খলিল উল্লাহ খান
খলিল উল্লাহ খান | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | আবুল ফজল মোহম্মদ খলিল উল্লাহ্ খান ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ মেদিনীপুর, ভারত |
মৃত্যু | নভেম্বর ৭, ২০১৪ স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৮০)
সমাধি | সলিমুল্লাহ রোড কবরস্থান, মোহাম্মদপুর, ঢাকা |
জাতীয়তা | ![]() ![]() ![]() |
অন্যান্য নাম | খলিল |
নাগরিকত্ব | ![]() ![]() ![]() |
শিক্ষা | স্নাতক |
মাতৃশিক্ষায়তন | মুরারিচাঁদ কলেজ, সিলেট |
পেশা | সামরিক কর্মকর্তা, অভিনেতা |
কর্মজীবন | ১৯৫৯ – ২০১৪ |
পরিচিতির কারণ | খল চরিত্রে অভিনয় |
দাম্পত্য সঙ্গী | রাবেয়া খানম |
সন্তান | ৫ ছেলে, ৪ মেয়ে |
পুরস্কার | একুশে পদক আজীবন সম্মাননা - জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১২ |
আবুল ফজল মোহম্মদ খলিল উল্লাহ খান (১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ - ৭ নভেম্বর ২০১৪)[১] ষাটের দশকের বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতাদের একজন।[২][৩] চলচ্চিত্র ছাড়াও তিনি টেলিভিশন নাটকেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।[৪]
প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]
খলিল ১৯৩৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভারতের মেদিনীপুরে জন্মগ্রহণ করেন।[৩] তার বাবা পুলিশ অফিসার ছিলেন বলে তাকে সিলেট, কৃষ্ণনগর, বগুড়া, বর্ধমান, নোয়াখালী যেতে হয়। খলিলের শৈশব জীবন কেটেছিল এসব জেলাতেই।[৫] ১৯৪৮ সালে সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৫১ সালে মদনমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।[৪] পরবর্তীতে সিলেট মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
সামরিক জীবন[সম্পাদনা]
১৯৫১ সালে আর্মি কমিশনে যোগ দিয়ে কোয়েটাতে চলে যান। ১৯৫২ সালে ফিরে এসে আনসার এডজুট্যান্ট হিসেবে যোগ দেন।[৫] দীর্ঘদিন সাসপেন্ড থাকার পর তা উইড্র হয় ১৯৭৭ সালে। ১৯৯২ সালে আনসার থেকে অবসর গ্রহণ করেন।[৪]
চলচ্চিত্র জীবন[সম্পাদনা]
অভিনয়[সম্পাদনা]
১৯৫৯ সালে সোনার কাজল ছবিতে প্রথম অভিনয় শুরু করেন।[৫] চলচ্চিত্রে আসার পূর্বে বেশ কয়েকটি নাটকেও অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রে আসার ব্যাপারে প্রযোজক মাসুদ চৌধুরীর কাছ থেকে সহযোগিতা পান। তার সাহযোগিতায় জহির রায়হানের ‘সোনার কাজল’ ছবিতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। প্রথম ছবিতে দু’জন নায়িকা ছিলেন—একজন সুমিতা দেবী, অপরজন সুলতানা জামান। জহির রায়হান ছাড়াও সোনার কাজল ছবিটির পরিচালক ছিলেন কলিম শরাফি। খলিল অভিনীত দ্বিতীয় ছবি প্রীত না জানে রীত। ছবিটি ১৯৬৩ সালের ১৩ জানুয়ারি মুক্তি পায়।[৪] খলিলের তৃতীয় ছবি ‘সংগম’।[৫] এ ছবিতে খলিল ও সুমিতা দেবী রোমান্টিক নায়ক-নায়িকা। এরপর নায়ক হিসেবে তিনি একে একে অভিনয় করেন — কাজল (১৯৬৫), ক্যায়সে কঁহু (১৯৬৫), ভাওয়াল সন্ন্যাসী (১৯৬৫), বেগানা (১৯৬৬), জংলী ফুল (১৯৬৮) প্রভৃতি ছবিতে। নায়ক হিসেবে খলিলের শেষ ছবি ‘জংলী ফুল’। এটি ১৯৬৮ সালের ২৯ মার্চ মুক্তি পায়। তার নায়িকা ছিলেন সুলতানা জামান। সহ-নায়িকা ছিলেন সুচন্দা। ১৯৭৪ সালে ‘উৎসর্গ’ এবং ‘এখানে আকাশ নীল’ ছবি ২টির মাধ্যমে খলিল চরিত্রাভিনেতারূপে আত্মপ্রকাশ করেন। এস এম পারভেজ পরিচালিত বেগানা ছবিতে প্রথম খলনায়ক হিসেবে খলিল অভিনয় করেন। দু’টি ছবি প্রযোজনা করেছিলেন তিনি। একটি সিপাহী অন্যটি এই ঘর এই সংসার।[৫]
নেতৃত্ব[সম্পাদনা]
তিনি দুই মেয়াদে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ছিলেন।[৬][৭]
চলচ্চিত্র পরিচালনা[সম্পাদনা]
১৯৬৫ সালে চুক্তিবদ্ধ হন ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’ ছবিতে।[৫] ভাওয়াল রাজার ঐতিহাসিক কাহিনী অবলম্বনে এর চিত্রনাট্য লিখেছিলেন—রওনক চৌধুরী। তিনিই ছিলেন ছবির পরিচালক। ছবিতে ডাক্তার আশুর চরিত্রে ছিলেন খলিল। ছবিতে নায়িকা অর্থাৎ রানীরূপী রেশমার সঙ্গে ছিল তার পরকীয়া প্রেম। ভাওয়াল সন্ন্যাসীর পর ‘উলঝন’ ছবিতে খলিলের নায়িকা ছিলেন রোজী।[৪]
উর্দু চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]
১৯৬৬ সালে ‘বালা’ নামে একটি উর্দু ছবিতে অভিনয় করার অফার পেলেন।[৫] এই ছবিতে জেনিফার নামে একজন অভিনেত্রীকে জড়িয়ে সমালোচিত হওয়ার পর খলিল ‘বালা’ ছবির কাজ ছেড়ে দেন।[৪]
টেলিভিশন পর্দায়[সম্পাদনা]
আশির দশকে টেলিভিশন পর্দায় আসেন খলিল। তার অভিনীত বিশেষ নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- আব্দুল্লাহ আল মামুনের ধারাবাহিক নাটক সংশপ্তক।[৫]
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]
- পুনম কি রাত
- ভাওয়াল সন্ন্যাসী
- উলঝান
- সমাপ্তি
- তানসেন
- নদের চাঁদ
- পাগলা রাজা
- বেঈমান
- অলঙ্কার
- মিন্টু আমার নাম
- ফকির মজনুশাহ
- কন্যাবদল
- মেঘের পরে মেঘ
- আলোর মিছিল
- এত টুকু আশা
- আয়না
- মধুমতি
- ওয়াদা
- ভাই ভাই
- বিনি সুতার মালা
- মাটির পুতুল
- সুখে থাকো
- অভিযান
- কার বউ
- কথা কও
- দিদার
- আওয়াজ
- নবাব
- নবাব সিরাজ উদ দৌলা (রঙিন)
- ভণ্ড[৪]
পারিবারিক জীবন[সম্পাদনা]
খলিল ১৯৫৪ সালে মানিকগঞ্জের রাবেয়া খানমকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির পাঁচ ছেলে ও চার মেয়ে।[৪]
মৃত্যু[সম্পাদনা]
খলিল ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[৮][৯]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "পর্দায় যেমন দেখাতেন তেমন ছিলেন না"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৪।
- ↑ "হৃদয়ে বাজে খুশির বীণ"।
- ↑ ক খ "চলে গেলেন অভিনেতা খলিল"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৪।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০১২।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০১২।
- ↑ "নায়ক থেকে ভিলেন হয়েছিলেন খলিল"। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০২০।
- ↑ "কিংবদন্তি অভিনেতা খলিল আর নেই"। The Daily Sangram। ৬ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০২০।
- ↑ "খলিলুল্লাহ খান আর নেই"। দৈনিক মানবজমিন। ৭ ডিসেম্বর ২০১৪। ২৪ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "অভিনেতা খলিলুল্লাহ খান আর নেই"। দৈনিক যুগান্তর। ৭ ডিসেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৪।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
- ১৯৩৪-এ জন্ম
- ২০১৪-এ মৃত্যু
- বাংলাদেশী অভিনেতা
- বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা
- বাংলাদেশী টেলিভিশন অভিনেতা
- বাঙালি অভিনেতা
- শিল্পকলায় একুশে পদক বিজয়ী
- শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বাংলাদেশ) বিজয়ী
- সিলেট জেলার ব্যক্তি
- বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতা
- মুরারিচাঁদ কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- মদনমোহন কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা বিজয়ী