আশুরা
আশুরা عَاشُورَاء | |
---|---|
ধরন | ইসলামি (শিয়া ও সুন্নি) |
তাৎপর্য | শিয়া ইসলাম: ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে কারবালার যুদ্ধের সময় হোসাইন ইবনে আলীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ সুন্নি ইসলাম: মূসা ও ইস্রায়েলীয়দেরকে তাদের দাসত্ব থেকে বাইবেলীয় মিশরে পরিত্রাণ প্রাপ্তি উদযাপন করা |
পালন |
|
তারিখ | ১০ মুহররম |
২০২৩ সালে | ৮ আগস্ট[১] |
২০২৪ সালে | ২৮ জুলাই |
সংঘটন | বার্ষিক (ইসলামি বর্ষপঞ্জি) |
মূসা |
---|
ধারাবাহিকের অংশ |
ইসলাম প্রবেশদ্বার |
হোসাইন |
---|
ধারাবাহিক |
আশুরা (আরবি: عَاشُورَاء, ʿĀshūrāʾ, [ʕaːʃuːˈraːʔ]) হলো ইসলাম ধর্মে একটি স্মরণীয় দিবস। এটি প্রতি বছর ইসলামি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মুহররমের ১০ তারিখে ঘটে। শিয়া মুসলমানদের মধ্যে আশুরা বৃহত্তর শোকের বিশাল বিক্ষোভের মাধ্যমে পালিত হয় কারণ এটি হোসাইন ইবনে আলীর (মুহাম্মদের নাতি) মৃত্যুকে চিহ্নিত করে যাকে ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে কারবালার যুদ্ধের সময় শিরশ্ছেদ করা হয়েছিলো।[২] সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে আশুরা উদযাপন রোজা রাখার মাধ্যমে পালন করা হয় কেননা এটি মূসা ও ইস্রায়েলীয়দের পরিত্রাণের দিনটিকে চিহ্নিত করে যারা এই দিনে বাইবেলে চিত্রিত মিশর থেকে সফলভাবে পালিয়ে গিয়েছিল (যেখানে তারা ক্রীতদাস হিসেবে নির্যাতিত হতো) ও মূসা লোহিত সাগরকে বিভক্ত করার জন্য আল্লাহর শক্তিকে আহ্বান করেছিলেন।[৩] হোসাইনের মৃত্যুকে সুন্নিদের কাছে একটি বড় বিয়োগান্তক ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও নির্দিষ্ট বিধানের উপর নির্ভর করে প্রকাশ্যে শোক প্রদর্শনকে নিরুৎসাহিত বা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[৪]
শিয়া সম্প্রদায়ে আশুরা সাধারণত দলবদ্ধ মিছিলের মাধ্যমে স্মরণ করা হয় এবং এর পাশাপাশি অশ্রুপাত ও মাজারে তীর্থযাত্রা থেকে শুরু করে আত্মনিগ্রহের মতো বিতর্কিত কাজ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের আচারের মাধ্যমে পালিত হয়ে থাকে।[৫] সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে মুহাম্মাদের হাদিসের উপর ভিত্তি করে তিন ধাপ বিশিষ্ট রোজা রয়েছে: আশুরার পূর্বদিন, আশুরার দিন ও আশুরার পরের দিন; এই দিনের জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক না হলেও এটাকে দৃঢ়ভাবে উৎসাহিত করা হয়।[৬][৭] মরক্কো ও আলজেরিয়ার মতো দেশের লোকঐতিহ্যে বিভিন্নভাবে এই দিবস বিশেষ খাবার, আলোকচ্ছটা বা মেলার সাথে উদযাপন করা হয়, যদিও এই অনুশীলনগুলো ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা সমর্থিত নয়।[৮] সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে পালনের পদ্ধতির ব্যাপক ভিন্নতার কারণে আশুরার দিনটি কিছু ইসলামি দেশে এবং বিশেষত শিয়ারাষ্ট্র ইরানে একটি রাজনৈতিক মাত্রা অর্জন করতে এসেছে। উপরন্তু এটি ইরাক ও পাকিস্তানের মতো দেশে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংস ঘটনার পাশাপাশি বিতর্ক সৃষ্টির উস্কানি হিসেবেও কাজ করেছে।
ব্যুৎপত্তি
[সম্পাদনা]আশুরা শব্দের মূল অর্থ সেমেটীয় ভাষায় দশম; তাই এর নাম আক্ষরিকভাবে অনুবাদ করা হয়েছে যার অর্থ "দশম দিন"। ইসলামপন্থাবিদ জে. ওয়েনসিঙ্কের মতে নামটি আরামীয় নির্ধারক সমাপ্তি সহ হিব্রু শব্দ ʿāsōr থেকে এসেছে।[৯]
উৎপত্তি
[সম্পাদনা]সুন্নি ইসলাম
[সম্পাদনা]মুহাররম মাসের দশম দিনে আশুরা উপলক্ষে রোজা রাখা ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুহাম্মদ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত মূসা দ্বারা লোহিত সাগর বিভক্ত করার স্মৃতিচারণকারী অনুশীলন ছিলো।[১০][১১] ইবনে আব্বাসের মাধ্যমে লিপিবদ্ধ সহীহ বুখারীর একটি হাদিসে এর সূচনা বর্ণনা করা হয়েছে:
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদিনায় আগমন করলেন, তখন তিনি (ইহুদিদের) আশুরার দিন (অর্থাৎ মুহাররমের ১০ তারিখ) রোজা রাখতে দেখলেন। তারা বলতেন: “এটি একটি মহান দিন যেদিন আল্লাহ মূসাকে রক্ষা করেছিলেন ও ফেরাউনের লোকদের ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। মূসা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার নিদর্শন হিসেবে এই দিনে রোজা পালন করেছিলেন।" নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি তাদের চেয়ে মূসার নিকটবর্তী। তাই তিনি (সেদিন) রোজা পালন করলেন ও মুসলমানদেরকে রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।[১২]
এটি মুসার স্মরণে তিশ্রেইয়ের দশম দিনে ইয়োম কিপ্পুরের জন্য উপবাসরত কিছু ইহুদি ও মুহাম্মদের মধ্যে একটি মুখোমুখি ঘটনার প্রতিফলন হিসেবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে যেদিন তিনি সেই দিন রোজা করতে শুরু করেছিলেন ও সাহাবিদের উপবাসের নির্দেশ দিয়েছিলেন।[১৩][১৪] এইভাবে অনুশীলনটি এমন একটি সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো যখন ইসলামি ও ইহুদি বর্ষপঞ্জি সমন্বয় করা ছিলো।[১৫] যাইহোক, মুহাম্মদ পরে নাসি'র আয়াতে ইসলামি বর্ষপঞ্জিকে পরিবর্তন করার জন্য একটি প্রত্যাদেশ পেয়েছিলেন এবং তার মাধ্যমে নবম মাস রমজান উপবাস তথা রোজার মাসে পরিণত হয়েছিলো ও আশুরার জন্য রোজা রাখার বাধ্যবাধকতা বাদ দেওয়া হয়েছিলো। কারণ আশুরা তার ইহুদি পূর্বসূরি ইয়োম কিপ্পুর থেকে পৃথক হয়ে গিয়েছিলো।[১০][১৫] আয়িশা থেকে বর্ণিত একটি সহীহ হাদীস অনুযায়ী:
প্রাক-ইসলামি যুগে কুরাইশরা আশুরার দিনে রোজা রাখত ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেও রোজা রাখতেন। কিন্তু মদিনায় এসে তিনি সেদিন রোজা রাখেন ও মুসলমানদেরকে রোজা রাখার নির্দেশ দেন। যখন রমজানে (বাধ্যতামূলক উপবাস করার আদেশ) নাজিল হয়, তখন রমজানের রোজা রাখা ফরজ হয়ে যায় ও আশুরার রোজা ছেড়ে দেওয়া হয়, আর যে এই দিনে রোজা রাখতে চাইলো সে তা করলো ও যে রোজা রাখতে চায়নি সে রোজা রাখলো না।[১৬]
আশুরা (দশম দিন) ও তাসুয়ায় (নবম দিনে) রোজা রাখা এখনও ব্যাপকভাবে বাঞ্ছনীয় (মুস্তাহাব) বলে বিবেচিত হয়।[১৭] সুনান আত-তিরমিজীতে একটি হাদিস দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে আল্লাহ আশুরার রোজা রাখার আগের বছরের পাপ মাফ করে দেন।[১৮]
শিয়া ইসলাম
[সম্পাদনা]হোসাইনের শাহাদাতবরণ
[সম্পাদনা]কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল প্রথম ইয়াজিদের উত্তরাধিকার পাওয়ার ফলে ভঙ্গুরতার সময়ে।[১৯][২০] নিজের উত্তরাধিকার প্রাপ্তির পরপরই ইয়াজিদ মদিনার অঞ্চলপতিকে দিয়ে হোসাইন ও আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে তার আনুগত্যের (বাইয়াত) অঙ্গীকার করতে বাধ্য করার নির্দেশ দেন।[২১] যাইহোক, হোসাইন এটা করতে অস্বীকার করেন যিনি বিশ্বাস করতেন যে ইয়াজিদ ইসলামের শিক্ষার বিরুদ্ধে গিয়েছে ও মুহাম্মদের সুন্নাহ পরিবর্তন করেছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তাই তিনি তার পরিবার, তার ছেলে, ভাই ও হাসানের ছেলেদের সাথে মক্কায় আশ্রয় নেওয়ার জন্য মদিনা ত্যাগ করেন।[২১]
মক্কায় পৌঁছে হোসাইন জানতে পারেন যে ইয়াজিদ হজের সময় তাকে হত্যা করার জন্য ঘাতক পাঠিয়েছে। শহর ও কাবার পবিত্রতা রক্ষার জন্য হোসাইন তার হজ পরিত্যাগ করেন এবং সেখানকার পরিস্থিতি যে প্রতিকূলতার দিকে মোড় নিয়েছে তা বুঝতে না পেরে তার সঙ্গীদের কুফায় যাওয়ার পথে তাকে অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন।[২১]
সেখানে যাওয়ার পথে হোসাইন দেখতে পান যে তার দূত মুসলিম ইবনে আকিল কুফায় নিহত হয়েছেন ও উবায়দুল্লাহ ইবনে যিয়াদের সেনাবাহিনীর অগ্রগামী অংশের মুখোমুখি হয়েছেন। তিনি কুফার সেনাবাহিনীকে সম্বোধন করে তাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে তারা তাকে সেখানে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলো কেননা তারা ইমামহারা ছিলো ও তাদের বলেছিলেন যে তিনি তাদের সমর্থন নিয়ে কুফায় যেতে চান; যাইহোক, যদি তারা তার আগমনের বিরোধিতা করে তবে তিনি মক্কায় ফিরে যাবেন বলে জানান। সেনাবাহিনী তাকে অন্য পথ নিতে অনুরোধ করলে তিনি বাম দিকে গিয়ে কারবালায় পৌঁছেন, যেখানে সেনাবাহিনী তাকে পানি পাওয়া কঠিন এমন স্থানে থামতে বাধ্য করে।[২১]
অঞ্চলপতি উবায়দুল্লাহ ইবনে যিয়াদ কুফার সেনাবাহিনীর প্রধান উমর ইবনে সা'দকে হোসাইন ও তার সমর্থকদেরকে ইয়াজিদের আনুগত্যের শপথ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য পুনরায় নির্দেশ দেন। তিনি উমর ইবনে সা'দকে হোসাইন ও তার অনুসারীদেরকে ফোরাতের পানি পাওয়া থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দেন।[২১] পরদিন সকালে উমর ইবনে সা'দ কুফার সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে সাজাতে শুরু করে।[২১]
কারবালার যুদ্ধ ১০ অক্টোবর ৬৮০ সাল (১০ মুহররম ৬১ হিজরি) সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিলো। হোসাইনের ছোট সঙ্গী ও পরিবারের সদস্যগণ (প্রায় ৭২ জন পুরুষ এবং মহিলা ও শিশু)[টীকা ১][২৩][২৪] উমর ইবনে সা'দের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ও পান করার অনুমতি না দেওয়া ফোরাতের কাছে নিহত হয়। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক আবু রায়হান আল-বেরুনি বলেন:
…[তার]পর তাদের শিবিরে আগুন লাগানো ও ঘোড়ার খুর দ্বারা মৃতদেহগুলোকে পদদলিত করা হয়; মানবজাতির ইতিহাসে এমন নৃশংসতা কেউ দেখেনি।[২৫]
উমাইয়া সৈন্যরা হোসাইন ও তার পুরুষ অনুসারীদের হত্যা করার পর তারা তাঁবু লুট করেছিলো, মহিলাদের গহনা খুলে নিয়েছিল ও জয়নুল আবিদিন নামাজের সময় যে চামড়ার উপর সেজদা করতো তা ছিনতাই করেছিলো। হোসাইনের বোন জয়নবকে ক্রীতদাস মহিলাদের সাথে দামেস্কে শাসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে এক বছর পর মদিনায় ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে বন্দী করে রাখা হয়েছিলো।[২৬][২৭]
তাৎপর্য
[সম্পাদনা]হোসাইন ইবনে আলীর স্মরণে প্রথম সমাবেশ (মজলিস) কারাগারে জয়নবের দ্বারা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো বলে জানা যায়। দামেস্কে তিনি একটি মর্মস্পর্শী বক্তৃতাও দিয়েছেন বলে জানা গেছে। কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছিলো যখন প্রায়শই নিজ বাবাকে দেখতে পাওয়ার জন্য ক্রন্দনরত হোসাইনের চার বছর বয়সী কন্যা রুকাইয়াহ বিনতে হুসাইন সম্ভবত তার বিকৃত মাথা দেখে বন্দী অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুতে শহরে তোলপাড় সৃষ্টি হয় ও বিদ্রোহের ভয়ে ইয়াজিদ বন্দীদের মুক্ত করে।[২৮]
ইগনাক গোল্ডজিহারের মতে,
কারবালার কালোদিনের পর থেকে এই পরিবারের ইতিহাস … ছিলো দুর্ভোগ ও নিপীড়নের ধারাবাহিকতা। এগুলো শাহাদাতের সমৃদ্ধ সাহিত্যে কবিতা ও গদ্যে বর্ণিত হয়েছে … এমনকি 'শিয়াদের কান্নার চেয়েও বেশি স্পর্শকাতর' একটি আরবি প্রবাদে পরিণত হয়েছে।[২৯]
ইমাম জয়নুল আবিদীন নিম্নোক্ত কথাগুলো বলেছেন:
কথিত আছে চল্লিশ বছর ধরে যখনই তাঁর সামনে খাবার রাখা হতো তখনই তিনি কাঁদতেন। একদিন এক বান্দা তাকে বললো, 'হে আল্লাহর রাসূল! এখন কি আপনার দুঃখ শেষ হওয়ার সময় হয়নি?' তিনি উত্তরে বললেন, 'তোমাদের উপর আফসোস! ইয়াকুব নবীর বারোটি পুত্র ছিলো এবং আল্লাহ তাদের একজনকে উধাও করে দেন। তার ছেলে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকলেও ক্রমাগত কাঁদতে কাঁদতে তার চোখ সাদা হয়ে গেলো, দুঃখে তার মাথা ধূসর হয়ে গেলো ও তার পিঠ অন্ধকারে বাঁকা হয়ে গেলো'।[টীকা ২] কিন্তু আমি দেখেছি যখন আমার বাবা, আমার ভাই, আমার চাচা এবং আমার পরিবারের সতেরো জন সদস্যকে আমার চারপাশে জবাই করা হচ্ছিলো। আমার দুঃখ কিভাবে শেষ হবে?[টীকা ৩][৩০][৩১]
হোসাইনের কবর তার মৃত্যুর কয়েক বছরের মধ্যে শিয়া মুসলমানদের তীর্থস্থানে পরিণত হয়। জিয়ারত আশুরা নামে পরিচিত ইমাম হোসাইন ও অন্যান্য কারবালার শহীদদের মাজারে তীর্থযাত্রার একটি ঐতিহ্য দ্রুত বিকাশ লাভ করে।[৩২] উমাইয়া ও আব্বাসীয় খলিফারা এই মাজার নির্মাণে বাধা দেওয়ার প্রচেষ্টা ও তীর্থযাত্রাকে নিরুৎসাহিত করতেন।[৩৩] ৮৫০-৮৫১ সালে আব্বাসীয় খলিফা মুতাওয়াক্কিল দ্বারা সমাধি ও এর বর্ধিত অংশগুলো ধ্বংস করা হয় ও শিয়া তীর্থযাত্রাদের মাজারে নিষিদ্ধ ছিলো, তবে কারবালা ও নাজাফের মাজারগুলো ৯৭৯-৮০ সালে বুয়াহীয় আমির আদুদ আল-দৌলা দ্বারা নির্মিত হয়েছিলো।[৩৪]
হোসাইনের শাহাদাতের স্মরণে জনসাধারণের আচার-অনুষ্ঠান প্রাথমিক পর্যায়ের তীর্থস্থানগুলো থেকেই গড়ে ওঠে।[৩৫] বাগদাদে বুয়া রাজবংশের হয়ে মুইজ আদ-দৌলা আশুরার একটি জনসাধারণের পালনকার্যে দায়িত্ব পালন করেন।[৩৬] মিশরে ফাতিমীয় খলিফা আল-আজিজের দ্বারাও এই দিবসের স্মৃতিচারণকে উৎসাহিত করা হয়েছিলো।[৩৭] সাফাভিদের দ্বারা সরকারি ধর্ম হিসেবে ইসনা আশারিয়ার স্বীকৃতির সাথে সাথে মুহররমের প্রথম দশ দিন জুড়ে মুহররমের মাতম প্রসারিত হয়।[৩২]
উসমানীয় সাম্রাজ্যের সময় জাফরি, কিজিলবাশ আলবি-তুর্কি ও বেকতাশিরা আশুরার দিনটিকে স্মরণ করতো।[৩৯] এটি ইমামিয়া শিয়া ও আলবিদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ যারা তৃতীয় ইমাম হোসাইনকে (মুহাম্মদের নাতি) আহলে আল-বাইত ও মুহাম্মদের সঠিক উত্তরসূরি বলে মনে করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
কামরান স্কট আগায়ির মতে "আশুরার প্রতীক এবং আচার-অনুষ্ঠানগুলো সময়ের সাথে সাথে বিবর্তিত হয়েছে ও বিভিন্ন মানুষের কাছে বিভিন্ন বিষয় নির্দেশ করে থাকে। যাইহোক, আশুরার প্রতীকবাদের মূলে রয়েছে একদিকে জাগতিক অন্যায় ও দুর্নীতি এবং অন্যদিকে ঈশ্বরকেন্দ্রিক ন্যায়বিচার, তাকওয়া, ত্যাগ ও অধ্যবসায়ের মধ্যে নৈতিক দ্বিধাদ্বন্দ্ব। এছাড়াও শিয়া মুসলমানরা আশুরার মর্মান্তিক ঘটনার স্মরণকে আধ্যাত্মিক বা অতীন্দ্রিয় উপায়ে আল্লাহর উপাসনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় বলে মনে করে।"[৪০]
শিয়া মুসলমানরা আশুরাতে তীর্থযাত্রা করে, যেমনটি তারা চল্লিশ দিন পর আরবাইনে মাশহাদ আল-হুসায়েনে ও ঐতিহ্যগতভাবে হোসাইনের সমাধি বলে মনে করা ইরাকের কারবালার মাজার করে। এটি একটি স্মরণীয় দিন ও এই দিনে শোকের পোশাক পরা হয়। এটি দুঃখের ও ব্যক্তির মৃত্যুর জন্য সম্মান দেখানোর একটি সময় এবং আত্ম-প্রতিফলনের একটি সময় যখন একজন মুমিন নিজেকে সম্পূর্ণরূপে হোসাইনের শোকের জন্য সমর্পণ করে। শিয়া মুসলমানরা গান শোনা বা বাজানো থেকে বিরত থাকে কারণ আরবি সংস্কৃতি সাধারণত মৃত্যু অনুষ্ঠানের সময় গান বাজানোকে অশালীন বলে মনে করে। তারা এই তারিখে বিবাহ বা আনন্দ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করে না। পরিবর্তে তারা কান্নাকাটি করে শোক করে ও বিয়োগান্তক ঘটনার স্মৃতিচারণ এবং হোসাইন ও তার পরিবারকে কীভাবে শহীদ করা হয়েছিলো সে সম্পর্কে গল্পের সংকলন শ্রবণ করে। এটি তাদের হোসাইনের কষ্ট ও শাহাদাত এবং ইসলামকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তিনি যে আত্মত্যাগ করেছিলেন তার সাথে সংযুক্ত করার উদ্দেশ্যে করা হয়। হোসাইনের শাহাদতকে শিয়া মুসলমানরা অন্যায়, অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যাখ্যা করে।[৪১] শিয়া মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে কারবালার যুদ্ধ ছিল ভালো ও মন্দ শক্তির মধ্যে, হোসাইন ভালো এবং ইয়াজিদ মন্দের প্রতিনিধিত্ব করে।[৪২]
শিয়া ইমামরা জোর দিয়ে বলেন যে আশুরাকে আনন্দ ও উৎসবের দিন হিসেবে পালন করা উচিত নয়। অষ্টম শিয়া ইমাম আলী আর-রিদার মতে এটি অবশ্যই বিশ্রাম, দুঃখের দিবস ও এটাকে পার্থিব বিষয়গুলোকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করার দিবস হিসেবে পালন করা উচিত।[৪৩]
আশুরার সাথে সম্পর্কিত কিছু অনুষ্ঠান "ইমামবাড়া" ও হুসাইনিয়া নামে পরিচিত বিশেষ জামাত হলে অনুষ্ঠিত হয়।[৪৪]
সৈয়দ ইমাম হায়াতের নির্দেশে বিশ্ব সুন্নি আন্দোলন এই দিনটিকে মুসলিম জাতির জাতীয় শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে।[৪৫]
স্মরণ
[সম্পাদনা]আহাজারি অনুষ্ঠান
[সম্পাদনা]আহাজারি (ফার্সি: عزداری) এর অর্থ হল শোক এবং বিলাপ, এই শব্দটি ও মজলিশে আজা বিশেষভাবে ইমাম হোসাইনের শাহাদাতের স্মরণ অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি আজা-ই হুসায়েন নামেও পরিচিত, এর মধ্যে রয়েছে শোকসভা, বিলাপ, মাতম ও এমন সমস্ত কাজ যা শোক প্রকাশ করে এবং সর্বোপরি ইয়াজিদ যা দাবি করেছিলো তার বিরুদ্ধে ব্যাহতি।[৪৬]
এই রীতিনীতি হোসাইন ও তার পরিবারের সাথে একাত্মতা দেখায়। এগুলোর মাধ্যমে লোকজন হোসাইনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে এবং এই সত্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে যে তারা হোসেন ও তার পরিবারকে বাঁচানোর যুদ্ধে উপস্থিত ছিল না।[৪৭][৪৮]
তুবাইরিজ মিছিল
[সম্পাদনা]তুবাইরিজ মিছিল হলো একটি আশুরা অনুষ্ঠানের নাম যেখানে তুবাইরিজের আশেপাশের লক্ষ লক্ষ লোক ইমাম হোসেনের মাজারের দিকে ২২ কিমি দৌড় ও মাতম করে।[৪৯] এই অনুষ্ঠানটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[৫০][৫১] আল সৈয়দ মোহাম্মদ মেহেদী বাহরুল উলূম এই অনুষ্ঠানে হুজ্জাত বিন হাসান উপস্থিত ছিলেন বলে উদ্ধৃত করার পর থেকে এর গুরুত্ব বেড়েছে।[৫২]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]তুবাইরিজ প্রথম ১৮৫৫ সালের আশুরাতে পরিচালিত হয়েছিল যখন শোক অনুষ্ঠান ও হোসাইন বিন আলীর হত্যার বয়ানের পরে সৈয়দ সালেহ কাজভিনির বাড়িতে থাকা লোকেরা শোক ও দুঃখে এতটাই কেঁদেছিল যে তারা সৈয়দ সালেহকে তার সমবেদনা জানাতে ইমামের মাজারে ছুটে যেতে বলেছিলো। সৈয়স সালেহ তাদের অনুরোধ মেনে নিয়ে সকল মুরব্বিদের সাথে মাজারে যান।[৫৩][৫৪][৫৫][৫৬]
মিছিলে নিষেধাজ্ঞা
[সম্পাদনা]১৯৯১ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে সাদ্দাম হোসেনের বাথ শাসনের সময় এই মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো।[৫৭][৫৮] যাইহোক, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তুবাইরিজ তখনো অব্যাহত ছিলো ও সরকার অনেক অংশগ্রহণকারীদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ২০০৩ সালের পর আবার এই মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয় ও ইরাকের বাইরে থেকে এই মিছিলে অংশগ্রহণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে।[৫৯]
জনপ্রিয় রীতিনীতি
[সম্পাদনা]প্রায় ১২ শতাব্দী পরে কারবালার যুদ্ধের গল্পকে ঘিরে পাঁচটি প্রধান ধরনের অনুষ্ঠান তৈরি করা হয়েছিলো। এই আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে স্মৃতিচারণ সভা (মজলিশুল তাজিয়া); কারবালায় হোসাইন সমাধি পরিদর্শন বিশেষ করে আশুরা ও যুদ্ধের পর চল্লিশতম দিনে (জিয়ারত আশুরা ও জিয়ারত আল-আরবাইন); সর্বজনীন শোক মিছিল (আল-মাওয়াকিব আল-হুসাইনিয়া); একটি নাটক হিসাবে যুদ্ধের উপস্থাপনা (শাবিহ); এবং ব্যক্তিগত আত্মনিগ্রহ (ততবীর)।[৬০] কিছু শিয়া মুসলমান বিশ্বাস করে যে আশুরাতে অংশ নিলে তাদের পাপ ধুয়ে যায়।[৬১] একটি জনপ্রিয় শিয়া প্রবাদ আছে যে "হোসাইনের জন্য একটি অশ্রু ঝরানো একশত পাপ ধুয়ে দেয়"।[৬২]
শিয়া মুসলমানদের জন্য আশুরা স্মরণ করা হলো তীব্র শোক ও দুঃখের ঘটনা। শোকার্তরা হোসাইনের শাহাদাতের স্মরণে একটি মসজিদে শোকাহত ও কাব্যিক আবৃত্তি যেমন মর্সিয়া, নুহা, লাতমিয়া ও সোয়াজ পরিবেশন করে, তারা ঢোল পিটিয়ে এবং "ইয়া হুসেন" বলতে বলতে বিলাপ ও শোক প্রকাশ করে। ওলামারাও হোসাইনের ব্যক্তিত্ব এবং ইসলামে অবস্থান ও তার বিদ্রোহের ইতিহাসের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বক্তৃতা দেন। মসজিদের শেখ কারবালার যুদ্ধের গল্পটি পুনরায় বর্ণনা করেন যাতে তার শ্রোতারা হোসাইন এবং তার পরিবারের দ্বারা সহ্য করা বেদনা ও দুঃখকে আবার জাগিয়ে তুলতে পারে এবং তারা মাকতাল আল-হুসাইন পাঠ করে।[৬০][৬৩] ইরান, ইরাক এবং পারস্য উপসাগরের আরব রাষ্ট্রগুলোর মতো কিছু জায়গায় তাজিয়া[৬৪] হিসেবে আবেগপূর্ণ নাটক পরিবেশিত হয় যা কারবালার যুদ্ধ ও ইয়াজিদের হাতে হোসাইনের দুঃখকষ্ট ও শাহাদতকে পুনর্ব্যক্ত করে।
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের ত্রিনিদাদ ও টোবাগো ও জ্যামাইকাতে স্থানীয়ভাবে 'হুসে' বা হোসাই নামে পরিচিত অনুষ্ঠান আশুরা উপলক্ষে মুহাম্মদের নাতিকে স্মরণ করতে পারে, তবে উদযাপনটি রোমান ক্যাথলিক, হিন্দুধর্ম ও ব্যাপটিস্ট আন্দোলন সহ অন্যান্য ধর্মের প্রভাব গ্রহণ করে এটি বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ধর্মের মিশ্রণে পরিণত হয়েছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহনশীলতার পরিবেশে এই অনুষ্ঠানে মুসলিম ও অমুসলিম উভয়েই অংশগ্রহণ করে।[৬৫] [৬৬] স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের সময়কালের জন্য মসজিদ ও ব্যক্তিদের জন্য নির্দিষ্ট রাতে প্রত্যেকের জন্য বিনামূল্যে খাবার (নাজরি বা ভোটি খাবার) সরবরাহ করার প্রথা রয়েছে।[৬৭]
কিছু কিছু ঐতিহ্যবাহী আত্মনিগ্রহ আচার-অনুষ্ঠানে যেমন তলোয়ার জানি ( তলোয়ারের মাতম বা কখনও কখনও ততবির ) একটি তলোয়ার ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠান, যেমন জঞ্জির জানি বা জঞ্জির মাতম-এ একটি জঞ্জির (ব্লেডযুক্ত একটি চেইন) ব্যবহার করে।[৬৮] এটি বিতর্কিত হতে পারে ও কিছু শিয়া ধর্মগুরুরা এই অনুশীলনটিকে নিন্দা করেছেন এই বলে যে "এটি তাদের সম্প্রদায়ের একটি পশ্চাদপদ ও নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করে।" পরিবর্তে যাদের প্রয়োজন তাদের জন্য রক্ত দান করতে ঈমানদারদের অনুপ্রাণিত করা হয়।[৬৯] কিছু শিয়া মুসলমান রক্তদান ("কামে জানি") এবং নিজেদের আত্মনিগ্রহ করে এই ঘটনা পালন করে।[৭০]
-
জ্যামাইকায় একটি ঐতিহাসিক আশুরা উদযাপন যা স্থানীয়ভাবে হুসায় বা হোসাই নামে পরিচিত
-
ইরানের শহর ও গ্রামে নখল গরদানি পালন
সামাজিক-রাজনৈতিক দিক
[সম্পাদনা]সামাজিক-রাজনৈতিকভাবে আশুরা পালন করা সারা ইতিহাস জুড়ে সংখ্যালঘু হিসেবে পরিচিত শিয়াদের নিকট অত্যন্ত মূল্যবান। স্মৃতিচারণের সময় প্রচলিত শর্ত অনুযায়ী এই জাতীয় স্মৃতিচারণগুলো অন্তর্নিহিত ভিন্নমত বা এমনকি স্পষ্ট প্রতিবাদের ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ইরানে ইসলামি বিপ্লব, লেবাননের গৃহযুদ্ধ, ইসরায়েলি সামরিক উপস্থিতির বিরুদ্ধে লেবাননের প্রতিরোধ ও বাহরাইনে ১৯৯০-এর দশকের বিদ্রোহের সময় এটি হয়েছিলো। কখনও কখনও এই স্মৃতিচারণ করা আল-হোসাইনের শাহাদতের স্মৃতিকে আধুনিক ইসলাম ও মুসলমানদের অবস্থার সাথে তুলনা করে আশুরার দিনে হোসাইনের এই বিখ্যাত উক্তিটি উল্লেখ করে: "প্রতিটি দিন আশুরা, প্রতিটি ভূমি কারবালা"।[৭১]
ইরানের সাংবিধানিক বিপ্লবের সময়কাল (১৯০৫–১৯১১) থেকে ইরানের শোক সমাবেশগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে একটি রাজনৈতিক দিকে বাঁক নিয়েছিলো, প্রচারকরা ইমাম হোসাইনের শত্রু তথা উমাইয়াদের সাথে সেই সময়ের অত্যাচারীদের তুলনা করেছিলো।[৭২]
১৯৭৮–৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পূর্ববর্তী বছরগুলোয় এবং সেইসাথে বিপ্লবের সময়ও এই স্মৃতির রাজনৈতিক কার্যকারিতা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ছিলো। উপরন্তু ইমাম হোসাইনের সাথে মুসলিম বিপ্লবীদের অন্তর্নিহিত আত্ম-পরিচয় শহীদের আর্চনা প্রস্ফুটিত হওয়ার দিকে পরিচালিত করে, যা সম্ভবত সবচেয়ে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছে তেহরানের দক্ষিণে অবস্থিত বিপ্লব ও ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের শহীদদের সমাধিস্থল বেহেশত-ই জহরা নামক বিশাল কবরস্থান।[৭২]
অন্যদিকে কিছু সরকার আশুরাকে স্মরণকে নিষিদ্ধ করেছে। ১৯৩০-এর দশকে রেজা শাহ ইরানে এটি নিষিদ্ধ করেছিলেন। সাদ্দাম হোসেনের শাসনামল এটিকে একটি সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে দেখেছিলো ও বহু বছর ধরে আশুরার অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ রেখেছিলো।[৭৩] ১৮৮৪ সালের হোসাই গণহত্যার সময় ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে ২২ জন লোক নিহত হয়েছিলো যখন বেসামরিক ব্যক্তিরা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষের অমান্য করে স্থানীয়ভাবে হোসাই নামে পরিচিত আশুরার অনুষ্ঠান করার চেষ্টা করেছিলো।[৭৪]
আশুরার সময় সন্ত্রাসী হামলা
[সম্পাদনা]আশুরার দিনে বেশ কয়েকটি দেশে শিয়া মুসলমানদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে যা শিয়াদের ইতিহাসে একটি "আকর্ষণীয়" প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।[৭৫]
- ১৮১৮–১৮২০: সৈয়দ আহমদ বেরলভি ও শাহ ইসমাইল দেহলভী উত্তর ভারতে আশুরা স্মৃতিচারণ বন্ধ করার জন্য অস্ত্র তুলে নেন। তারা ছিলেন উপমহাদেশে শিয়াবিদ্বেষী সন্ত্রাসবাদের পথপ্রদর্শক। বারবারা মেটকাফ উল্লেখ করেছেন:
সৈয়দ আহমদের কুরটনাকারী দ্বিতীয় দলটি শিয়া প্রভাবের বিরুদ্ধে উদ্ভূত হয়েছিলো। তিনি বিশেষ করে মুহররমের শোক অনুষ্ঠানের সময় মিছিলে তোলা কারবালার শহীদদের সমাধির প্রতিলিপি, তাজিয়া পালন ত্যাগ করার জন্য মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানান। মুহাম্মদ ইসমাঈল লিখেছেন, "একজন সত্যিকারের ঈমানদারের জোরপূর্বক তাজিয়া ভাঙাকে মূর্তি ধ্বংস করার মতই পুণ্য বলে মনে করা উচিত। যদি সে নিজে সেগুলো ভাঙতে না পারে, তবে সে অন্যকে তা করতে আদেশ করুক। যদি এটি তার ক্ষমতার বাইরেও হয় তবে তাকে অন্তত তার সমস্ত হৃদয় ও আত্মা দিয়ে তাদের ঘৃণা ও বিদ্বেষ করতে দিন।" সৈয়দ আহমদ নিজেই নিঃসন্দেহে যথেষ্ট অত্যুক্তি সহ বলেছেন, তাজিয়া রাখা হাজার হাজার ইমামবারা ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে।[৭৬]
- ১৯৪০: ২১ ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে আশুরা মিছিলে বোমা নিক্ষেপ।[৭৭]
- ১৯৯৪: ২০ জুন ইরানের মাশহাদে ইমাম রেজা মাজারে একটি বোমা বিস্ফোরণ, ২০ জন নিহত।[৭৮]
- ২০০৪: ২ মার্চ ইরাকের কারবালায় শিয়া তীর্থযাত্রার সময় বোমা হামলা, ১৭৮ জন নিহত এবং ৫০০০ আহত।[৭৯]
- ২০০৮: ১৯ জানুয়ারিতে ইরাকের বসরা ও নাসিরিয়ায় ইরাকি সৈন্য ও একটি শিয়া সম্প্রদায়ের সদস্য মধ্যকার সংঘর্ষ, ২৬৩ জন নিহত।[৮০]
- ২০০৯: ২৮ ডিসেম্বরে পাকিস্তানের করাচিতে আশুরার মিছিলের সময় বোমা বিস্ফোরণ, কয়েক ডজন লোক নিহত ও শতাধিক আহত।[৮১]
- ২০১০: ২৫ ডিসেম্বরে মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গরে হাউজা ইমাম আলী আর-রিদা (হাউজা আররিধা) নামে পরিচিত শ্রী গমবাকের একটি দোকানে ২০০ শিয়া মুসলমানকে শাস্তি প্রদান করা হয়।[৮২]
- ২০১১: ৫ ডিসেম্বরে ইরাকের হিল্লা ও ২৮ ডিসেম্বরে বাগদাদে বোমা বিস্ফোরণে, আশুরার মিছিলে, ৩০ জন নিহত।[৮৩]
- ২০১১: ৬ ডিসেম্বরে আফগানিস্তানের কাবুলে আশুরা মিছিলের সময় আত্মঘাতী হামলা, ৬৩ জন নিহত।[৮৪]
- ২০১৫: ২৪ অক্টোবরে বাংলাদেশের ঢাকায় আশুরা মিছিলের সময় ও মসজিদে তিনটি বিস্ফোরণ, একজন নিহত ও ৮০ জন আহত।[৮৫]
গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিতে
[সম্পাদনা]যেহেতু ইসলামি বর্ষপঞ্জি একটি চন্দ্র বর্ষপঞ্জি ও গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি একটি সৌর বর্ষপঞ্জি তাই আশুরা সর্বদা ইসলামি বর্ষপঞ্জিতে একই দিনে অনুষ্ঠিত হলেও গ্রেগরীয়তে তারিখ দুই বর্ষপঞ্জি মধ্যকার পার্থক্যের ফলে বছরে বছরে পরিবর্তিত হয়। তদুপরি, প্রতিটি ইসলামি মাস কখন শুরু হবে তা নির্ধারণ করতে অর্ধচন্দ্রের চেহারা বিভিন্ন ভৌগলিক অবস্থানের কারণে দেশভেদে পরিবর্তিত হয়ে থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
হিজরি | গ্রেগরীয় তারিখ |
---|---|
১৪৪৪ | ৮ আগস্ট ২০২২ |
১৪৪৫ | ২৮ জুলাই ২০২৩ |
১৪৪৬ | ১৬ জুলাই ২০২৪ |
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
ইরানে শিয়াদের শোক পালন
-
তেহরানে শিয়াদের মিছিল
-
ইন্দোনেশিয়ার পারিয়ামানে তাবুইক নামানো হচ্ছে
-
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি অপেরা হাউসের বাইরে শিয়ারা জমায়েত হচ্ছে।
-
সৌদি আরবের কাতিফে শিয়াদের শোক
-
সিরিয়ায় শিয়া মুসলিমরা আশুরা পালন করছে
-
১৯৭৮ সালে তেহরানে আশুরা বিক্ষোভ
-
২০১৬ সালে ইমাম হোসেন চত্বরে আশুরার শোক
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]টীকা
[সম্পাদনা]উদ্ধৃতি
[সম্পাদনা]- ↑ "When is Ashura Day Worldwide"। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৮।
- ↑ Morrow, John Andrew. Islamic Images and Ideas: Essays on Sacred Symbolism. McFarland & Co, 2013. pp. 234–36. আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৮৬৪৫৮৪৮৬
- ↑ "What is Ashura and how do Shia and Sunni Muslims observe it?"। Middle East Eye (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।
- ↑ Lipka, Michael; Ghani, Fatima। "Muslim holiday of Ashura brings into focus Shia-Sunni differences"। Pew Research Center (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।
- ↑ "Dramatic photos show how Shiite Muslims mark Ashura, one of the most emotional events in Islam"। The Washington Post (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0190-8286। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।
- ↑ "Ashura | Definition, History, & Facts | Britannica"। www.britannica.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।
- ↑ "Fasting in Muharram"। Penny Appeal (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।
- ↑ M. Maarouf, 2010, Ashura and the Ritual Emancipation of Women in Morocco, CESNUR 2010
- ↑ A. J. Wensinck, "Āshūrā", Encyclopaedia of Islam 2. Retrieved 8 June 2011.
- ↑ ক খ "ʿĀshūrāʾ: Islamic holy day"। Britannica।
- ↑ "Ashura fasting in Muharram 2022: Date, history, significance of Shia and Sunni Muslims' fast in Muharram"। Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৮-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-২১।
- ↑ Sahih al-Bukhari, Book 60, Hadith 70
- ↑ Morrow, John Andrew. Islamic Images and Ideas: Essays on Sacred Symbolism. McFarland & Co, 2013. pp. 234–36. আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৮৬৪৫৮৪৮৬
- ↑ Katz, Marion Holmes The Birth of The Prophet Muhammad: Devotional Piety in Sunni Islam. Routledge, 2007. pp. 113–15. আইএসবিএন ৯৭৮-১১৩৫৯৮৩৯৪৯
- ↑ ক খ Prophet Muhammad and the Origins of Islam, Francis E. Peters, SUNY Press, 1994, p. 204.
- ↑ Sahih al-Bukhari, Book 65, Hadith 31
- ↑ "Virtues of fasting on Ashura"।
- ↑ Sahih at-Tirmidhi book 8 (আরবি ভাষায়)।
- ↑ Encyclopaedia of Islam।
- ↑ Hitti, Philip K. (১৯৬১)। The Near East in History A 5000 Year Story (ইংরেজি ভাষায়)। Literary Licensing, LLC। আইএসবিএন 978-1258452452। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ Madelung, Wilferd। "Ḥisayn B. 'Ali i. Life and Significance in Shi'ism"। Encyclopædia Iranica Online। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৪।
- ↑ Hoseini-e Jalali, Mohammad-Reza (১৩৮২)। Jehad al-Imam al-Sajjad (ফার্সি ভাষায়)। Musa Danesh কর্তৃক অনূদিত। Iran, Mashhad: Razavi, Printing & Publishing Institute। পৃষ্ঠা 214–17।
- ↑ "در روز عاشورا چند نفر شهید شدند؟"। ২৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "فهرست اسامي شهداي كربلا"। Velaiat.com। ২৯ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১২।
- ↑ Chelkowski, Peter J. (১৯৭৯)। Ta'ziyeh: Ritual and Drama in Iran। New York। পৃষ্ঠা 2।
- ↑ Madelung, Wilferd। "ʿAlī B. Ḥosayn B. ʿAlī B. Abī Tāleb"। Encyclopædia Iranica। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১১।
- ↑ Donaldson, Dwight M. (১৯৩৩)। The Shi'ite Religion: A History of Islam in Persia and Irak। Burleigh Press। পৃষ্ঠা 101–11।
- ↑ Encyclopedia of Religion।
- ↑ Goldziher, Ignác (১৯৮১)। Introduction to Islamic Theology and Law। Princeton। পৃষ্ঠা 179। আইএসবিএন 9780691100999।
- ↑ Sharif al-Qarashi, Bāqir (২০০০)। The Life of Imām Zayn al-Abidin (as)। Jāsim al-Rasheed কর্তৃক অনূদিত। Iraq: Ansariyan Publications, n.d. Print।
- ↑ Imam Ali ubnal Husain (২০০৯)। Al-Saheefah Al-Sajjadiyyah Al-Kaamelah। Translated with an Introduction and annotation by Willian C. Chittick With a foreword by S. H. M. Jafri। Qum, The Islamic Republic of Iran: Ansariyan Publications।
- ↑ ক খ "Hosayn B. Ali in Popular Shiism"। Encyclopedia of Iranica। ১৭ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১০।
- ↑ al Musawi, 2006, p. 51.
- ↑ Litvak, 1998, p. 16.
- ↑ Nafasul Mahmoom। JAC Developer। পৃষ্ঠা 12–। GGKEY:RQAZ12CNGF5।
- ↑ Chelkowski, Peter (১ জানুয়ারি ১৯৮৫)। "Shia Muslim Processional Performances": 18–30। জেস্টোর 1145650। ডিওআই:10.2307/1145650।
- ↑ Blank, Jonah (১৫ এপ্রিল ২০০১)। Mullahs on the Mainframe: Islam and Modernity Among the Daudi Bohras। University of Chicago Press। পৃষ্ঠা 29। আইএসবিএন 978-0226056777।
- ↑ Turkish Alevis are mourning on this day for the remembrance of the death of Huseyn bin Ali at Kerbala in Irak.
- ↑ Turkish Alevis mourn on this day to commemorate the death of Huseyn bin Ali at Kerbala in Irak.
- ↑ Cornell, Vincent J.; Kamran Scot Aghaie (২০০৭)। Voices of Islam। Praeger Publishers। পৃষ্ঠা 111–12। আইএসবিএন 978-0275987329। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Karbala', an Enduring Paradigm"। Al-islam.org। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১০।
- ↑ Dabashi, Hamid (২০০৮)। Islamic Liberation Theology: Resisting the Empire। Routledge। আইএসবিএন 978-0415771559।
- ↑ Ayoub, Shi'ism (1988), pp. 258–59
- ↑ Juan Eduardo Campo (২০০৯)। Encyclopedia of Islam। Infobase Publishing। পৃষ্ঠা 318–। আইএসবিএন 978-1438126968।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "কারবালা দিবস উপলক্ষে বিশ্ব সুন্নি আন্দোলন, যুক্তরাষ্ট্রের সমাবেশ"। Prothom Alo। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ Jean, Calmard (২০১১)। "AZĀDĀRĪ"। iranicaonline।
- ↑ Bird, Steve (২৮ আগস্ট ২০০৮)। "Devout Muslim guilty of making boys beat themselves during Shia ceremony"। The Times। London। ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১০।
- ↑ "British Muslim convicted over teen floggings"। Alarabiya.net। ২৭ আগস্ট ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১০।
- ↑ "1 million pilgrims perform Tuwairij rush in Karbala"। Aswat al-Iraq। ২৭ ডিসেম্বর ২০০৯। ২১ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১০।
- ↑ "مراسم "هروله طویریج"؛ یکی از عظیم ترین گردهمایی های جهان"। میدل ایست نیوز (ফার্সি ভাষায়)। ৩১ অক্টোবর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "'Tuwairij run' takes place in Holy city of Karbala, Iraq"। iranpress.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "حماسی ترین مراسم عاشورایی در كربلا آغاز شد"। ایرنا (ফার্সি ভাষায়)। ১ অক্টোবর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০২১।
- ↑ "تجلی عشق حسینی در " رَکْضَة طُوَیرِیج ""। shooshan.ir। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "داستان دسته طويريج چیست؟ + تصاویر"। مشرق نیوز (ফার্সি ভাষায়)। ১৭ নভেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ Nawaret (৮ ডিসেম্বর ২০১১)। "ماهي ركضة طويريج في العراق"। جريدة نورت (আরবি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "أصل-ركضة-طويريج-ومنشؤها"। ৫ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "عزاء ركضة طويريج نشأته وتاريخه"। شيعة ويفز – ShiaWaves Arabic (আরবি ভাষায়)। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "تاریخچهای از دسته عزاداری طویریج – کرب و بلا"। سایت تخصصی امام حسین علیه السلام (ফার্সি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "ركضة طويريج .. من أكبر الفعاليات الدينية في العالم.. تعرف على تأريخها"। almasalah.com। ২৪ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ ক খ Nakash, Yitzhak (১ জানুয়ারি ১৯৯৩)। "An Attempt To Trace the Origin of the Rituals of Āshurā¸"। Die Welt des Islams। 33 (2): 161–81। ডিওআই:10.1163/157006093X00063। – via Brill (সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
- ↑ David Pinault, "Shia Lamentation Rituals and Reinterpretations of the Doctrine of Intercession: Two Cases from Modern India," History of Religions 38 no. 3 (1999): 285–305.
- ↑ Nasr, Vali, "The Shia Revival", Norton, 2006, p. 50
- ↑ Puchowski, Douglas (২০০৮)। The Concise Garland Encyclopedia of World Music, Volume 2। Routledge। আইএসবিএন 978-0415994040।
- ↑ Chelkowski, Peter (ed.) (1979) Taʻziyeh, ritual and drama in Iran New York University Press, New York, আইএসবিএন ০৮১৪৭১৩৭৫০
- ↑ Ali, Alim (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৯)। "Hosay Festival, Westmoreland, Jamaica"।
- ↑ http://old.jamaica-gleaner.com/pages/history/story0057.htm title= Out Of Many Cultures The People Who Came The Arrival Of The Indians
- ↑ Rezaian, Jason। "Iranians relish free food during month of mourning"। washingtonpost.।
- ↑ "Scars on the backs of the young"। New Statesman। ৬ জুন ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১০।
- ↑ "Ashoura day: Why Muslims fast and mourn on Muharram 10"। Al Jazeera। ১০ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "Ashura observed with blood streams to mark Karbala tragedy"। Jafariya News Network। ১৩ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১০।
- ↑ "Observing Salat Behind a Shiite Imam"। Fiqh। ২২ মে ২০২২। ১১ ডিসেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ Calmard, J.। "'Azaúdaúrè"। Encyclopedia Iranica। ৪ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১০।
- ↑ Melton, J. Gordon; Baumann, Martin (২০১০)। Religions of the World [6 volumes]: A Comprehensive Encyclopedia of Beliefs and Practices। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 211। আইএসবিএন 978-1598842036।
- ↑ Anthony, Michael (২০০১)। Historical Dictionary of Trinidad and Tobago। Scarecrow Press, Inc. Lanham, MD and London। আইএসবিএন 978-0810831735।
- ↑ Hassner, Ron E. (২০১৬)। Religion on the Battlefield। Cornell University Press। পৃষ্ঠা 40। আইএসবিএন 978-0801451072।
- ↑ B. Metcalf, Islamic revival in British India: Deoband, 1860–1900, p. 58, Princeton University Press (1982).
- ↑ J. N. Hollister, The Shi'a of India, p. 178, Luzac and Co, London, (1953).
- ↑ Raman, B. (৭ জানুয়ারি ২০০২)। "Sipah-E-Sahaba Pakistan, Lashkar-e-Jhangvi, Bin Laden & Ramzi Yousef"। ২৯ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Blasts at Shia Ceremonies in Iraq Kill More Than 140"। The New York Times। ২ মার্চ ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৭।
- ↑ "Iraqi Shia pilgrims mark holy day"। bbc.co.uk। ১৯ জানুয়ারি ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ "Reuters News clip"। Youtube.com। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১২।
- ↑ "Malaysian Wahhabi Extremists Attacked Shia Mourners, Detain 200 + PIC"। abna.ir। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১২।
- ↑ "Deadly bomb attacks on Shia pilgrims in Iraq"। bbc.co.uk। ৫ ডিসেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১২।
- ↑ Harooni, Mirwais (৬ ডিসেম্বর ২০১১)। "Blasts across Afghanistan target Shia, 59 dead"। Reuters। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১২।
- ↑ "Dhaka blasts: One dead in attack on Shia Ashura ritual"। BBC News। ২৪ অক্টোবর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
সূত্র
[সম্পাদনা]- Litvak, Meir (1998). Shi'i Scholars of Nineteenth-Century Iraq: The Ulama of Najaf and Karbala. Cambridge University Press. আইএসবিএন ০-৫২১-৮৯২৯৬-১
- al Musawi, Muhsin (2006). Reading Iraq: Culture and Power and Conflict. I. B. Tauris. আইএসবিএন ১-৮৪৫১১-০৭০-৬
- al Mufid, al-Shaykh Muhammad (December 1982 (1st ed.)). Kitab Al-Irshad. Tahrike Tarsile Quran. আইএসবিএন ০-৯৪০৩৬৮-১২-৯, ৯৭৮-০-৯৪০৩৬৮-১২-৫
- al-Azdi, abu Mikhnaf, Maqtal al-Husayn. Shia Ithnasheri Community of Middlesex (PDF)
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Sivan, Emmanuel (১৯৮৯)। "Sunni Radicalism in the Middle East and the Iranian Revolution"। International Journal of Middle East Studies। 21 (1): 16–20। এসটুসিআইডি 162459682। জেস্টোর 163637। ডিওআই:10.1017/S0020743800032086।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- গর্ডন বি. কউটস (স্কটিশ/মার্কিন, ১৮৬৮-১৯৩৭) ক্যানভাসে একটি বড় তৈলচিত্র "দ্য আশুরা রিচুয়ালস, টাঙ্গিয়ার" (আরবি: عاشوراء ʻĀshūrā’ – উর্দু: عاشورا – ফার্সি: عاشورا – তুর্কি: Aşure)। স্বাক্ষরিত এবং খোদাই করা: 'গর্ডন কউটস/ট্যানজিয়ার (নিচের ডানদিকে)। আনু. ১৯২০ (ইংরেজি ভাষায়)
- আশুরা কি শোকের দিন নাকি আনন্দের? (ইংরেজি ভাষায়)
- ইসলাম ফ্রিডমে আশুরা – ঐতিহাসিক তাৎপর্য ও পুরস্কার (ইংরেজি ভাষায়)
- আশুরার দিনের ঘটনা (ইংরেজি ভাষায়)
- "আশুরা" – এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা অনলাইন (ইংরেজি ভাষায়)
- আশুরা কি? – বিবিসি নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)
- আশুরা কি? – আবদুল-ইলাহ আস-সাদী, আল জাজিরা (ইংরেজি ভাষায়)
- আশুরা অস্ট্রেলিয়া – সিডনির বার্ষিক আশুরা মিছিলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (ইংরেজি ভাষায়)