বিষয়বস্তুতে চলুন

১৯২৮ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের ইংল্যান্ড সফর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

১৯২৮ সালে পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচী অনুযায়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্য নিয়ে ইংল্যান্ড গমন করে। ঐ সফরে দলটি তেমন সফলতা পায়নি। তিন টেস্টের প্রত্যেকটিতেই ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত হয় ও অংশগ্রহণকৃত ৩০টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে কেবলমাত্র পাঁচটিতে বিজয়ী হয়েছিল।

প্রেক্ষাপট

[সম্পাদনা]

১৯২৬ সালে তৎকালীন ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট কনফারেন্সে (বর্তমানে - আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল) প্রথমবারের মতো ভারত, নিউজিল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে আসা উপস্থিত প্রতিনিধিদেরকে অনুমোদন করে। এ তিনটি দেশকে নিজেদের ক্রিকেট বোর্ড গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানায় যাতে তারা টেস্ট খেলার জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বমূলক দল পাঠাতে পারে। এরফলে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াদক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাবে।

এই তিনটি নতুন টেস্টভূক্ত দেশের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ১৯২৮ সালে ইংল্যান্ড খেলতে যায়। ১৯২৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ইংল্যান্ড গমনে ১২ খেলায় জয়লাভ এর প্রধান চাবিকাঠি ছিল।

দলীয় সদস্য

[সম্পাদনা]

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ১৭জন খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ ছিল। জ্যামাইকা, ত্রিনিদাদ ও ব্রিটিশ গায়ানা থেকে চারজন করে এবং বার্বাডোস থেকে পাঁচজন খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ১৯২৩ সালের সফরকারী দলের সহঃঅধিনায়কের দায়িত্বে থাকা কার্ল নুনেসকে অধিনায়কের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

খেলোয়াড়েরা হলেন:

১৭জন খেলোয়াড়ের মধ্যে জেমস নেবলেট ও আর্নেস্ট রে বাদে প্রত্যেকেই তিন টেস্টে গড়া সিরিজের কমপক্ষে একটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীতে অবশ্য নেবলেট ১৯৩৪-৩৫ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একবার অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু, ভবিষ্যতের টেস্ট ক্রিকেটার অ্যালান রে’র পিতা আর্নেস্ট রে কোন টেস্ট খেলার সুযোগ পাননি।

১৭জন খেলোয়াড়ের মধ্যে নুনেস, ব্রাউন, চ্যালেনর, কনস্ট্যান্টাইন, ফার্নান্দেজ, ফ্রান্সিস ও স্মল - এ সাতজন ক্রিকেটার ১৯২৩ সালের ইংল্যান্ড সফরে এসেছিলেন। তবে, পাঁচ বছর বাদে চ্যালেনর, ফার্নান্দেজ ও স্মলের ন্যায় ব্যাটসম্যান পূর্বেকার সফরের সফলতার পুণরাবৃত্তি ঘটাতে পারেননি। বল হাতে ফ্রান্সিস ও ব্রাউন কম সফল ছিলেন। ১৯২৩ সালের শীর্ষসারির উইকেট-রক্ষক জর্জ ডিউহার্স্ট এ সফরে ছিলেন না। ফলশ্রুতিতে, নুনেসকে প্রধান উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়েছিল।

টেস্ট খেলা

[সম্পাদনা]

এ সফরে তিনটি টেস্ট খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রত্যেক টেস্টেরই সময়সীমা ছিল তিনদিন।

প্রথম টেস্ট, লর্ডস, ২৩-২৬ জুন, ১৯২৮

[সম্পাদনা]
২৩–২৬ জুন, ১৯২৮
স্কোরকার্ড
৪০২ (১২৫.৪ ওভার)
জিই টিল্ডসলে ১২২
এলএন কনস্ট্যান্টাইন ৪/৮২ (২৬.৪ ওভার)
১৭৭ (৮৩.৩ ওভার)
এফআর মার্টিন ৪৪
ভিডব্লিউইস জাপ ৪/৩৭ (২৩ ওভার)
১৬৬ (এফ/ও) (৭৩.১ ওভার)
জেএ স্মল ৫২
এপি ফ্রিম্যান ৪/৩৭ (২১.১ ওভার)
ইংল্যান্ড ইনিংস ও ৫৮ রানে বিজয়ী
লর্ডস, লন্ডন

  • টসে জয়ী হয়ে ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে অগ্রসর হয়।
  • ২৪ জুন বিশ্রামবার ছিল।
  • ইংল্যান্ডের পক্ষে ডিআর জারদিনএইচ স্মিথ-সহ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সকলের একযোগে টেস্ট অভিষেক ঘটে।

জ্যাক হবস অসুস্থতার কারণে খেলতে পারেননি। ইংল্যান্ড দল টসে জয়লাভ করে। হার্বার্ট সাটক্লিফচার্লি হলোস ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। কনস্ট্যান্টাইন, গ্রিফিথ ও ফ্রান্সিস - এ তিনজন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলারের পাশাপাশি ব্রাউন স্বাগতিকদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ান। নিয়মিতভাবে উইকেট পতন ঘটতে থাকে। তবে, রান খুবই দ্রুতগতিতে সংগৃহীত হচ্ছিল। আর্নেস্ট টিল্ডসলে ১২২ ও অধিনায়ক পার্সি চ্যাপম্যান ৫০ রান তুললে প্রথম দিন শেষে ইংল্যান্ড দল ৩৮২/৮ রান তুলে। কনস্ট্যান্টাইন ৪/৮২ করেন। দ্বিতীয় দিন সকালে খুব দ্রুত ইনিংস শেষ হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে মার্টিন ও চ্যালেনর মধ্যাহ্নভোজনের বিরতিতে কোন উইকেটের পতন ছাড়াই ৭০ রানের জুটি গড়েন। এ জুটি ৮৬ রান তুলে মরিস টেটের বলে মার্টিন ৪৪ রানে বিদায় নেন। এরপর মাত্র ১০ রানের ব্যবধানে পাঁচ উইকেটের পতন ঘটে। নুনেস ৩৭ রান করেন। ভ্যালেন্স জাপটিচ ফ্রিম্যান দুই ঘণ্টায় শেষ পাঁচ উইকেট ভাগাভাগি করে নেন। ফলো-অনের কবলে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। দ্বিতীয় ইনিংসে দলের অবস্থা আরও নাজুক পর্যায়ে উপনীত হয়। দ্বিতীয় দিন শেষে মাত্র ৪৪ রানে প্রথম ছয় উইকেট হারায় তারা। চূড়ান্ত দিন সকালে ৯০ মিনিট খেলা হয়। স্মল ৫২ ও ব্রাউন ৪৪ রান তুলে ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারী দল।

দ্বিতীয় টেস্ট, ম্যানচেস্টার, ২১-২৪ জুলাই, ১৯২৮

[সম্পাদনা]
২১-২৪ জুলাই, ১৯২৮
স্কোরকার্ড
২০৬ (১০৫.৪ ওভার)
সিএ রোচ ৫০
এপি ফ্রিম্যান ৫/৫৪ (৩৩.৪ ওভার)
৩৫১ (১০৭.২ ওভার)
ডিআর জারদিন ৮৩
এইচসি গ্রিফিথ ৩/৬৯ (২৫ ওভার)
১১৫ (৪৭.৩ ওভার)
ডব্লিউইএইচ সেন্ট হিল ৩৮
এপি ফ্রিম্যান ৫/৩৯ (১৮ ওভার)
  • টসে জয়ী হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
  • ২২ জুলাই বিশ্রামবার ছিল।
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ইএলজি হোডওসি স্কটের টেস্ট অভিষেক ঘটে।

সফরকারী দলে দুইটি পরিবর্তন আনা হয়েছিল। এ টেস্ট শুরুর তিনদিন পূর্বে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে দুই-দিনের খেলায় হোড অপরাজিত ১৪৯ রান তুললে ও স্কটকে ফার্নান্দেজ ও স্মলের স্থলাভিষিক্ত করা হয়। নিষ্প্রাণ পিচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল টসে জয়লাভ করে ব্যাটিংয়ে নামে। রোচ ব্যাটিংয়ের স্থান পরিবর্তন ঘটিয়ে উদ্বোধনে নামেন। তিনি ৫০ রান তুলেন। এ সময়ে চ্যালেনরের সাথে ৪৮ ও মার্টিনের সাথে ৪৬ রানের জুটি গড়েন। এক পর্যায়ে দলের সংগ্রহ ১৩৩/৬ হয়। এরপর ব্রাউন ও স্কট দলীয় সংগ্রহকে ২০০ টপকাতে সহায়তা করেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে টিচ ফ্রিম্যান ৫৪ রান খরচায় পাঁচ উইকেট দখল করেন। সুস্থ হয়ে জ্যাক হবস খেলতে নামেন। হার্বার্ট সাটক্লিফের সাথে প্রথম উইকেট জুটিতে ১১৯ রান তুলেন। দ্রুত তিন উইকেটের পতনের পর ওয়ালি হ্যামন্ড ডগলাস জারদিনের সাথে ১২০ রানের জুটি গড়েন। নিজে করেন ৬৩ রান। আরও ছোট-খাটো বিপর্যয়ের ঘটে। তন্মধ্যে, চ্যাপম্যানকে রিটায়ার হার্ট হতে হয়। জারদিন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৩ রান তুলেন। নিচেরসারির ব্যাটসম্যানেরা দলের সংগ্রহকে ৩৫১ করে।

দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল খুব দ্রুত দুই উইকেট হারায়। কেবলমাত্র মার্টিন ও সেন্ট হিল ৫৫ রানের জুটি গড়তে সক্ষম হন। দ্বিতীয় দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭১/৪। তৃতীয় দিন সকালেই আরও শোচনীয় পর্যায়ে নিপতিত হয় সফরকারী দল। ৫০ মিনিটে মাত্র ৪৪ রান তুলে ইনিংস গুড়িয়ে দেয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড দল। টিচ ফ্রিম্যান আবারও পাঁচ উইকেটের সন্ধান পান। এবার তিনি ৩৯ রান খরচ করেন। এরফলে খেলায় তিনি ৯৩ রান খরচায় দশ উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন।

তৃতীয় টেস্ট, ওভাল, ১১-১৪ আগস্ট, ১৯২৮

[সম্পাদনা]
১১-১৪ আগস্ট, ১৯২৮
স্কোরকার্ড
২৩৮ (৮০ ওভার)
সিএ রোচ ৫৩
এমডব্লিউ টেট ৪/৫৯ (২১ ওভার)
৪৩৮ (১০৩.৫ ওভার)
জেবি হবস ১৫৯
এইচসি গ্রিফিথ ৬/১০৩ (২৫.৫ ওভার)
১২৯ (৫২.৪ ওভার)
এফআর মার্টিন ৪১
এপি ফ্রিম্যান ৪/৪৭ (২১.৪ ওভার)
ইংল্যান্ড ইনিংস ও ৭১ রানে বিজয়ী।
দি ওভাল, লন্ডন

  • টসে জয়ী হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
  • ১২ আগস্ট বিশ্রামবার ছিল।
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ইএল বার্টলেটসিভি উইট এবং ইংল্যান্ডের পক্ষে এম লেল্যান্ডের টেস্ট অভিষেক ঘটে।

দ্বিতীয় টেস্টের ন্যায় তৃতীয় টেস্টের খেলার অবস্থা প্রায় একই থাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল চমৎকার সূচনা করে। রোচ ৫৩ ও চ্যালেনর ৪৬ রান করেন। তবে দলের বাদ-বাকী সদস্যরা ৩০-এর নিচে রান করতে সক্ষম হন। দল ২৩৮ রানে গুটিয়ে যায়। এ সংগ্রহটিই সিরিজে সফরকারী দলের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল। এর জবাবে প্রথম উইকেট জুটিতে হবস ও সাটক্লিফ ১৫৫ রান তুলেন। এরপর হবস ও টিল্ডসলে জুটি ১২৯ রান তুলে। এ পর্যায়ে হবস ১৫৯ রানে আউট হন ও দলের সংগ্রহ ছিল ২৮৪ রান। পরবর্তী ঘণ্টায় ৪৯ রান তুলে স্বাগতিকরা পাঁচ উইকেট হারায়। সবগুলোতেই গ্রিফিথ ভাগ বসান। ঐ ইনিংসে তিনি ৬/১০৩ পান যা পুরো সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের মধ্যে সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ছিল। এরপর মরিস টেটহ্যারল্ড লারউড জুটি মাত্র ২৫ মিনিটে ৬১ রান তুলে। শেষ তিন উইকেটে ১০৫ রান যুক্ত হয়। পূর্বেকার টেস্টগুলোয় ন্যায় এবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংস বাজেভাবে শুরু হয়। কেবলমাত্র মার্টিনের ৪১ রানের ইনিংসটি অনমনীয় ছিল। এরফলে দলটি কোনক্রমে তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে সক্ষম হয়। তৃতীয় দিন মধ্যাহ্নভোজনের পূর্বেই খেলাটি শেষ হয়ে যায়।

অন্যান্য খেলা

[সম্পাদনা]

তিনটি টেস্টসহ ৩০টি প্রথম-শ্রেণীর খেলা এ সফরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়াও ছয়টি গুরুত্বহীন খেলায় অংশ নেয় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। দলটি সর্বমোট ৩৬টি খেলার মধ্যে মাত্র সাতটিতে জয়লাভে সক্ষমতা দেখায়। তন্মধ্যে, পাঁচটি প্রথম-শ্রেণীর খেলা এ জয়ের মধ্যে ছিল ও ১২টি খেলায় পরাজিত হয়।

মে মাসের শেষদিকে সফরকারী দল ডার্বিশায়ারকেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে জয় তুলে নেয়। এছাড়াও, গুরুত্বহীন খেলায় নর্দাম্বারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পায়। অন্য তিনটি খেলায় ড্র করে। তিনদিনের খেলায় আয়ারল্যান্ডের কাছে পরাজিত হবার পর মিডলসেক্সের বিপক্ষে খুবই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় জয়ী হয়েছিল। তবে, প্রথম টেস্ট খেলার পূর্বেকার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণের পূর্বে মাইনর কাউন্টিজের কাছ ৪২ রানে পরাজিত হয়। স্বাগতিক দলটি ফলো-অনের কবলে পড়েও এ সফলতা দেখায়।

মৌসুমের শেষদিকের দুই মাসে নর্দাম্পটনশায়ারকেন্টসহ গুরুত্বহীন খেলায় স্টাফোর্ডশায়ারের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল জয়ী হয়েছিল। তন্মধ্যে, স্টাফোর্ডশায়ারের পক্ষে ৫৫ বছর বয়সী সিডনি বার্নসের অংশগ্রহণ ছিল ও তিনি পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন। তবে, ইয়র্কশায়ারের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংসটি মাত্র ৫৮ রানে গুটিয়ে যায়। ওয়ারউইকশায়ারসহ সাসেক্সের বাইরে বিশ্রামে থাকা মরিস টেট, দিলীপসিংজীজেমস ল্যাংগ্রিজ ছাড়াই জয় পায়। সিডনি বার্নসের অংশগ্রহণে ওয়েলসের প্রতিনিধিত্বকারী প্রথম-শ্রেণীর দলও জয় পায়। ঐ খেলায় বার্নস ১২ উইকেট পেয়েছিলেন।

ঐ সফরের শেষদিকে ইস্টবোর্ন, ফোকস্টোন ও স্কারবোরা উৎসবে আয়োজিত তিনটি খেলায়ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ পরাজয়বরণ করেছিল।

ব্যক্তিগত সাফল্য

[সম্পাদনা]

এ সফরের প্রধান তারকা খেলোয়াড় লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইন টেস্ট খেলাগুলোয় তেমন ভালো খেলতে পারেননি। তবে, প্রথম-শ্রেণীর সর্বাধিকসংখ্যক রান তুলেন। ৩৪.৫২ গড়ে ১,৩৮১ রান তোলার পাশাপাশি ২২.৯৫ গড়ে সর্বাধিকসংখ্যক ১০৭ উইকেট পান। একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলো থেকে তিনটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন।

এছাড়াও, মার্টিন, চ্যালেনর ও রোচ প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলোয় অংশ নিয়ে সহস্রাধিক রান তুলেছেন। সফরের দ্বিতীয়ার্ধে সবগুলো খেলায় অংশ নিয়ে হোড চমৎকার খেলেন। ১৯২৩ সালে চ্যালেনর ৫১.৮৬ গড়ে ছয় সেঞ্চুরি সহযোগে ১,৫৫৬ রান তুললেও এ সফরে ২৭.৫৩ গড়ে মাত্র ১,০৭৪ রান তুলতে সক্ষম হন। এছাড়াও এ সফরে তিনি কোন সেঞ্চুরির সন্ধান পাননি। সবগুলো খেলায় অংশ নিয়ে গ্রিফিথ ১০৩ উইকেট পেয়েছেন।

মূল্যায়ন ও প্রভাব

[সম্পাদনা]

দূর্বল ক্রীড়াশৈলীর কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দলকে বেশকিছু প্রতিকূল মন্তব্যের মুখোমুখি হতে হয়। ১৯২৯ সালের উইজডেন সংস্করণে সামগ্রীকভাবে এ সফরকে আত্মঘাতিস্বরূপ উল্লেখ করে। পূর্বেকার সফরের খেলার মানের সাথে তুলনান্তে ১৯২৮ সালের দলটির খেলার মান অত্যন্ত নিম্নমানের ছিল যা সকলেই একবাক্যে স্বীকার করবেন। এছাড়াও, ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টেস্ট খেলার আয়োজন করাও বিরাট ভুল হিসেবে বলা যায়। ভবিষ্যতে কি হবে জানা সম্ভব নয় তবে, এ মুহুর্তে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের কাছ থেকে ইংল্যান্ডের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আশা করা বাতিকমাত্র।

আনুষ্ঠানিকভাবে কম সমালোচনা করা হয় ও এমসিসি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে যথাসম্ভব নিজেদের মেলে ধরাতে সচেষ্ট ছিল বলে জানায়। ১৯২৯-৩০ মৌসুমে চার খেলার টেস্ট সিরিজে অংশগ্রহণের জন্য এমসিসি দল প্রেরণ করতে সম্মত হয়। নিউজিল্যান্ডে দ্বিতীয় সফরে এ সফরটি বিপরীতমূখী কাজ করে। ঐ দেশের প্রথম দিকের টেস্টগুলোয় অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকজন খেলায় উভয় সফরে দলের বাইরে ছিলেন। ফলে দলটি দ্বিতীয়সারির দলরূপে চিহ্নিত হয় ও সিরিজ ড্র করে। উভয় দল একটি করে খেলায় জয় পেয়েছিল। এ সিরিজেই জর্জ হ্যাডলি’র ন্যায় উদীয়মান ও বিখ্যাত ব্যাটসম্যানের আত্মপ্রকাশ ঘটে। উইজডেনের মতে যা সমতাসূচক অধ্যায়ের সূচনা ও ইংল্যান্ডের হতাশাব্যঞ্জক ফলাফলের প্রতিধ্বনিস্বরূপ।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  • Wisden Cricketers Almanack 1929 edition
  • Also Wisden 1930 and 1931 for MCC report and for information on 1929-30 England tour to West Indies

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]