চিত্রা নদীর পারে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চিত্রা নদীর পারে
ডিভিডি কভার
পরিচালকতানভীর মোকাম্মেল
রচয়িতাতানভীর মোকাম্মেল
শ্রেষ্ঠাংশেমমতাজউদ্দীন আহমেদ
আফসানা মিমি
তৌকির আহমেদ
রওশন জামিল
সুমিতা দেবী
সুরকারসৈয়দ শাবাব আলী আরজু
চিত্রগ্রাহকআনোয়ার হোসেন
সম্পাদকমহাদেব শী
মুক্তি১৯৯৮
স্থিতিকাল১১০ মিনিট
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা

চিত্রা নদীর পারে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত ১৯৯৮ সালের বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দুদের জীবনে যে প্রভাব ফেলেছিল, তা এই ছবিতে দেখানো হয়েছে। কাহিনীর শুরু ১৯৪৭ থেকে এবং শেষ হয় ৬০'-এর দশকে। অভিনয় করেছেন মমতাজউদ্দীন আহমেদ, আফসানা মিমি, তৌকির আহমেদ, রওশন জামিল, সুমিতা দেবী প্রমুখ। ছবিটি বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় এবং ২৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ সাতটি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে।

কাহিনী সংক্ষেপ[সম্পাদনা]

সময়টা ১৯৪৭, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছোট্ট জেলা নড়াইল। শশীভূষণ সেনগুপ্ত নামের এক হিন্দু উকিল (মমতাজউদ্দীন আহমেদ) থাকতেন তার বিধবা বোন অনুপ্রভা (রওশন জামিল), এবং দু’টি ছোট ছেলে-মেয়ে মিনতি ও বিদ্যুৎকে নিয়ে। বাড়ির পাশেই বয়ে চলা নদী চিত্রা। ততদিনে শুরু হয়ে গেছে হিন্দু-মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে দেশভাগ। পূর্ব পাকিস্তান থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন দেশ ত্যাগ করে চলে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। এ অবস্থায় শশীভূষণের উপরেও দেশত্যাগের চাপ আসতে শুরু করে, কিন্তু তিনি বাপ-দাদার ভিটা ছেড়ে পরদেশে পাড়ি না জমানোর সিদ্ধান্তে অনড়। কিন্তু তার ছোট ছেলে বিদ্যুৎ মুসলমান বন্ধুদের দ্বারা উৎপীড়িত হয়ে কোলকাতা চলে যাবার বায়না শুরু করে। অগত্যা বিদ্যুৎকে পড়াশোনার জন্য কোলকাতা পাঠিয়ে দেন শশীভূষণ। এরপর কিছু সময় কেটে যায়।

১৯৬৪ সাল, শশীভূষণের মেয়ে মিনতি (আফসানা মিমি) ততদিনে বড় হয়ে গেছে। ছোট বেলার খেলার সাথী বাদলের (তৌকীর আহমেদ) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মিনতির। বাদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে জড়িয়ে পড়ে মার্শাল’ল বিরোধী আন্দোলনে। একদিন মিছিলে পুলিশের অতর্কিত গুলিতে মারা যায় বাদল। এরমধ্যে চারিদিকে শুরু হয়ে যায় হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।

সেই দাঙ্গার শিকার হন শশীভূষণের বিধবা ভাতিজি বাসন্তী। ধর্ষিত হয়ে চিত্রা নদীর পারে আত্মাহুতি দেয় সে। ঘটনাটি শশীভূষণকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয়। অসুস্থ শশীভূষণ সেই চিত্রা নদীর পাড়েই তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নিয়তির নির্মম পরিহাসে অবশেষে দেশ ছেড়ে কোলকাতায় পাড়ি জমায় মিনতি ও অনুপ্রভা।

শ্রেষ্ঠাংশে[সম্পাদনা]

সংগীত[সম্পাদনা]

চিত্রা নদীর পারে ছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন সৈয়দ সাবাব আলী আরজু।

পুরস্কার[সম্পাদনা]

চিত্রা নদীর পারে ১৯৯৯ সালে ৭টি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। সেগুলো হল-

বিভাগ বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র চিত্রা নদীর পারে
শ্রেষ্ঠ পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল
শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী ফেরদৌসী (প্রতিভা)
শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার তানভির মোকাম্মেল
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা তানভির মোকাম্মেল
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক উত্তম গুহ
শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান দীপক কুমার সুর

এছাড়া ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের করা সর্বকালের সেরা ১০ বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের সমালোচক ও দর্শকপ্রিয়তা উভয় ক্যাটাগরিতেই রয়েছে এ ছবিটি।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]