রওশন বিবির দরগাহ
রওশন বিবির দরগাহ হল পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণার বসিরহাটের বাদুড়িয়া থানার তারাগুনিয়া গ্রামে ইছামতি নদীর পশ্চিমতীরে অবস্থিত পীরানী বিবি রওশনের সমাধি দরগাহ।[১]
রওশন বিবি[সম্পাদনা]
রওশন বিবি বা রওশনারা বিবি ছিলেন চতুর্দশ শতকের গোড়ার দিকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব থেকে বাংলায় আগত সুফি সন্ত পীর গোরাচাঁদের (সৈয়দ আব্বাস আলী) কনিষ্ঠা সহোদরা , পিতা হজরত করিম উল্লাহের একমাত্র কন্যা। তার জন্ম আরবের মক্কা শহরে ১২৭৯/৮০ খ্রিষ্টাব্দে এবং মৃত্যু দক্ষিণ বাংলার কাথুলিয়া পরগনার তারাগুনিয়া গ্রামে ১৩৪২ খ্রিষ্টাব্দে। কথিত আছে, এই অঞ্চলের বিখ্যাত কৃষকবিদ্রোহের নেতা তিতুমীরের পূর্বপুরুষের সঙ্গে তার বিবাহ হয়েছিল।[১]
রওশনারা তার ভ্রাতার সন্ধানে সৌদি আরব থেকে প্রথমে ভারতবর্ষের দিল্লি, তারপর দক্ষিণ বাংলার কাথুলিয়া পরগনায় আসেন। তার মুর্শিদের নির্দেশ ছিল, যে স্থানে তিনি দিনের বেলায় আকাশে তারা দেখতে পাবেন, সেখানে তার আস্তানা বানাতে। সম্ভবত এই ঘটনার স্মৃতিতেই গ্রামটির নাম 'তারাগুনিয়া' রাখা হয়। [২]
দরগাহের বার্ষিক উৎসব[সম্পাদনা]
প্রতিবছর চৈত্র মাসের কৃষ্ণা-ত্রয়োদশীতে তারাগুনিয়া গ্রামে পীরানী রওশনের উৎসব উপলক্ষে দরগাহ-প্রাঙ্গনে ১০/১২ দিন ব্যাপী বিরাট মেলা বসে। মেলায় কাওয়ালি গান, নানারকম বাজনা ও বাউল গানের হাট বসে। এছাড়া, ফাল্গুন মাসে হাড়োয়ার পীর গোরাচাঁদের দরগাহের উৎসবের সময়ও এখানে একটি অনুষ্ঠান ও মেলা বসে। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, পীর গোরাচাঁদের সেবায়েত এসময় হাড়োয়া থেকে ফুল, ফল, মিষ্টি তারাগুনিয়ায় পাঠিয়ে দেন। শোনা যায়, নদিয়ার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় প্রায় তিন শতাধিক বিঘা জমি পীরানী রওশনের নামে পীরোত্তর দান করেছিলেন।[১]
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
- শাহ জালাল
- পীর একদিল শাহের দরগাহ
- পীর গোরাচাঁদ
- পীর সাহান্দীর দরগাহ
- পীর হজরত শফিকুল আলম
- পীর বড়খাঁ গাজী
- পীর ঠাকুরবর
- পাগল পীর
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
বঙ্গের সংস্কৃতি |
---|
বিষয় সম্পর্কিত ধারাবাহিক |
ইতিহাস |