বি কে দাস রোড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বি কে দাস রোড বাংলাদেশ এর রাজধানী ঢাকার দক্ষিণভাগে বুড়িগঙ্গা নদীর সন্নিকটে অবস্থিত একটি রাস্তা। এটি ফরাসগঞ্জের ৭৯ তম ওয়ার্ডে অবস্থিত। ১৯২৭ সালে বিখ্যাত ব্যবসায়ী বসন্ত কুমার দাসের নামে এই রাস্তাটির নামকরণ করা হয়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বসন্ত কুমার দাস[সম্পাদনা]

বসন্ত কুমার দাস ছিলেন বরিশাল এর অধিবাসী। ১২ বছর বয়সে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। পরে ফরাসগঞ্জে স্থায়ী হন এবং এখানেই ব্যবসায় উন্নতি লাভ করেন।

পূর্বকাল[সম্পাদনা]

১৯২০ সালের শুরুর দিকে বসন্ত কুমার ঢাকার একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। স্থানীয় লোকজন তার সম্মানে ফরাসগঞ্জের রাস্তাটি তার নামে রাখে। এ রাস্তাটি মূলত একটি আবাসিক এলাকা। ঢাকার অভিজাত শ্রেণির লোকজন এখানে বসবাস করতেন। রাস্তাটির দুপাশে অসংখ্য ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা বিদ্যমান।

ঐতিহাসিক স্থাপনাসমূহ[সম্পাদনা]

পুঁথিঘর
শ্রী শ্রী প্রিয় বল্লভ
শ্রী শ্রী বঙ্কুবিহারী জিউ মন্দির
মঙ্গলালয়
বিবি কা রওজা
বড় বাড়ি

পুঁথিঘর[সম্পাদনা]

পুঁথিঘর ৭৪/১ বি কে দাস রোডে অবস্থিত। এটি প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো। এর প্রকৃত মালিক অজ্ঞাত। বর্তমানে এটি বিভিন্ন কাজের জন্য একাধিক ব্যক্তির মালিকানায় বণ্টিত। মন্ত্রী গৌতম চক্রবর্তী এর প্রধান অংশের মালিক। এর গঠন মোটামুটি ভাল অবস্থায় আছে।

শ্রী শ্রী প্রিয় বল্লভ[সম্পাদনা]

এটি ৩ নম্বর বি কে দাস রোডে অবস্থিত। স্থাপনাটি প্রায় শত বছরের পুরনো। এটি প্রথমে শ্যাম বাবুর অধিকারে থাকলেও বর্তমানে একটি কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়।

শ্রী শ্রী বঙ্কুবিহারী জিউ মন্দির[সম্পাদনা]

প্রায় একশ বছর আগে বসন্ত কুমার দাসের নির্মিত এ মন্দিরটি ২ নং বি কে দাস রোডে অবস্থিত। বর্তমানে এটি নদুবাবু কর্তৃক পরিচালিত হয়। এটি অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।

মঙ্গলালয়[সম্পাদনা]

মঙ্গলালয় বাড়িটি ৬৫ বি কে দাস রোডে অবস্থিত। ১৯১৫ সালে জমিদার আশুতোষ দাস এটি নির্মাণ করেন। এটি ‘পুতুল বাড়ি’ নামেও পরিচিত। আশুতোষ দাসের পৌত্র দিলীপ কুমার দাস এটি উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেন। বাড়িটির কিছু অংশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।

বিবি কা রওজা[সম্পাদনা]

১১ বি কে দাস রোডে অবস্থিত বিবি কা রওজা ঢাকার প্রথম ইমামবারা। এটি ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এর আদি স্থাপনা আর নেই। বর্তমানে খাদেম মো. সাজ্জাদ হোসাইন এর দেখাশোনা করে থাকেন। একটি চারতলা মেহমানখানা এর সঙ্গে যুক্ত আছে।

বড় বাড়ি[সম্পাদনা]

প্রায় একশ বছরের পুরনো এ বাড়িটি ৪৫ বি কে দাস রোডে অবস্থিত। জমিদার প্রসন্নবাবু এর আদি মালিক ছিলেন।

বর্তমান অবস্থা[সম্পাদনা]

একসময়ের আবাসিক সড়কটি এখন মূলত বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। প্রচণ্ড যানজটের কারণে অভিজাত বাসিন্দাগণ এলাকাটি ছেড়ে চলে গেছেন। এখানে অনেক কাঠের দোকান রয়েছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • সিরাজুল ইসলাম, বাংলাপিডিয়া(২00৯), এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বাংলাদেশ, পৃষ্ঠা ২৫৪
  • মুনতাসীর মামুন, ঢাকা স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী অনন্যা প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ১৪৬

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]