ডুয়েল গেজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ডুয়েল গেজ রেলপথ হলো একটি ট্র্যাক যাতে দুটি ভিন্ন ট্র্যাক গেজের ট্রেন চলাচল করতে পারে। মাঝেমধ্যে একে "মিশ্র গেজ" ট্র্যাক বলা হয়। একটি ডুয়েল গেজ ট্র্যাকে তিনটি রেল থাকে। এর মধ্যে প্রত্যেক গেজের জন্য দুটি ভাইটাল রেল ("গেজ" রেল) কাছাকাছি থাকে, এবং দূরে একটি "কমন" রেল থাকে। মাঝেমধ্যে ডুয়েল গেজ তৈরি করার জন্য চারটি রেল ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে দুটি বাইরে ও দুটি ভেতরে থাকে। ডুয়েল গেজের সাথে "তৃতীয় রেল" (বৈদ্যুতিক প্রবাহ ট্র্যাকশন রেল) বা "চেক বা গার্ড রেল"-এর পার্থক্য রয়েছে।

পটভূমি[সম্পাদনা]

রেলপথের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্পেসিফিকেশন হল রেল গেজ। রেল ট্র্যাক ও বগিকে অবশ্যই একই গেজে ১৩ মি.মি. এর ইঞ্জিনিয়ারিং সহনশীলতা মধ্যে নির্মান করতে হয়। সঠিক গেজ না পাওয়া গেজে ট্রেন ট্র্যাক থেকে পড়ে যাবে এবং সুইচ ও ক্রসওভার পার হতে পারবে না।

ডুয়েল গেজ ট্রেনে কম উচ্চতার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা যায়, কারণ ট্রেনের কামরা প্ল্যাটফর্মের চেয়ে উঁচুতে অবস্থান করে। তিন রেল ও উঁচু প্ল্যাটফর্মের ক্ষেত্রে কমন রেলের অবস্থানের উপর নির্ভর করে একটি গেজ খুব কাছে বা খুব দূরে থাকতে পারে। আরেকটি বিকল্প হচ্ছে প্ল্যাটফর্মে প্রত্যেক গেজের জন্য আলাদা ট্র্যাক নির্মান করা।

সহনশীলতা[সম্পাদনা]

যদি দুটি রেল গেজের মধ্যে পার্থক্য যথেষ্ট ছোট হয় অর্থাৎ একে অপরের সহনশীলতার মধ্যে থাকে, তখন সেই গেজদ্বয়ে একই রোলিং স্টক চলতে সক্ষম।

ফিনল্যান্ড–রাশিয়া সীমান্তে ফিনীয় গেজ ১,৫২৪ মি.মি. এবং রাশিয়ান গেজ ১,৫২০ মি.মি.। যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭০ এর দশকে এর রেলপথের গেজ ১,৫২০ মি.মি. এ পরিবর্তন করে, তখন তাতে কোনো ব্রেক অব গেজ হয়নি, এবং কোনো ট্র্যাক রুপান্তর করা হয়নি। সহনশীলতা যেভাবে নির্ণয় করা হতো, তাতে এই পরিবর্তনটি এক নতুন সংজ্ঞা ছিল। উভয় রেলপথ একে অপরের সহনশীলতার মধ্যে ভালো অবস্থায় ছিল এবং একই রোলিং স্টক চালাতে পারতো।

তবে গেজে সহনশীলতার মধ্যে থাকলেই সবসময় দুটো ভিন্ন পদ্ধতি সফলভাবে একই রোলিং স্টক চালাতে পারে না। যেমন, হংকং এর ১,৪৩২ মি.মি. এর এমটিআর (মাস ট্রানজিট রেলওয়ে) ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট (ইমু) ১,৪৩৫ মি.মি. আদর্শ গেজের কাউলুন–ক্যান্টন রেলপথ (কেসিআর) এ চলতে পারে, তবে বিদ্যুতায়ন বিভবের পার্থক্যের কারণে একটি লোকোমোটিভ বা একটি কেসিআর ইমু দিয়ে তা টানতে হবে। ডুয়েল ভোল্টেজ ও কম্পাঙ্কের ইমু হলো অন্য সমাধান।

ব্রেক অব গেজ[সম্পাদনা]

"ব্রেক অব গেজ" ঘটে যখন স্বাভাবিক সহনশীলতার বাহিরে ভিন্ন গেজের রেল মিলিত হয়। যাত্রী ও মালামালগুলোকে অবশ্যই ট্রেন বদল করতে হবে, অথবা রোলিং স্টককে উঠিয়ে পরবর্তী গেজের জন্য বগি পরিবর্তন করতে হবে। ব্রেক অব গেজ এড়ানোর মাধ্যমে ব্যয় হ্রাস পায় ও অবকাঠামো যেমন প্ল্যাটফর্ম, সেতু ও সুড়ঙ্গ শেয়ার করতে পারে।

গেজ রুপান্তর[সম্পাদনা]

ডুয়েল গেজে চালানো মাধ্যমে রেলপথ পরিচালক এক গেজ থেকে অন্য গেজে পরিবর্তন করতে পারে। যেমন, গ্রেট ওয়েস্টার্ন রেলওয়ে (জিডব্লিউআর) এর নেটওয়ার্কে ডুয়েল গেজের কার্যক্রমের মাধ্যমে ৭-ফুট গেজ থেকে আদর্শ গেজে রুপান্তর করেছে। তখন নতুন জিডব্লিউআর রোলিং স্টক ও লোকোমোটিভকে এই পরিবর্তন সমন্বয় করার জন্য তৈরি করা হয়।

যখন অধিকতর চওড়া-গেজের রেলগাড়ির জন্য রেল খুব হালকা হয়, তখন তাতে ডুয়েল গেজ রেল সম্ভব হতে নাও পারে। এক্ষেত্রে অধিকতর ভারী রেল স্থাপন করা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]