শিখর ধাওয়ান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শিখর ধাওয়ান
২০২১ সালে শিখর ধাওয়ান
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামশিখর ধাওয়ান
জন্ম (1985-12-05) ৫ ডিসেম্বর ১৯৮৫ (বয়স ৩৮)
দিল্লি, ভারত
ডাকনামগাব্বার[১] জাত জি
উচ্চতা৫ ফু ১১ ইঞ্চি (১৮০ সেমি)
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাউদ্বোধনী ব্যাটসম্যান
সম্পর্কআয়েশা মুখার্জী (স্ত্রী)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৭৭)
১৪ মার্চ ২০১৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৮৮)
২০ অক্টোবর ২০১০ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ ওডিআই২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ওডিআই শার্ট নং২৫
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ৩৬)
৪ জুন ২০১১ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টি২০আই৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৪-বর্তমানদিল্লি (জার্সি নং ২৫)
২০০৮দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (জার্সি নং ২৫)
২০০৯-২০১০মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (জার্সি নং ১৬)
২০১১-২০১২ডেকান চার্জার্স (জার্সি নং ২৫)
২০১৩-২০১৮সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (জার্সি নং ২৫)
২০১৯  – বর্তমানদিল্লি ক্যাপিটালস (জার্সি নং ৪২ (পূর্বে ২৫))
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই টি২০আই এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৪ ১৩০ ৬১ ১২২
রানের সংখ্যা ২,৩১৫ ৫,৬৫০ ১,৫৮৮ ৮,৪৯৯
ব্যাটিং গড় ৪০.৬১ ৪৫.২০ ২৮.৫৩ ৪৪.২৬
১০০/৫০ ৭/৫ ১৭/২৯ ০/১০ ২৫/২৯
সর্বোচ্চ রান ১৯০ ১৪৩ ৯২ ২২৪
বল করেছে ৫৪ - ২৯৮
উইকেট -
বোলিং গড় - ৪৭.৩৩
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং - ২/৩০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৮/– ৬১/– ১৯/০ ১২০/
উৎস: ক্রিকইনফো, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

শিখর ধাওয়ান (পাঞ্জাবি: ਸ਼ਿਖਰ ਧਵਨ; জন্ম: ৫ ডিসেম্বর ১৯৮৫) দিল্লিতে জন্মগ্রহণকারী ভারতের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। খেলায় তিনি মূলতঃ বামহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমে থাকেন। এছাড়াও দলের প্রয়োজনে মাঝে-মধ্যে ডানহাতি অফ ব্রেক বোলিং করেন। ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৪ মার্চ, ২০১৩ তারিখে মোহালির পিসিএ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে অভিষিক্ত হন। প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিনি অভিষেক টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন।[২] ঘরোয়া ক্রিকেটের আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অধিনায়কত্ব করছেন।[৩]

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

২০০৪ আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ[সম্পাদনা]

২০০৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলেন । আম্বতি রায়ডু তার অধিনায়ক ছিলেন। দিনেশ কার্তিক,সুরেশ রায়না,রবিন উথাপ্পা তার সহখেলোয়াড় ছিলেন। সেসময় টিম পেইন, মইসেস হেনরিকুইস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, অ্যালাস্টেয়ার কুক, ওয়াহাব রিয়াজ, ভার্নন ফিল্যান্ডার, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, কৌশল সিলভালেন্ডল সিমন্স তার প্রতিদ্বন্দ্বী খেলোয়াড় ছিলেন। আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ছিলেন ধাওয়ান। ৭টি খেলায় অংশগ্রহণ করে ৩ সেঞ্চুরিসহ ৮৪.১৬ রান গড়ে ৫০৫ রান করে ঐ প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হন।

২০১০ সালে অক্টোবরে বিশাখাপত্তমে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একদিবসীয় ক্রিকেট খেলায় অভিষেক ঘটে তার। কিন্তু দুই বল খেলে ক্লিন্ট ম্যাককের বলে বোল্ড হন।

২০১১ সালের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সুরেশ রায়নার অধিনায়কত্বে কুইন্স পার্ক ওভালে টুয়েন্টি২০ ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। অভিষিক্ত পার্থিব প্যাটেলের সাথে জুটি গড়লেও তিনি মাত্র ৫ রান করেন।

১৪ মার্চ, ২০১৩ তারিখে শচীন তেন্ডুলকরের কাছ থেকে টুপি নিয়ে বীরেন্দ্র শেওয়াগের পরিবর্তে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো মাঠে নামেন ধাওয়ান। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত খেলার তৃতীয় দিনে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেন মাত্র ৮৫ বলে। এরফলে তিনি গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথের কানপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৯৬৯ সালে গড়া ১৩৭ রানের দীর্ঘদিনের অক্ষুণ্ন রেকর্ডটি ভেঙ্গে ফেলেন।[৪]

ক্রিকেট বিশ্বকাপ[সম্পাদনা]

২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ৪ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে বিসিসিআই কর্তৃপক্ষ ভারত দলের ১৫-সদস্যের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে।[৫] দলে তিনিও অন্যতম সদস্যরূপে মনোনীত হন। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম খেলায় ৭৩ রান সংগ্রহের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতায় চমৎকারভাবে শুরু করেন। কিন্তু রান-আউটের শিকার হন তিনি। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত গ্রুপ-পর্বের দ্বিতীয় খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে তিনি তার ২য় ওডিআই শতকসহ ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান তোলেন।[৬] তার ১৪৬ বলে ১৩৭ রানের সুবাদে ভারত দল তাদের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৩০ রানের ব্যবধানে জয়লাভ করে।[৭] ১০ মার্চ, ২০১৫ তারিখে হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে অনুষ্ঠিত গ্রুপ পর্বের পঞ্চম খেলায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মনোজ্ঞ ১০০ রান করে দলকে ৮ উইকেটের সহজ জয় এনে দেন। খেলার ফলাফলে ভারত বি গ্রুপে শীর্ষস্থান দখল করে।[৮] পাশাপাশি বিশ্বকাপে ধারাবাহিকভাবে ৯ম জয় পায়।[৯] খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন।

আইপিএল[সম্পাদনা]

ধবন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের প্রথম আসরে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে খেলেছিলেন এবং ৪টি অর্ধ্ব-শতক করেন। তিনি দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। পরের বছর তিনি আশীষ নেহরার পরিবর্তে তাকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নিকট বিক্রি করে দেওয়া হয়। তিনি আইপিএলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় মরসুমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলেন। চতুর্থ মরসুমে ডেকান চার্জার্স তাকে $৩০০,০০০ দিয়ে কিনে নেয়।

২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ টুয়েন্টি২০ আসর শুরুর পূর্বে তাকে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক হিসেবে নির্বাচন করা হয়।[৩] ২০১৪ সালের আপিএলে ড্যারেন স্যামি অধিনায়ক হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত হন।[১০]

২০১৮ সালের আইপিএল নিলামে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ তাকে ₹৫.২ দিয়ে কিনে নেয়।[১১] ২০১৮ সালের আইপিএলে ধবন ৪৯৭ রান করেন এবং তার দল ফাইনাল ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের নিকট পরাজিত হয়ে রানার্স-আপ হয়। ২০১৯ মরসুমে দিল্লি ক্যাপিটালস তাকে কিনে নেয়।[১২] ২০১৯ সালের আইপিএলে তার নৈপুণ্যের জন্য ক্রিকইনফো আইপিএল একাদশে তার নাম আসে।[১৩] ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর তিনি আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে পরপর দুই ম্যাচে শতক হাকানোর রেকর্ড গড়েন এবং একই দিনে তিনি ডেভিড ওয়ার্নারের পর পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫,০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন।[১৪][১৫]

রেকর্ড[সম্পাদনা]

টেস্টে দুপুরের খাবারের আগে শত রান করা তিনিই প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান এবং বিশ্বের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান। এ আগে এই কৃতিত্ব রয়েছে ভিক্টর ট্রাম্পার, চার্লি ম্যাকার্টনি, ডন ব্র্যাডম্যান, মজিদ খান এবং ডেভিড ওয়ার্নার এর ।

কোনো সেশনে ১০০ র বেশি রান করেছেন ৩ বার । শুধুমাত্র ব্র্যাডম্যান (৬ বার) আরও বেশি করে করেছেন , ভিক্টর ট্রাম্পার এবং হ্যামন্ড করেছেন তিনবার।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Tattooed family man: The other side of Shikhar Dhawan"। Hindustan Times। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  2. Champions Trophy: India beat South Africa after Dhawan century, bbc, retrieved: 7 June, 2013
  3. "Dhawan to lead Sunrisers Hyderabad in CLT20"। Wisden India। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩। ২২ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০১৪  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Wisden India" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  4. "Australia tour of India, 1969/70 / Scorecard"। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১৩ 
  5. "INDIA ANNOUNCES FINAL 15 MAN SQUAD FOR ICC CRICKET WORLD CUP 2015"। ৬ জানুয়ারি ২০১৫। ৬ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৫ 
  6. Monga, Sidharth (২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "Dhawan hundred sets up another big-day win"ESPNcricinfo। ESPN Sports Media। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  7. "All-round India crush South Africa by 130 runs"Timesofindia। Timesofindia Sports Media। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  8. "Cricket World Cup 2015: Ireland dealt qualification blow by India"। BBC Sport। ১০ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৫ 
  9. "Ashwin, Dhawan make it nine in a row"ESPNcricinfo। ESPN Sports Media। ৬ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৫ 
  10. "Darren Sammy takes over from Shikhar Dhawan as Sunrisers Hyderabad captain"স্পোর্টস কিড়া। ১৮ মে ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২০ 
  11. "IPL Auction 2018: KXIP bag R Ashwin, SRH use RTM for Shikhar Dhawan"ইন্ডিয়া টুডে (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২০ 
  12. "Sunrisers Hyderabad trade Shikhar Dhawan to Delhi Daredevils"দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ নভেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২০ 
  13. "Shikhar named in Cricinfo IPL XI"ক্রিকইনফো। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২০ 
  14. "Two centuries continuously from Shikhar's bat"এনডিটিভি স্পোর্টস। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২০ 
  15. "Shikhar Dhawan became the fifth batsman to cross 5000 runs in IPL"ক্রিকেট অ্যাডিক্টর। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]