসেবে তিনি ব্রিটিশবিরোধী ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ নেন। এ বছরেরই নভেম্বর মাসে তার সম্পাদনায় সীমান্ত নামক একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি ১৯৫২ সাল পর্যন্ত নিয়মিত ছাপা হত এবং দুই বাংলার প্রগতিশীল লেখকরা এতে লিখতেন। সীমান্ত পত্রিকা হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল।[৪] মাহবুব উল আলম চৌধুরী গান, নাচ, নাটক, আবৃত্তি সবখানেই ছিলেন উদ্যোক্তা ও সংগঠক। তিনি গান লিখে গেয়েছেনও।তিনি ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। চট্টগ্রামের প্রান্তিক নব নাট্যসংঘ ও কৃষ্টি কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত মাসিক সীমান্ত (১৯৪৭-৫২) এবং দৈনিক স্বাধীনতা (১৯৭২-৮২) পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।[৫]

ভাষা আন্দোলন[সম্পাদনা]

১৯৫০ সালে পাকিস্তান মূলনীতি কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সে রিপোর্টে পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলার পরিবর্তে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা এ অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। মাহবুব উল আলম চৌধুরী ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ১৯৫২ সালে তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম প্রাদেশিক ভাষা আন্দোলন কমিটির সদস্য। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি কবিতাটি রচনা করেন। এ কবিতাটি ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রচিত প্রথম কবিতা হিসেবে স্বীকৃত।

একুশের প্রথম কবিতা[সম্পাদনা]

বাংলাকে রাষ্টভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে চট্টগ্রামে সর্বদলীয় রাষ্টভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এই কমিটির আহবায়ক ছিলেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী এবং যুগ্ন আহবায়ক ছিলেন চৌধুরী হারুনুর রশীদ এবং এম এ আজিজ। ৫২’র ২১শে ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হরতাল পালিত হয়। ঢাকায় ছাত্রদের উপর গুলিবর্ষনের খবর আসে চট্টগ্রামে অবস্থানরত কেন্দ্রীয় রাষ্টভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সাংবাদিক-সাহিত্যিক খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াসের কাছে। জ্বর ও জলবসন্তে আক্রান্ত ছিলেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী। শ্রমিক নেতা চৌধুরী হারুনুর রশীদ এবং আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা এম এ আজিজ তাই আহবায়ক হিসাবে কাজ করছিলেন। গুলিবর্ষনের খবরটা শোনার পর তিনি রচনা করেন “কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি” নামের কবিতা। অসুস্থতার জন্য মাহবুব উল আলম চৌধুরীর হাতে লেখার ক্ষমতা ছিলো না তখন। তিনি বলে যাচ্ছিলেন কবিতার পংক্তিগুলো আর সহকর্মী ননী ধর তা লিখে নিলেন। এটি হলো একুশের প্রথম কবিতা। আন্দরকিল্লায় কোহিনূর ইলেকট্রিক প্রেসে কবিতাটি পুস্তিকা আকারে প্রকাশের দায়িত্ব নিলেন খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস। উদ্দেশ্য ছিলো সারারাত প্রেসে কাজ করে পরদিন সকালে গোপনে পুস্তিকাটি প্রকাশ করা। এক ফর্মার এই পুস্তিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ছিলো শিরোনাম “কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি” এবং নিচে কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর নাম। প্রকাশক হিসাবে নাম ছিলো কামালউদ্দিন খানের এবং মুদ্রাকর হিসাবে প্রেসের ম্যানেজার দবিরউদ্দিন আহমদের। শীতের রাতে যখন কম্পোজ ও প্রুফের কাজ প্রায় শেষের দিকে তখন পুলিশ সুপার আলমগীর কবীরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ প্রেসে হানা দেয়। প্রেসে উপস্থিত কর্মচারীদের বুদ্ধিতে লুকিয়ে যান খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস এবং রক্ষা পায় সম্পূর্ণ কম্পোজ ম্যাটার। পুলিশ তন্ন তন্ন করে খোঁজ করে ও কিছুই পেল না। কোহিনূর ইলেকট্রিক প্রেসের কর্মচারীরা গোপনে পুস্তিকাটির প্রায় ১৫ হাজার কপি বিক্রয় ও বিতরনের জন্য মুদ্রণ ও বাঁধাইয়ের কাজ শেষ করে। ঢাকায় গুলিবর্ষনের প্রতিবাদে ২৩ ফেব্রুয়ারি সমগ্র চট্টগ্রামে সাধারন ধর্মঘট পালিত হয়। লালদিঘি ময়দানে বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার জনসমুদ্রে “কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি” কবিতাটি আবৃত্তি করেন চৌধুরী হারুনুর রশীদ। কবিতা শুনে বিক্ষুব্ধ জনতা শ্লোগান দেয় “চল চল ঢাকা চল, খুনি লীগশাহীর পতন চাই”, “লীগ নেতাদের ফাঁসি চাই, নুরুল আমিনের কল্লা চাই”। এর কয়েকদিন পরেই সেসময়কার মুসলিম লীগ সরকার কবিতাটি বাজেয়াপ্ত করে। [৬]

১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ১৭ পৃষ্ঠার একটি পুস্তিকায় ছাপা হয় কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি।[৭] চৌধুরী জহুরুল হকের মতে কবিতাটি দীর্ঘ সতেরো পৃষ্ঠার নয়—১/৮ ডিমাই সাইজের মলাট সহ (২+৬) আট পৃষ্ঠার। কবিতাটি সতেরো পৃষ্ঠা বলে বারবার উচ্চারিত হওয়ার কারণ বোধ হয় এই যে, হাতের লেখা পাণ্ডুলিপিটি হয়তো সতেরো পৃষ্ঠার ছিল। বইটির দাম রাখা হয় দুই আনা। [৮] দীর্ঘকাল নিষিদ্ধ থাকার কারণে এক সময় কবিতাটি হারিয়ে যায়। এই কবিতা নিয়ে নানা সময় লিখেছেন ড. আনিসুজ্জামান, খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস (কবিতার প্রথম দুই শ্রোতার একজন), ড. রফিকুল ইসলাম, ড. হায়াৎ মামুদ, বশীর আল হেলাল সহ অনেকে। দীর্ঘদিন পরে ১৯৯১ সালে অধ্যাপক চৌধুরী জহুরুল হকের গবেষণার মাধ্যমে তার বই প্রসঙ্গ : একুশের প্রথম কবিতা রচনা করেন। উল্লেখ্য, চৌধুরী জহুরুল হক এই কবিতার দুর্লভ কপি উদ্ধার করেন প্যারামাউন্ট প্রসেস এন্ড প্রিন্টিং ওয়র্কসের স্বত্বাধিকারী আবু মোহাম্মদ তবিবুল আলমের কাছ থেকে। তবিবুল আলম সংগ্রহ করেছিলেন কম্পোজিটার নুরুজ্জামান পাটোয়ারীর কাছ থেকে।[৮] ড. আনিসুজ্জামান লিখেছেন, ‘একুশের প্রথম কবিতা যে মাহবুব উল আলম চৌধুরী লিখলেন, তা হয়তো এক আকস্মিক ঐতিহাসিক ঘটনা। কিন্তু একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে কবিতা তাঁকে লিখতেই হতো–তাঁর সমগ্র জীবনাচরণ ও সাহিত্যচর্চার ধারায় তা ছিল অনিবার্য।’[৯]

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম[সম্পাদনা]

১৯৫২'র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী। ১৯৫৩ সালে গণতন্ত্রী পার্টি গঠিত হলে তিনি তার কেন্দ্রীয় কমিটির সভ্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে তিনি যুক্তফ্রন্টের পক্ষে কাজ করেন। ১৯৬৫-৬৬ সালে কমিউনিস্ট পার্টির দুটি অংশের মধ্যে আদর্শগত দ্বন্দ্বের ফলশ্রুতিতে দলটি দ্বিখন্ডিত হয়ে যাবার পর তিনি সক্রিয় রাজনীতি হতে অবসর গ্রহণ করেন এবং শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন।

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড[সম্পাদনা]

মাহবুব উল আলম চৌধুরী নিজ শহর চট্টগ্রাম ও সমগ্র বাংলাদেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের লোকসঙ্গীত সম্মেলন, যুব উৎসব সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম নজরুল জয়ন্তী ১৯৪৬ সালে পালিত হলে তাতে অধ্যাপক আবুল ফজল ছিলেন কমিটির সভাপতি আর মাহবুবুল আল চৌধুরী সম্পাদক। অনুষ্ঠানে কবি নজরুলের উপস্থিতি চট্টগ্রামে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল।[৪] কবি মাহবুব উল আলম চট্টগ্রামে প্রথম বিশ্বশান্তি পরিষদ গঠন করেন ১৯৪৯ সালে। পারমাণবিক বোমা নিষিদ্ধ করার দাবীতে এই পরিষদ চট্টগ্রাম থেকেই ৭ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছিল। যা সুইডেনে বিশ্বশান্তি পরিষদে পাঠানো হয়।[১০] ১৯৫০ সালে মাহবুবুল আলম চৌধুরী বিশ্ব শান্তি পরিষদের চট্টগ্রাম শাখার সম্পাদক হন। ১৯৫০ সালে চট্টগ্রামে চার দিনব্যাপী সংস্কৃতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যেখানে সম্মেলনের মূল সভাপতি ছিলেন আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ, আহ্বায়ক অধ্যাপক আবুল ফজল, আর সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তরুণ রাজনীতিক লেখক, সংস্কৃতিকর্মী মাহবুব উল আলম চৌধুরী। [৪]

১৯৫৩ সালে তিনি কবি নজরুল নিরাময় সমিতি গঠন করেন এবং এ সমিতির অর্থায়নে অসুস্থ কবি নজরুলকে চিকিৎসাকল্পে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯৬৬ সালে খ্রিস্টান পুরোহিত পিয়ের সিরাকের সহায়তায় গ্রামের উন্নতি সাধনের জন্যে নিজ গ্রামে শান্তির দ্বীপ প্রকল্প শুরু করেন। ১৯৭২ সালে তিনি চট্টগ্রাম হতে প্রকাশিত দৈনিক স্বাধীনতা পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করতে শুরু করেন।১৯৫৪ সালে ঢাকার কার্জন হলে প্রগতিশীল লেখক, বুদ্ধিজীবী এবং সংস্কৃতিসেবীদের উদ্যোগে চার দিনব্যাপী সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলে মাহবুবুল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে শতাধিক লেখক-সংস্কৃতিসেবী চট্টগ্রাম থেকে এ সম্মেলনে যোগ দেন। ১৯৫৭ সালে মাওলানা ভাসানী আয়োজিত টাঙ্গাইলের কাগমারী সম্মেলনেও তার নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক স্কোয়াড অংশগ্রহণ করে।[৪]

রচনা[সম্পাদনা]

কাব্যগ্রন্থ[সম্পাদনা]

  • আবেগধারা (১৯৪৪)
  • ইস্পাত (১৯৪৫)
  • অঙ্গীকার (১৯৪৬)
  • কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি (১৯৮৮)
  • সূর্যাস্তের অস্তরাগ (২০০৪)
  • সূর্যের ভোর (২০০৬)

নির্বাচিত কলাম[সম্পাদনা]

  • গণতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র, স্বৈরতান্ত্রিক গণতন্ত্র (২০০৬)

ছড়ার বই[সম্পাদনা]

  • ছড়ায় ছড়ায় (২০০৪)

নাটক[সম্পাদনা]

  • দারোগা (১৯৪৪)
  • আগামীকাল (১৯৫৩)

পুস্তিকা[সম্পাদনা]

  • মিসরের মুক্তিযুদ্ধ (১৯৫৬)
  • বিপ্লব (১৯৪৬)

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

১৯৮৬ সালের জানুয়ারি মাসে মাহবুব উল আলম চৌধুরীকে বাংলা একাডেমী কর্তৃক ফেলোশিপ এবং ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী কর্তৃক সংবর্ধনা দেয়া হয়। ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রামের অনোমা সাংস্কৃতিকগোষ্ঠী, ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম সঙ্গীত পরিষদ, ২০০০ সালে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, ২০০১ সালে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ২০০২ সালে পদাতিক নাট্য সংসদ কর্তৃক সংবর্ধনাসহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবিকে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিকগোষ্ঠী সংবর্ধনা প্রদান করে। এ ছাড়া ২০০৫ সালের ১৫ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবৃত্তি মঞ্চের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা ও পদক দেয়া হয়। ২০০৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ জাতীয় পুরস্কার, ২০০৬ সালে ঋষিজ পদক ও সংবর্ধনা দেয়া হয়। ২০০৯ সালে তিনি মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন। ভাষাসৈনিক কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর ৮৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ মুসলিম ওয়েলফেয়ার সোসাইটি আয়োজিত ‘জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেন তার অমর সৃষ্টি ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি’ যুগে যুগে বাঙালি জাতির সাহস ও শক্তির উৎস হয়ে থাকবে।[১১] ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পাবলিক লাইব্রেরিকে মাহবুব উল আলম চৌধুরীর নামে নামকরণ করা হয়।[১২]

মৃত্যুবরণ[সম্পাদনা]

২০০৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পাঁচদিন কোমায় থাকায় পর মাহবুব উল আলম চৌধুরী ২৩ ডিসেম্বর দেড়টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে। তাকে সমাহিত করা হয় বনানী গোরস্থানে।[১৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. আহমদ নেছার। স্মরণে আবরণে চট্টগ্রামের কৃতী পুরুষ। পৃষ্ঠা ১২২। 
  2. মোরশেদ, সাহেদুর। "ভাষা সৈনিক মাহবুব উল আলম চৌধুরী"দৈনিক ডেসটিনি। ২০১৬-০৩-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৯-০৫ 
  3. সবুর, মুহম্মদ। "তিনি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন"। ২০১৮-১১-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৯-০৫ 
  4. http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=13&dd=2010-11-07&ni=38600[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. http://www.dainikazadi.org/ononno_details.php?news_id=3235[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. বিজয়ী বাঙ্গালীর গৌরবগাথা-২, একুশের প্রথম কবিতা, ২১শে ফেব্রুয়ারি ২০০৯, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, চট্টগ্রাম
  7. [১]
  8. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৩ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১০ 
  9. [ ড. আনিসুজ্জামান, ‘ভূমিকা’, মাহবুব উল আলম চৌধুরীর কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি, প্রথম প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮, সুবর্ণ, ঢাকা।]
  10. রায়হান, আরিফ। "বাঙালি জাতির প্রেরণার উৎস ।। কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরী"দৈনিক আজাদী। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৯-০৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  11. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০২০-০৯-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১২-২৯ 
  12. "মাহবুব উল আলম চৌধুরীর নাম পেল চট্টগ্রামের পাবলিক লাইব্রেরি"বিডিনিউজ ২৪। ৬ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২৩ 
  13. নাসরীন আক্তার। "মাহবুব উল আলম চৌধুরী" 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]