বরাক উপত্যকা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৮′ উত্তর ৯২°৪৫′ পূর্ব / ২৪.৮০০° উত্তর ৯২.৭৫০° পূর্ব / 24.800; 92.750
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
42.108.41.242-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে আফতাবুজ্জামান-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
নকীব বট (আলোচনা | অবদান)
৬৯ নং লাইন: ৬৯ নং লাইন:
{{ আসাম}}
{{ আসাম}}


[[বিষয়শ্রেণী:ভারতের অঞ্চলসমূহ]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতের অঞ্চল]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা ভাষা আন্দোলন]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলা ভাষা আন্দোলন]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাভাষী দেশ ও অঞ্চল]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাভাষী দেশ ও অঞ্চল]]

১৬:৩৪, ১২ এপ্রিল ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বরাক উপত্যকা
বরাক উপত্যকা

বরাক উপত্যকা (সিলেটি: ꠛꠞꠣꠇ) (দক্ষিণ আসাম নামেও পরিচিত)[১] ভারতের আসাম রাজ্যের দক্ষিণাংশে অবস্থিত। এই উপত্যকার প্রধান শহর হল শিলচরবরাক নদীর নাম থেকেই এই অঞ্চলের নাম হয়েছে। বরাক উপত্যকা আসামের তিনটি প্রশাসনিক জেলা নিয়ে গঠিত - কাছাড়, করিমগঞ্জ, এবং হাইলাকান্দি। এই তিন জেলার মধ্যে, ব্রিটিশ ভারত হওয়ার আগে, কাছাড় ছিল কাছাড়ি রাজ্যের মধ্যে, এবং করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি আসাম প্রদেশের সিলেট জেলার মধ্যে ছিল। ১৯৪৭ সালের বিতর্কিত গণভোটের পর, উভয় অঞ্চলকে সিলেট থেকে আলাদা করা হয়; সিলেটের বাকি অংশ পূর্ব পাকিস্তানের (এখন বাংলাদেশ) এবং ভারতের করিমগঞ্জের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে।

নামকরণ

"বরাক" নামটি 'ব্রা' ও 'ক্রো' শব্দদুটি থেকে এসেছে। ব্রা অর্থ বিভক্ত হওয়া এবং ক্রো অর্থ উপরের অংশ/শাখা। বরাক নদীটি করিমগঞ্জ জেলার হরিতিকরের কাছে সুরমা নদী এবং কুশিয়ারা নদীতে বিভক্ত হয়েছে। এই বিভাজিত নদীর শাখাস্রোতকে স্থানীয় মানুষেরা 'ব্রাক্রো' নামে উচ্চারণ করত। বহুবছর ধরে উচ্চারণ বিকৃতির ফলে ব্রাক্রো নামটি বরাকে পরিণত হয়েছে।[২]

জনসংখ্যা

জাতি ও ধর্ম

বাংলা বরাক উপত্যকার সরকারী ভাষা, তবে জাতিগত অধিবাসীদের ৮০% এরও বেশি সিলেটীতে কথা বলেন। বরাক উপত্যকার সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম হল হিন্দুধর্ম। ২০১১র গণনা অনুযায়ী, উপত্যকার জনসংখ্যার ধর্মীয় গঠন এইরকম: হিন্দু ৫০.১% (১,৮১২,১৪১), মুসলিম ৪৮.১% (১,৭৪৪,৯৫৮), খ্রিষ্টান ১.৬% (৫৮,৬৭৫), এবং অন্যান্য ০.২%। কাছাড় জেলায় হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ (৫৯.৮৩%), মুসলমানেরা হাইলাকান্দি জেলা (৬০.৩১%) এবং করিমগঞ্জ জেলার (৫৬.২৬%) মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ।[৩]

ইতিহাস

অঞ্চলটি মূলত ত্রিপুরা রাজ্যের অংশ ছিল। ১৫৬২ সালে চিলারাই কাছাড় অঞ্চলকে কচ রাজত্বের সঙ্গে সংযুক্ত করেন এবং তার সৎভাই কমলনারায়ণ এই অংশের শাসনভার নেন।।[৪] নর নারায়ণেরমৃত্যুর পর, খাসপুর রাজ্য বলে পরিচিত রাজ্যটি স্বাধীন হয়ে ওঠে এবং কমলনারায়নের বংশধরেরা এর শাসন ভার নেন। সপ্তদশ শতকে, শেষ কচ শাসকের কন্যা কাছাড়ি রাজ্যের রাজাকে বিবাহ করেন, এবং খাসপুরের শাসন কচ শাসকদের হাতে চলে যায়। তারা শেষ পর্যন্ত মাইবং থেকে খাসপুরে তাদের রাজধানী সরিয়ে আনেন। [৫]

কাছাড়ি রাজ্য ১৮৩২ সালে ব্রিটিশ-ভারতে যুক্ত হয়। জেলা সদর দপ্তর ছিল শিলচর। ব্রিটিশ কোম্পানি এই এলাকায় প্রচুর সংখ্যায় (মোট ১৫৭) চা বাগান প্রতিষ্ঠা করে এবং শিলচর দেশের এই অংশে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকেই এখানে সমস্ত আধুনিক ব্যবস্থা চালু হয়।

১৯৪৭ সালে, যখন সিলেটে সিলেট গণভোটের পর, এই জেলাকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়; সিলেটের পূর্ব অংশটি করিমগঞ্জ নামে ভারতে থেকে যায় অন্য অংশটি পূর্ব পাকিস্তানে চলে যায়। ভৌগোলিকভাবে, বাংলাদেশের সাথে পশ্চিমের সমভূমির সীমানা ব্যতীত, এই অঞ্চলটি তিনটি দিক থেকে পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত। বাঙালীর ইতিহাস এর লেখক নীহার রঞ্জন রায় দাবি করেন যে, "দক্ষিণ আসাম/উত্তর-পূর্ব বাংলা বা বরাক ভ্যালি, সংস্কৃতি থেকে ভূগোল প্রতিটি দিকেই, বঙ্গের এর বৃহত্তর সুরমা/মেঘনা উপত্যকার সম্প্রসারণ"।[৬]

আসামের সুরমা উপত্যকায় (এখন আংশিকভাবে বাংলাদেশে) মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা ছিল। দেশভাগের প্রাক্কালে, মুসলিম লীগের পাশাপাশি কংগ্রেসেরও হিংসাত্মক কার্যক্রম তীব্র আকার ধারণ করে, যদিও মুসলিম লীগ কিছুটা ভালো অবস্থায় ছিল। সিলেট জেলার জন্য একটি গণভোট প্রস্তাব করা হয়। মজুমদার এবং বসন্ত কুমার দাস (তখন আসামের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) উপত্যকা জুড়ে ভ্রমণ করে কংগ্রেসকে সংগঠিত করেন এবং ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ হলে তার ফলাফল কি হতে পারে, সে বিষয়ে সমাবেশ করে জনগনকে শিক্ষিত করতে থাকেন।[৭] ১৯৪৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি, মৌলভী মজুমদার শিলচরে আসাম জাতীয়তাবাদী মুসলিম কনভেনশনের উদ্বোধন করেন। এর পর, ৮ই জুন ১৯৪৭এ আরেকটি বড় সভা শিলচরে অনুষ্ঠিত হয়।[৮] উভয় সভাতেই, মুসলমানদের একটি বড় অংশ উপস্থিত ছিলেন, যা তাদের একটি সুবিধাজনক অবস্থান দেয়। আসামের বরাক উপত্যকাকে, বিশেষ করে করিমগঞ্জকে, ভারতের সঙ্গে রেখে দেবার জন্য যাঁরা উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে একজন।[৯][১০] মজুমদার সেই প্রতিনিধি দলের নেতা ছিলেন, যাঁরা রাডক্লিফ কমিশনের সামনে এই দাবি জানিয়েছিলেন যে, সিলেটের (বর্তমানে বাংলাদেশে) একটি অংশ (বর্তমানে করিমগঞ্জ জেলা), মুসলমান অধ্যুষিত হওয়া সত্বেও যেন ভারতে থাকে।[১১][১২]

বন্য জীবন

এশিয়ান হাতি উপত্যকার বেশিরভাগ অংশ থেকেই লুপ্ত হয়ে গেছে।[১৩][১৪] দক্ষিণ অংশটিও 'ধলেশ্বরী' বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসাবে সুপারিশ করা হয়েছিল।[১৫] বরাক উপত্যকায় একমাত্র বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হল বারাইল। এটির সূচনা করেছিলেন প্রখ্যাত প্রকৃতিবিদ ড. আনোয়ারউদ্দীন চৌধুরী, যিনি মূলত ১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে এই অঞ্চলেই জন্মেছিলেন। [১৬] এই অভয়ারণ্যের জন্য শেষ পর্যন্ত ২০০৪ সালে অবহিত করা হয়। হাইলাকান্দিতে অভ্যন্তরীণ রেখা সংরক্ষিত অরণ্য ও কাটাখাল সংরক্ষিত অরণ্য রয়েছে।[১৭]

লোকসভা নির্বাচনী এলাকা

বরাক ভ্যালির দুটি লোকসভা আসন রয়েছে।

জেলার তালিকা

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

  • মৌলানা আব্দুল জলিল চৌধুরী
  • আবদুল মতলিব মজুমদার
  • কামিনী কুমার চন্দ
  • অরুণ কুমার চন্দ
  • ময়নুল হক চৌধুরী
  • সৈয়দ মুজতবা আলি
  • দেবোজিত সাহা
  • কবীন্দ্র পুরকায়স্থ
  • ললিত মোহন শুক্লবৈদ্য
  • সন্তোষ মোহন দেব
  • ড. জহুরুল হক
  • উল্লাসকর দত্ত
  • কামাল উদ্দিন আহমেদ
  • অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি (১৮৬৫-১৯৫৩) প্রখ্যাত ইতিহাস বেত্তা, শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (পূর্বাংশ এবং উত্তরাংশ প্রকাশিত হয় যথাক্রমে ১৯১০ ও ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দ) গ্রন্থের লেখক। তিনি করিমগঞ্জের জাফরগড় পরগনার (পাথরকান্দি থানা) মৈনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
  • মহবুবুর রব চৌধুরী ( জন্ম: ১৯১৫ মৃত্যু: ১৯৯৭) প্রবীণ এই স্বাধীনতা সংগ্রামী পাথারকান্দি থানার ধলছড়া চৌধুরী বাড়ির সন্তান ছিলেন। তিনি স্বাধীনোত্তরকালে জিপি ও আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সভাপতি। করিমগঞ্জ মহকুমা পরিষদ ও স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
  • জনাব আব্দুল মুক্তাদির চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী, বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ ও সমাজসেবী, করিমগঞ্জ।
  • অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য,এম.এ ত্রিপল,একাধিক স্বর্ণপদক প্রাপ্ত,প্রাক্তন উপাচার্য,আসাম বিশ্ববিদ্যালয়,খ্যাতনামা তাত্ত্বিক,প্রাবন্ধিক,কবি ও বিশিষ্ট সমালোচক,শতাধিক গ্রন্থ প্রণেতা,বহু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত,আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিবিশেষ ।

তথ্যসূত্র

  1. Tunga 1995, p. 1
  2. Barman Saroj Kr.(1995):Reminiscence Of The Past.Silchar:Kasturi Barman
  3. Indian Census[যাচাইকরণ ব্যর্থ হয়েছে] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ মে ২০০৭ তারিখে
  4. (Bhattacharjee 1994:71)
  5. (Bhattacharjee 1994:72)
  6. Ray, Niharranjan (১৯৮০-০১-০১)। Bangalir itihas। Paschimbanga Samiti। 
  7. Chowdhury, Dewan Nurul Anwar Husain। "Sylhet Referendum, 1947"en.banglapedia.org। Banglapedia। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৬ 
  8. Bhattacharjee, J. B. (1977). Cachar under British Rule in North East India. Radiant Publishers, New Delhi.
  9. Barua, D. C. (1990). Moulvi Matlib Mazumdar- as I knew him. Abdul Matlib Mazumdar – birth centenary tributes, pp. 8–9.
  10. Purkayashta, M. (1990). Tyagi jananeta Abdul Matlib Mazumdar. The Prantiya Samachar (in Bengali). Silchar, India.
  11. Roy, S. K. (1990). Jananeta Abdul Matlib Mazumdar (in Bengali). Abdul Matlib Mazumdar – birth centenary tributes, pp. 24–27.
  12. "Assam Election Results - What does it mean for Bangladesh?"thedailystar.net। The Daily Star। ২১ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৬ 
  13. Choudhury, A.U. (1999). Status and Conservation of the Asian elephant Elephas maximus in north-eastern India. Mammal Review 29(3): 141-173.
  14. Choudhury, A.U. (2004). Vanishing habitat threatens Phayre’s leaf monkey. The Rhino Found. NE India Newsletter 6:32-33.
  15. Choudhury, A.U. (1983). Plea for a new wildlife refuge in eastern India. Tigerpaper 10(4):12-15.
  16. Choudhury, A.U. (1989). Campaign for wildlife protection:national park in the Barails. WWF-Quarterly No. 69,10(2): 4-5.
  17. Choudhury, A.U. (2005). Amchang, Barail and Dihing-Patkai – Assam’s new wildlife sanctuaries. Oryx 39(2): 124-125.

আরও দেখুন

বহি:সংযোগ