ঢাকা বিআরটি
ঢাকা বিআরটি | |
---|---|
সংক্ষিপ্ত বিবরণ | |
মালিকানায় | সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ |
অবস্থান | ঢাকা |
পরিবহনের ধরন | দ্রুতগামী বাস পরিবহন ব্যবস্থা |
লাইনের (চক্রপথের) সংখ্যা | ২ |
লাইন সংখ্যা | বিআরটি লাইন ৩ বিআরটি লাইন ৭ |
বিরতিস্থলের (স্টেশন) সংখ্যা | ৪০ |
প্রধান কার্যালয় | বাড়ি ৪, সড়ক ২১, সেক্টর ৪, উত্তরা, ঢাকা |
ওয়েবসাইট | dhakabrt.gov.bd |
চলাচল | |
পরিচালক সংস্থা | ঢাকা বাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড |
একক গাড়ির সংখ্যা | ১৪০ |
কারিগরি তথ্য | |
মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য | ৪১ কিমি (২৫ মা) |
গড় গতিবেগ | ২৩ কিমি/ঘ |
ঢাকার পরিবহন |
---|
রাস্তা |
সড়ক |
সেতু ও উড়ালসেতু |
রেল পরিবহন |
গণপরিবহন |
গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো |
|
অন্যান্য |
ঢাকা বিআরটি হল বাংলাদেশের ঢাকার একটি দ্রুতগামী বাস পরিবহন ব্যবস্থা। ২০১৭ সাল থেকে মূলত এর পরিকল্পিত দুটি রুটের মধ্যে একটি লাইনের একটি সেকশন নির্মাণাধীন রয়েছে, অন্য রুটটি পরিকল্পনা পর্যায়ে রয়েছে।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]পরিকল্পনা
[সম্পাদনা]২০০৫ সালে, বিশ্বব্যাংক একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে তারা বাংলাদেশ সরকারকে ঢাকায় একটি গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুপারিশ করে। একই বছর মার্কিন পরামর্শক ফার্ম লুই বার্জার গ্রুপ ঢাকার জন্য একটি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা তৈরি করে।[১] বিশ্বব্যাংক এই পরিকল্পনাটি তৈরি করতে সহায়তা করেছিলো, তারা ঢাকায় একটি দ্রুতগামী বাস পরিবহন ব্যবস্থা নির্মাণের প্রস্তাব করে।[২][৩] ২০১১ সালে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক কর্তৃক বিআরটির জন্য একটি প্রাথমিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়।[৪] ১ ডিসেম্বর ২০১২ সালে একনেক ঢাকা বিআরটি প্রকল্প অনুমোদন করে।[৪] সরকার বিআরটির দুটি লাইন নির্মাণের জন্য প্রস্তাব করর।[৫] বিআরটি লাইন ৩-এর বাজেট ৳২০৪০ কোটি নির্ধারণ করা হয়েছিলো।[৪]
নির্মাণ
[সম্পাদনা]২০১৬ সালের মধ্যে বিআরটি লাইন ৩ শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নির্মাণ শুরু করা যায়নি। সেই কারণে সরকারকে নির্মাণের মেয়াদ বাড়াতে হয়েছে। সময় বৃদ্ধির সাথে সাথে নির্মাণের বাজেট ৫২.২০% বৃদ্ধি পায়।[৪] ১ ডিসেম্বর ২০১৬-এ সরকার বিআরটি লাইন ৩-এর উত্তর অংশের নির্মাণের জন্য গেজুবা গ্রুপকে ঠিকাদার হিসাবে নিয়োগ হয়, তারা আড়াই বছরের মধ্যে নির্মাণ শেষ করবে বলে আশা করা হয়েছিলো।[৬] ১৯ অক্টোবর ২০১৭-এ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বিআরটি প্রকল্পের অধীনে সেতু ও উড়ালসেতু নির্মাণের জন্য জিয়াংসু প্রাদেশিক পরিবহন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোং লিমিটেডের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।[৭] ২০১৯ সালে, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ বিআরটি লাইন ৩-এর দক্ষিণ অংশের জন্য একটি বিশদ প্রকৌশল নকশা তৈরি করে।[৮] তারপরে প্রকল্পের সময়সীমা যথাক্রমে ৩০ জুন ২০২০ এবং জুন ২০২২-এ সংশোধন করা হলেও এর নির্মাণ শেষ করা যায়নি।[৯] ৬ নভেম্বর ২০২২ সালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন যে বিআরটি লাইন ৩-এর উত্তর অংশটি ২০২৩ সালের মে বা জুন মাসে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।[১০] ডিসেম্বর ২০২২ অনুযায়ী, উত্তর সেকশনের নির্মাণ ৮৪.৪% সম্পূর্ণ হয়েছে। পরে, সময়সীমা সংশোধন করে ডিসেম্বর ২০২৪ করা হয়।[১১]
রুট
[সম্পাদনা]বিআরটি লাইন ৩
[সম্পাদনা]বিআরটি লাইন ৩-এর দুটি সেকশন আছে। উত্তরের সেকশনটি গাজীপুর থেকে উত্তরার জসিমউদ্দিন সরণি পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এই সেকশনে ২৫টি স্টেশন নির্মিত হচ্ছে। ২২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দক্ষিণের সেকশনটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঝিলমিল আবাসিক এলাকা পর্যন্ত ১৬ স্টেশন নিয়ে নির্মিত হবে।[৫]
বিআরটি লাইন ৩ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
বিআরটি লাইন ৭
[সম্পাদনা]প্রস্তাবিত এই লাইন পূর্বাচল নতুন শহর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে।[৫]
সমালোচনা
[সম্পাদনা]বিআরটি নির্মাণ কাজের কারণে ওই রুটে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে।[১১] বিআরটি নির্মাণের জন্য ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ে।[১২]
প্রথমে বিআরটি রুটে জোড়া বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও পরে বৈদ্যুতিক বাস ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে কর্তৃপক্ষ ডিজেল চালিত বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।[১১]
১৫ আগস্ট ২০২২ সালে উত্তরার জসিমউদ্দিন সরণিতে একটি ব্যক্তিগত গাড়ির উপর প্রকল্পের একটি গার্ডার পড়ে গেলে ৫ জন নিহত হয়। ফলে ঠিকাদারদের কাছ থেকে সব ধরনের সম্মতিপত্র সনদ না পাওয়া পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মেয়র আতিকুল ইসলাম বিআরটি নির্মাণ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।[১৩] সরকারের তদন্তকারী দল দুর্ঘটনার জন্য ঠিকাদারদের দায়ী করে।[১৪] ফলে বিআরটি প্রকল্প ছাড়া আসন্ন নির্মাণ প্রকল্পে দুই ঠিকাদারকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।[১৫]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ রহমান, শামীম (২৩ ডিসেম্বর ২০২২)। "পুরোটাই উড়ালপথে নির্মাণ ভারতের 'মেট্রো ম্যান' শ্রীধরনের পরামর্শে"। বণিকবার্তা। ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২২।
- ↑ জামান, শেখ শাহরিয়ার (২৫ ডিসেম্বর ২০২২)। "মেট্রোরেল ছিল বিরাট এক চ্যালেঞ্জ"। বাংলা ট্রিবিউন। ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২২।
- ↑ রহমান, শামীম (২৪ ডিসেম্বর ২০২২)। "মেট্রোরেলেও ছাপ রেখে গেছেন অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী"। বণিকবার্তা। ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০২২।
- ↑ ক খ গ ঘ হোসেন, আনোয়ার (৪ আগস্ট ২০২১)। "'BRT project becomes a burden as it proceeds at snail's pace, costs double'"। প্রথম আলো (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ ক খ গ আব্দুল্লাহ, মতিন (১৩ এপ্রিল ২০১৮)। "৪৬ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে শঙ্কা"। যুগান্তর। ১৩ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "বিমানবন্দর টু গাজীপুর বাস র্যাপিড ট্রানজিট"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২ ডিসেম্বর ২০১৬। ১৩ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "Contract to construct elevated flyover, 10-lane bridge signed"। নিউ এজ (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ অক্টোবর ২০১৭। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "'BRT route transports 30,000 passengers in an hour'"। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ জানুয়ারি ২০১৯। ১৩ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "বিআরটির উত্তরা-টঙ্গী অংশ খুলছে আজ"। কালের কণ্ঠ। ৬ নভেম্বর ২০২২। ১৮ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "Dhaka BRT to open fully for traffic in June next year: Quader"। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ নভেম্বর ২০২২। ১৩ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ ক খ গ অধিকারী, তুহিন শুভ্র (১৮ জানুয়ারি ২০২৩)। "BRT line-3: Promises falling flat"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২৩।
- ↑ মিঠু, আরিফুল ইসলাম (২১ জানুয়ারি ২০২২)। "Why BRT-3 fails, again and again, to hit the target"। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "দুর্ঘটনা: ঢাকা উত্তরে বিআরটির সব ধরণের নির্মাণকাজ বন্ধ ঘোষণা করেছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম"। বিবিসি বাংলা। ১৬ আগস্ট ২০২২। ১৬ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "Dhaka BRT girder tragedy: Probe body finds 12 reasons for the accident"। ডেইলি সান (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২। ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০২২।
- ↑ "BRT contractor won't get any more projects: Quader"। দ্যফিন্যান্সিয়ালএক্সপ্রেস.কম.বিডি (ইংরেজি ভাষায়)। ১৭ অক্টোবর ২০২২। ১৭ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০২৩।