ব্যাটিং অর্ডার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ব্যাটিং অর্ডার (ইংরেজি: Batting order) বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটের একটি পরিভাষা। এটি কোন ব্যাটসম্যানের ব্যাট করার পর্যায়ক্রম। ব্যাটিং উদ্বোধন করা থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়, মাঝারি পর্যায় বা স্তর থেকে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত এর ব্যাপ্তি।[১] অর্থাৎ, কোন দলের ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিকভাবে খেলায় অংশগ্রহণের প্রক্রিয়াবিশেষ। ইনিংসে সর্বদাই দুইজন ব্যাটসম্যান যে-কোন সময়ে অবস্থান করবেন। দলের ইনিংস সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এগারো খেলোয়াড়ের সকলকেই ব্যাট করার প্রয়োজন পড়ে। ব্যতিক্রম হিসেবে রয়েছে ডিক্লেয়ার বা অন্য যে-কোন কারণে ইনিংসের সমাপ্তি।

১৮৮৩ সালে ইংরেজ ক্রিকেটার ডব্লিউ. জি. গ্রেস গার্ড নিচ্ছেন

শ্রেণিবিভাগ[সম্পাদনা]

ব্যাটিং অর্ডারকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে:

  • উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান (ইনিংস শুরু করার জন্য দুই ব্যাটসম্যানের সূচনা)
  • শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান (তিন, চার এবং কখনো পাঁচ নম্বরে অবস্থানকারী ব্যাটসম্যান)
  • মাঝারিসারি ব্যাটসম্যান (পাঁচ থেকে সাত নম্বরে অবস্থানকারী ব্যাটসম্যান)
  • নিচেরসারি ব্যাটসম্যান (আট থেকে এগারো নম্বরে অবস্থানকারী ব্যাটসম্যান)

প্রয়োগ[সম্পাদনা]

সাধারণতঃ খেলা শুরুর পূর্বেই এগারো খেলোয়াড়ের ব্যাটিং অর্ডার সাজানো থাকে। কিন্তু খেলা চলাকালীন প্রয়োজনে পরিবর্তন করা যায়। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের বিশেষত্ব; অবস্থানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ; দক্ষতা; অন্য ব্যাটসম্যানদের সাথে সাযুজ্যতা; খেলার অবস্থা ইত্যাদি বিবেচনাপূর্বক প্রয়োজনে দল রক্ষণাত্মক কিংবা আক্রমণধর্মী খেলোয়াড়কে ইনিংসে নামানোর ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।

দলের অধিনায়ক খেলা চলাকালীন তার ইচ্ছেনুযায়ী ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনতে পারেন। পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে কোন নিয়মের প্রবর্তন হয়নি। একের অধিক ইনিংসের ক্ষেত্রেও এ পরিবর্তন প্রযোজ্য। আবার ইচ্ছে করলে দলনায়ক ফলো-অনের কবলে পড়লে পুনরায় খেলার-পূর্বেকার ব্যাটিং অর্ডারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেন। এরফলে একজন বোলারের খেলায় ধারাবাহিকভাবে তিন বলে একই ব্যাটসম্যানকে দুইবার আউট করার মাধ্যমে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।[২]

পিঞ্চ হিটার[সম্পাদনা]

খেলার এক পর্যায়ে দ্রুত রান তোলার প্রয়োজন পড়লে দলনায়ক ব্যাটিং অর্ডারে সাজানো খেলোয়াড়কে উপরের দিকে নিয়ে আসতে পারেন। সচরাচর নিচের সারির ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে এটি ঘটে থাকে। সাধারণতঃ তার উইকেটকে তেমন মূল্যায়ন করা হয় না। ব্যাটিং অর্ডারে দ্রুত রান সংগ্রহের উদ্দেশ্যে এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া ‘পিঞ্চ হিটার’ নামে পরিচিত।

ওপেনিং ব্যাটার[সম্পাদনা]

টপ অর্ডার[সম্পাদনা]

মিডল-অর্ডার[সম্পাদনা]

নাইটওয়াচম্যান[সম্পাদনা]

দিনের শেষদিকে উইকেট পতন ঘটলে নিচের সারির ব্যাটসম্যানকে প্রেরণ করা হয়। এরফলে পরের দিন সকালে অধিক উপযোগী খেলোয়াড়দেরকে সংরক্ষিত অবস্থায় রাখা যায়। ক্লান্ত বা কম আলোকে কার্যকরী ব্যাটসম্যানদেরকে আউটের ঝুঁকি না নেয়ার উদ্দেশ্যেই এটি করা হয়। এক্ষেত্রে তিনি ‘নাইটওয়াচম্যান’ নামে পরিচিতি পান।

ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী টেস্টে সর্বোচ্চ রান[সম্পাদনা]

উৎস:[৩]

  1. স্যার লেন হাটন (ইংল্যান্ড): ৩৬৪, ব অস্ট্রেলিয়া, ওভাল, ১৯৩৮
  2. ম্যাথু হেইডেন (অস্ট্রেলিয়া): ৩৮০, ব জিম্বাবুয়ে, পার্থ, ২০০৩-০৪
  3. ব্রায়ান লারা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ): ৪০০* ব ইংল্যান্ড, সেন্ট জোন্স, ২০০৩-০৪
  4. মাহেলা জয়াবর্ধনে (শ্রীলঙ্কা): ৩৭৪, ব দক্ষিণ আফ্রিকা, কলম্বো, ২০০৬-০৭
  5. মাইকেল ক্লার্ক (অস্ট্রেলিয়া): ৩২৯*, ব ভারত, সিডনি, ২০১২
  6. বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড): ২৫৮, ব দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউল্যান্ডস, ২০১৬
  7. স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান (অস্ট্রেলিয়া): ২৭০, ব ইংল্যান্ড, মেলবোর্ন, ১৯৩৬-৩৭ (দ্রষ্টব্য: ব্র্যাডম্যান ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে সচরাচর খেলেছেন। দলের ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন নিয়ে আসায় কেবলমাত্র এ ইনিংসে অংশ নিয়েছেন)
  8. ওয়াসিম আকরাম (পাকিস্তান): ২৫৭*, ব জিম্বাবুয়ে, শেখুপুরা, ১৯৯৬-৯৭
  9. ইয়ান স্মিথ (নিউজিল্যান্ড): ১৭৩, ব ভারত, অকল্যান্ড, ১৯৮৯-৯০
  10. ওয়াল্টার রিড (ইংল্যান্ড): ১১৭, ব অস্ট্রেলিয়া, ওভাল, ১৮৮৪
  11. অ্যাস্টন অ্যাগার (অস্ট্রেলিয়া): ৯৮, ব ইংল্যান্ড, ট্রেন্ট ব্রিজ, ২০১৩

টপ অর্ডার[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Eastaway, p. 119.
  2. Cricinfo Ask Steven Column – see the last question – retrieved 16 November 2006.
  3. http://stats.espncricinfo.com/ci/content/records/282860.html