এমআরটি লাইন ২

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট লাইন ২
সংক্ষিপ্ত বিবরণ
স্থিতিপ্রস্তাবিত
মালিকসড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ
অঞ্চলবৃহত্তর ঢাকা, বাংলাদেশ
বিরতিস্থল
স্টেশন২২
মানচিত্রে রং বেগুনি (#8031A7)
পরিষেবা
ধরনদ্রুতগামী গণপরিবহন ব্যবস্থা
ব্যবস্থাঢাকা মেট্রোরেল
পরিচালকঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড
ডিপোমাতুয়াইল, ডেমরা থানা
কারিগরি তথ্য
রেলপথের দৈর্ঘ্য৩৫ কিলোমিটার (২২ মা)
ট্র্যাকসংখ্যা
বৈশিষ্ট্যউড়াল ও পাতাল
ট্র্যাক গেজ১,৪৩৫ মিলিমিটার (৪ ফুট   ইঞ্চি) আদর্শ গেজ
বিদ্যুতায়ন৭৫০ ভি ডিসি থার্ড রেল১,৫০০ ভি ডিসি ওভারহেড ক্যাটেনারি
চালন গতি১০০ কিমি/ঘ (৬২ মা/ঘ)
সর্বোচ্চ উচ্চতা১৩ মিটার (৪৩ ফু)
যাত্রাপথের মানচিত্র

এমআরটি লাইন ২ হলো ঢাকার প্রস্তাবিত দ্রুতগামী গণপরিবহন রেলপথ। এটি ঢাকা মেট্রোরেল ব্যবস্থায় পঞ্চম রেলপথ যা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) দ্বারা পরিচালিত হবে। এটি ২০৩০ সালে চালু করার জন্য নির্ধারিত হয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

২০০৫ সালে বিশ্ব ব্যাংক একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে বাংলাদেশ সরকারকে ঢাকায় একটি গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়। একই বছর মার্কিন পরামর্শক ফার্ম লুই বার্জার গ্রুপ ঢাকার জন্য একটি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা তৈরি করে।[১] বিশ্বব্যাংক এই পরিকল্পনাটি তৈরি করতে সহায়তা করে যেখানে ঢাকায় পাঁচটি এমআরটি লাইন নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছিলো।[২] সেই পাঁচটি মেট্রো রেলপথ হলো এমআরটি লাইন ১, এমআরটি লাইন ২, এমআরটি লাইন ৪, এমআরটি লাইন ৫ এবং এমআরটি লাইন ৬[৩] ১৫ জুন ২০১৭ সালে সরকারি–বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে এমআরটি লাইন ২ নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরের বছরের ৭ জুন, পিপিপিতে এর নির্মাণ প্রকল্প তালিকাভুক্ত করার জন্য মারুবেনির নেতৃত্বে একটি উপকর্ম দল গঠিত হয়।[৪] এমআরটি লাইন ২-এর মাধ্যমে গাবতলীকে কমলাপুরের সাথে যুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। ১ অক্টোবর ২০১৯ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জকে ঢাকা মেট্রো নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে একটি লিখিত অনুরোধ জমা দেন। ফলস্বরূপ, ২৪ নভেম্বর ২০১৯ সালে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের সভায় এমআরটি লাইন ২-এর যাত্রাপথ সংশোধন করে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চট্টগ্রাম রোড এলাকা পর্যন্ত সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।[৫] এই রেলপথ দিয়ে তিন লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারে বলে প্রাক-সম্ভাব্যতা প্রতিবেদনে দেখানো হয়। যাত্রাপথে ২৪টি স্টেশন প্রস্তাব করা হয় যার প্রস্তাবিত দৈর্ঘ্য ২৪ কিলোমিটার ছিলো।[৪] কিন্তু ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) প্রতিবেদনের সাথে দ্বিমত পোষণ করে কারণ পরামর্শক ফার্মের পিপিপি সমীক্ষায় সুপারিশ করা হয়েছিলো যে জাপানকে এমআরটি লাইন ২-এর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে হবে।[৬] ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্ট গ্লোবাল ও পিডব্লিউসি দ্বারা প্রস্তুত করা একটি প্রাথমিক সমীক্ষার ভিত্তিতে প্রকল্পটিকে ২০২১ সালের মার্চের প্রতিবেদনে বাস্তবায়নের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিলো। যাইহোক, ২০১৫ সালে চূড়ান্ত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (এসটিপি) প্রকল্পটিকে সম্ভাব্য করে তোলে। সমীক্ষা অনুযায়ী যদি পিপিপিতে নির্মাণ করা হয় তাহলে সরকারকে বাজেটের ৮৫% বহন করতে হবে, তাই সরকার এটিকে পিপিপি থেকে বাদ দেয় ও নির্মাণের জন্য দাতা সংস্থার সন্ধান করতে থাকে। অন্যদিকে এমআরটি লাইন ২-এর প্রস্তাবিত যাত্রাপথে আরেকটি রেলওয়ে প্রকল্প চলমান থাকায় ডিএমটিসিএল দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নারায়ণগঞ্জকে মেট্রো নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করার জন্য যাত্রাপথ পরিবর্তন করার পরিকল্পনা করে। প্রস্তাবিত এই দ্রুত গণপরিবহন রেলপথের বাজেট ছিলো প্রায় ৳৬০,০০০ কোটি[৭] ২০২৩ সালে সরকার এমআরটি লাইন ২-এর তহবিলের জন্য দাতা খুঁজে বের করার জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি) অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।[৮] ইআরডি বিশ্ব ব্যাংক, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে সম্ভাব্য দাতা হিসেবে খুঁজে পায়।[৯]

স্টেশন[সম্পাদনা]

প্রধান রেলপথ[সম্পাদনা]

কোড নাম সংযোগ অবস্থান চালু
গাবতলী  এমআরটি লাইন ৫উ 
 এমআরটি লাইন ৫দ 
মিরপুর থানা পরিকল্পিত
ঢাকা উদ্যান মোহাম্মদপুর থানা
মোহাম্মদপুর
ঝিগাতলা হাজারীবাগ থানা
সায়েন্স ল্যাব ধানমন্ডি থানা
নিউ মার্কেট নিউ মার্কেট থানা
আজিমপুর লালবাগ থানা
পলাশী
ঢাকা মেডিকেল কলেজ চকবাজার থানা
১০ গুলিস্তান শাহবাগ থানা
১১ মতিঝিল  এমআরটি লাইন ৬  মতিঝিল থানা
১২ কমলাপুর Bus interchange বাস স্টেশন
বাংলাদেশ রেলওয়ে

 এমআরটি লাইন ১ 
 এমআরটি লাইন ৪ 
 এমআরটি লাইন ৬ 

১৩ মান্ডা মুগদা থানা
১৪ দক্ষিণগাঁও সবুজবাগ থানা
১৫ ধামড়িপাড়া ডেমরা থানা
১৬ সাইনবোর্ড  এমআরটি লাইন ৪  সিদ্ধিরগঞ্জ থানা
১৭ ভুইঘর ফতুল্লা থানা
১৮ জালকুড়ি
১৯ নারায়ণগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ মডেল থানা

শাখা রেলপথ[সম্পাদনা]

কোড নাম সংযোগ অবস্থান চালু
গুলিস্তান শাহবাগ থানা পরিকল্পিত
গোলাপ শাহ মাজার
নয়াবাজার বংশাল থানা
সদরঘাট সদরঘাট থানা

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. রহমান, শামীন (২৩ ডিসেম্বর ২০২২)। "পুরোটাই উড়ালপথে নির্মাণ ভারতের 'মেট্রো ম্যান' শ্রীধরনের পরামর্শে"বণিকবার্তা। ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ 
  2. জামান, শেখ শাহরিয়ার (২৫ ডিসেম্বর ২০২২)। "মেট্রোরেল ছিল বিরাট এক চ্যালেঞ্জ"বাংলা ট্রিবিউন। ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ 
  3. "এয়ারপোর্ট থেকে কমলাপুর আন্ডারগ্রাউন্ড লাইন হচ্ছে"কালের কণ্ঠ। ১৪ অক্টোবর ২০১৯। ৯ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০২৩ 
  4. ইসলাম, জাহিদুল (১৭ ডিসেম্বর ২০২০)। "Metro Rail-2 under PPP"দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২২ 
  5. শরীফ, শাহেদ (৩ ডিসেম্বর ২০১৯)। "মেট্রোরেলের আওতায় আসছে নারায়ণগঞ্জ"বাংলা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৩ 
  6. অধিকারী, তুহিন শুভ্র (৬ অক্টোবর ২০২২)। "MRT-2 physical work: Funding setback may delay the start"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২৩ 
  7. "মেট্রোরেল-২ এর রুট বদল"আমাদের সময়। ১৯ অক্টোবর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২৩ 
  8. কবির, এফএইচএম হুমায়ন (১ এপ্রিল ২০২৩)। "Govt plans to start construction of MRT-2 and MRT-4"দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২৩ 
  9. অধিকারী, তুহিন শুভ্র (১ মে ২০২৩)। "Metro Line-2, -4: Japan, S Korea, WB show interests"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৩