অজিত আগরকর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অজিত আগরকর
২০১৩ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে অজিত আগরকর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামঅজিত বালচন্দ্র আগরকর
জন্ম (1977-12-04) ৪ ডিসেম্বর ১৯৭৭ (বয়স ৪৬)
বোম্বে, মহারাষ্ট্র, ভারত
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২১৬)
৭ অক্টোবর ১৯৯৮ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ টেস্ট১৩ জানুয়ারি ২০০৬ বনাম পাকিস্তান
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১১১)
১ এপ্রিল ১৯৯৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ ওডিআই৫ সেপ্টেম্বর ২০০৭ বনাম ইংল্যান্ড
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ )
১ ডিসেম্বর ২০০৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টি২০আই১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭ বনাম নিউজিল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৬ - বর্তমানমুম্বই
২০০৮ - ২০১০কলকাতা নাইট রাইডার্স
২০১১ - বর্তমানদিল্লি ডেয়ারডেভিলস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ২৬ ১৯১ ১০৩ ২৬৭
রানের সংখ্যা ৫৭১ ১২৬৯ ৩১১৭ ২২৫২
ব্যাটিং গড় ১৬.৭৯ ১৪.৫৮ ২৮.০৮ ১৭.৭৩
১০০/৫০ ১/০ ০/৩ ৩/১৫ ০/৮
সর্বোচ্চ রান ১০৯* ৯৫ ১০৯* ৯৫
বল করেছে ৪৮৫৭ ৯৪৮৪ ১৭২৩২ ১৩১৪৬
উইকেট ৫৮ ২৮৮ ২৮২ ৪১২
বোলিং গড় ৪৭.৩২ ২৭.৮৫ ৩১.০৩ ২৬.৪৪
ইনিংসে ৫ উইকেট ১২
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৬/৪১ ৬/৪২ ৬/৪১ ৬/১৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৬/– ৫২/– ৩৬/– ৬৯/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ১০ জুলাই ২০১৭

অজিত বালচন্দ্র আগরকর (উচ্চারণ, মারাঠি: अजीत आगरकर; জন্ম: ৪ ডিসেম্বর, ১৯৭৭) মহারাষ্ট্রের বোম্বে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতের সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে তিনি প্রায় দুই শতাধিক আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ নিয়েছেন।

ঘরোয়া ক্রিকেটে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রতিনিধিত্ব করেন। এছাড়াও, ২০১৩ সালে রঞ্জি ট্রফির শিরোপাধারী মুম্বই দলের অধিনায়কত্ব করেন অজিত আগরকর

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজে বেশ ভাল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। এ ধারা অব্যাহত রাখেন ২০০৩ সালের সিরিজেও। অ্যাডিলেড ওভালে তার নিজস্ব সেরা ৬/৪১ করলে ২০ বছরেরও অধিক সময়ের মধ্যে ভারত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয় করে।

টেস্টের তুলনায় একদিনের আন্তর্জাতিকেই অধিকতর সফল ছিলেন। তিনি নিয়মিতভাবে খেলায় উইকেট সংগ্রহ করতেন। কিন্তু ওভার প্রতি রান দেয়া বেশি ছিল তার। ২০০৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে একদিনের সিরিজে ভারতের সেরা বোলার ছিলেন। ভারতের পক্ষে দ্রুতগতিতে অর্ধ-শতক করে রেকর্ড গড়েন যা অদ্যাবধি অক্ষত রয়েছে। ২০০০ সালে রাজকূটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাত্র ২৫ বলে ৬৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন আগরকর।[১]

কিন্তু তার ব্যাটিংশৈলী ম্লান হয়ে যায় ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে ধারাবাহিকভাবে সাত খেলায় শূন্য রান করে। তন্মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় পাঁচবার ও দুইবার নিজদেশে।[২] এছাড়াও, প্রথম চারবার প্রথম বলেই আউট হয়েছিলেন যা অগৌরবজনকভাবে বোম্বে ডাক ডাকনামে পরিচিতি করে তোলে তাকে।[৩][৪] ড্যামিয়েন ফ্লেমিং, ব্রেট লি, মার্ক ওয়াহ এবং গ্লেন ম্যাকগ্রা তাকে আউট করেন।

১৯৯৮ সালে টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। ১ এপ্রিল, ১৯৯৮ তারিখে কোচিতে অনুষ্ঠিত একদিনের আন্তর্জাতিকের অভিষেক খেলায় তিনি অ্যাডাম গিলক্রিস্টের উইকেট লাভ করেছিলেন। এরপর কোকাকোলা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট দখল করলে শ্রীলঙ্কা ৯৮ রানে গুটিয়ে যায়।[৫] ঐ খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

একসময় ভারতের কোচ জন রাইট একদিনের আন্তর্জাতিকে দলের রানের হার বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাকে সম্মুখসারিতে নামাতেন। ২০০০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২১ বলে ৫০ রান করেন দ্রুতলয়ে। পাশাপাশি খেলায় তিন উইকেটও পেয়েছিলেন।[৬] ২০০২ সালে জামশেদপুরের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯৫ রান করেছিলেন।[৭] একই বছর ২০০২ সালে স্বল্প কয়েকজন খেলোয়াড়ের একজন হিসেবে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন। ইংল্যান্ড সফরে ৮ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে তিনি অপরাজিত ১০৯ রান করেছিলেন।[৮] কিন্তু খেলায় ভারত দল পরাজিত হয়েছিল।

২০০৬ সালে টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক দলে অভিষিক্ত হন। একদিনের আন্তর্জাতিকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৮৮ উইকেট সংগ্রহকারী তিনি। তার পূর্বে রয়েছেন - জাভাগাল শ্রীনাথ (৩১৫) ও অনিল কুম্বলে (৩৩৭)। ১৯৯৯ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে চূড়ান্ত খেলায় অংশগ্রহণ করলেও ঐ প্রতিযোগিতায় তিনি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেননি। এছাড়াও, ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ ও আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় ভারত দলের সদস্য ছিলেন।

ঘরোয়া ক্রিকেট[সম্পাদনা]

২০০৯-১০ রঞ্জি ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় কর্ণাটকের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট দখল করেন। এরফলে মুম্বই স্বল্প ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে তিন মৌসুম অংশ নেন। চতুর্থ মৌসুমে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের সাথে ২১০,০০০ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হন। ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সালে ঘোষণা করা হয় যে, আগরকর ২০১২ সালের বিজয় হাজারে ট্রফিতে মুম্বই দলের অধিনায়কত্ব করবেন।[৯] এছাড়াও, ২০১৩ সালের রঞ্জি ট্রফি জয়ী মুম্বই দলের অধিনায়ক ছিলেন।

২০১৩-১৪ মৌসুমের রঞ্জী মৌসুম শুরুর অল্প কয়েকদিন পূর্বে ১৬ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে তিনি সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে তার অবসরের কথা ঘোষণা করেন।[৩][১০]

কীর্তিগাঁথা[সম্পাদনা]

দ্রুততম সময়ে ৫০ উইকেট দখল করে ডেনিস লিলি’র বিশ্বরেকর্ড ভঙ্গ করেন। সেজন্য তাকে মাত্র ২৩ খেলায় অংশ নিতে হয়েছিল। এ রেকর্ডটি ১৯৯৮ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত অক্ষত থাকলেও অজন্তা মেন্ডিস ১৯ খেলায় তা নিজের করে নেন। ১৬ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে রঞ্জি মৌসুম শুরুর পূর্বে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।[১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Fastest fifties at Cricinfo
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৪ 
  3. "Adelaide hero, Lord's centurion, Bombay duck Ajit Agarkar calls it quits"The Indian Express। ১৭ অক্টোবর ২০১৩। 
  4. Frindall, Bill (২০০৯)। Ask BeardersBBC Books। পৃষ্ঠা 80–81। আইএসবিএন 978-1-84607-880-4 
  5. vivek, gupta। "Ajit's first MoM-Vivek Gupta"। ESPN-Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১১ 
  6. "fastest 50" 
  7. "Ajit 95" 
  8. "109* agarkar" 
  9. "Ajit Agarkar to lead Mumbai in one-dayer"The Times of India। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২ 
  10. "Agarkar retires from all cricket"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০১৩ 
  11. "Agarkar retires from all cricket"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]