পাবনা জেলা

স্থানাঙ্ক: ২৪°২৪′৩৬.০″ উত্তর ৮৮°৫৫′৪৮.০″ পূর্ব / ২৪.৪১০০০০° উত্তর ৮৮.৯৩০০০০° পূর্ব / 24.410000; 88.930000
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পাবনা জেলা
জেলা
উপরে-বাম থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে: তাড়াশ ভবন, জোর বাংলা মন্দির, রূপপুরের কাছে নদী, শাহী মসজিদ, গজনর বিল
বাংলাদেশে পাবনা জেলার অবস্থান
বাংলাদেশে পাবনা জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°২৪′৩৬.০″ উত্তর ৮৮°৫৫′৪৮.০″ পূর্ব / ২৪.৪১০০০০° উত্তর ৮৮.৯৩০০০০° পূর্ব / 24.410000; 88.930000 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
প্রতিষ্ঠা১৬ অক্টোবর ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দ
সরকার
 • জেলা প্রশাসকবিশ্বাস রাসেল হোসেন
আয়তন
 • মোট২,৩৭১.৫০ বর্গকিমি (৯১৫.৬৪ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট২৮,৬০,৫৪০
 • জনঘনত্ব১,২০০/বর্গকিমি (৩,১০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৯৮.৪৭%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৬৬০০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ৭৬
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

পাবনা জেলা বাংলাদেশের মধ্য ভাগের একটি জেলা ও প্রশাসনিক অঞ্চল।[২] উপজেলার সংখ্যানুসারে পাবনা বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণিভুক্ত জেলা।[৩] এই জেলার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ইছামতি নদ। এই জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় ঐতিহাসিক হার্ডিঞ্জ সেতু এবং তার পাশেই লালন শাহ সেতু অবস্থিত। এই জেলার কয়েকটি নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা সরকারি মহিলা কলেজ, পাবনা ক্যাডেট কলেজ,সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ, পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পাবনা জেলা স্কুল ইত্যাদি। এছাড়া পাবনার সরকারি মানসিক হাসপাতাল জেলার একটি ঐতিহাসিক হাসপাতাল। এই জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় গড়ে তোলা হয়েছে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেটি পদ্মা নদীর পাশেই অবস্থিত।

নামকরণ[সম্পাদনা]

নামকরণের ইতিহাস নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ আছে। প্রত্নতাত্ত্বিক কানিংহাম অনুমান করেন যে, প্রাচীন রাজ্য পুন্ড্র বা পুন্ড্রবর্ধনের নাম থেকে পাবনা নামের উদ্ভব হয়েছে। পৌন্ড্রবর্ধনের জনপদ গঙ্গার উত্তর দিকে অবস্থিত ছিল। চলতি ভাষায় পুন্ড্রুবর্ধন বা পৌন্ড্রবর্ধন, পোনবর্ধন বা পোবাবর্ধনরূপে উচ্চারিত হতে হতে ‘পাবনা’ হয়েছে।[৪]

কিছু ইতিহাসবিদের মতে, ‘পাবনা’ নামটি ‘পদুম্বা’ থেকে এসেছে। কালক্রমে পদুম্বা শব্দটির স্বরসঙ্গতি হয়ে ‘পাবনা’ হয়েছে। ‘পদুম্বা’ জনপদের প্রথম ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া যায় খ্রিস্টীয় একাদশ শতকে পাল নৃপতি রামপালের শাসনকাল থেকে। ইতিহাসে উল্লিখিত, রামপাল তার হৃতসাম্রাজ্য বরেন্দ্র কৈবর্ত শাসকদের থেকে পুনরুদ্ধারের করার জন্য ১৪ জন সাহায্যকারীর শরণাপন্ন হয়েছিলেন। তাদেরই একজন ছিলেন জনৈক সামন্তরাজা পদুম্বার সোম। অন্য একটি সূত্রে জানা যায়, পৌন্ড্রবর্ধন থেকে ‘পাবনা’ নামের উৎপত্তি হয়েছে।[৪]

এছাড়া পাবনা নামকরণ নিয়ে কারও মতে, ‘পাবন’ বা ‘পাবনা’ নামে একজন দস্যুর আড্ডাস্থল থেকেই একসময় ‘পাবনা’ নামের উদ্ভব হয়। এছাড়াও গঙ্গার পাবনী নামের একটি নদীর মিলিত স্রোতধারার নামানুসারে ‘পাবনা’ নামের উৎপত্তি হয়েছে বলেও অনেকে মনে করেন।[৪]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে পাবনা স্বীকৃতি লাভ করে। ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে জেলার বেশির ভাগ অংশ রাজশাহী জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। তখনকার দিনে এসব এলাকায় সরকারের দায়িত্বপূর্ণ কর্মচারীদের খুব অভাব ছিল। পুলিশের অযোগ্যতা এবং জমিদারদের পক্ষ থেকে ডাকাতি ঘটনার তথ্য গোপন রাখা বা এড়িয়ে যাওয়া হতো। গ্রামাঞ্চলে ডাকাতেরা দলে দলে ঘুরে বেড়াত। চলনবিল এলাকায় জলদস্যুদের উপদ্রব চলছিল দীর্ঘ দিন ধরে। এদের প্রতিরোধ করতে ও শাসনতান্ত্রিক সুবন্দোবস্তের জন্যে কোম্পানি সরকারের মন্তব্য অনুসারে পাবনায় সামগ্রিক ভাবে ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়। ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে তা স্থায়ী রূপ লাভ করে এবং তাকে স্বতন্ত্র ডিপুটি কালেক্টর রুপে নিয়োগ করা হয়।

রাজশাহী জেলার ৫টি থানা ও যশোর জেলার ৩টি থানা নিয়ে সর্ব প্রথম পাবনা জেলা গঠিত হয়। সময় সময় এর এলাকা ও সীমানার পরিবর্তন ঘটেছে। ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দের ২১ নভেম্বর যশোরের খোকসা থানা পাবনা ভুক্ত করা হয়। অন্যান্য থানা গুলোর মধ্যে ছিল রাজশাহীর খেতুপাড়া, মথুরা, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ ও পাবনা। ‘যশোরের চারটি থানা ধরমপুর, মধুপুর, কুস্টিয়া ও পাংশা’। তখন পশ্চিম বাংলার মালদহ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ ডব্লিউ মিলস জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিযুক্ত হন পাবনায়। ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে সেশন জজের পদ সৃষ্টি হলে এ জেলা রাজশাহীর দায়রা জজের অধীনে যায়। ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ অক্টোবর জেলার পূর্ব সীমা নির্দিস্ট করা হয় যমুনা নদী। ১২ জানুয়ারি ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে সিরাজগঞ্জ থানাকে মোমেনশাহী জেলা থেকে কেটে নিয়ে ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে মহকুমায় উন্নীত করে পাবনা ভুক্ত করা হয়। নিযুক্ত করা হয় ডিপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। এর ২০ বছর পর রায়গঞ্জ থানা এ জেলায় সামিল হয়।

নীল বিদ্রোহ চলাকালে শান্তি শৃংখলার অবনতি হলে লর্ড ক্যানিং ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে জেলায় একজন কালেক্টর নিযুক্ত করেন। এর আগে ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে জেলা প্রশাসক হয়ে আসেন টি.ই. রেভেন্স। ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে সিরাজগঞ্জ ও ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে পাবনায় মিউনিসিপ্যালিটি গঠিত হয়। ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রবর্তিত হয় জেলা বোর্ড। যখন কোম্পানি শাসনের অবসান ঘটে তখন স্বভাবতই এ জেলা ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী মহারাণী ডিক্টোরিয়ার শাসনাধীনে চলে যায়। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে পাংশা, খোকসা ও বালিয়াকান্দি এই তিনটি থানা নিয়ে পাবনার অধীনে কুমারখালী মহকুমা গঠন করা হয়। ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে কুষ্টিয়া থানা এ জেলা হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে পাংশা থানা ফরিদপুর জেলার গোয়ালন্দ মহকুমায় এবং কুমারখালী থানা কুষ্টিয়া মহকুমার সাথে সংযুক্ত করা হয়। এ ভাবে এ জেলার দক্ষিণ সীমানা হয় পদ্মা নদী। ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে কুমারখালী থানা সৃষ্টি হলে তা ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে পাবনার একটি মহকুমা হয়। ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে মহকুমা অবলুপ্ত করে কুষ্টিয়া মহকুমার অংশ করা হয়। ১৮৭৯ তে জজ আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আগে কয়েকটি থানা বদলে যায়।

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

বাংলাদেশে অবস্থিত পাবনা জেলা রাজশাহী বিভাগের দক্ষিণ-পূর্ব কোণ সৃষ্টি করেছে। এটি ২৩°৪৮′ হতে ২৪°৪৭′ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০২′ হতে ৮৯°৫০′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এর উত্তরে নাটোর জেলাসিরাজগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে পদ্মা নদী, রাজবাড়ী জেলাকুষ্টিয়া জেলা, পূর্বে মানিকগঞ্জ জেলাযমুনা নদী, পশ্চিমে পদ্মা নদী, নাটোর জেলাকুষ্টিয়া জেলা। পাবনার আমিনপুর থানার দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে এসে পদ্মা ও যমুনা নদী পরস্পর মিলিত হয়েছে।

★ নদনদী-

জলবায়ু[সম্পাদনা]

পাবনা-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) ২৫.৩
(৭৭.৫)
২৮.৫
(৮৩.৩)
৩৩.৬
(৯২.৫)
৩৬.৭
(৯৮.১)
৩৫.২
(৯৫.৪)
৩২.৭
(৯০.৯)
৩১.৭
(৮৯.১)
৩১.৮
(৮৯.২)
৩২.২
(৯০.০)
৩১.৬
(৮৮.৯)
২৯.১
(৮৪.৪)
২৬.৪
(৭৯.৫)
৩১.২
(৮৮.২)
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) ১১.৬
(৫২.৯)
১৩.৯
(৫৭.০)
১৮.৫
(৬৫.৩)
২২.৮
(৭৩.০)
২৪.৬
(৭৬.৩)
২৫.৬
(৭৮.১)
২৫.৯
(৭৮.৬)
২৬.৪
(৭৯.৫)
২৬.২
(৭৯.২)
২৩.৬
(৭৪.৫)
১৭.৫
(৬৩.৫)
১২.৯
(৫৫.২)
২০.৮
(৬৯.৪)
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) ১৯
(০.৭)
১৮
(০.৭)
৩৪
(১.৩)
৫৬
(২.২)
১৫৯
(৬.৩)
৩০০
(১১.৮)
২৬০
(১০.২)
২৯৪
(১১.৬)
২৪২
(৯.৫)
২০১
(৭.৯)
১৭
(০.৭)

(০.১)
১,৬০৩
(৬৩.১)
উৎস: Climate-data.org

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ[সম্পাদনা]

পাবনা জেলা নিম্নলিখিত উপজেলায় বিভক্ত:

  1. আটঘরিয়া উপজেলা,
  2. ঈশ্বরদী উপজেলা,
  3. চাটমোহর উপজেলা,
  4. পাবনা সদর উপজেলা,
  5. ফরিদপুর উপজেলা,
  6. বেড়া উপজেলা,
  7. ভাঙ্গুড়া উপজেলা,
  8. সাঁথিয়া উপজেলা,
  9. সুজানগর উপজেলা,

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

মোট জনসংখ্যা ২৬,২৪,৬৮৪ জন । [৫]

  • পুরুষ ১৩,১৩,৭৭১,
  • মহিলা ১৩,১০,৯১৩,
  • মুসলিম ৯৫.১২%,
  • হিন্দু ৪.৫০%,
  • খ্রীষ্টান ০.২২%,
  • অন্যান্য ০.১৬%।

সাধারণ তথ্যাবলী[সম্পাদনা]

  • উপজেলার সংখ্যা- ৯টি
  • থানার সংখ্যা- ১১টি
  • পৌরসভার সংখ্যা- ০৯টি
  • গ্রামের সংখ্যা- ১,৫৪৯টি
  • ইউনিয়নের সংখ্যা- ৭৪টি[৬]
  • মৌজার সংখ্যা- ১,৩২১ টি
  • ডাকঘর- ১৪৫ টি
  • ডাকবাংলো ও রেষ্ট হাউজ- ১৬ টি
  • নদী বন্দর- ৩ টি
  • সর্বমোট প্রাথমিক বিদ্যালয়- ১১৩৬ টি

  • সর্বমোট মাধ্যমিক বিদ্যালয়- ৩২৮ টি
  • সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ঃ ৩ টি
  • সরকারি কলেজ- ১১ টি

  • বেসরকারি কলেজ- ৫০ টি
  • হোমিওপ্যাথিক কলেজ- ১ টি
  • কারিগরী কলেজ -২৯ টি
  • সর্বমোট মাদ্রাসা- ২৬১ টি
  • বেসরকারী স্কুল এন্ড কলেজ- ৩৩টি
  • আইন কলেজ- ১ টি
  • মেডিকেল কলেজ- ১টি
  • ক্যাডেট কলেজ- ১ টি
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- ১ টি
  • কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট- ১ টি
  • পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট- ১ টি
  • টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট- ১ টি
  • প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষক ইনস্টিটিউট- ১ টি
  • ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট- ১ টি
  • সেবিকা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র- ১ টি

নির্বাচনী এলাকা[সম্পাদনা]

  1. (৬৮) পাবনা-১ (সাঁথিয়া উপজেলা-বেড়া উপজেলা আংশিক)
  2. (৬৯) পাবনা-২ (আমিনপুর থানা-সুজানগর উপজেলা)
  3. (৭০) পাবনা-৩ (চাটমোহর উপজেলা-ফরিদপুর উপজেলা-ভাঙ্গুড়া উপজেলা)
  4. (৭১) পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী উপজেলা-আটঘরিয়া উপজেলা)
  5. (৭২) পাবনা-৫ (পাবনা সদর উপজেলা)

যোগাযোগ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

এই জেলার সড়ক, রেলপথ, জলপথ ও বিমানপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে।

পাবনার বাসগুলো দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ রুটেই চলাচল করে। পাবনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের কাছাকাছি পাবনা রেলওয়ে স্টেশন অবস্থিত। ঈশ্বরদী উপজেলা উত্তর বাংলার এবং বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি রেলওয়ে জংশন। পাবনা টু ঢালারচর নতুন রেলপথ তৈরী হয়েছে। ২৬ জানুয়ারী ২০২০ তারিখ, রোববার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হুইসেল বাজিয়ে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ ট্রেন উদ্বোধন করেন।[৭] বর্তমানে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ আন্তঃনগর ট্রেনটি ঢালারচর-রাজশাহী-ঢালারচর রুটে নিয়মিত চলাচল করছে। এছাড়াও নৌপথে আরিচা - কাজিরহাট হয়ে দিনে বেশ কয়েকটি লঞ্চ ও স্পীডবোর্ড চলাচল করে। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে দীর্ঘ ২০ বছর পর আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। যার ফলে রাজধানী থেকে খুব সহজে নৌপথে পাবনাতে যাতায়াত করা যায়।


★ সড়কপথ

ঢাকা-পাবনা= ২০৮ কি.মি

রুট- ঢাকা+গাজীপুর+টাঙ্গাইল+সিরাজগঞ্জ+পাবনা

★ আকাশপথ

ঢাকা-ঈশ্বরদী বিমানবন্দর (২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময় পরে ঈশ্বরদী বিমাবন্দরটি বন্ধ করে দেয়া হয়)

★ নৌপথ

ঢাকা- পাবনা= ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জ আরিচা ঘাট হয়ে লঞ্চ/ফেরী/স্পিডবোট যোগে পাবনার কাজিরহাট ঘাট হয়ে পাবনা বাস টার্মিনাল এ আসা যায়।

★ রেলপথ-

কমলাপুর রেলস্টেশনে থেকে নিয়মিত পাবনা রূটে ট্রেন চলাচল করে থাকে । ঈশ্বরদী জংশন রেলওয়ে স্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এই স্টেশন হতে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরঙ্গের ট্রেন সমূহ বিভক্ত হয়ে যায়।

পাবনা জেলার রেলস্টেশন সমূহ-

  • ঈশ্বরদী জংশন রেলওয়ে স্টেশন
  • কাশিনাথপুর রেলওয়ে স্টেশন
  • গফুরাবাদ রেলওয়ে স্টেশন
  • গুয়াখড়া রেলওয়ে স্টেশন
  • চাটমোহর রেলওয়ে স্টেশন
  • টেবুনিয়া রেলওয়ে স্টেশন
  • ঢালারচর রেলওয়ে স্টেশন
  • তাঁতিবন্দ রেলওয়ে স্টেশন
  • দাশুড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন
  • দিলপাশার রেলওয়ে স্টেশন
  • দুবলিয়া রেলওয়ে স্টেশন
  • পাকশী রেলওয়ে স্টেশন
  • পাবনা রেলওয়ে স্টেশন
  • বড়ালব্রীজ রেলওয়ে স্টেশন
  • বাঁধেরহাট রেলওয়ে স্টেশন
  • ভাঙ্গুড়া রেলওয়ে স্টেশন
  • মুলাডুলি রেলওয়ে স্টেশন
  • রাঘবপুর রেলওয়ে স্টেশন
  • রূপপুর রেলওয়ে স্টেশন
  • শরৎনগর রেলওয়ে স্টেশন
  • সাঁথিয়া রাজাপুর রেলওয়ে স্টেশন

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ[সম্পাদনা]

  • ড. মির্জা আব্দুল জলিল- সফল রাজনীতিবিদ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব যিনি প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।
  • ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা।
  • মুহাম্মদ আব্দুস সুবহান- রাজনীতিবিদ, সাবেক সাংসদ, তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের সাথে তার সম্পৃক্ততার অভিযোগে বিচার চলছিলো । বিচারকার্য চলাকালীন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
  • মোহাম্মদ ইসহাক- ইসলামি পণ্ডিত ও রাজনীতিবিদ৷ তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক উপদেষ্টা ও খেলাফত মজলিসের বর্তমান আমির। তিনি আবদুল মোনেম খানের মন্ত্রীসভার সদস্য ছিলেন।


★ শিক্ষাবীদ ও অন্যান্য

  • মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী- একজন বাংলাদেশী চিকিৎসক এবং ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী।
  • মোহাম্মদ আবদুল জব্বার- বাংলাদেশে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার অগ্রদূত। তিনিই প্রথম বাংলায় আকাশের তারাসমূহের ছক তৈরি করেন। তার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও পরিকল্পনায়ই বাংলাদেশের প্রথম খ-গোলক নির্মিত হয়। পেশাগত জীবনে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
  • অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাসিবুর রশীদ- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম উপাচার্য।
  • অরুণ কুমার বসাক- পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত এবং বাংলাদেশে পদার্থ বিজ্ঞানের একমাত্র ইমেরিটাস অধ্যাপক। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন।
  • সাইদা খানম- বাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী।


★ সাংস্কৃতিক

  • সুচিত্রা সেন- বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি।
  • জাফর ইকবাল- মুক্তিযোদ্ধা, অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী।
  • মাসুম আজিজ- একুশে পদক প্রাপ্ত ও জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা।
  • চঞ্চল চৌধুরী- একজন বাংলাদেশী অভিনেতা, মডেল, শিক্ষক ও গায়ক । মনপুরা, আয়নাবাজী, হাওয়া, টেলিভিশন, দেবী, পাপ-পূণ্য, পদাতিক- মৃণাল সেনের বায়োপিক তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
  • মেওর বংশীরাজ- কবি ও কথাসাহিত্যিক।
  • বৃন্দাবন দাস- বাংলাদেশের জনপ্রিয় নাট্যকার, অভিনেতা ও লেখক। তিনি হারকিপ্টে, সাকিন সারিসুরি, ঘর কুটুম, পাত্রী চাই, সার্ভিস হোল্ডার, ঘরকুটুম, মোহর শেখসহ প্রায় দুই শতাধিক নাটক ও ধারাবহিক-নাটক লেখেন।
  • শাহানাজ খুশি- টেলিভিশন অভিনেত্রী ও মডেল। তিনি বৃন্দাবন দাশের স্ত্রী।
  • রেজওয়াদুদ মাহিন -পরিচালক, অভিনেতা। তার পরিচালিত টেলিছবি, অথবা গল্পটা প্রেমের। তার অভিনীত টেলিছবি, ভ্যালেন্সটাইন ডে ২০২০, আই লাভ ইউ
  • দারাশিকো- অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক। তার অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্র হল, কি যে করি, সূর্যগ্রহণ, দোস্ত দুশমন, সারেং বৌ, এখনই সময়, চন্দ্রনাথ, সারেন্ডার । তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র আম্মাজান ।
  • রওশন আরা- চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ।
  • মাসুদ রানা মিঠু- নাট্য অভিনেতা ।
  • মিম মানতাশা- লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০১৮ বিজয়ী এবং অভিনেত্রী ।
  • গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার- বাংলা আধুনিক ও চলচ্চিত্র সংগীতের বিশিষ্ট গীতিকার ও সুরকার ।
  • ফজল-এ-খোদা- গীতিকার, ছড়াকার ও পত্রিকা সম্পাদক। বিবিসির জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গানের তালিকায় সেরা ২০ গানের মধ্যে ফজল-এ-খোদার লেখা ‘সালাম সালাম হাজার সালাম গানটি’ ১২তম স্থান পেয়েছিল।
  • বারীণ মজুমদার- একজন বাংলাদেশি সঙ্গীত-অধ্যক্ষ, রাগসঙ্গীত বিশারদ ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী। তাঁকে আখ্যায়িত করা হয় আগ্রা ও রঙ্গিলা ঘরানার যোগ্য উত্তরসাধক হিসেবে।
  • ইলা মজুমদার- একজন বাংলাদেশী শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী।
  • জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র- কবি, গীতিকার ও গায়ক।
  • রজনীকান্ত সেন- (২৬ জুলাই, ১৮৬৫ - ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯১০) প্রখ্যাত কবি, গীতিকার এবং সুরকার।
  • কামাল আহমেদ- গায়ক, প্রশাসক।
  • বাপ্পা মজুমদার- জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী।
  • পার্থ প্রতিম মজুমদার- বাংলাদেশের মূকাভিনয় শিল্পের পথিকৃৎ । বারীণ মজুমদার পুত্র ও বাপ্পা মজুমদারের ভাই।
  • রেদওয়ান রনি- চলচ্চিত্র পরিচালক। নির্মিত চলচ্চিত্র- চোরাবাল, আইসক্রিম । বর্তমানে তিনি চরকি নামক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।


★ উদ্দোক্তা ও অন্যান্য

  • তপন চৌধুরী- বিশিষ্ট ব্যবসায়ী স্যামসম এইচ চৌধুরীর পুত্র এবং স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক । ১৪ জানুয়ারী ২০০৭ সালে তিনি ফখরুদ্দিন আহমেদের অধীনে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত হন।
  • অনুকূলচন্দ্র চক্রবর্তী- যিনি ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র নামেও পরিচিত। তিনি একজন বাঙালি ধর্মগুরু। অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ নামক সংগঠনের প্রবর্তক।

ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

ঐতিহাসিক তাড়াশ ভবন(২০২১)

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

পত্রিকা[সম্পাদনা]

★ দৈনিক ইছামতি ★ দৈনিক স্বতঃকন্ঠ ★ দৈনিক পাবনা বার্তা ★ দৈনিক জীবন কথা ★ দৈনিক বিবৃতি ★ দৈনিক সিনসা ★ সাপ্তাহিক ঈশ্বরদী ★ সময়ে ইতিহাস ★ পদ্মার খবর ★ মিরকামারী নিউজ ★ সাপ্তাহিক বাঁশপত্র ★ প্রযুক্তির সূর্য

অনলাইন ভিত্তিক পত্রিকা

★ পাবনা নিউজ ডট নেট ★ পাবনা নিউজ ২৪ ডট কম ★ আমিনপুর নিউজ ডট কম ★ আলোকিত ভাঙ্গুড়া ডটকম.. ইত্যাদি।

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

কৃষি প্রধান পাবনা জেলার অর্থনীতি বেশ সমৃদ্ধ। তাঁতশিল্প, হোসিয়ারি শিল্প, দুগ্ধজাত পণ্য এ জেলার ঐতিহ্যকে ধারণ করে। অর্থনৈতিক দিক থেকে ঈশ্বরদী উপজেলা বেশ সর্মদ্ধ । ঈশ্বরদীকে নিয়েই পাবনার অর্থনীতি গড়ে উঠেছে প্রচুর ছোটবড় শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। ধান, পাট, গম, পেঁয়াজ, সবজি, লিচু, আম, ঘি, চলনবিলের মাছ ইত্যাদি এ জেলার অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।

এছাড়া পাবনা শহরে বিসিক শিল্প নগরী রয়েছে; যেখানে যথেষ্ট সংখ্যক শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে ।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে পাবনা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৯ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৪ 
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৩ 
  3. "জেলাগুলোর শ্রেণি হালনাগাদ করেছে সরকার"। বাংলানিউজ২৪। ১৭ আগস্ট ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০২০ 
  4. Samachar, পাবনা সমাচার :: Pabna। "নাম কেনো পাবনা, কি দেখবেন পাবনায়"Sottapon Sirajganj (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১০ 
  5. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৮ 
  6. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৭ 
  7. রিপোর্টার, পাবনা থেকে স্টাফ। "প্রধানমন্ত্রী পাবনায় 'ঢালারচর এক্সপ্রেস' ট্রেনের উদ্বোধন করলেন"DailyInqilabOnline। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-১০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]