হেম বড়ুয়া (ত্যাগবীর)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হেম বড়ুয়া
ত্যাগবীর হেম বড়ুয়া কলেজে হেম বড়ুয়ার মূর্তি
জন্ম(১৮৯৩-০৪-২৫)২৫ এপ্রিল ১৮৯৩
মৃত্যু১১ আগস্ট ১৯৪৫(1945-08-11) (বয়স ৫২)
জাতীয়তাভারতীয়
শিক্ষাবি.এ. (১৯১৯)
বি.এল. (১৯২৫)
মাতৃশিক্ষায়তনকটন কলেজ, গুয়াহাটি
পেশাভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী, সমাজকর্মী এবং লেখক
আন্দোলনভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী
পিতা-মাতাগোপাল চন্দ্র বড়ুয়া
পদ্মাবতী বড়ুয়া
হেম ভবন এবং হেম বড়ুয়ার একটি মূর্তি, স্থান: তেজপুর, আসাম

হেম বড়ুয়া (২৫ এপ্রিল ১৮৯৩ - ১১ আগস্ট ১৯৪৫) একজন ভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী, সমাজকর্মী ও লেখক ছিলেন। তিনি ভারতের আসাম রাজ্যের শোণিতপুর জেলার ব্যক্তি ছিলেন। আসামের জনগণের জন্য তার অসাধারণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ত্যাগবীর উপাধি দেওয়া হয়।

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

হেম বড়ুয়া ১৮৯৩ সালের ২৫ এপ্রিল তেজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম গোপাল চন্দ্র বড়ুয়া ও মাতার নাম পদ্মাবতী বড়ুয়া। হেম বড়ুয়া ১৯১৫ সালে "বরপেটা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়" থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হন। ১৯১৯ সালে তিনি গুয়াহাটির কটন কলেজ থেকে ইংরেজিতে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হন। সেই সময়ে তিনি কটন কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের জিএস নির্বাচিত হন। ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে তিনি কলেজ ত্যাগ করেন এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নেন এবং ছয় মাসের জন্য কারাগার ভোগ করেন।[১] ১৯২৫ সালে কলকাতায় তিনি আইন শিক্ষা সম্পন্ন করেন।[২]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ছাত্রজীবন থেকেই হেম বড়ুয়া সমাজের বিভিন্ন জনহিতকর কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন নেতৃস্থানীয় যোদ্ধা ছিলেন। ১৯১৮ সালে তিনি কটন কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ১৯১৯ সালে আসাম ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার জন্য ১৯২১ সালে তাকে পাঁচ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ১৯২২ সালে তিনি আসাম প্রাদেশিক কংগ্রেসের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৩০ সালের আইন অমান্য আন্দোলন ও ১৯৪২ সালের গণআন্দোলনে তিনি অংশ নেন। তেজপুরে শিক্ষার দিক উন্নত করার জন্য তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টায় তেজপুর একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৪৫ সালের ১১ আগস্ট গুয়াহাটিতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[২]

সাহিত্য কর্ম[সম্পাদনা]

বাঁশি ম্যাগাজিনে বিভিন্ন প্রবন্ধ লেখার পাশাপাশি তিনি 'কংগ্রেস বুরঞ্জী', 'বিলাতের মহাত্মা'-র মতো বইও লিখেছেন।[২]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

হেমচন্দ্র বড়ুয়া তার সমাজসেবা কাজের জন্য ত্যাগবীর উপাধিতে ভূষিত হন। তেজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে সদর থানার সামনে তার নামে 'হেম ভবন' বা 'হেম বড়ুয়া হল' গড়ে তোলা হয়েছে। এই ভবনের সামনে তার একটি আবক্ষমূর্তিও স্থাপন করা হয়েছে। ১৯৬৩ সালে শোণিতপুর জেলার নাদুয়ার এলাকায় প্রতিষ্ঠিত কলেজটিকে তার নামে নামকরণ করে ত্যাগবীর হেম বড়ুয়া কলেজ রাখা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. দত্ত, অমরেশ (১৯৮৮)। Encyclopaedia of Indian Literature: Devraj to Jyoti (ইংরেজি ভাষায়)। সাহিত্য অকাদেমি। পৃষ্ঠা ১৩৪৭। আইএসবিএন 978-81-260-1194-0 
  2. নবজ্যোতি দেব চৌধুরী (২০০৯)। ঐতিহাসিক তেজপুর। প্রবোধ কলিতা, সিটিজেন স্পের্টজ। পৃষ্ঠা ৬১-৬২।