পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা Shahriar Islam Alvi (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১১:০৪, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (→‎শিক্ষা পদ্ধতি)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ধরনসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়
স্থাপিত৮ জুলাই ২০০০
আচার্যরাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন
উপাচার্যঅধ্যাপক ড. মোঃ হারুনর রশীদ[১]
অবস্থান,
শিক্ষাঙ্গন৮৯ একর
সংক্ষিপ্ত নামপবিপ্রবি (PSTU)
অধিভুক্তিবিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
ওয়েবসাইটpstu.ac.bd
মানচিত্র

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি দেশের বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলায় অবস্থিত। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের অন্যতম নব্য প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়।[২]

ইতিহাস

পটুয়াখালীর প্রবেশপথে পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের লেবুখালীস্থ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্কয়ার থেকে ৫ কিলোমিটার পুবে দুমকি উপজেলা সদরে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। জেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় পটুয়াখালী কৃষি কলেজ; যা ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত হয়ে বেসরকারি কৃষি কলেজ হিসেবে স্নাতক পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করে। ২০০০ সালের ৮ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কৃষি কলেজাটিকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উদ্বোধন করেন। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ বিলুপ্ত করে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাস হয় এবং ২০০২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তব রূপ লাভ করে। প্রথমিকভাবে এর অবকাঠামো উন্নয়নে ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।[২]

প্রশাসন

২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ম ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে প্রফেসর ড. হারুন উর রশিদ যোগদান করেন।ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে যোগদানের পূর্বে তিনি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোনমি বিভাগের অধ্যাপক এবং প্লানিং বোর্ড এর পরিচালক ছিলেন

ক্যাম্পাস

৭২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস; এর মধ্যে ৩৫ একরের ওপর মূল ক্যাম্পাস আর এর অদূরে ৩৭ একর জমির ওপর বিশাল কৃষি গবেষণা খামার। মূল ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের সামনে বৃক্ষশোভিত সুদীর্ঘ একটি লেক রয়েছে। ক্যাম্পাসের উত্তর-পশ্চিমাংশে অত্যাধুনিক ডিজাইনের পুরুষ ও মহিলা হোস্টেল বিদ্যমান। একাডেমিক ভবন থেকে হোস্টেলে যাওয়ার পথেই মসজিদের অবস্থান। মসজিদের পাশেই রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং এর উল্টো দিকে রয়েছে লাইব্রেরি ভবন। একটি প্রশস্ত রাস্তা ক্যাম্পাসের ওপর দিয়ে পুবের পীরতলা থেকে পশ্চিমের পটুয়াখালী-বাউফল মহাসড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে। এ সড়কের দক্ষিণ দিকে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের আবাসিক কোয়ার্টার আর এর দক্ষিণে রয়েছে ‘সৃজনী বিদ্যানিকেতন’ নামের প্রাথমিক-মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মূল ক্যাম্পাসের পুব দিকে পীরতলা বন্দর পেরুলেই ৩৭ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত কৃষি গবেষণা খামার। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে একটি আউট ক্যাম্পাস; যা বরিশাল জেলার খানপুরা বাবুগঞ্জে ১২.৯৭ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত।বহিঃস্থ ক্যাম্পাসটি বরিশাল জেলা শহর থেকে ১৫ কিমি দূরে অবস্থিত।। সাগর সৈকত কুয়াকাটায় ফিশারিজ ফ্যাকাল্টি, সমুদ্র বিজ্ঞান ও ফরেস্টি বিজ্ঞানসহ তিনটি পৃথক অনুষদ গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের।[২]

পবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবন

শিক্ষা পদ্ধতি

চারটি অনুষদ নিয়ে শুরু হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম এবং বর্তমানে আটটি অনুষদে কার্যক্রম চলমান; অনুষদগুলো হলোঃ কৃষি অনুষদ, ব্যবসা প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা অনুষদ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ এবং এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ(ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন ও এনিম্যাল হাজবেন্ড্রী)(বরিশাল ক্যাম্পাস), মৎসবিজ্ঞান অনুষদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদ, নিউট্রিশন ও ফুড ম্যানেজমেন্ট অনুষদ এবং ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট এন্ড এডমিনিষ্ট্রেশন। কৃষি অনুষদে ২০০ জন, এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ (ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন এ ৬ ০জন ও এনিম্যাল হাজবেন্ড্রী ৫৫ জন) এবং বিবিএ ও সিএসই-তে ৭০ জন করে শিক্ষার্থী প্রতি সেশনে ভর্তির সুযোগ পায়। ২০১৫-১৬ সেশনে চালু করা হয় ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট এন্ড এডমিনিষ্ট্রেশন নামে একটি নতুন অনুষদ।[২]

৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ এর ভাস্কর্য
৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ এর ভাস্কর্য

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমেরিকার কোর্স ক্রেডিট সিস্টেম পদ্ধতি চালু রয়েছে। সেমিস্টার পদ্ধতির এ শিক্ষা ব্যবস্থায় কোর্স যথাসময়ে শেষ হয় বিধায় কোনো সেশনজট থাকে না। আটটি সেমিস্টারে শিক্ষাপর্ব শেষ হয়। এ ছাড়াও দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়েই সর্বপ্রথম ২০০২ সালে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি ভাষা চালু করা হয়। হাতে-কলমে শিক্ষা দানের জন্য এখানে রয়েছে ১৪টি সমৃদ্ধ গবেষণাগার বা ল্যাবরেটরি, যা বর্তমানে অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সংবলিত একটি সুবৃহৎ কেন্দ্রীয় গবেষণাগারও রয়েছে চালুর অপেক্ষায়। কৃষক পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য রয়েছে চারটি প্রদর্শনী খামার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ অর্থাৎ ৮ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের জন্য ১২ সপ্তাহের ইন্টার্নশিপ বাধ্যতামূলক; স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে হাতে-কলমে কাজ করাই এ ইন্টার্নিশিপের প্রধান লক্ষ্য। কৃষকদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে ইন্টার্র্নিদের লব্ধ জ্ঞানের সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার ঘটানোই ইন্টার্নিশিপের প্রধান লক্ষ্য; ফলে স্থানীয় কৃষকরা মান্ধাতা আমলের কৃষি পদ্ধতির পরিবর্তে কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।[২]

ফ্যাকাল্টী বিল্ডিং
ফ্যাকাল্টী বিল্ডিং

আবাসন ব্যবস্থা

ছাত্র হলসমূহ

  • শের-ই-বাংলা হল-১
  • শের-ই-বাংলা হল-২
  • এম.কেরামত আলী হল
  • বঙ্গবন্ধু হল
  • ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হল(বরিশাল ক্যাম্পাস)

ছাত্রী হলসমূহ

  • কবি বেগম সুফিয়া কামাল হল
  • ফজিলাতুন্নেছা হল'শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল(বরিশাল ক্যাম্পাস)

এই আবাসিক হলে প্রায় ৩০০০ জন ছাত্র-ছাত্রী অবস্থানের সুযোগ পায়। ভর্তির পর ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের দিন থেকেই প্রত্যেক শিক্ষার্থী হলে থাকার সুযোগ পায়। মাস্টার্সদের জন্য একটি এনেক্স ভবন নির্মিত হয়েছে।[৩]

লাইব্রেরি

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে একটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। দুই তলা বিশিষ্ট লাইব্রেরি ভবনে ২০ হাজারেরও বেশি বিভিন্ন ধরনের একাডেমিক বই, ভলিউম, সাময়িকী রয়েছে। এই লাইব্রেরীর ভিতরে রয়েছে মুজিব কর্ণার; যেখানে আমাদের মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক প্রায় ১০০ টির মত বই রয়েছে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার উদ্দ্যেশ্যে আসতে পারে এবং নিড়িবিলি পড়াশোনা করতে পারে। এখানকার সাইবার কেন্দ্রে ইন্টারনেট সুবিধা দেয়া হয়।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিঃস্থ ক্যাম্পাসে দুই তলা বিশিষ্ট একটি লাইব্রেরি রয়েছে।

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড

ঘাসফুল বিদ্যালয়, আলোকতরী সাংস্কৃতিক সংগঠন, উদীচী, রংধনু, কৌনিক ব্যান্ড, Tune cruft, ডিবেটিং সোসাইটি, ক্যারিয়ার ক্লাব, ট্রাভেলার্স এসোসিয়েশন, পাঠচক্রসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে এখানে। পাঠচক্রের আয়োজনে মাসিক, ত্রৈমাসিক, ষান্মাসিক দেয়াল পত্রিকা বের করা হয়। এছাড়াও সাম্প্রতিক নানা বিষয়ের ওপর আয়োজন করা হয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার।[২]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:বাংলাদেশের সরকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়