বিষয়বস্তুতে চলুন

ইমরুল কায়েস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Imrul Kayes থেকে পুনর্নির্দেশিত)
ইমরুল কায়েস
২০১৮ সালে ইমরুল কায়েস
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম (1987-02-02) ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ (বয়স ৩৭)
মেহেরপুর, খুলনা, বাংলাদেশ
ডাকনামসাগর
উচ্চতা৫ ফুট ৭ ইঞ্চি (১.৭০ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিন
ভূমিকাউদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, অনিয়মিত উইকেট-রক্ষক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৩)
১৯ নভেম্বর ২০০৮ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট২২ নভেম্বর ২০১৯ বনাম ভারত
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৯৩)
১৪ অক্টোবর ২০০৮ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ ওডিআই১১ ডিসেম্বর ২০১৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ওডিআই শার্ট নং৪৫
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ২৬)
১ মে ২০১০ বনাম পাকিস্তান
শেষ টি২০আই২৯ অক্টোবর ২০১৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৬-বর্তমানখুলনা বিভাগ
২০১২সিলেট রয়্যালস
২০১৩রংপুর রাইডার্স
২০১৫-বর্তমানকুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস
২০১৯ - ২০২০চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই টি২০আই প্রশ্রে
ম্যাচ সংখ্যা ৩৯ ৭৮ ১৪ ১৩৪
রানের সংখ্যা ১,৭৯৭ ২,৪৩৪ ১১৯ ৭,৭১৭
ব্যাটিং গড় ২৪.২৮ ৩২.০২ ৯.১৫ ৩৩.৪০
১০০/৫০ ৩/৪ ৪/১৬ ০/০ ২০/২৫
সর্বোচ্চ রান ১৫০ ১৪৪ ৩৬ ২০৪
বল করেছে ২৪ - ৩২৯
উইকেট
বোলিং গড় - ৪৬.৮০
ইনিংসে ৫ উইকেট -
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং - ১/০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩৫/০ ২১/০ ৪/০ ১২৪/০
উৎস: ক্রিকইনফো, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩

ইমরুল কায়েস (জন্ম: ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭) হলেন একজন বাংলাদেশী আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক। যিনি খুলনা বিভাগের হয়ে বাঁহাতি ব্যাটার এবং মাঝে মাঝে উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলেন। অজ্ঞাত কারণে জাতীয় দল থেকে বারবার বাদ পড়ায় তাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত ক্রিকেটার বলা হয়।[][][][]

ঘরোয়া ক্রিকেটে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস, রংপুর রাইডার্স ও খুলনা বিভাগীয় দলে খেলছেন। এছাড়াও, তিনি বাংলাদেশ এ দল, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড একাদশ দলে খেলেছেন।

খেলোয়াড়ী জীবন

[সম্পাদনা]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার অভিষেক হয় ২০০৬ সালে। জাতীয় স্কোয়াডে ডাক পাবার পূর্বেই তিনি ১৫টি প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচ ও ১৬টি একদিনের ম্যাচ খেলে অভিজ্ঞতার ঝুলি সমৃদ্ধ করেন। বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে চট্টগ্রামের মাটিতে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে তিনি মাত্র ১২ রান করে আউট হন। দল হারে ৭৯ রানে।[]

টেস্ট ক্রিকেটে তার অভিষেক হয় ২০০৮-এর নভেম্বরে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্টেই।[] শুরুটা মোটেও সুখকর হয়নি তার জন্য। দুই ইনিংসে তার সংগ্রহ ছিল যথাক্রমে ১০ ও ৪। ২০১০-এ তিনি তার সেরা ফর্মে ছিলেন। এ বছর ৩২.১১ গড়ে ৮৬৭ রান করে তিনি ঐ বছরের পঞ্চম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। তার প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিটি নিউজিল্যান্ড দলের বিরুদ্ধে।

জিম্বাবুয়ে সিরিজ, ২০১৪

[সম্পাদনা]

১২ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের ৩য় টেস্টের প্রথম দিনেই সফরকারী জিম্বাবুয়ে দলের বিপক্ষে তামিমের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে নিজেদের গড়া ১৮৫ রানের পূর্বতন রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন করে রেকর্ড গড়েন। এ দু’জন বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই সেশন নিরবিচ্ছিন্নভাবে ছিলেন। ৬৩.৫ ওভার খেলে ২২৪-রান করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়ে তামিম-ইমরুল। এছাড়াও, তারা দলের চতুর্থ দুই শতাধিক জুটি গড়াসহ উদ্বোধনী জুটিতে নতুন রেকর্ড গড়েন।[] ২০০৮-২০১১ সালে এ দু’জন দলের উদ্বোধনে নেমে ২০১০ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮৫ রান করেছিলেন। ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সালে চট্টগ্রামেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরিকারী ইমরুল ৩নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন ও তার প্রথম সেঞ্চুরি করেন। খেলায় উভয়েই সেঞ্চুরি করেন।[] ইমরুলের ১৩০ রান তার দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। ১২ চার ও দুই ছক্কার সাহায্যে তার এ ইনিংসটি ২৫৭ বলের ছিল। তামিমের বিদায়ের পর গালি অঞ্চলে অতিরিক্ত খেলোয়াড় ভুসি সিবান্দা’র হাতে ধরা পড়েন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা’র বলে।

পাকিস্তান সিরিজ, ২০১৫

[সম্পাদনা]

২ মে, ২০১৫ তারিখে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ১ম টেস্টের ২য় ইনিংসে তামিম ইকবালকে (২০৬) সাথে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৩১২ রান তোলেন। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন।[][১০] এরফলে তারা টেস্টের ২য় ইনিংসে ১৯৬০ সালে কলিন কাউড্রেজিওফ পুলারের গড়া ২৯০ রানের রেকর্ড ভঙ্গের মাধ্যমে নতুন রেকর্ড গড়েন।[১১] খেলায় তিনি ১৫০ রান করেন যা তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ টেস্ট ও তৃতীয় শতরান। এ রান সংগ্রহের পূর্বে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের আঙ্গুলে আঘাতপ্রাপ্তির কারণে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি প্রায় ১২০ ওভার উইকেট-রক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন।[১১] পরবর্তীতে সাকিব আল হাসানের দৃঢ়তাপূর্ণ অপরাজিত ৭৫* রানের সুবাদে তার দল ৫৫৫/৬ তোলে ও খেলাটি নিষ্প্রাণ ড্রয়ে পরিণত হয়।

জিম্বাবুয়ে সিরিজ, ২০১৮

[সম্পাদনা]

২০১৮ সালের জিম্বাবুয়ের সাথে ৩ ম্যাচ ওডিআই সিরিজে তিনি ২ টি শতক ও ১ টি অর্ধ শত রানের ইনিংস খেলেন এবং প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রান করেন। এই সিরিজে তিন ম্যাচ মিলিয়ে তিনি ৩৪৯ রান করেন। যা দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।[১২]

আন্তর্জাতিক শতকসমূহ

[সম্পাদনা]

টেস্ট শতক

[সম্পাদনা]
ইমরুল কায়েসের টেস্ট শতকসমূহ[১৩]
ক্রমিক রান প্রতিপক্ষ মাঠ সাল ফলাফল
১১৫  শ্রীলঙ্কা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম ২০১৪ খেলা ড্র
১৩০  জিম্বাবুয়ে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম ২০১৪ ড্র
১৫০  পাকিস্তান শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম, খুলনা ২০১৫ ড্র

ওডিআই শতক

[সম্পাদনা]
ইমরুল কায়েসের ওডিআই শতকসমূহ
# রান খেলা নং প্রতিপক্ষ শহর/দেশ মাঠ বছর ফলাফল
১০১ ১০  নিউজিল্যান্ড ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ড এএমআই স্টেডিয়াম ২০১০ পরাজয়
১১২ ৬০  ইংল্যান্ড মিরপুর মডেল থানা, বাংলাদেশ শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ২০১৬ পরাজয়
১৪৪ ৭৪  জিম্বাবুয়ে মিরপুর মডেল থানা, বাংলাদেশ শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ২০১৮ জয়
১১৫ ৭৬  জিম্বাবুয়ে চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম ২০১৮ জয়

আন্তর্জাতিক পুরস্কার

[সম্পাদনা]

একদিনের আন্তর্জাতিক

[সম্পাদনা]

ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার

[সম্পাদনা]
ক্রমিক প্রতিপক্ষ মাঠ তারিখ খেলায় অবদান ফলাফল
ইংল্যান্ড জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম ১১ মার্চ, ২০১১ ১ কট; ৬০ (১০ বল, ৫x৪)  বাংলাদেশ ২ উইকেটে বিজয়ী[১৪]
নেদারল্যান্ডস জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম ১৪ মার্চ, ২০১১ ১ কট; ৭৩* (১১৩ বল, ৬x৪)  বাংলাদেশ ৬ উইকেটে বিজয়ী[১৫]
জিম্বাবুয়ে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা ৯ নভেম্বর, ২০১৫ ৭৬ (৮৯ বল, ৬x৪, ৪x৬); ২ কট  বাংলাদেশ ৫৮ রানে বিজয়ী[১৬]
জিম্বাবুয়ে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা ২১ অক্টোবর, ২০১৮ ১৪৪ (১৪০ বল, ১৩x৪, ৬x৬)  বাংলাদেশ ২৮ রানে বিজয়ী[১৭]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "I have nothing left to prove: Imrul Kayes"BDCrictime। ৬ মার্চ ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৩ 
  2. "আর কত অবহেলিত হবেন ইমরুল কায়েস?"বিডিক্রিকটাইম। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৩ 
  3. "অবহেলিত ক্রিকেটার ইমরুল কায়েসের অজানা কিছু তথ্য"Amar Sangbad। ২ ডিসেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৩ 
  4. "ইমরুল কায়েস: সমর্থকদের বিদ্রুপ আর জাতীয় দলে 'অবহেলা' কীভাবে সামাল দেন?"BBC Bangla। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৩ 
  5. বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড ২০০৮-০৯ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে, Cricket World, 14th October 2008
  6. "দক্ষিণ আফ্রিকার আগ্রাসী মনোভাব"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-১৯ 
  7. Isam, Mohammad (নভেম্বর ১২, ২০১৪)। "Tamim and Imrul talk a good game; Bangladesh v Zimbabwe, 3rd Test, Chittagong, 1st day"espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১২, ২০১৪ 
  8. Isam, Mohammad (নভেম্বর ১২, ২০১৪)। "Bangladesh openers shatter records; Bangladesh v Zimbabwe, 3rd Test, Chittagong, 1st day"espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১২, ২০১৪ 
  9. "Record opening stand stuns Pakistan"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৫ 
  10. "Tamim double-ton tops up record stand"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৫ 
  11. "Centurion Kayes overcomes wicketkeeping ordeal, Bangladesh v Pakistan, 1st Test, Khulna, 4th day May 2, 2015"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১৫ 
  12. "ইমরুলের ব্যাটে ভিমরুলের কামড়!"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-২৬ 
  13. "Tamim Iqbal Test Centuries: Statsguru"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৪ 
  14. "ICC Cricket World Cup, 2011 - 28th match, Group" 
  15. "ICC Cricket World Cup, 2011 - 32nd match, Group B" 
  16. "Zimbabwe in Bangladesh ODI Series, 2015 - 2nd ODI" 
  17. "1st ODI (D/N), Zimbabwe tour of Bangladesh at Dhaka, Oct 21 2018"ESPNcricinfo (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১০-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-২৫ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]