স্মৃতি অম্লান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্মৃতি অম্লান
স্মৃতি অম্লান
অবস্থানরাজশাহী, বাংলাদেশ
নির্মিত১৯৯১
স্থপতিস্থপতি রাজিউদ্দিন আহমদ

স্মৃতি অম্লান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত একটি স্মৃতিসৌধ। এটি রাজশাহী শহরের ভদ্রা এলাকায় অবস্থিত। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ১৯৯১ সালের ২৬শে মার্চ স্মৃতিসৌধটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। স্মৃতিসৌধের মূল পরিকল্পনা করেছেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার আবদুর রব। এর স্থপতি রাজিউদ্দিন আহমেদ।[১]

স্থাপত্য তাৎপর্য, অবস্থান এবং বিবরণ[সম্পাদনা]

শহরের শহীদ ক্যাপ্টেন বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর সড়কের ভদ্রা মোড়ে এই স্মৃতিসৌধটি অবস্থিত। বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রতীক হিসাবে এর নামকরণ করা হয় 'অম্লান'। স্মৃতি অম্লান এর মূল স্তম্ভটি একটি গোলাকার বেদীর উপরে স্থাপিত। গোলাকার এই বেদীটির উচ্চতা ১.০৬ মিটার (৩ ফুট ৬ ইঞ্চি), চওড়ায় ১৩.৭০ মিটার (৪৫ ফুট) এবং বেদীর নিচে মূল স্তম্ভের ব্যাস ৯.৬৫ মিটার (৩১ ফুট ৮ ইঞ্চি)। স্মৃতি অম্লান স্মৃতিসৌধের বেদীমূলে আছে নীল-অভ্র পাথরের আচ্ছাদন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রায় দু'লক্ষ নির্যাতিতা মা-বোনের বেদনার প্রতীক হিসাবে এই পাথরের আচ্ছাদনকে দেখানো হয়েছে।

মূল গোলাকার বেদীর কেন্দ্রস্থল থেকে তিনটি স্তম্ভ সরলভাবে ঊর্ধ্বমুখে স্থাপিত। এই তিনটি স্মৃতিস্তম্ভের উচ্চতা ভূমি থেকে প্রায় ২৪.০০ মিটার (৮০ ফুট)। প্রতিটি স্তম্ভের বাইরের দিকে ২৪টি করে ধাপ রয়েছে। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগতি নির্দেশ করতে ব্যবহার করা হয়েছে এই ২৪টি ধাপ। এছাড়া প্রতিটি স্তম্ভে ১০টি করে মোট ৩০টি ছিদ্র রয়েছে। এই ৩০টি ছিদ্রকে যুদ্ধে শহিদ ৩০ লক্ষ মানুষের অবদানের প্রতীক হিসাবে রাখা হয়েছে।

স্তম্ভের শীর্ষপ্রান্তে মূল স্তম্ভের ব্যাস ২.৮০মিটার (৯ ফুট ২ ইঞ্চি)। স্তম্ভতিনটির শীর্ষে একটি গোলক রয়েছে। গোলকের ব্যাস ৩ মিটার (১০ ফুট)। আর ভূমি থেকে গোলকের নিচ পর্যন্ত স্তম্ভের উচ্চতা ২১.৬৪ মিটার (৭১ ফুট)। এই গোলক দিয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ এর মাধ্যমে স্বাধীনতা প্রাপ্তিকে এবং স্বাধীনতার তীব্র উপস্থিতিকে সূর্যের প্রতীকে স্থাপন করা হয়েছে ।

"স্মৃতি অম্লান" দেশের একটি অতুলনীয় স্থাপত্য। এই ধরনের স্থাপত্য নিদর্শন এবং প্রতীকী উপস্থাপন দেশের অন্য কোথাও দেখা যায় না। বর্তমানে "স্মৃতি অম্লান" এর রক্ষণা-বেক্ষনের বর্তমান দায়িত্ব পালন করছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]