নাগসেন
বৌদ্ধধর্ম |
---|
এর ধারাবাহিক নিবন্ধের অংশ |
নাগসেন ছিলেন একজন সর্বাস্তিবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষু। তিনি কাশ্মীরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[১][২] নাগসেন খ্রিস্টপূর্ব ১৫০ অব্দের সমসাময়িক ছিলেন। উত্তরপশ্চিম ভারতের (অধুনা পাকিস্তান) ভারতীয়-গ্রিক রাজা প্রথম মিনান্ডার (পালি: মিলিন্দ) বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে তাকে যে প্রশ্ন করেছিলেন, সেই বিষয়ে নাগসেনের উত্তর মিলিন্দপঞ্হ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।
মিলিন্দপঞ্হ
[সম্পাদনা]মিলিন্দপঞ্হ হিল পালি ভাষায় রচিত একটি বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ। মিলিন্দপঞ্হ শব্দটির অর্থ ‘রাজা মিলিন্দের প্রশ্ন’ (মিনান্ডার শব্দটির ভারতীয় রূপ হল ‘মিলিন্দ’)। ভিক্ষু নাগসেন ও রাজা মিলিন্দের কথোপকথন এই গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। গ্রন্থটির রচয়িতা নাগসেন। তিনি মূলত পালি ভাষায় এই গ্রন্থটি রচনা করেছিলেন। এই গ্রন্থের ভাষায় কিশতওয়ার জেলার ভাষা কিশতওয়ারির প্রভাব রয়েছে।[৩]
এই গ্রন্থে উল্লিখিত হয়েছে যে নাগসেন পাটলীপুত্রের (অধুনা পাটনা, বিহার) গ্রিক বৌদ্ধ ভিক্ষু ধর্মরক্ষিতের কাছে ত্রিপিটক অধ্যয়ন করেন। তিনি বোধি লাভ করার পর ধর্মরক্ষিতের অধীনে অর্হৎ হয়েছিলেন।
এই গ্রন্থে নাগসেনের পিতা সোঙুত্তর, তার গুরু রোহন, বত্তনীয়ার অস্সগুত্ত এবন অপর এক গুরু সাগলের নিকটবর্তী সনখেয়ার আয়ুপালের উল্লেখ আছে।
থাই ঐতিহ্য
[সম্পাদনা]একটি কিংবদন্তি অনুসারে, নাগসেন থাইল্যান্ডে মরকত বুদ্ধ নামক বুদ্ধের প্রথম মূর্তিটি নিয়ে আসেন নিয়ে আসেন। উক্ত কিংবদন্তি অনুসারে, খ্রিস্টপূর্ব ৪৩ অব্দে ভারতের পাটলীপুত্র শহরে নাগসেন মরকত বুদ্ধের মূর্তিটি নির্মাণ করেছিলেন।
মিলিন্দপঞ্হ ও এই কিংবদন্তিটি ছাড়া আর কোথাও নাগসেনের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না।
মূর্তি ও চিত্রকলা
[সম্পাদনা]নাগসেন হলেন মহাযান বৌদ্ধধর্মের অষ্টাদশ অর্হতের অন্যতম। তার প্রথানুগ বস্ত্রচিত্রে দেখা যায় তিনি ডান হাতে একটি খক্খর ও বাঁ হাতে একটি পাত্র ধরে আছেন। ক্লিভল্যান্ড মিউজিয়াম অফ আর্টে তার থাঙ্কাগুলির একটি অসাধারণ উদাহরণ রক্ষিত আছে। “এই মূর্তিটি অর্হৎ নাগসেনের [মূর্তির মতো]। ১৪৩৫ সালে জীবরামের আঁকার খাতায় এটি পাওয়া যায়।”[৪] who also holds a vase.
সিঙ্গাপুরের এশিয়ান সিভিলাইজেশন মিউয়ামে অনুরূপ একটি চিত্র রক্ষিত আছে। (কুইয়ানলং যুগ, ১৮ সি: রেশমের কাজ করা থাঙ্কা।)[৫]
আধুনিক মূর্তিগুলিকে নাগসেনকে একজন মুণ্ডিত মস্তক বৃদ্ধ ভিক্ষু রূপে দেখানো হয়। এই মূর্তিতে তিনি কান চুলকাচ্ছেন। এটি শ্রবণেন্দ্রিয় শুদ্ধিকরণের প্রতীক। কারণ, বৌদ্ধধর্মের অনুগামীর পক্ষে পরচর্চা বা অন্যান্য নিরর্থক কথা শোনা অকর্তব্য। তাদের শুধুমাত্র সত্য কথা শোনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।
পাদটীকা
[সম্পাদনা]- ↑ Xing 2005, পৃ. 26।
- ↑ Jestice 2004, পৃ. 621।
- ↑ GLIMPSES OF KISHTWAR HISTORY BY D.C.SHARMA
- ↑ Stephen Little, "The Arhats in China and Tibet." Artibus Asiae, Vol. 52, No. 3/4 (1992), p. 257
- ↑ Marilyn Seow, Managing Editor. The Asian Civilisations Museum A-Z Guide. Singapore: Asian Civilisations Museum, 2003, pp.326-7.
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- Jestice, Phyllis G (২০০৪)। Holy People of the World: A Cross-cultural Encyclopedia। ABC-CLIO। আইএসবিএন 978-1-57607-355-1।
- Xing, Guang (১ জানুয়ারি ২০০৫)। The Concept of the Buddha: Its Evolution from Early Buddhism to the Trikāya Theory। Psychology Press। আইএসবিএন 978-0-415-33344-3।