বিষয়বস্তুতে চলুন

এস. শ্রীশান্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শান্তাকুমারন শ্রীশান্ত
২০১২ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে এস. শ্রীশান্ত
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
শান্তাকুমারন শ্রীশান্ত
জন্ম (1983-02-06) ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩ (বয়স ৪১)
কোটমঙ্গলম, কেরল, ভারত
ডাকনামশ্রী, গপু
উচ্চতা৫ ফুট ১১ ইঞ্চি (১.৮০ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৫৩)
১ মার্চ ২০০৬ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৮ আগস্ট ২০১১ বনাম ইংল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৬২)
২৫ অক্টোবর ২০০৫ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই২ এপ্রিল ২০১১ বনাম শ্রীলঙ্কা
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ১০)
১ ডিসেম্বর ২০০৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টি২০আই১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০২-বর্তমানকেরালা
২০০৮-২০১০কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব
২০০৯ওয়ারউইকশায়ার
২০১১কোচি তুস্কার্স কেরালা
২০১৩ থেকে আজীবন নিষিদ্ধরাজস্থান রয়্যালস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ২৭ ৫৩ ৭২ ৮২
রানের সংখ্যা ২৮৪ ৪৪ ৬৪২ ১২৭
ব্যাটিং গড় ১০.৪০ ৪.০০ ৯.৪৪ ৬.০৪
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৩৫ ১০* ৩৫ ৩৩
বল করেছে ৫,৪১৯ ২,৪৭৬ ১২,৮৯৫ ৩,৮৭৪
উইকেট ৮৭ ৭৫ ২১০ ১০৪
বোলিং গড় ৩৭.৫৯ ৩৩.৪৪ ৩৫.৫৫ ৩৫.৪৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৪০ ৬/৫৫ ৫/৪০ ৬/৫৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫/– ৭/– ১৬/– ৯/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শান্তাকুমারন শ্রীশান্ত (মালয়ালম: ശ്രീശാന്ത്‌; উচ্চারণ; জন্ম: ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৩) কেরলর কোটমঙ্গলমে জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলে ডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন। পাশাপাশি ডানহাতে নিচের সারির ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।

এস. শ্রীশান্ত সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে পাতানো খেলার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। ফলে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড কর্তৃক আজীবন ক্রিকেট খেলা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত হন।[]

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

কিশোর বয়সে শ্রীশান্ত লেগ-স্পিনার ছিলেন। ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও শীর্ষস্থানীয় টেস্ট উইকেট সংগ্রহকারী অনিল কুম্বলেকে তিনি অনুসরণ করতেন। কিন্তু বোলিংয়ে ইয়র্কারের অভ্যাস গড়ে ওঠায় জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার অনুপ্রেরণায় ফাস্ট বোলিংয়ের দিকে ধাবিত হন তিনি।[] ২০০০ সালে চেন্নাইয়ের এমআরএফ ফাউন্ডেশনে প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত হন। ২০০২-০৩ মৌসুমে গোয়ার বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে শ্রীশান্তের। রঞ্জি ট্রফিতে ৭ খেলায় ২২ উইকেট সংগ্রহ করেন।[] একই মৌসুমে দিলীপ ট্রফিতে দক্ষিণাঞ্চলকে শিরোপা জয় করতে সহায়তা করেন।[]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

ঘরোয়া সীমিত ওভারের চ্যালেঞ্জার ট্রফিতে ব্যাপক সাফল্যের প্রেক্ষিতে ভারতীয় নির্বাচকমণ্ডলী কর্তৃক তিনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে খেলার জন্য মনোনীত হন।[] নতুন বল[] নিয়ে নাগপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বোলিংয়ে নামেন ও কুমার সাঙ্গাকারা-সনাথ জয়াসুরিয়ার হাতে নাকানি-চুবানি খেলেও খেলার শেষদিকে তিনি তার প্রথম দুই উইকেট শিকার করেন।[] সংরক্ষিত আসনে রাখা হলেও পরবর্তীকালে ব্যাটিং লাইন-আপ রক্ষার্থে কোচ গ্রেগ চ্যাপেল ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ খেলায় তাকে অংশগ্রহণ করান। দলে অবস্থান করলেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫-খেলার সিরিজে মাঠে নামেননি।[] কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫-খেলার সিরিজের সবক’টিতে তিনি খেলার যোগ্য হন। তন্মধ্যে, করাচিতে অনুষ্ঠিত ৫ম ওডিআইয়ে ৪/৫৮ পান। এপ্রিল, ২০০৬ সালে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬.৩০ রান গড়ে ১০ উইকেট লাভ করেন। তন্মধ্যে ইন্দোরে অনুষ্ঠিত পঞ্চম ও চূড়ান্ত খেলায় তার নিজস্ব সেরা ৬/৫৫ পান। এরফলে ঐ খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।[] মে মাসে বিসিসিআই তাকে গ-শ্রেণীভূক্ত খেলোয়াড় হিসেবে চুক্তিবদ্ধ করায়।[১০]

সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মার্চ, ২০০৬ সালে জহির খানের পরিবর্তে প্রথম টেস্টে অভিষেক ঘটে তার। নাগপুরের ১ম টেস্টে ইরফান পাঠানের সাথে ৪/৯৫ পান।[১১] কিন্তু অসুস্থতার কারণে দ্বিতীয় টেস্টের বাইরে ছিলেন। মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে পাঁচ-উইকেট লাভসহ অপরাজিত ২৯* রান সংগ্রহ করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে পাঠানের সাথে তিনি দলের শীর্ষস্থানীয় পেস বোলার ছিলেন। আঘাতের কারণে ২য় টেস্টে খেলেননি। কিন্তু জামাইকার কিংস্টনে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টে ৫/৭২ পান।[১২]

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ

[সম্পাদনা]

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের রাজস্থান রয়্যালসের সাথে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে সোহেল তানভীরের পর শ্রীশান্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক ছিলেন। ২০০৯ সালে আইপিএলের দ্বিতীয়ার্ধ্বে অংশ নেন। কিন্তু আঘাতের কারণে দলের বাইরে ছিলেন। ২০১০ সালে কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব ও ২০১১ সালে কোচির সাথে খেলেন। ২০১২ সালে রাজস্থান রয়্যালসের সাথে থাকলেও আঘাতের কারণে খেলেননি। ২০১৩ সালে পাতানো খেলা নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকলে রাজস্থান কর্তৃপক্ষ তার সাথে চুক্তি বাতিল করে।[১৩]

বিতর্ক

[সম্পাদনা]

২৫ এপ্রিল, ২০০৮ তারিখে মোহালিতে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে নিজ দল কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব জয়লাভ করে। এরপর ধারাবাহিকভাবে তিন খেলায় পরাজয়বরণকারী মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক হরভজন সিংয়ের চক্ষুশূলে পরিণত হন। পুরস্কার বিতরণের পূর্বে এ ঘটনাটি টিভি ক্যামেরায় দেখা যায়। শ্রীশান্ত পরবর্তীতে বড় ভাইসূলভ হরভজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনেননি। তবে, শ্রীশান্তের আচরণে হার্ড লাক বলেছিলেন। আইপিএল থেকে হরভজনকে পরবর্তী খেলাগুলোয় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়। দোষ প্রমাণের পর তার অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়। বিসিসিআই পৃথকভাবে ঘটনাটির তদন্ত চালায় ও জাতীয় পর্যায়ের চুক্তির আচরণবিধি ভঙ্গ করায় পরবর্তী ৫টি ওডিআইয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।[১৪][১৫][১৬][১৭]

ঐ বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া সফরে শ্রীশান্ত ঘোষণা করে যে তিনি ক্রিকেট মাঠে তার এ আগ্রাসী আচরণ ধরে রাখবেন। শ্রীশান্তের পথই হচ্ছে আগ্রাসী। শ্রীশান্ত সর্বদাই শ্রীশান্তই রয়ে যাবেন।[১৮]

পাতানো খেলায় অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

১৬ মে, ২০১৩ তারিখে দিল্লি পুলিশ শ্রীশান্ত ও তার অপর দুই দলীয় সঙ্গী - অজিত চণ্ডিলাঅঙ্কিত চবনকে মুম্বাই থেকে আইপিএলের ৬ষ্ঠ আসরে পাতানো খেলার অভিযোগে গ্রেফতার করে।[১৯][২০] পরদিন ১৭ মে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দেন তিনি।[২১] কিন্তু শ্রীশান্ত আবেগের বশবর্তী হয়ে ও জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি দেন বলে সবসময় বলে আসছেন।

১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে বিসিসিআইয়ের শৃঙ্খলা কমিটি শ্রীশান্ত ও অঙ্কিত চবনকে খেলা থেকে আজীবন নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে।[২২]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Sreesanth gets life ban for IPL fixing"ESPNcricinfo। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  2. It takes one to tango
  3. 2002–03 Ranji trophy statistics
  4. Putting Kerala on the cricket map
  5. Sreesanth in, Laxman out
  6. Sreesanth to be given the new ball
  7. India wrap up comprehensive win
  8. No changes to Indian squad
  9. ODIs – Innings by innings list[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  10. Sreesanth and Raina offered Group C contracts
  11. Sreesanth Test Debut
  12. Tests – Innings by innings list[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  13. "Royals suspends contracts of trio"। ESPNcricinfo। ২০১৩-০৫-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-২০ 
  14. "Kings XI Punjab v Mumbai Indians"Cricinfo। ২৪ এপ্রিল ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-২৫ 
  15. "Bhajji slaps, Sree sobs"। Calcutta, India: telegraphindia। ২৪ এপ্রিল ২০০৮। ২৯ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-২৫ 
  16. "Bhajji 'slaps' Sreesanth, makes him cry"timesofindia। ২৪ এপ্রিল ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-২৫ 
  17. "Match results – Indian Premier League, 2007/08"Cricinfo। ২৪ এপ্রিল ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-২৫ 
  18. "Shanth Sreesanth vows he won't back down"। Herald Sun। ২৫ জানুয়ারি ২০০৮। ৩০ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-৩১ 
  19. "Police detain three Rajasthan Royals players"। Wisden India। মে ১৬, ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  20. "Sreesanth, two other Rajasthan Royals' players arrested for spot-fixing"। ১৩ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  21. "Sreesanth confesses to spot-fixing, more arrests likely"। Hindustan Times। ২০১৩-০৫-১৭। ২০১৩-০৫-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-১৭ 
  22. "Sreesanth and Chavan banned for life for IPL spot fixing"India Today। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]