ক্রিস সিলভারউড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ক্রিস সিলভারউড
২০১৯ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ক্রিস সিলভারউড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামক্রিস্টোফার এরিক উইলফ্রেড সিলভারউড
জন্ম (1975-03-05) ৫ মার্চ ১৯৭৫ (বয়স ৪৯)
পন্টেফ্রাক্ট, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
ডাকনামস্পুনস, সিলভার্স, চাবি
উচ্চতা৬ ফুট ১ ইঞ্চি (১.৮৫ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৮৩)
১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৬ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ টেস্ট২৯ নভেম্বর ২০০২ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৪৪)
১৫ ডিসেম্বর ১৯৯৬ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ ওডিআই১৩ অক্টোবর ২০০১ বনাম জিম্বাবুয়ে
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৯ম্যাশোনাল্যান্ড ঈগলস
২০০৬ - ২০০৯মিডলসেক্স
১৯৯৩ - ২০০৬ইয়র্কশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা
রানের সংখ্যা ২৯ ১৭
ব্যাটিং গড় ৭.২৫ ৪.২৫
১০০/৫০ -/- -/-
সর্বোচ্চ রান ১০ ১২
বল করেছে ৮২৮ ৩০৬
উইকেট ১১
বোলিং গড় ৪০.৩৬ ৪০.৬৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ৫/৯১ ৩/৪৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/- -/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২০ অক্টোবর ২০১৯

ক্রিস্টোফার এরিক উইলফ্রেড সিলভারউড (ইংরেজি: Chris Silverwood; জন্ম: ৫ মার্চ, ১৯৭৫) ইয়র্কশায়ারের পন্টেফ্রাক্ট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ। বর্তমানে তিনি ইংল্যান্ড দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ থেকে ২০০২ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারমিডলসেক্স এবং জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ডের দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন ক্রিস্টোফার সিলভারউড নামে পরিচিত ক্রিস সিলভারউড

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের পন্টেফ্রাক্ট এলাকায় ক্রিস সিলভারউডের জন্ম। লিডসের গারফোর্থ কমপ্রিহেনসিভ স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ক্রিস সিলভারউডের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৯৩ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে ডানহাতি ফাস্ট-বোলার হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার।[১] কাউন্টি দলটির পক্ষে তেরো বছর একাধারে খেলতে থাকেন।[১] ১৯৯০-এর দশকের শেষদিকে একঝাঁক ফাস্ট-বোলারের অন্যতম ছিলেন। এ পর্যায়ে দলটি ২০০১ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপ ও ২০০২ সালে সিএন্ডজি ট্রফির শিরোপা জয় করেছিল। ইংল্যান্ডের সাবেক বোলিং কোচ বব কটাম তার সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, অ্যালান ডোনাল্ডের চেয়েও তিনি অধিক দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলার। সজীব আউটসুইঙ্গার ও উপযোগী পিচের পরিবেশ বাউন্সারে ভরপুর ছিল তার বোলিং কৌশল। প্রচণ্ড দম রাখতে পারতেন। পেস বোলিংয়ে সক্ষমতা খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকেও ধরে রেখেছিলেন।

২০০৫ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে মাত্র ছয়টি খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ফলশ্রুতিতে ২০০৬ সালে মিডলসেক্সের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন।[১] এরপূর্বে বেশ কয়েকবার আঘাতের কবলে পড়েছিলেন তিনি। পারস্পরিক আলোচনান্তে দল পরিবর্তনের সুযোগ পান তিনি। মিডলসেক্সের পক্ষে প্রথম মৌসুম বেশ ভালো খেলেন। ৬৩টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান তিনি। তবে, এরপর থেকেই ক্রমাগত আঘাতের কবলে পড়তে থাকেন। ফলশ্রুতিতে, ২০০৯ সালে ক্লাব ত্যাগ করতে বাধ্য হন।[২]

২০০৯ সালে হারারেভিত্তিক বিশেষ প্রাধিকারপ্রাপ্ত দল ম্যাশোনাল্যান্ড ঈগলসের পক্ষে খেলোয়াড়-কোচের দায়িত্ব পালনের জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। মাতাবেলেল্যান্ড তুস্কার্সের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে তার।[৩][৪]

খেলোয়াড়ী জীবন শেষে ছয় ফুট এক ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী পেসার ক্রিস্টোফার সিলভারউড ১৮৪ খেলায় অংশ নিয়ে ২৭.৪১ গড়ে ৫৭৭টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেয়েছেন। ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৭/৯৩। লিস্ট এ ক্রিকেটে ২৫.০৫ গড়ে ২৫৯ উইকেট পেয়েছেন। সেরা বোলিং করেন ৫/২৮।[২] সচরাচর নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামলেও একদিনের খেলায় মারকুটে ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। সেজন্যেই ‘স্পুনস’, ‘সিলভার্স’ কিংবা ‘চাবি’ ডাকনামে আখ্যায়িত হয়েছেন। এছাড়াও, ১৯৯৬ সালে এনবিসি ডেনিস কম্পটন পুরস্কার লাভ করেছেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ছয়টিমাত্র টেস্ট ও সাতটিমাত্র ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে বুলাওয়েতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৯ নভেম্বর, ২০০২ তারিখে পার্থে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে ইংল্যান্ড দলের সাথে জিম্বাবুয়ে গমনের পর একই মৌসুমে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। তবে, জিম্বাবুয়ে দল দুই উইকেটে জয়লাভ করেছিল।[৫] এরপর প্রথম টেস্টে সিলভারউডের অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ খেলাটি ড্র হলে সিরিজটি অমিমাংসিত থেকে যায়।[৬] খেলায় তিনি চার উইকেট পেলেও দ্বিতীয় টেস্ট খেলার জন্যে মনোনীত হননি। তবে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাদ-বাকী ওডিআইয়ে অংশগ্রহণসহ নিউজিল্যান্ড সফরের শেষ দুইটি ওডিআইয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। মে, ১৯৯৭ সালে নিজ দেশে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় ওডিআই একমাত্র খেলায় অংশ নেন।

১৯৯৯ সালের পূর্ব-পর্যন্ত আর কোন আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ হয়নি তার। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ঐ সফরে সিরিজের চার টেস্টে অংশ নেন। তবে, এবারও তিনি নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হন। এছাড়াও, তিনি বল হাতে তেমন সুবিধে করতে পারেননি।[২] ৫০-এর অল্প কম গড়ে মাত্র ৭ উইকেট পান।

২০০২-০৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাশেজ সিরিজে সর্বশেষ অংশ নেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ছয় টেস্ট ও সাতটি ওডিআই খেলেছিলেন।

কোচিং[সম্পাদনা]

জিমি অ্যান্ডারসন ৩য় অ্যাশেজ টেস্টের আগে হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের প্রস্তুতির সময় ইংল্যান্ডের বোলিং কোচ ক্রিস সিলভারউডের সাথে কথা বলেছেন।

২০১০ সালে এসেক্সের বোলিং কোচ হিসেবে যোগ দেন।[৭] এরপর, ২০১৬ সালকে ঘিরে প্রধান কোচের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়।[৮] প্রথম বছরে দলকে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের প্রথম বিভাগে উত্তরণ ঘটান। এরপর ২০১৭ সালে দলকে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা এনে দেন।

জানুয়ারি, ২০১৮ সালে ইংল্যান্ড দলের পূর্ণাঙ্গকালীন ফাস্ট বোলিং কোচ হিসেবে যোগ দেন।[৯] ২০১৯ সালের শুরুতে ট্রেভর বেলিসের পরিবর্তে ৭ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখে দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালনের জন্য তার নাম ঘোষণা করা হয়।[১০][১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Warner, David (২০১১)। The Yorkshire County Cricket Club: 2011 Yearbook (113th সংস্করণ)। Ilkley, Yorkshire: Great Northern Books। পৃষ্ঠা 378। আইএসবিএন 978-1-905080-85-4 
  2. "Chris Silverwood"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৭ 
  3. Silverwood makes his Zimbabwe domestic debut
  4. "Zimcricket.org"। ১০ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০১৯ 
  5. "Zimbabwe v England 1996-97"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৭ 
  6. "ZIMBABWE v ENGLAND"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৭ 
  7. "Essex name Chris Silverwood as bowling coach"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  8. "Silverwood named as new Essex coach"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  9. Martin, Exclusive by Ali (২০১৭-১০-৩১)। "Chris Silverwood accepts role as England's fast-bowling coach"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0261-3077। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৭ 
  10. "Chris Silverwood announced as England Men's Head Coach"ECB। ৭ অক্টোবর ২০১৯। ৭ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  11. ESPN Cricinfo staff (৭ অক্টোবর ২০১৯)। "England appoint Chris Silverwood as men's head coach"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৯ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]