বিষয়বস্তুতে চলুন

সূরা কিয়ামাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আল-ক্বিয়ামাহ
القيامة
শ্রেণীমাক্কী সূরা
নামের অর্থমহাপ্রলয়
পুনরুত্থান
অবতীর্ণ হওয়ার সময়হিজরত-পূর্ব
পরিসংখ্যান
সূরার ক্রম৭৫
আয়াতের সংখ্যা৪০
পারার ক্রম২৯
মঞ্জিল নং
রুকুর সংখ্যা
সিজদাহ্‌র সংখ্যানেই
অক্ষরের সংখ্যা৬৬১
← পূর্ববর্তী সূরাসূরা মুদ্দাস্সির
পরবর্তী সূরা →সূরা দাহর
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ

সূরা আল-ক্বিয়ামাহ‌ (আরবি ভাষায়: القيامة) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৭৫ তম সূরা; এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ৪০ এবং রূকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২। সূরা আল-ক্বিয়ামাহ মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

নামকরণ

[সম্পাদনা]

এই সূরাটির প্রথম আয়াতের الۡقِيٰمَةِۙ বাক্যাংশ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরার মধ্যে القيامة (‘ক্বিয়ামাহ’) শব্দটি আছে এটি সেই সূরা।[]

শানে নুযূল

[সম্পাদনা]

ইসলাম ধর্ম প্রচারকালীন সময় নবী মুহাম্মদকে কাফেররা ক্বিয়ামাত সম্পর্কে বিভিন্ন প্রকার প্রশ্ন করতো; এসকল প্রশ্নের উত্তরে এই সূরাটি অবতীর্ণ হয়।

ব্যাখ্যা

[সম্পাদনা]
সূরা কিয়ামাহ সম্বলিত কুরআনের পান্ডুলিপি

এই সূরায় কেয়ামতের কথা বলা হয়েছে। যারা পরকাল অবিশ্বাসী মূলত তাদের সম্পর্কেই এই সূরাটি নাজিল হয়েছে। এই সূরাটিতে কেয়ামতের অবশ্যাম্ভাবীতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। সূরাটিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়ঃ

প্রথম ভাগ

[সম্পাদনা]

১৬ থেকে ১৯ পর্যন্ত ৪ টি আয়াত ব্যতীত অবশিষ্ট আয়াতগুলো এর অংশ। এই আয়াতগুলো মূলতঃ কাফেরদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, যাতে ক্বিয়ামাত সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর রয়েছে।

দ্বিতীয় ভাগ

[সম্পাদনা]

এই ভাগটি ১৬ থেকে ১৯ নং আয়াতগুলো নিয়ে গঠিত। এগুলো নবী মুহাম্মদকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে।

পুরো সূরার ব্যাখ্যা

[সম্পাদনা]

এই সূরাটি কেয়ামত সম্পর্কে সন্দেহের অবসান ঘটিয়েছে। এই সূরায় বলা হয়েছে আগে কাফেরেরা ভাবত আমরা তো মরার পর পঁচে গলে যাব।তাহলে আল্লাহ তায়ালা কীভাবে আবার সৃষ্টি করবেন? কিন্তু কুরআনে বলা হয়েছে যে,আল্লাহ তায়ালা তাদের আঙ্গুলগুলো পর্যন্ত সন্নিবেশন করতে সক্ষম।তারা প্রশ্ন করে কেয়ামত কবে হবে?আল্লাহ তায়ালা বলেছেন যে (আমার ব্যক্তিগত ভাষায়) কেয়ামত সেদিন হবে যেদিন দৃষ্টি চমকে যাবে,সূর্যচাঁদ জ্যোতিহীন হয়ে যাবে,চাঁদসূর্যকে একত্র করা হবে। তখন মানুষ বলবে পালানোর জায়গা কোথায়? কিন্তু তারা ঠাঁই পাবার জায়গা পাবে না একমাত্র আল্লাহর আরশে আযীম ছাড়া। সেখানে নেকব্যক্তিরা স্থান লাভ করবে? মূলত মানুষ ভবিষ্যতেও ধৃষ্টতা দেখাতে চায়। যার কারণে তারা এসব ব্যাপারে মাথা ঘামায়।সেদিন তারা জীবনে যা করেছে তা তাদেরকে দেওয়া হবে।কিন্তু তারা এসব পাওয়ার পরও অজুহাত পেশ করবে। নবীজি এসব আয়াত মুখস্থ করার জন্য জিবরাঈল আঃ এর সঙ্গে ঠোঁট নাড়িয়ে পড়তেন।আল্লাহ তায়ালা এর প্রেক্ষিতে বলেন যে, হে নবী আপনার এভাবে পড়ার দরকার নেই। জিবরাঈল যা কিছু বর্ণনা করেন তার দিকে অনুসরণ করুন। মুখস্থ করানোর দায়িত্ব আমার। তবুও মানুষ পরকালকে উপেক্ষা করে। আর এসব অজুহাত এসবেরই কারণ। সেদিন নেককারেরা প্রভুর দিকে উজ্জ্বল মুখমন্ডল ফিরিয়ে রাখবে। আর বদকারেরা এর বিপরীতভাবে থাকবে। তারা নামাজ পড়েনি আল্লাহর ইবাদত করেনি। আর এসবের কারণে তাদের এই পরিণতি হবে। মানুষ মনে করে তাদের এভাবে ছেড়ে দেওয়া হবে। তারা স্খলিত বীর্য ছিল। অতঃপর তারা ছিল রক্তপিন্ড এবং আল্লাহ তাঁকে সুবিন্যস্ত করেছেন। আর সৃষ্টি করেছেন নারীপুরুষ। তাহলে কি এভাবে তিনি মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করতে পারবেন না? অবশ্যই পারবেন। সুতরাং কেয়ামত অবশ্যই হবে। এ ই সূরা এসব বিষয় সম্পর্কেই বলা হয়েছে।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "সূরার নামকরণ"www.banglatafheem.comতাফহীমুল কোরআন, ২০ অক্টোবর ২০১০। ১১ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]