র‍্যাপিডএক্স

র‍্যাপিডএক্স RAPIDX
র‍্যাপিডএক্স পরিভাষায় ব্যবহৃত নমো ভারত ট্রেন
সংক্ষিপ্ত বিবরণ
পরিষেবা ধরন	সেমি-হাই-স্পিড রেল কমিউটার রেল আঞ্চলিক রেল
অবস্থা	আংশিক পরিচালিত
প্রথম পরিষেবা	২১ অক্টোবর ২০২৩ (2023-10-21)
ওয়েবসাইট	ncrtc.in
যাত্রাপথ
ব্যবহৃত লাইন	১ (পরিচালিত) ৭ (প্রস্তাবিত)
যাত্রাপথের সেবা
শ্রেণী	ইকোনমি ক্লাস বিজনেস ক্লাস মহিলার শ্রেণী
আসন বিন্যাস	বিমানধর্মী
পর্যবেক্ষণ সুবিধা	পরিদৃশ্যের জন্য বড় জানালা
বিনোদন সুবিধা	ওয়াই-ফাই বৈদ্যুতিক সকেট
মালপত্রের সুবিধা	ওভারহেড র‍্যাক
অন্যান্য সুবিধা	হেলানো আসন সিসিটিভি ক্যামেরা স্মোক অ্যালার্ম অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ডাইনামিক রুট ডিসপ্লে মানচিত্র ধরার জন্য হাতল নিয়ন্ত্রিত আলো প্রশস্ত গ্যাংওয়ে
কারিগরি
গাড়িসম্ভার	নমো ভারত
ট্র্যাক গেজ	১,৪৩৫ মিলিমিটার (৪ ফুট ৮ ১⁄২ ইঞ্চি) আদর্শ গেজ
পরিচালন গতি	১৬০–১৮০ কিমি/ঘ (৯৯–১১২ মাইল প্রতি ঘণ্টা) ১০০ কিমি/ঘ (৬২ মাইল প্রতি ঘণ্টা) (গড়)
রক্ষণাবেক্ষণ	দুহাই ডিপো

র‍্যাপিডএক্স (ইংরেজি: RAPIDX) ভারতের জাতীয় রাজধানী অঞ্চল (এনসিআর) জুড়ে বিস্তৃত একধরনের উত্তোলিত সেমি-হাই-স্পিড আঞ্চলিক রেল পরিষেবা। এটি জাতীয় রাজধানী এলাকা পরিবহন নিগম (এনসিআরটিসি) দ্বারা পরিচালিত। প্রচলিত দিল্লি শহরতলি রেল ব্যবস্থাকে এক উত্তোলিত সেমি-হাই-স্পিড রেল ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিস্থাপন করা এর উদ্দেশ্য।

পরিভাষা

• আঞ্চলিক দ্রুতগামী গণপরিবহন ব্যবস্থা বা আরআরটিএস: জাতীয় রাজধানী অঞ্চল (এনসিআর) জুড়ে বিস্তৃত সেমি-হাই-স্পিড উড়াল রেল নেটওয়ার্ক।

• র‍্যাপিডএক্স: বিভিন্ন আরআরটিএস রেলপথের উপর পরিচালিত আঞ্চলিক রেল পরিষেবার ব্র্যান্ড নাম। এপ্রিল ২০২৩-এ এনসিআরটিসি এই নামটি ঘোষণা করেছিল।

• নমো ভারত: এই পরিষেবায় ব্যবহৃত ট্রেনসেট। অক্টোবর ২০২৩-এ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী এই নামটি ঘোষণা করেছিলেন। রাজ্যসভার সদস্য জয়রাম রমেশের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সংক্ষিপ্ত নাম থেকে "নমো ভারত" নামটি উদ্ভূত।

ইতিহাস

১৯৯০-এর দশকে ভারতীয় রেল দিল্লি ও আশাপাশের শহরের মধ্যে এক আঞ্চলিক দ্রুতগামী গণপরিবহন ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছিলেন। ২০০৬ সালে, যখন দিল্লি মেট্রো প্রসারিত হচ্ছিল, তখন এই প্রস্তাবকে দিল্লি মেট্রোর প্রসারণের অংশ হিসেবে ধরা হয়েছিল। ২০১৩ সালে ভারত সরকার দিল্লি এনসিআরের ১০০–২০০ কিলোমিটার (৬২–১২৪ মা) ব্যাসার্ধের এলাকাকে যানজট থেকে মুক্ত করার জন্য প্রস্তাবিত আটটি রেলপথকে বাস্তবায়িত করার জন্য জাতীয় রাজধানী এলাকা পরিবহন নিগম (এনসিআরটিসি) তৈরি করেছিল।

বৈশিষ্ট্য ও প্রযুক্তি

২০ অক্টোবর ২০২৩-এ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাহিবাবাদ ও দুহাই স্টেশনের মধ্যে র‍্যাপিডএক্স পরিষেবার উদ্বোধন করছেন।

যাত্রীদের উপযুক্ত বিরামহীন অভিজ্ঞতার জন্য আঞ্চলিক দ্রুতগামী গণপরিবহন ব্যবস্থার তিনটি ফেজ-১ করিডোর (দিল্লি–মিরাট, দিল্লি–আলোয়ার ও দিল্লি–পানিপথ) দিল্লির সরাই কালে খানে মিলিত হবে এবং ট্রেনগুলি এক করিডোর থেকে অন্য করিডোর যেতে পারবে। এর ফলে ট্রেন পরিবর্তন না করেই এক করিডোর থেকে অন্য করিডোর যাওয়া যায়।

মাল পরিবহন

র‍্যাপিডএক্স ব্যবস্থাকে আরও উপযোগী করার জন্য ব্যস্ত সময় বাদে অন্য সময়ে রেলপথগুলিতে মাল স্থানান্তরেও ব্যবহৃত হবে। মাল, বিশেষত যেগুলি পচনশীল, সেগুলি এই পরিষেবায় সুবিধা পেতে পারে। এভাবে দুটি শহরের মধ্যেকার সড়কে ট্রাকের ব্যবহার কম করে দূষণের পরিমাণ কমানো যেতে পারে। র‍্যাপিডএক্স ব্যবস্থার ট্রেনসেট ডিপোগুলিতে মালগুদাম ও অন্যান্য মাল সামলানোর ব্যবস্থা থাকবে।

রোলিং স্টক

নমো ভারত হচ্ছে ভারতের এক ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট (ইএমইউ) ট্রেন, যা র‍্যাপিডএক্স পরিষেবার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত। ফরাসি রোলিং স্টক প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যালস্টম তার হায়দ্রাবাদ ভিত্তিক কারিগরি সংস্থায় এই ট্রেনের পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং গুজরাতের সাভলিতে এদের তৈরি করা হয়েছিল। হাল্কা মরিচাবিহীন ইস্পাতের কাঠামো দিয়ে তৈরি নমো ভারত ট্রেনের অগ্রভাগ বায়ুগতীয়, অর্থাৎ ভ্রমণের সময় এটি বায়ুর ঘর্ষণ এড়াতে পারে। এই ট্রেনটির পরিকল্পিত বেগ ১৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টা এবং এটি ১৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে পরিচালিত হয়।

ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক

আরও তথ্যের জন্য দেখুন: ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক

এ স্ল্যাব অস্ট্রিয়া ব্যবস্থা ১৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টার মত উচ্চ গতিতেও আরামদায়ক ভ্রমণ প্রদানের জন্য পরিচিত। র‍্যাপিডএক্স পরিষেবায় এধরনের ট্র্যাক ব্যবহৃত হয়েছে, যা ভারতে প্রথম। এছাড়া দীর্ঘায়ু, কম রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রতিস্থাপনের সহজসাধ্যতার জন্য এটি গ্রহণ করা হয়েছে।

ইটিসিএস লেভেল ২ সংকেত ব্যবস্থা

আরও তথ্যের জন্য দেখুন: ইউরোপিয়ান ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম

উচ্চ-গতির রেল পরিবহনের জন্য ইটিসিএস লেভেল ২ সংকেত ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী প্রচলিত। এই ব্যবস্থায় আধুনিক সংকেত ব্যবস্থা এবং এলটিই ব্যাকবোনের উপর ভার্চুয়াল ব্লক ও এটিও ফাংশনালিটি বর্তমান। র‍্যাপিডএক্স পরিষেবায় এধরনের সংকেত ব্যবস্থা ব্যবহৃত হয়েছে, যা ভারতে প্রথম। এর ফলে সমস্ত করিডোরের মধ্যে ইন্টারঅপারেবিলিটি সম্ভব। এই ব্যবস্থাটি ট্রেনের গতিবেগ ও অভিমুখ পর্যবেক্ষণ করে এবং রেডিও ব্লক সেন্টারের মাধ্যমে পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করা হয়। ইটিসিএস লেভেল ২ সংকেত ব্যবস্থার ভার্চুয়াল ব্লক ব্যবহারের ফলে ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের কোনো সম্ভাবনা থাকে না।

আরআরটিএস রেলপথের তালিকা

জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে দিল্লি মেট্রো ও আরআরটিএস রেলপথ

২০ অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।

  পরিচালিত   নির্মাণাধীন   অনুমোদিত   প্রস্তাবিত

নাম	রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল	স্টেশন	দৈর্ঘ্য	প্রকল্প অনুমোদিত	উদ্বোধন	মন্তব্য
দিল্লি–মিরাট	দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ	২২	৮২ কিলোমিটার (৫১ মাইল)	ফেব্রুয়ারি ২০১৯	২০ অক্টোবর ২০২৩	২০২৫-এর মধ্যে সম্পূর্ণ করিডোর চালু হবে।
দিল্লি–আলোয়ার	দিল্লি, হরিয়ানা ও রাজস্থান	২২	১৬৪ কিলোমিটার (১০২ মাইল)		২০২৫	প্রাক-নির্মাণের কাজ চলছে।
দিল্লি–পানিপথ	দিল্লি ও হরিয়ানা	১৫	১০৩ কিলোমিটার (৬৪ মাইল)		২০২৫	ডিপিআর অনুমোদনের অপেক্ষায়।
দিল্লি–রোহতক			৭০ কিমি (৪৩ মা)
দিল্লি–পালোয়াল			৬০ কিলোমিটার (৩৭ মাইল)
দিল্লি–বারৌত			৫৪ কিলোমিটার (৩৪ মাইল)
গাজিয়াবাদ–খুরজা			৮৩ কিলোমিটার (৫২ মাইল)
গাজিয়াবাদ–হাপুড়			৫৭ কিলোমিটার (৩৫ মাইল)
দিল্লি–জেওয়ার			৬৭ কিলোমিটার (৪২ মাইল)			নির্মাণাধীন নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন।

আরও দেখুন

• বন্দে ভারত এক্সপ্রেস – ভারতীয় রেল দ্বারা পরিচালিত উচ্চতর-গতির রেল|সেমি-হাই-স্পিড রেল
• ভারতের উচ্চ-গতির রেল
• ভারতের ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোর
• ভারতের পৌর রেল পরিবহন ব্যবস্থা

বহিঃসংযোগ

• দাপ্তরিক ওয়েবসাইট